নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
"Paradise now" & "Salt of the sea"
নামের দুটি মুভি দেখেছি। দুটো মুভি একটার সম্পুরক অন্যটা। Paradise now" মুভিতে তুলে ধরা হয়েছে প্যালেস্টাইন এর ভূমি ইং-মার্কিন চক্রান্তে কিভাবে সামরিক শক্তিতে দখল করার ইতিহাস তুলে ধরা হয়।
অন্যদিকে, Salt of the sea'' মুভিতে এই সুদীর্ঘ যুদ্ধের ফলে প্যালেস্টাইনী অজস্র মানুষ হয়েছে উদ্বাস্তু। ভেঙে গেছে সংসার, সমাজ ব্যবস্থা, অর্থনীতি। অসহায় মানুষ আশ্রয় খোঁজার চেষ্টা করেছে পৃথিবীর অন্যত্র।
প্যালেস্টাইন এর বর্ত্তমান সমাজ ব্যবস্থাকে পুঙ্খানুপুঙ্খ তুলে ধরা হয়েছে দুটি কাহিনীচিত্রে।
Salt of the sea....'
পরিচালক Annimarie Jakir এর চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় এক অসামান্য ছবি Salt of the sea।ছবিটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে নির্বাচিত হয়েছে। ছবিটির প্রথম দৃশ্যেই খানিকটা শক খেতে হয় এবং এমনই টানটান স্ক্রিপ্ট যে পুরো ছবিটা না দেখে ওঠা যায়না।
সরোয়া, এক ২৮ বছরের যুবতী, যে এখন নিউইয়র্ক এর বাসিন্দা কিন্তু আদতে একজন প্যালেস্টাইন এর মুসলিম পরিবারের মেয়ে, যে পরিবারটি যুদ্ধের সময় প্যালেস্টাইন ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে উদ্বাস্তু পরিবারটি আশ্রয় নিয়েছিল আমেরিকায়। সরোয়া দীর্ঘদিন বাদে এসেছে প্যালেস্টাইনে। সেই প্যালেস্টাইন, যা আজ ইজরায়েল এর দখলে। প্যালেস্টাইন বিমান বন্দরে নামলেই ইজরায়েলি এয়ারফোর্স অফিসার তাকে জিজ্ঞাসা করে- 'বাড়ি কোথায়? এখানে আসার কারণ কি? কোনো চেনা মানুষ আছেন কিনা? তার নাম কি? ফোন নম্বর কি? ঠিকানা কি?'
সমস্ত প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেওয়ার পরও অফিসারের সন্দেহ যায়না। সরোয়া'র মুসলিম পরিচয়টি জিউস অফিসারকে শান্তি দেয়না।
অফিসার বলে, 'জামা খুলুন'..মেয়েটি জামা খোলে।অফিসার বলে, 'প্যান্ট খুলুন'- মেয়েটি প্যান্ট খোলে।অফিসার বলে, 'ব্রা খুলুন'- মেয়েটি ব্রা খোলে।
এরপরেও অফিসারের ভ্রূ কুঁচকে থাকে। সরোয়া'র স্যুটকেসটা লণ্ডভণ্ড করে অফিসার একটি ছবি পায়, এক যুবকের ছবি। অফিসার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে সরোয়া'র দিকে তাকায়-
'তোমার বয়ফ্রেন্ড?'
সরোয়া ঠান্ডা গলায় বলে, "আমার বাবা"।
এর পরেই আমরা জানতে পারি সরোয়া'র প্যালেস্টাইন আসার উদ্দেশ্য। ওরা যখন উদ্বাস্তু হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় সেইসময় ওরা রেখে গিয়েছিল ওদের বসত বাড়ি, আর একটি ব্যাংকে অনেকগুলো অর্থ গচ্ছিত ছিল সরোয়া'র দাদু'র নামে। সরোয়া উদ্ধার করতে এসেছে সেই অর্থ, দেখতে এসেছে তার নিজের বাড়ি...
সরোয়া ব্যাংকে গিয়ে টাকার খোঁজ করতে ম্যানেজার বলেন, 'যুদ্ধের পর সমস্ত ধ্বংস হয়ে গেছে। সেইসব পুরনো একাউন্ট গুলো আর নেই। সব সরকারের সম্পত্তি হয়ে গেছে। আমি সমব্যথী কিন্তু নিরূপায়'!
সরোয়া হতাশ হয়ে ফিরে আসে, তবু প্যালেস্টাইন এর প্রকৃতি, তার মাটি, পথঘাট, অসহায় মানুষজন দের প্রতি এক আত্মীক টান অনুভব করে সে। তার মনে হয় সে এদেশেই থেকে যায়। এটাই তার নিজের দেশ....
সরোয়া'র আলাপ হয় এক যুবকের সঙ্গে। যুবক কাজ করে এক রেস্তরাঁয়, অবসর সময়ে ড্রাইভিং করে।
এখানেও পরিচালক দেখিয়েছেন সাধারণ প্যালেস্টিনিয়ান দের অসহায়তাকে। রাতের বেলা রুটিন চেক আপের নাম করে ইজরায়েলি সেনা'র দুই তরুণ তরুণী কে তল্লাসি করার দৃশ্যটি অসহনীয়।
এরপর সিনেমাটি অন্যদিকে মোড় নেয়। সরোয়া দেখতে চায় ভূমধ্যসাগর এর তীরে তার নিজের বাড়ি। সেই বাড়ি'র প্রতি সরোয়া'র এক সীমাহীন আবেগ।
কিন্তু সেই বাড়িটি এখন ইজরায়েল এর সীমানার অন্তর্গত। বিনা পাশপোর্টে যাওয়া যায়না।
গাড়ি'র নেমপ্লেট পালটে চোরা পথে ইজরায়েলে প্রবেশ করে ওরা। কিন্তু ওরা মানতে চায়না এই ইজরায়েলকে।পথে ঘাটে সর্বত্র প্যালেস্টাইন স্থাপত্যের ছাপ, এ যেন ইজরায়েল নয়, এটাও প্যালেস্টাইন। সরোয়ার দেশ।
ওরা অবশেষে পৌঁছায় ভূমধ্যসাগর সংলগ্ন সেই ছোট্ট শহরে। খুঁজে বের করে ওর নিজের বাড়ি। সেখানে এখন বাস করছে এক ইহুদী পরিবার।
সরোয়া পরিচয় দেয় নিজের, সেই ইহুদী যুবতীকে অনুরোধ করে অন্তত একটা দিন সেই বাড়িতে থাকতে দেবার জন্য।
বাড়িটিতে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে সরোয়া। বারবার মনে পড়ে মা বাবা'র মুখে শোনা এই বাড়ি নিয়ে তাদের অজস্র স্মৃতি'র কথা।
আচমকা উত্তেজিত হয়ে পড়ে সে। ইহুদী মেয়েটিকে চিৎকার করে বলে ওঠে, "এ বাড়ি আমার। আমার দাদু এই বাড়ি বানিয়েছে, এখানে বড় হয়েছে আমার বাবা।তুমি বেরিয়ে যাও এ বাড়ি থেকে, আমি থাকব এই বাড়িতে।"
ইহুদী মেয়েটি ভয় পেয়ে যায়। সে পুলিশকে খবর দেয়।
ওরা পালিয়ে যায়। ওরা বুঝতে পারে পিছনে পুলিশ লেগেছে। ওদের কাছে বৈধ পাসপোর্ট নেই।
একসময় পুলিশ ধরে ফেলে ওদের। অনেক অনুরোধ করেও কোনো লাভ হয়না। সিনেমা এখানেই শেষ হয়ে যায়....
ছবিটি সারা পৃথিবীর উদ্বাস্তুদের কাহিনী। আজও প্রতি মুহূর্তে উদ্বাস্তু হয়ে চলেছে হাজার হাজার প্যালেস্টাইনি।জানিনা এর শেষ কবে হবে।
২১ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:০৫
জুল ভার্ন বলেছেন: খুব ভালো মুভি, দেখে তৃপ্ত হবেন।
২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৫৬
রাজীব নুর বলেছেন: মুভিটা দুটা দেখি নি।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৮:২০
জুল ভার্ন বলেছেন: খুব ভালো সিনেমা, সময় সুযোগ করে দেখেনিও।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১১
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ছবি দুটি দেখতে হবে। সাজেশনের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।