নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
নস্টালজিক....
স্বাধীনতার পর সব কিছুতেই একটা দ্রুত পরিবর্তন এসেছিলো। পরিবর্তন এসেছিলো আচরণে, পোশাক আর ফ্যাশানে, পরিবর্তন এসেছিলো অর্থনীতিতে এবং সামাজিক বিভাজনে। তখন কিন্তু আর ছোট ছিলাম না। টুয়েলভ ক্লাসে উঠেছি। সিনিয়র ক্যাডেট। কিন্তু ক্যাম্পাসের কঠোর নিয়ম শৃঙ্খলায় অভ্যস্ত বাইরের জীবনের আমূল পরিবর্তন আমাকে বিন্দুমাত্র বিশৃঙ্খল করতে পারেনি।
সেই সময় উঠতি বয়সের ছেলেদের ফ্যাশন মাপা হত তাদের মাথার চুল আর ফুলপ্যান্টের পায়ের ঘেরের মাপে। যার যতো ঘের বেশী সে ততো ফ্যাশনের দিকে এগিয়ে। প্যান্টের কাপড়ের ঘের দিয়েই রাস্তা ঝাড়ু দেওয়া হয়ে যেত। ঘের খুব বেশী হলে রাস্তায় ঘসা লেগে যাতে প্যান্টের নিচের কাপড় ছিঁড়ে না যায় তার জন্য চেন লাগান হত। প্যান্টের বোতামের জায়গায় চেন লাগান, যাকে এখন জিপার বলা হয়, সেটাও ছিল দারুণ আধুনিকতা।
আর ছিল কান ঢাকা চুল। চুল বড়ো করে দুদিকের কান যতটা পারা যায় ঢাকাই ছিল তখনকার চালু ফ্যাশন। কেউ কেউ আদ্ধেক কান ঢাকত। তার বেশী ঢাকলে বাড়িতে-পাড়ায় বখাটে ছেলে হিসাবে বকা খাওয়ার আশঙ্কা ছিল।
তখন নিজেই টেলরের দোকানে মাপ দিয়ে জামা প্যান্ট বানানো শুরু করেছি। নিউ মার্কেটে বিখ্যাত টেইলারিং শপের নাম - এমবি টেইলার্স। টেলরকে 'মাস্টার চাচা' বলে ডাকি। মাস্টারের মুখে বেশী কথা নেই। কিন্তু যত কাজ কাঁচি আর সেলাইমেশিনে। শুধু বাড়ির বড়োদের নয় মাস্টার চাচারও একটা প্রচ্ছন্ন শাসন ছিল আমার উপর। প্যান্টের ঘের বেশী বাড়ানোর কথা বললে তিনিই ঘাড় নেড়ে না করে দিতেন। খুব শখ ছিল পায়ের দিকে চেন দেওয়া বড়ো ঘেরের প্যান্ট পরার। কিন্তু মাস্টারের গাম্ভীর্য পার করে সেটা আর সাহসে কুলায়নি। ভাগ্যিস। শীর্ণ সরু কোমড়ের ছেলেটার নিম্নাংশে ওইরকম বড়ো ঘেরের প্যান্ট কী বিসদৃশ লাগত ভেবে এখনো আঁতকে উঠি!
প্রায় বিশ বছর যাবত চুল কাটার মজুরি তিনশো টাকা, এখনো তাই। যখন মাথা ভর্তি চুল ছিলো তখন তিনশো টাকা পেমেন্ট জায়েজ হতো, এখন মাথায় চুল নাই তবুও বিল তিনশো টাকা! এখন সেলুনে গেলেই প্রায় টাক মাথা দেখে নাপিত যখন বলে, 'স্যার আর কয়েক বছর পর চুল কাটা লাগবেনা...'- কাউকে বিশ্বাস করান কঠিন যে একসময় এই শর্মার মাথা ভরা ঘন চুল ছিল। চুল খুব তাড়াতাড়ি বাড়তোও। কিন্তু কান ঢেকে রাখার উপায় ছিল না। কারণ, ক্যাডেট কলেজের ছাত্র ছিলাম এবং সেনা অফিসার বাবার অপছন্দ। ফলে সেই ফ্যাশনও করা হয়নি।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৩৫
জুল ভার্ন বলেছেন: হ্যা, প্যান্টের ডিজাইনের নাম ছিলো বেল বটম। নিচের দিকটার ঘেড় যার যত বড়ো এবং মাটির সাথে মেশানো-সেটাই ছিলো দর্শনীয়! বেল বটমের আগে ছিলো - "টেডি যুগ"! টেডি স্টাইলের বৈশিষ্ট ছিলো দৃষ্টিকটু স্কীণ টাইট পোশাক। তখন আউব খান বিরোধী নেজামে ইসলাম পার্টির মাদরাশা ছাত্ররা গান গাইতো- "আউব খানের আমলে, টেডি পড়তে পড়তে কুচকিতে দাঁদ হিয়াছে- কার আমলে এমন সুন্দর হইয়াছে"! জিন্সের প্রচলন অনেক আগে থেকে থাকলেও সেটা সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচলিত ছিলনা। জিন্সের ব্যাপক প্রচলণ বা আবির্ভাব মূলত পঁচাত্তর পরবর্তীতে ব্যাপক ভাবে বিস্তৃত হয়। তখন বেশী দামের কারণে ফেড জিন্সের ব্যবহার সীমিত ছিলো, তাই আমাদের তরুণরা ওভার হিটেড আয়রণ, বালু, ঝাঁমা দিয়ে ঘষে জিনস ফেড করে নিতো।
২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৫৮
সোবুজ বলেছেন: ৭১ এর আগেই ডিগ্রি শেষ।সবকিছুই চোখের সামনে দেখা।অনেক কিছুর সাথে অংশ গ্রহন ছিল।সেই সময়ে তোলা নিজের ছবি দেথে আতকে উঠি।ইয়াবড় গোপ গাড় পর্যন্ত লম্বা চুল।সে সব ইতিহাস।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৩৯
জুল ভার্ন বলেছেন: আপনি আমার অনেক সিনিয়র ভাই। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমি নবম শ্রেণীর ছাত্র!
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমিও লম্বা চুলের মালিক হয়েছিলাম। বেল বটম প্যান্টের ছবি আমারও আছে- যা দেখে এখন নিজেই লজ্জা পাই!
ধন্যবাদ।
৩| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:১০
কালাচাঁদ আজিজ বলেছেন:
স্মৃতিচারণ বেশ ভাল লাগল।
আমি অনেক পরের প্রজন্ম, তার উপর অজো গাঁয়ে বেড়ে উঠা এত আধুনিকতা দেখা সম্ভব হয়নি, যখন এই শহরে এলাম তখন দেখলাম আমার এতদিনের দেখা পৃথিবী আর এই পৃথিবী আলোকবর্ষ পার্থক্য।
আজ প্রযুক্তির কল্যাণে গ্রামও শহরের ছোঁয়া পাচ্ছে, আমি লুঙ্গি পরে কলেজ গিয়েছি নৌকা দিয়ে নদী পার হয়ে বর্ষা মৌসুমে আর এখন ব্রীজ হয়েছে, রাস্তা পিচ হয়েছে তবে কোন একটা দামি সম্পদ হারিয়ে গেছে।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৪৩
জুল ভার্ন বলেছেন: আপনার জীবনই প্রকৃত জীবন- যেখানে আপনি জীবনকে চিনেছেন। আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা কঠিন ইট পাথরের সাথে- জীবনের মর্ম উপলব্ধি করতে পারিনি বলেই জীবনের অনেক অপূর্ণতা অনুভব করি।
আপনার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
৪| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:২১
সাগর শরীফ বলেছেন: বিশ বছর আগেও চুল কাটার খরচ ৩০০?
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৪৬
জুল ভার্ন বলেছেন: আমি যে সেলুনে ছেলে বেলা থেকে চুল কাটি সেই সেলুনে ২০ বছর নয়- তার আরও ১০ বছর আগে থেকে অমন রেইট ছিলো। ওটা একটা প্যাকেজ- চুল কাটা, সেভিং এবং মেসাজ। বর্তমানে এই প্যাকেজ থেকে বডি মেসাজ বাদ দিয়েও একই রেইট।
৫| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:২৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার সাথে আমার আরও কিছু মিল পাওয়া গেল।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৪৯
জুল ভার্ন বলেছেন: রেশণের চাল খাওয়া আর লেফট রাইট এর বন্ধন খুব কঠিন বন্ধন!
৬| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:০৩
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: অনেক বছর হয় প্যান্ট শার্ট তৈরি করা হয়না। এমনকি পাঞ্জাবিও না। খুজলে ঘরে এখনো কাপর পাওয়া যাবে কয়েক বছরের পুরনো, আলসেমি করে বানানো হয়নি।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৫১
জুল ভার্ন বলেছেন: আমারও একই অবস্থা- নতুন কাপড় বানানো হয়না বললেই চলে। কিন্তু প্রতি বছরই অনেক নতুন কাপড়, স্পেশালী শার্ট, পাঞ্জাবী, ব্লেজার গিফট পাই।
৭| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: আমি এখনও নব্বই দশকের স্টাইলে জামা কাপড় পড়তে পছন্দ করি।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৫২
জুল ভার্ন বলেছেন: আমিও। আমার সব কাপড়ই ঢোলাঢিলা!
৮| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৩:২৯
নেওয়াজ আলি বলেছেন: সব পরিবর্তন হলেও রাজনৈতিক নেতা ও রাজনীতি পরিবর্তন হয়নি
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৫৩
জুল ভার্ন বলেছেন: ঠিক বলেছেন। পাহাড়, সমুদ্রেরও পরিবর্তণ হয়- মাগার আমাদের দেশীয় রাজনীতিবিদদের চরিত্র চিরস্থির!
৯| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৫৪
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: সেই সময়ের ফ্যাশান ত এখন কার ছেলে মেয়েরা হাসবে সুন্দর অনুভূতির কথা শেয়ার করেছেন দাদা ভাল থাকবেন
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:০১
জুল ভার্ন বলেছেন: আমার নিজেরই হাসি পায়-তখনকার ফ্যাশনের ছবি দেখলে।
ধন্যবাদ।
১০| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:১০
জোভান আহমেদ বলেছেন: সবার জীবনেই নষ্টালজিক আছে। ওইসব মনে পড়লেই নিজের ভিতর বিনোদন কাজ করে।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:০১
জুল ভার্ন বলেছেন: রাইট।
১১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৪৪
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
আহা! বেশ স্মৃতিচারণ।
যারা সফল হয়েছেন তারা জীবনে অনেক শখ পূরণ করতে পারেননি।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:৪৮
জুল ভার্ন বলেছেন: মানুষের সব শখ পূরণ হলে জীবনের আকর্ষণ থাকেনা।
১২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:৪০
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আহা !!!! বেশ !!! বেশ!!!! বেশ!!!!
স্মৃতি একদিকে যেমন মজার আরেক দিকে বেদনারও তবে ভাল লাগল। মাঝে মাঝে আমাদের সবারই পিছন ফিরে দেখা উচিত জীবনে কি পেলাম আর কি হারালাম তা জানার জন্য।
মাথা ভর্তি চুল থেকে টাক মাথা - এ এক দীর্ঘ ভ্রমণের সাথে সাথে দীর্ঘশ্বাসের ও ব্যাপার বটে।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:৫০
জুল ভার্ন বলেছেন: আসলে অতীত তথা স্মৃতিই সুন্দর। বর্তমান অসহ্য, ভবিষ্যত অনিশ্চিত।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
১৩| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:২৭
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: মধুর স্মৃতাচারণা ভাইজান।আহা কি দিন গেছে সে সময়। হিপি চুলের কথা সেই ছোট বেলা থেকেই শুনে আসছি।কান ঢাকা চুল নিয়ে সারাক্ষণ চুল ঠিক করতে আঙ্গুল দিয়ে চুল ঠিক করা আমার শৈশবে উঠতি ছেলেদের কাছে খুব আকর্ষণীয় ছিল।
২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:০৪
জুল ভার্ন বলেছেন: স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমিও লম্বা চুল রেখেছিলাম!
১৪| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:০৯
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: সত্যিই সে এক অন্য রকম সময় ছিলো।
হাতির কানেত মতো সাটের কলারের কথা তো বলেন ই নাই
২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:০৬
জুল ভার্ন বলেছেন: সময় হচ্ছে দর্পণ, তাই সবকিছু খুলে বলার দরকার হয়না। যেমন, আমি সময় বলেছি, সাথে সাথেই আপনার মনে পরেছে সেই বিখ্যাত কলার ওয়ালা শার্টের কথা! আরও একটু পিছিনে ফিরে গেলে পাবেন টেডি কালচার
১৫| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ২:৫৫
জটিল ভাই বলেছেন:
সত্যই নস্টালজিক। যদিও আমি তেমন ফ্যাসন সচেতন নই
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৩৭
জুল ভার্ন বলেছেন: আমিও অত্যন্ত সাদামাটা মানুষ!
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৩০
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: প্যান্টের নাম মনে হয় বেল বটম ছিল। ঘণ্টার নীচের অংশের মত বিস্তৃত আর থাইয়ের কাছে চাপা। বেল বটম যখন শেষ তারপরই মনে হয় জিনসের আবির্ভাব ঘটে। বেল বটমের জমানা পাই নাই বললেই চলে।
জিন্সকে ফেড করার জন্য তরুণেরা প্যান্টের কিছু অংশ বালি দিয়ে ঘষত।