নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফুলের জলসায়............

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:২৬

ফুলের জলসায়............

প্রবাদ আছে, 'যে ফুল ভালবাসে না সে মানুষ হত্যা করতে পারে'।
মানুষ হত্যা না করুক সে যে সম্পূর্ণ "অন্যরকম" মানুষ এ বিষয়ে কারো সন্দেহ থাকার কথা নয়। জ্ঞানীরাও তাই উপদেশ দেন "ফুলের মত হও"। অর্থাৎ নিজে সুন্দর হও, সৌরভ ছড়াও চারদিকে। ফুলের মতই নিজেকে বিলিয়ে দাও পরের আনন্দে। সেই ফুল এখন আর শুধুই বাগানের সৌন্দর্য নয়, বাণিজ্যের উপাদানও।

নগরীর শাহবাগে পুলিশ কন্ট্রোল রুম ও জিয়া শিশু পার্কের(সরকারের মানষিক বিকারগ্রস্থ্যতায় জিয়া শিশু পার্ক এখন ইতিহাস) মাঝামাঝি স্থানটি প্রতিদিন ভোররাত থেকে সকাল ৭টা-৮টা পর্যন্ত ফুলের রঙে-ফুলের সুবাসে মেতে উঠে। প্রতিদিন প্রায় ৩শ' পাইকারি বিক্রেতা তাদের বাগানের ফুলের ডালি সাজান এখানে। আসেন ক্রেতারা। শাহাবাগ থেকে পছন্দের ফুল নিয়ে ফিরে যান সমগ্র বাংলাদেশ।
একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল শাহবাগ ফুলের মার্কেটের উপর একটা সচিত্র প্রতিবেদন দেখিয়ে ছিল, যা আমি আমার সাত বছরের নাতনীর সাথে দেখেছিলাম। তখন থেকেই নাতনীর বায়না- ওকে নিয়ে ফুলের মার্কেট যেতে হবে। তার প্রেক্ষিতেই ক'দিন আগে ভোরে ফুলের বাজারে গিয়ে নানা রঙের আর সৌরভের মনোহারী আয়োজন চোখে পড়ে। যেন মন ভুলানো চোখ জুড়ানো রঙের আসর। সাদা গোলাপ, লাল গোলাপ, রজনীগন্ধা, গাঁদা, বেলি, কামিনী, গ্ল্যাডিওলাস, সূর্যমুখী, পদ্ম প্রভৃতি চিরপরিচিত ফুলের সঙ্গে ডায়মন্ড, গরমফেনিয়া, জারবারা, রতফু সুটি, টুনটুনি আর মাল্ডা প্রভৃতি স্বল্প পরিচিত ফুলের সাজানো ডালি নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। ফুলের তোড়া বানানো, গাড়ি, শোরুম, গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান সাজানো প্রভৃতিতে কাজে লাগা কামিনী পাতা, দেবদাস পাতার লহর, বেলি, রজনীগন্ধার লহর এবং অর্কিডের সঙ্গে আমাদের চিরপরিচিত ওষুধি পাতাসহ নিমের ডাল, আলোভেরাও এ বাজারে বিক্রি হয়।
রজনীগন্ধা ও গাঁদা সিংহভাগ আসে যশোর, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা অঞ্চল থেকে। সাভার থেকে আসে গোলাপ, গ্লাডিওলাস, বেলি, সূর্যমুখী, জারবারা। কামিনী আসে ময়মনসিংহ ও নরসিংদী থেকে। কিছু কিছু গ্লাডিওলাস আসে নরসিংদী থেকেও। অন্য স্বল্প পরিচিত ফুল সাভারের। ফুলের বাজার সরগরম হয়ে উঠে ডিসেম্বরের পর থেকে মার্চ পর্যন্ত। শীত মৌসুমে দেশে বিয়ের ধুম পড়ে যায়। তখন ফুলের দামও বাড়ে। এছাড়া পহেলা বৈশাখ, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ঈদ, পূজা, ভালবাসা দিবসসহ বিভিন্ন উৎসবের সময় ফুলের চাহিদা বাড়ে বলে দামও বেড়ে যায়।

শাহাবাগের ফুল নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় কিছু লেখার জন্য নিজেই যেচেযেচে ফুল ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলিঃ- নিজের বাগানের ফুল বিক্রি করতে আসা সাভারের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন জানান, এখন ফুলের চাহিদা খুব বেশী তাই একটি রজনীগন্ধা ফুলের ডালির দাম ৩০০-৪০০ টাকা হলেও অফ সিজনে প্রতি ডালি বিক্রি করতে হয় ৫০-৬০ টাকায়ও। অবশ্য কোন কারণে চাহিদা বাড়লে এক ঘন্টা পরেও দাম বেড়ে যেতে পারে। তার বাগানের গ্লাডিওলাস, সূর্যমুখী, জারবারা, আমান্ডা প্রভৃতি ফুল বিক্রি করছিলেন তিনি।
কাঠবেলি লহর বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। দু'ধরনের রজনীগন্ধা আছে। ভাল মানের যেটাকে ব্যবসায়ীরা "সিঙ্গেল" বলে সেগুলোর দাম একটু বেশি। একশটার আঁটি বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। রজনীগন্ধার ঝুরা বিক্রি হয় কেজি ২০-২৫ টাকায়। গাঁদার ঝুপ্পা বিক্রি হয় ১৫০-২০০ টাকায়। (২০টা চেইনকে ঝুপ্পা বলে। এক চেইনে আবার ৪০/৫০টা গাদা থাকে)। বর্তমানে সাদা ও হলুদ গোলাপের তিনশটির বান্ডিল বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়। লাল গোলাপের দাম বেশি। সেগুলো বিক্রি হয় সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা। তবে এ দাম পুরোপুরিই অস্থায়ী। চাহিদা অনুযায়ী দাম যে কোন সময়ই বেড়ে যায় বলে ব্যবসায়ীরা জানান। তবে অভিজাত গ্লাডিওলাসের দাম সব-সময়ই চড়া। সাদা, হলুদ, লাল, বেগুনী, কমলাসহ নানা রঙের এ ফুল একশ বিক্রি হয় ৭০০-৮০০ টাকা। মৌসুমে ১০০০-১২০০ টাকাও হয়।
রাজধানীসহ সারাদেশে ফুলের ব্যবহারও প্রচুর। বিয়ে, জন্মদিন, গায়ে হলুদের উৎসব ছাড়াও রাজনৈতিক সভায়, সংবর্ধনায়, বাড়ির শো-রুম সাজানো, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, মৃতের প্রতি শ্রদ্ধাসহ নানা কাজে এর ব্যবহার হয়।

যশোরের গোদখালীতে ফুল ব্যবসার বড় আসর বসলেও সারাদেশের ব্যবসায়ীদের যেখানে যাওয়া-আসা ও থাকার সুবিধা না থাকায় শাহবাগ হয়ে উঠেছে এ ব্যবসার বৃহত্তম কেন্দ্র। যশোর অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা ফুল এখানে পাঠিয়ে দেয়। তাদের এজেন্টরা এখানে সেসব বিক্রি করে। সপ্তাহান্তে হয় তারা আসে নতুবা এজেন্টরা টাকা দিয়ে আসে, বিনিময়ে এরা একটা নির্দিষ্ট কমিশন পায়। রাজধানীর আশেপাশের ব্যবসায়ীরা নিজেদের ফুল নিজেরাই বিক্রি করতে নিয়ে আসে। তেমনিভাবে দূর-দূরান্তের ক্রেতারাও মধ্যস্বত্বভোগীদের ওপর নির্ভর করে। অনেকে নিজে এসে কিনে নিয়ে যায়।

ব্যবসায়ীরা বলেন, দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বাংলাদেশী ফুলের বাজার হতে পারে বাইরেও। আয় হতে পারে বৈদেশিক মুদ্রা। কিন্তু সীমান্তপথে ভারতীয় ফুলের অবৈধ প্রবেশের ফলে দেশী ফুলের বাজার হুমকির মুখে। বিশেষ দিনগুলোতে ভারতীয় ফুলে বাজার ছেয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। পাশাপাশি ফুলচাষে তারা সরকারের আর্থিকসহ অন্যান্য সহযোগিতা আশা করেন।

পুলিশ, চাঁদাবাজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাডাররা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নেয় বলে তাদের অভিযোগ। ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঢাকা ফুল ব্যবসায়ী কল্যাণ বহুমুখী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, বাজারের জায়গাটি সিটি কর্পোরেশনের সম্পত্তি। আমরা এটা দখল করে অস্থায়ী বিক্রয় কেন্দ্র করেছি। নিজেরা একটা বিল্ডিংও নির্মাণ করেছি। বৈধ দখলদার নই বলে সবাই ঝামেলা করে। আমরাও কিছু করতে পারি না। শাহবাগ থানা ভবন নির্মাণ করবে বলে একবার উঠিয়ে দিতে চেয়েছিল। পুলিশের আইজি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী পর্যায়ে অনেক যোগাযোগ করে তা ঠেকিয়েছি। জায়গাটি দীর্ঘমেয়াদী ইজারা পাবার লক্ষ্যে ডিসিসিতে আবেদনও করেছি। এখনো কোন সিদ্ধান্ত পাইনি। তিনি ফুল ব্যবসায়ীদের স্বার্থে স্থানটি লিজ দেওয়ার জন্য ডিসিসির কাছে আবেদন জানান।
অনেকেই হাটে বাজারে যেতে চান না- নোংরা-ময়লার চিরায়ত বাজারের রূপ চিন্তা করে। এখানে তা নেই। আছে সৌরভ, আছে রঙের খেলা। দেখলেই নিমিষেই মন ভাল হয়ে যাওয়ার মত হাট এটি। তাই রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হাঁটতে আসা অনেকেই এই ফুলের বাজার ঘুরে দেখতে আসেন।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৪৫

ফয়সাল রকি বলেছেন: এসকল সমস্যার সহজ কোনো সমাধান হবে না! ঝুলেই থাকবে।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:৪৩

জুল ভার্ন বলেছেন: আহ রিকি! পুরনো কমরেড! কত বছর পর দেখলাম!
ঠিক বলেছেন।

২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:০০

ফয়সাল রকি বলেছেন: মাঝে মধ্যে আসি তো! দেখা হয় না।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:০৫

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:০৮

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: যতটা আগ্রহ আম গাছ-ফুল নিয়ে আছে, ফুলের দোকান নিয়ে ততোটা নেই। যদিও বাহারি রকম ফুল সেখানে দেখা যায়।

০১ লা মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:৪৫

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:২৮

তানীম আব্দুল্লাহ্ বলেছেন: শহরের ফুলের বাজারের নাম ফুলপট্টি । ঠিক তার পাশেই বাগানীরা বিভিন্ন গাছের চারা বিক্রির একটা বাজারের মতো বসায় । শহরের এই জায়গাটা অদ্ভুত রকমের শান্ত । মানুষ কথা বলা বন্ধ করে দিয়ে সুঘ্রান নিতে ব্যস্ত হয়ে পরে !

০১ লা মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:৪৬

জুল ভার্ন বলেছেন: সব ফুলের মার্কেটেই বোধকরি একই রকম পরিবেশ। চিতকার চ্যাচামেচি নাই- নিরবে কেনাকাটা! আর বাড়তি পাওনা- ফুলের সুগন্ধ।

৫| ০১ লা মার্চ, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৩৯

জটিল ভাই বলেছেন:
গাড়ির কালো ধূয়ায় ফুলগুলোর জন্যে বড্ড মায়া হয়.......
সুন্দর টপিকে পোস্ট।

০২ রা মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:৫০

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.