নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

.......A day which will live in infamy.......

১৭ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:১৩

"...A day which will live in infamy"... জাপানি যুদ্ধবিমানের আক্রমণে পার্ল হারবার বিধ্বস্ত হবার খবর পেয়ে ১৯৪১ সালের ৮ ডিসেম্বর মার্কিন কংগ্রেসের জয়েন্ট সেশনে বসে বলেছিলেন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট।

ইতিহাস ঘাঁটলে জনগণের হাতে দেশের প্রশাসনিক ভবনের পতনের নজির ইতিহাসে বহু আছে। বাস্তিল দুর্গ থেকে মস্কোর দুমা। তাতে তাদের মান কমেনি, বরং বেড়েছে। সম্ভবত ক্যাপিটল হিল- মার্কিন কংগ্রেস ভবনই আজ মানব ইতিহাসের একমাত্র রাষ্ট্রভবন হয়ে রইল, যার 'সাময়িক পতন' বা 'অবরোধ' কিছু দুস্কৃতির কাছে!

বেঁচে থাকলে আজ এরিক হবসবম খুবই ফ্যাসাদে পড়তেন। ১৭৮৯ সাল থেকে ১৯৯১ সাল অবধি বিশ্বের ইতিহাসকে তিনি চার ভাগে ভাগ করেছেন, যা রাজনৈতিক ইতিহাসের ছাত্র মাত্রেই অল্পস্বল্প অবগত আছেন। (১) বিপ্লবের যুগ,(২) ধনসম্পদের যুগ, ৩) সাম্রাজ্যের যুগ এবং (৪) এক্সট্রিমের যুগ।" এক্সট্রিমের যুগ" এর বাংলা শব্দ খুঁজে পেলাম না। মার্কিন কংগ্রেস তছনছ করে দেওয়ার ঘটনাটিকে এরিক হবসবম কোন ভাগে ফেলতেন?

বিপ্লব মাত্রেই তার একটা অবধারিত অংশ হল দেশের শাসকের আসনকে টালমাটাল করে দেওয়া। তা সে খ্রিস্টজন্মের ৫৯৭ বছর আগে গ্রিসের একনায়কতন্ত্র ফেলে দিয়ে সোলোনের রিফর্ম হোক বা বাস্তিল দুর্গের পতনের পর হওয়া ফরাসি বিপ্লব। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে আমেরিকার গণতন্ত্রের(?) পীঠস্থান মার্কিন কংগ্রেস ভবন আক্রমণ করা নিঃসন্দেহে একটি 'বৈপ্লবিক ঘটনা!'
কিন্তু এ কেমন বিপ্লব? ফরাসি বিপ্লব, রুশ বিপ্লব, ইংল্যান্ডের গৌরবময় বিপ্লব সবই আসলে কোনও না কোনও সত্যের ওপর দাঁড়িয়ে। কিন্তু এখানে বিপ্লবের মূল কারণই হল ফেক নিউজ, ফেক দাবি। যেখানে জনরোষ দেখাল এমন একদল লোক যাদের এক এবং একমাত্র হাতিয়ার চাপাবাজি এবং এমন চিন্তাভাবনা যা মানবকল্যাণের একশো আশিভাগ উল্টোদিকে।

অবস্থা এমন জায়গায় যায় যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্যুইটের নিচে ট্যুইটার কর্তৃপক্ষ অ্যাকাউন্ট বন্ধের নোটিস দেন। হিংসা ছড়ানোর মত অ্যাকাউন্ট লাল রঙে দাগিয়ে দেওয়া হয়। ফেসবুক কতৃপক্ষ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট অনির্দিষ্টকালের জন্য 'ব্লক' করছেন।

তবে এই ঘটনা দেখে বাংলাদেশী হিসেবে আমাদের লাফালাফি করা উচিত হবে না। মনে রাখতে হবে, ট্রাম্প নির্বাচনে হেরেছেন, এই ঘটনার পরেও সেই ফল পাল্টাবে না। বাংলাদেশ হলে হলে এই ইলেকশন ট্রাম্প নিরংকুশ ভোটে জিততেন। এই ঘটনা মোটামুটি তামাম আমেরিকার বুদ্ধিজীবী মহলকে প্রতিবাদে মুখর করে তুলেছে। বাংলাদেশ হলে ৯৯৯% বুদ্ধিজীবী ট্রাম্পের পরম সুহৃদ হয়ে পাশেই থাকতেন। অন্তত পাঁচটি মার্কিন টিভি চ্যানেল দেখেছি, চরম ট্রাম্প সমর্থক বলে পরিচিত ফক্স নিউজও গলা উঁচিয়ে প্রতিবাদ করেছে। ফক্সের সঞ্চালক মুখ কালো করে বলছেন, "এমন দিন মার্কিন ইতিহাসের কলঙ্ক'- এ আমার নিজের দেখা। বাংলাদেশ হলে টিআরপি চুরি করা চ্যানেলটি এমন করবে- এটা কল্পনাতেও আসা উচিত না। সর্বোপরি বাংলাদেশ হলে এত হল্লাই হত না। মাখনের মতই মোলায়েমভাবে ট্রাম্পের সুহৃদ বাংলাদেশ সংসদ ভবনকেই নতুন করে বানানোর প্ল্যান নিতো এবং সুপ্রিম কোর্টও তাতে সবুজ সংকেত দিয়ে দিতো।

"এজ অফ রেভোলিউশন" বইয়ের একদম শুরুতেই হবসবম সাহেব বলছেন, "কিছু কিছু শব্দ একটা যুগের সঙ্গে সমার্থক হয়ে যায়। বিপ্লবের যুগের সঙ্গেও তেমনই জড়িয়ে আছে কিছু ইংরেজি শব্দ— ইন্ডাস্ট্রি, ফ্যাকটরি, মিডল ক্লাস, সোশ্যালিজম, রেলওয়ে, লিবারাল ইত্যাদি।"

এই যুগের সঙ্গেও তেমনই জড়িয়ে আছে একটাই শব্দ- 'পোস্ট ট্রুথ'। বাংলাদেশে এই পোস্ট ট্রুথের বিরোধিতা করা মানেই চলে আসবে- 'দেশদ্রোহী'। ফারাক একটাই- আমেরিকার গণতন্ত্র নিয়ে সর্বস্তরে প্রশ্ন উঠছে এবং এই প্রশ্ন তোলার অধিকারই মার্কিন গণতন্ত্রকে আবার পুরনো গৌরবে ফিরিয়ে আনতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন তুললেই দেশদ্রোহী দাগিয়ে দেওয়া বাংলাদেশের নীতি প্রয়োগের কর্ণধার কিছুদিন আগেই জানিয়েছেন, "বাংলাদেশে গণতন্ত্র দরকারের চেয়ে বেশিই হয়ে গেছে!"

(এটা রাজনৈতিক লেখা নয়। অনুরোধ করছি - এই লেখাটাকে কেউ রাজনৈতিক লেখা মনে করবেন না। এই লেখাটা গতবছর আমেরিকার ক্যাপিটল হিল- মার্কিন কংগ্রেস ভবনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের ম্যাচাকার ঘটনার প্রেক্ষিতে ফেসবুকে লিখেছিলাম)

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:২২

সাজিদ! বলেছেন: জন্মের পর থেকে দেখছি ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলোর নানা সমস্যা ওদের মিডিয়া বিশ্বের কাছে তুলে ধরে। এক সময় মনে হতো এই বুঝি এখনই পড়ে যাবে। চীনের আগ্রাসনে আমেরিকার ভূমিকা নিয়ে সবচেয়ে বেশী সরব আমেরিকানরাই। বোধহয় ওদের এক ধরনের স্বচ্ছতা আছে। যেটা এখনও ওদের সুপার পাওয়ার বা এর আশেপাশে টিকিয়ে রেখেছে। কি জানি!

১৭ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৪৪

জুল ভার্ন বলেছেন: আমেরিকায় রাস্ট্র পরিচালনায় অনেক খারাবী আছে তাতে কোনো সন্দেহ নাই। আবার আমেরিকার সাধারণ জনগণের মিধ্যেই বেশী আছে মানবিক মূল্যবোধ - দুনিয়ার অনেক দেশেই নাই। সব চাইতে বড়ো কথা- আমেরিকায় বাক স্বাধীনতা, নাগরিক মৌলিক অধিকার আছে। বৃটিশরা বিশ্বজুড়ে নাকানিচুাবানী খেয়েও ঔপনিবেশিক মানষিকতা ত্যাগ করতে পারেননি। চীনের আছে শুধু বেনিয়া মনোবৃত্তি। ভারতীয়দের আছে মুসলিম বিদ্বেষ, যা ইজরায়েলের চাইতেও বিপদজনক।

২| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৩৪

গরল বলেছেন: আমেরিকাতে এখনও অনেক মানুষ আছে যারা বিশ্বাস করে পৃথিবী সমতল, তাদের বড়সড় একটা দলও আছে। অনেক লোক কোভিড টিকা বর্জন করেছে। বললে বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, একদল লোক আছে যারা নাকি লিলিপুট দেখে, তারা এসব নিয়ে আলোচনা সভাও করে থাকে। ওঝাঁ সার্ভিসের বিজ্ঞাপন যেখানে সেখানে দেখা যায়। অতএব ট্রাম্পের আচড়নে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:০৬

জুল ভার্ন বলেছেন: আপনার বক্তব্য সমর্থন করি। আমিও অবাক হই যখন দেখি আমেরিকা, ইংল্যান্ড, জার্মানী, অস্ট্রেলিয়ার মতো উন্নত দেশের মানুষও কোভিড টিকার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে!

৩| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:৩২

সোবুজ বলেছেন: বাংলাদেশের মূল সমস্যা হলো দলগুলি গনতান্ত্রিক না।রাষ্ট্র কিভাবে গনতান্ত্রিক হবে।যতদিন দলগুলি গনতান্ত্রিক না হবে এ ভাবেই চলবে দেশ।এটা মানুষের ইচ্ছামুক্ত একটা নিয়ম।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:০৯

জুল ভার্ন বলেছেন: ঠিক বলেছেন। প্রথমত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেই গণতন্ত্র নাই। দ্বিতীয়ত, সেইসব রাজনৈতিক দলগুলো যখন ক্ষমতাসীন হয় তখন নিজেদের প্রভু মনে করে স্বেচ্ছাচারিতার চুড়ান্ত করে ছারে!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.