নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
এন্টেনা, ডিসএন্টেনা এবং ক্যাবল টিভি...
দাও ফিরায়ে সে অরণ্য,
সে খুব কঠিন ব্যাপার!
কিন্তু সেই অ্যালুমিনিয়ামের এ্যান্টেনা?
সেটা দাও না ফিরিয়ে।
প্রতি সন্ধ্যেবেলা কাকেরা যখন মিটিং করে দিক ঘুরিয়ে দিত! মই লাগিয়ে ঠিক করা…..
কালবৈশাখী এসে যখন অজানা ডিগ্রি ঘুরিয়ে দিত ...
সব ঝাপসা!
স্বাধীনতার আগে আমাদের দেশে হাতেগোনা কিছু পরিবারে টেলিভিশন ছিলো। নাম ছিলো- পাকিস্তান টেলিভিশন। তখন টেরিস্ট্রিয়াল পদ্ধতিতে টিভি চলতো। অর্থাৎ ডিস এন্টেনা ছাড়াই টিভি দেখা যেতো। তারপরও যেসব বাড়িতে টিভি ছিলো সেইসব বাড়ির ছাদে একটা আউটডোর এন্টেনা থাকতো, যা দেখে পাবলিক বুঝতো -ওই বাড়িতে টিভি আছে!
৭০/৮০ দশকে ঘরে ঘরে টিভি চলে আসলেও তখনও স্যাটেলাইট চ্যানেল বা ডিশ এন্টেনা ছিলোনা। টিভি অনুষ্ঠান সম্প্রচার হতো টেরিস্ট্রিয়াল পদ্ধতিতেই।চ্যানেল ছিলো একটাই “বাংলাদেশ টেলিভিশন”। টিভির উপর ইংরেজী “V” আকৃতির একটা এন্টেনা থাকতো। অনেকে এটাকে এরিয়েল বলতো। অনেক সময় এ এরিয়লেও কাজ হতোনা, তখন উঁচু বাঁশের মাথায় এন্টেনা বেধে দাঁড় করে রাখতাম। এটাকে বলা হতো আউটডোর এন্টেনা। একটু বাতাসে বা অন্য কোন কারনে এ আউটডোর এন্টেনা নড়েগেলে টিভির ছবি ঝিরঝির করত। তখন ছাদের উপর বা বাইরে গিয়ে বাঁশটি ধরে এন্টেনা ঘুরানো লাগতো আর টিভির সামনে থেকে একজন বলত- "হয় নাই, আরেকটু ডানে ঘুরাও"। আবার বাইরে থেকে তখন জিজ্ঞেস করতো, ‘এখন হইছে?'
ভিতর থেকে জবাব আসতো, "না হয় নাই"।
এভাবে অনেকক্ষন চেষ্টার পর ঘরের ভিতর থেকে ক্লিয়ারেনস আসতো- “ঠিক আছে, এখন ঠিক আছে।"
এভাবে এন্টেনা ঘুরিয়ে ঠিকমত টিভি দেখার ব্যবস্থা করতে পারলে নিজেকে বিরাট ইঞ্জিনিয়ার মনে হতো। আর এ এন্টেনায় এলুমিনিয়ামের হাড়ি পাতিল লাগিয়ে শুধু বিটিভি না, ভারতের দূরদর্শন এবং ডিডি ন্যাশনাল চ্যানেল দেখা যেতো। এ চ্যানেল দুটোতে ভারতীয় বাংলা সিনেমা ভালো লাগলেও অন্যসব অনুষ্ঠানের মান খুবই নিম্নমানের ছিলো। ভারতে অনূষ্ঠিত টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচও দেখতাম।
"দূরদর্শনের ছবি ঝকঝকে ও পরিষ্কার দেখতে আসল ব্রিটানিয়া টিভি অ্যান্টেনা ব্যবহার করুন"-এখনো অনেকের মনে পড়বে সেই বিজ্ঞাপনটির কথা।
এখন কেনো জানি মনে হয়, এখনকার স্যাটেলাইট যুগের চেয়ে সেই এলুমিনিয়ামের হাড়িপাতিল লাগানো এন্টেনার সহজ সরল যুগটাই ভালো ছিলো।
এখন কেবল টিভি আমাদের আষ্টেপিষ্টে বেঁধে ফেলেছে।
ওই এইটা আসছে না, ওই এইটে আসছে না ...!
কত ফোন করবো?
আমরা পয়সা দিচ্ছি না নাকি?
আমরা বিটিভির কিছুই দেখিনা।
এখন বিটিভি কেউ না দেখলেও দুনিয়ায় আরও অনেক চ্যানেল দেখার মানুষের অভাব নাই।
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:০৫
জুল ভার্ন বলেছেন: প্রকৃতপক্ষে প্রযুক্তি আমাদেরকে যতটা সামনে এগিয়ে নিয়েছে-ঠিক ততটাই আমাদের মননশীলতা, সৃজনশীলতা থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছে। ধন্যবাদ ঈশান মাগমুদ।
২| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৮:৫৭
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ১৯৭৭ সালের আগে টিভি দেখি নাই। ১৯৮২ সালে প্রথম ভিসিআর দেখি। তবে ১৯৮০ সালে ভিসিআরের কথা শুনেছি।
টিভিও হয়ত গায়েব হয়ে যাবে একদিন ইউটিউব এবং অন্যান্য মাধ্যমের কারণে।
সীমান্তবর্তী জেলাগুলি থেকে দূরদর্শন ভালো দেখা যেত। হাড়ি পাতিল ঝুলালে আরও ভালো দেখা যেত।
ভালো কোন নাটক দেখার সময় এন্টেনা ঘুরে গেলে মেজাজ খারাপ হয়ে যেত। তখন একজন ছাদে, একজন বাইরে আরেকজন টিভির সামনে থেকে নানা কসরত।
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:১৬
জুল ভার্ন বলেছেন: আমার যতদূর মনে পড়ে- পাকিস্তান আমলে আমাদের দেশে টিভি চালু হয়েছিলো ১৯৬৪ সনে। তখন আব্বা পশ্চিম পাকিস্তান থেকে(আব্বা পাকিস্তান বিমান বাহিনীর অফিসার ছিলেন)বিশাল আকৃতির একটা সিটিজেন টিভি সেট নিয়ে আসেন। তখন আমাদের প্রতিবেশীদের কারোর বাড়িতেই টিভি ছিলো না। টিভি'র অনুষ্ঠান শুরু হতো বিকেলে এবং চলতো রাত ১০ টা পর্যন্ত। তখন দেশে ফ্ল্যাট কালচার ছিলোনা- সবারই ইন্ডিভিজুয়াল বাড়ি। আমাদের বাড়িতে প্রতিবেশীরা টিভি দেখতে আসতেন। কিছু দিনের মধ্যেই আমাদের সকল প্রতিবেশীদের বাড়িতে টিভি চলে আসে। আমরা ছোটরা সাইকেল চালিয়ে আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুড়ে ঘুড়ে বাড়ির ছাদে বাঁশ গুনে গুনে টিভি আছে কিনা দেখতাম! স্বাধীনতার পর এন্টেনায় হাড়িপাতিল লাগানর কালচার শুরু হয়েছিলো পুরণ ঢাকা থেকে।
৩| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৫৮
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: খুব সুন্দর ভাবে স্মৃতিচায়ন করলে দাদা কত স্মৃতি হেসে গেলো আর মলমল করা জল
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:১৬
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।
৪| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:১৯
অপু তানভীর বলেছেন: এই কথা যদি এখন বলেন মানুষের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হবে । এমন কি আমি নিজে হাতে একই ভাবে এন্টেনা ঠিক করেছি, কে এন্টেনা নাড়াতে ছাদে যাবে সেটা নিয়ে ঝগড়া করেছি অথচ আমার নিজের কাছেই মনে হয় এসব সব ঘটে নি । খুব কিন্তু আগের ঘটনাও না ।
আমাদের গ্রামে আমাদের বাসায় ডিসের সংযোগ এসেছিলো সবার আগে । মানুষ জন আসতো টিভি দেখতে । তখনও বিটিভির এন্টেনা ছিল । কারণ ডিসে তখন বিডিটি আসতো না । আর বিটিভি তখনও খুব চমৎকার অনুষ্ঠান দেখাতো, মান সম্পন্ন ছিল অন্য যে কোন চ্যানেল থেকে ।
টিভি নিয়ে আরেকটা কথা বলি । একদিন গল্পের ছলে আমার নাইনে পড়া এক স্টুডেন্টকে বলছিলাম আমাদের বাড়ির প্রথম টিভির কথা । সেই টিভিতে কোন রিমোর্ট ছিল না এটা বলতেই সে যেন আকাশ থেকে পড়লো । রিমোর্ট ছাড়া যে টিভি হতে পারে সে যেন সে বিশ্বাসই করতে পারলো না ।
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৪৪
জুল ভার্ন বলেছেন: ১৯৬৪ সনে আমাদের বাড়িতেও প্রথম যে টিভিটা এসেছিলো-সেটায়ও রিমোট ছিলোনা। এখনতো সব কিছুতেই রিমোট। টিভি, এসি, ফ্যান্, লাইট, পানির পাম্প, গাড়ির ডোড়, খেলনা-কোথায় নাই রিমোট!
৫| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৫৮
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: এন্টেনায় কেরামতি সকলেই দেখানোর চেষ্টা করেছে।
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৫৯
জুল ভার্ন বলেছেন: নিজেকে বিরাট টেকোনোলোজিস্ট প্রমাণ করতাম!
৬| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:২০
আখেনাটেন বলেছেন: তখন ছাদের উপর বা বাইরে গিয়ে বাঁশটি ধরে এন্টেনা ঘুরানো লাগতো আর টিভির সামনে থেকে একজন বলত- "হয় নাই, আরেকটু ডানে ঘুরাও"। --- হা হা হা....এক্কেরে...কতবার এই ঘুরাঘুরিতে যে অংশ নিয়েছি..।
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:১০
জুল ভার্ন বলেছেন: আউটডোর এন্টেনা লাগিয়ে আ নিয়ে নানাবিধ কসরত করেনি এমন মানুষ খুব বেশী নাই।
৭| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:০১
তানীম আব্দুল্লাহ্ বলেছেন: টিভির পেছনের নব ঘুরিয়ে রাখতাম । ছবি লাফাত । চ্যানেল চেন্জ করার সময় খটখট শব্দ হতো সুইচে । বৃষ্টি শুরু হবার আগেই ছুটতাম ভি এন্টেনা থেকে মেইন এন্টেনার তার খুলে দিতে । তার চ্যাপ্টা ধরনের হতো ।
ন্যাশনাল টিভি নিপ্পন টিভি সেট ।
০৯ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:১৭
জুল ভার্ন বলেছেন: ওসব এখন ইতিহাস!
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৮:৫৩
ঈশান মাহমুদ বলেছেন: অনলাইন আর স্মার্ট ফোন আসার পর এখন ধীরে ধীরে টেলিভিশন তার গুরুত্ব হারাতে বসেছে। এলইডি বা স্মার্ট টিভি আসার পর মানুষ এখন টেলিভিশনেও ইউটিউবের প্রোগ্রামই বেশী দেখে। সবই প্রযুক্তির অবদান। তবে আশির দশকে এন্টেনায় হাড়িপাতিল লাগিয়ে ভারতীয় অনুষ্ঠান দেখার দিন গুলোকে এখনও মিস করি।
জুলভার্ন ভাই, স্মৃতি জাগানিয়া এই পোস্টের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।