নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
মানুষ অমর হতে চায় কেন?
প্রশ্নটিতে লুকিয়ে রয়েছে আমাদের অনেকেরই সুপ্ত আকাঙ্ক্ষার কথা। তবে মানুষের আবহমানকাল ধরে চলে আসা ইচ্ছে 'আমি অমর হয়ে বেঁচে থাকব'। কেন মরতে চাই না বা কেন অমর হতে চাই- তার অনেক কারণ আছে। প্রথম কারণঃ-
আমরা কেউই নিজ নিজ স্বাচ্ছন্দ্যের স্থানচ্যুত হতে চাই না। উদাহরণঃ-
(১) শিশু মাতৃগর্ভের থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েই সে তার স্বাচ্ছন্দ্যিক স্থান চ্যুতির জন্য কান্না জুড়ে দেয়, কারণ সে তার মাতৃ জঠরে দশমাস থাকা কালীন সময়ে সেই স্থানটিকেই সে তার নিজস্ব ভুবন মনে করতো।
(২) কোনো শীতের রাতে লেপের তলায় যখন আমরা একটু গরম হয়ে সেই ওমটাকে উপভোগ করতে শুরু করি ঠিক তখনই প্রতিবেশী বলে, 'ভাই, চলেন ছাদে গিয়ে গল্প করি'! তখন মনের অবস্থাটা কি হয়? মনটা তখন আর ভাল্লাগে না। কেনো ভাল্লাগে না, ভাল্লাগে কারণ আমি আমার ঐ ওম স্থানের থেকে বেড়িয়ে আসতে চাই না। বিছানার ওই গরম জায়গাটি হলো তখনকার মতন আমার কম্ফোর্ট বা স্বাচ্ছন্দ্যিক স্থান।
এমন আরো অনেক উদাহরণ দেওয়া যায়, এখানে একটা বাংলা প্রবাদ বাক্য-'দেশের মাটিও ভালো বিদেশের জমরুদ পাথর থেকে'। অর্থাৎ দেশের নিম্নতমটি বিদেশের লোভনীয় কিছুর থেকে ভালো কারণ বিদেশ মানে নিজের কম্ফোর্ট জোন ত্যাগ করা, যেটি আমরা সাধারণত করতে চাই না।
কেনো আমরা আমাদের স্বচ্ছন্দের স্থান চ্যুত হতে চাই না। কারণ, আমরা আমাদের জন্মের পর থেকে নিজেদেরকে এই পৃথিবীর উপযুক্ত বানাতে যথেষ্ট পরিশ্রম করে থাকি। সদ্যজাত শিশুর থেকে স্বাবলম্বী হওয়ার মধ্যে থাকে একাধিক মানুষের সাহায্য এবং সেই সব সাহায্য দিয়েই আমরা গড়ে তুলি আমাদের নিজের জন্য একটা স্বচ্ছন্দ্যের ভুবন- যা থেকে আমরা বেড়িয়ে গিয়ে অজানা জগতে পড়তে চাই না।
মানুষের মৃত্যুর পরে কি হয় সে সম্বন্ধে আজো আমরা বিশেষ কিছু জানি না, শুধু জানি জন্ম যদি বৈদ্যুতিক আলোর সুইচ অন হয় এবং হয় জীবনের প্রারম্ভ তাহলে সুইচ অফ মানে মৃত্যু, যার পুরোটাই অজানার অন্ধকার। এ বিষয়ে আরো ভীতির ইন্ধন যোগায় আমাদের ধর্মমত গুলি। অর্থাৎ মানুষের মৃত্যুর পরে ভয়ানক কিছু ঘটবে বলে আমরা প্রতি নিয়ত শুনতে থাকি। সুতরাং সেই অজানা এবং ভয়প্রদ স্থানে আমরা যেতে চাই না। চাই, কবির মতন করে - "মরিতে চাহি না আমি এই সুন্দর ভুবনে"।
মানুষের অমর হতে চাওয়ার ঘটনা কিন্তু ঘটে অবচেতন মনেই। আমি অমর হতে চাই না বা অনেক বয়েস হয়ে গেলে বাঁচার ইচ্ছেটাও কমে যায়। তবে যিনি অমর হতে চান না তিনিও কিন্তু আগামী কাল কি রান্না হবে বা এবার গরু না ছাগল কোরবানি দিবেন সেই পরিকল্পনা ছকে রাখেন। এই পরিকল্পনা করে রাখার মধ্যেই থাকে আগামী কাল বেঁচে থাকার ইচ্ছেটা। তবে হ্যাঁ যেমন বলেছি- এসব কর্ম গুলি আমরা করে থাকি আমাদের অবচেতন মনের থেকে তাই হয়তো বা কিছুটা অভ্যাস বশেই কালকের রান্নার কথাটা ভেবে থাকি। যিনি বয়েস জনিত কারণে আর বেঁচে থাকতে চান না তিনিও কিন্তু ডায়বেটিসের ওষুধটা ঠিক সময়েই খান। তার এই ওষুধ খাওয়ার মধ্যেই থাকে রোগ উপশমের আকাঙ্ক্ষা ও বেঁচে থাকার ইচ্ছে।
তাহলে কেনো আমরা বলি- আমি বেঁচে থাকতে চাই না? কথাটা আমরা বলি সচেতন অবস্থায় (অর্থাৎ আমরা জানি, জন্মিলে মরিতে হইবে) বা অনেক সময়ে জীবনের দুঃখদ অবস্থার কথা ভেবে (ব্যর্থ প্রেমে বা স্বজন হারানো দুঃখ যাকে বৈরাগ্য বলে ইত্যাদি কারণে)। তবে এ কথাও সত্য যে লক্ষ কোটি মানুষের মনে থাকে ভিন্ন ভিন্ন লক্ষ কোটি কামনা বাসনা, সে সব কথাকে দুএক কথায় ব্যক্ত করা যায় না, আবার সব কথা জানাও যায় না।
এমনও হতে পারে, মানুষের মৃত্যুর পরে সাজা পাওয়ার কথা ভেবেই মানুষ মরতে চায় না। আবার স্বজন প্রীতির জন্যেও মানুষ মরতে চায় না। মোদ্দা কথা, মৃত্যুর পরে কি হবে তা আমরা জানি না, আর জানি না বলেই ভীতিটা আমাদের থেকেই যায়। স্বজন প্রীতিটাকেই বলা হয় 'মায়া–মিথে মায়ার বদ্ধন'।
মানুষ অমর হতে চায় কেনো প্রসঙ্গে আমার মনে হয়- মানুষের এই বেঁচে থাকার ইচ্ছেটা, সে ভাবে বলতে গেলে শুধু মানুষের কথাই বা বলি কেনো, সমস্ত প্রাণীদের মধ্যেই নিজেদের বাঁচিয়ে রাখার ইচ্ছে দেখা যায়, এমন ইচ্ছেটা সব প্রাণীরই সহজাত প্রবৃত্তি। এই সহজাত প্রবৃত্তির বশেই মুরগীর বাচ্চা ডিম ফুটে বেড়িয়েই ঠুকরে খেতে শিখে যায়। কারণ অন্য পাখীর মতন মা মুরগী তাকে ঠোঁটে করে খাওয়ায় না। এমন কথাটি সে জানল কি করে? জানল তার সহজাত প্রবৃত্তি বশেই। এই সহজাত প্রবৃত্ত যার জন্যেই মানব শিশু জন্ম হওয়া মাত্র তার স্থান চ্যুতির জন্য আপত্তি জানিয়ে সে তার নিজের মতন করে খাদ্যের তালাশ করে – যা শুধু বুঝতে পারেন তার মা।
মানুষের অমর হবার এমন ইচ্ছেটা কেনো হলো বা কিভাবে এলো তার মনে। মনে রাখতে হবে যে, মানুষ যা দেখে বা যা শোনে তার মধ্যেই তার ভাবনার জগতটি থাকে। যাই হোক মানুষের অমর হওয়ার ইচ্ছেটা কেনো হলো, সে কথা জানতে হলে আগে আমাদের জানতে হবে অমর কারা বা কাদের দেখে আমাদের অমর হওয়ার বাসনা জাগ্রত হয়েছে। এই অমর হওয়ার বিষয়টা সনাতন ধর্মে আছে, মহাভারতেও আছে- যা এখানে বলে কোনো ধর্ম বিশ্বাসীদের মনোকষ্টের কারণ হতে চাইনা।
ডিসক্লেইমারঃ এই লেখার কোনো সূত্র নেই, একেবারেই আমার মনগড়া! ব্যাক্তিগত ভাবে আমার কাছে অমরত্বের চিন্তা অমূলক। মতভেদ থাকাটা স্বাভাবিক।
১৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৪১
জুল ভার্ন বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
২| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৩৬
অপু তানভীর বলেছেন: আমি আসলে অমর হতে চাই পৃথিবীতে যত বই বিশেষ করে গল্পের বই প্রকাশিত হয়েছে সব পড়ার জন্য । একটা ব্যাপার মনে হলেই মন খারাপ হয় যে এই পৃথিবীতে এতো এতো বই প্রকাশ পাচ্ছে প্রতিদিন যার অতি অতি অল্প পরিমান পড়েই আমাকে মরে যেতে হবে ! হায় মানব জীবন এতো ছোট কেন !
এছাড়া যত মুভি মুক্তি পাচ্ছে সেগুলো দেখে মরতে চাই ।
১৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৪৪
জুল ভার্ন বলেছেন: আমি কখনোই অমর হতে চাইনা। শরতচন্দ্রের ভাষা- "মরার আবার জাত কি"!
তবে যতদিন বাঁচি যেনো ভালো কিছু করতে নাপারলেও অন্তত নিজে ভালো হয়ে বাঁচতে চাই।
৩| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:২০
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: মৃত্যু ভয় একটা বড় ভয়। কেন ভয় পায় মানুষ? মানুষ নিজেই জানে না।
আমার নানীর বয়স ১০০+; তিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের দিকে জন্ম নিয়েছেন। তার দুই মেয়ে তার চোখের সামনে মারা গেছে, বুড়ো বয়সে। তিনি এখন আর বেঁচে থাকতে চান না। কথা বলেই বলেন, আর কবে মরবো? কিন্তু তিনি নিয়মিত ঔষধ খান, তার যুক্তি, ঔষধ না খেলেতো বেঁচে থাকতে পারবো না!
ধর্ম গুলি কি শুধু মৃত্যুর পরের জীবন সম্পর্কে ভয়ই দেখায়? নাস্তিকেরা সব সময় অপপ্রচার চালায় যে ইসলাম নাকি ৭০জন হুরের কথা বলে লোভ দেখায়। প্রশ্ন থেকে যায় তাহলে সবাই কেন মরতে চায় না?
১৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৪৭
জুল ভার্ন বলেছেন: আমার একজন ফুফু-যার বর্তমান বয়স ১০৫ বছর রানিং। যিনি একাধারে অন্যতন্য পরহেজগার, তিনি খুবই স্বাস্থ্য সচেতণ। তিনি এখনও বাঁচার জন্য অনেক আকুতি করেন। নাস্তিকদের কোনো বেইজ নাই-ওরা ফালতু, সমাজের বর্জ্য।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৪| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:২৩
সোবুজ বলেছেন: পৃথীবিতে এখনো এমন পাগল আছে যে অমর হতে চায়।খোদার বিরুদ্ধে কথা।বৃদ্ধ বয়সে কেউ চায় না,যেমন আমি চাই না।মরছি না তাই বেঁচে আছি।
১৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৫৮
জুল ভার্ন বলেছেন: আমার কাছে জীবন মানেই বেঁচে থাকা- যা থাকা কিম্বা না থাকায় কোনো পার্থক্য নাই, অন্তত আ্মার বেলায়। আমি মরে গেলে এই পৃথিবীর কারোর কোনো অসুবিধা হবে না। আপনার মতোই আমিও "মরছিনা তাই বেঁচে আছি!"
৫| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৫৬
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: খুব সুন্দর বলেছেন দাদা অমর হওয়া বিষয়টি তার উপর নির্ভর করে যদি সে ভাল কোন কাজ করতে থাকেন তখন মনে হয় আমি অমর করব--------এভাবেই অমর হওয়ার স্বাদ জাগে
১৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:০২
জুল ভার্ন বলেছেন: মরার পর কি হবো সেটা নিয়ে মোটেই ভাবনা নাই, তবে বেঁচে থাকতে যেনো খারাপ কাজ না করি-সেটাই বেঁচে থাকার স্বার্থকতা।
৬| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:১৬
জুন বলেছেন: অমর হওয়ার জন্য মাইকেল জ্যাকসন কত কিছু করলো আর সেই লোকটাই কিনা ৫০ বছর বয়সে টুপ করে মরে গেল। আর যারা কথায় কথায় বলে মরতে চাই তারাই কিনা ১০০ বছর বেচে থাকে। কি অদ্ভুত বৈপরীত্য
+
১৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৬
জুল ভার্ন বলেছেন: বারবার বলবো-"আমি মরতে চাই".....যাতে একশো বছর বাঁচতে পারি!
৭| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:১৩
সাজিদ! বলেছেন: আপনার লেখায় অনুপ্রাণিত হয়ে কিছু লিখে ফেললাম। Blue Zones ও নিজের কিছু ভাবনা
পড়ার আমন্ত্রন রইলো।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৫০
জুল ভার্ন বলেছেন: অবশ্যই পড়বো। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:০০
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: সম্ভবতো আমুন কোনো এক সময় প্রায় অমর হয়ে উঠতে পারবে।