নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
জীবন বোধ....
প্রতিটা মৃত্যু আমাদের পরিণত করে দেয়। কবরস্থান, জায়গাটা এমন একটি জায়গা যেখানে গেলে সমস্ত লোভ, ঘৃণা, বিদ্বেষ, আশা, পাপ, পূণ্য বোধ তুচ্ছ মনে হয়। একদিন সব শেষ হবে, এই বিশ্বাস কুড়ে খায়। মহাকালের একটি ভগ্নাংশ আমাকে অধিকার করতে দেওয়া হয়েছে, সেটুকুর মধ্যেই নিজের ভালো কাজটুকু অথবা খারাপ চিহ্নটুকু রেখে যাওয়া। আর কিছুই থাকে না। প্রবহমান কালের স্রোতে যেখানে যে কোন মানুষের অস্তিত্বই তুচ্ছ, তার অসীম শক্তির অহংকার অসহায়, তার যাবতীয় আস্ফালন বা অসহায়তা বা ভালোবাসা সব হারিয়ে যায় মাটির গভীরে। ফুরিয়ে যায় সবটুকু। কালের এই নিয়মের সামনে সকলেই পরাজিত।
যারা চলে যান তারা কি ফিরতে চান?
তাদেরও বোধহয় আফসোস থাকে, ঈশ্ মেয়েটার বিয়ে দেওয়া হল না; ঈশ্ ছেলেটাকে মানুষ করা হল না; ঈশ্, এই তো বাড়িটা বানালাম, থাকা হল না; সারাজীবনের ভুলগুলো যদি আরেকবার শুধরে নেওয়া যেতো! এরকমটা মনে হয় ছেড়ে যাওয়া আত্মার?
এ নিয়ে নানা মুনির নানা মত, নানা সিদ্ধান্ত, নানা গবেষণা।
আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার বাবাকে দেখতে পাই বহুদিন মৃত্যুর পরেও। যেন বাবা বলতে চাইছেন, "বেঁচে থাকতে খুব বেশি তোর পাশে দাঁড়াতে পারিনি, আফসোস... আফসোস, এখন থাকবো।"
মানুষের বেঁচে থাকা ঘিরে নানা অভিযোগ, এটা নেই, ওটা নেই, ক্ষুদ্র অভিযোগে আনন্দগুলোকে পার করে যাওয়া। একটা জীবন কত সময় কেটে যায় শুধু অভিযোগ করতে করতে, মুঠো থেকে জীবন বেরিয়ে গেলে হঠাৎ বোঝা যায়, যাহ্ বাঁচাইতো হল না, এই তো এত অভিযোগের পাহাড় নিমেষে শেষ!
এ যে বাজিকরের খেলা।
যিনি চলে যান তারও কতকিছু অপূর্ণ থাকে, অপূর্ণ থেকে যায়। যারা থেকে যায় তাদের স্মৃতিজুড়ে থাকে কত অপূর্ণতা। মানে জীবন থাকতে আফসোস, জীবন গেলে আফসোস। আমার এই বয়সে এসে এই শূন্যতাটা বড় আপন মনে হয়- "কিছুই কিছু না" এর বোধ।
আমার বাড়ি, আমার গাড়ি, আমার সন্তান, আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ... আসলে সে ভবিষ্যতে আমি নেই, আমরা কেউই আমাদের সন্তানের ভবিষ্যতে চিরস্থায়ী নই, আমাদের ভবিষ্যত বলে কিছু কাল না থাকতে পারে, দপ্ করে নিভে যেতে পারে প্রদীপ।
তবে কেন এত দৌড়ঝাপ?
এই ভগ্নাংশ কাল যেটা আমাকে অধিকার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, সেখানে নিজেকে জাহির করার অপপ্রয়াসে কখন যেন ধাঁম করে চলে যায় জীবনটা, প্রিয় মানুষগুলোর সঙ্গে দুদন্ড বসে হেসে কথা বলা হয়না।
আমার বড় ও ছোট চাচা মারা গেছেন কমবেশি সত্তর বছর বয়সে। বাবা আরও কম বয়সে। আমার বাবা চাচা, মামা মামী, খালা খালু, শশুর শাশুড়ী অনেক আগেই মারা গেছেন। কয়েকজন চাচাতো ভাই ছাড়া মুরব্বি স্থানীয় কেউ বেঁচে নেই আমাদের বৃহত্তর পরিবারে। স্নেহ পেতে দাঁড়ানোর জায়গাগুলো কমছে। অভিভাবক শব্দটার খুব গুরুত্ব, যত বয়স বাড়ছে। প্রিয় মানুষেরা চলে যায়, আর আমার মধ্যে জেগে ওঠে প্রতিবার এক তুচ্ছতার বোধ, এক শূন্যতা, আফসোসে ভরা একটা জীবনের প্রতি করুণা।
একজনের পর একজন কাছের লোককেই হারাচ্ছি। এখন আর শুধু পেশাগত ভাবে আত্মীক সম্পর্কের নয়, সরাসরি অতি ঘনিষ্ঠ মানুষদের অত্যন্ত সংকটজনক অবস্থা বা জীবনাবসনের সংবাদ প্রায় নিত্যনৈমিত্যিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। হয়ত আমরা এমনিতেই জীবনসায়াহ্নে এসে পৌঁছেছি.... আমাদের অনেকের এই বয়সে ইনিংস শেষ করার কথা। After all.."we have attained the dieable age"..। অদ্ভুত ভাবে দেখা যাচ্ছে, কোনো সতর্কতা ছাড়াই বেশীর ভাগ মানুষ আরামে রয়েছে আবার সতর্কতা সত্বেও কিছু মানুষের ক্ষেত্রে morbidity ও mortality অত্যন্ত বেশী। বাছাই বা selective কিছু মানুষ কেনই বা most vulnerable তার কোনো না কোনো কারণ তো নিশ্চয়ই আছে, যদিও এই মুহূর্তে তা আমাদের সুনির্দিষ্টভাবে অধিগত নয়। কেবলমাত্র co-morbidity দিয়ে সমস্তটার ব্যাখ্যা আদৌ যুক্তিগ্রাহ্য হবে বলে মনে হচ্ছে না।
গত দুই বছরে কোভিডে এবং প্রাকৃতিক নিয়মেই আমরা আমাদের অনেক সেরাদের হারিয়েছি। এখনো হারাচ্ছি। মৃত্যুর মিছিল থামছেই না। যা কখনই কাম্য ছিল না তাই মেনে নিতে হচ্ছে অনেক কষ্টে........
১৯ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:৩৮
জুল ভার্ন বলেছেন: কী গভীর জীবনবোধ!
২| ১৯ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ১১:২০
নতুন বলেছেন: আসলেই প্রিয় মানুষের মৃত্যু অনেক কিছু পরিবর্তন করে দেয় জীবনে।
আবার জীবন থেমে থাকেনা, চলতেই থাকে.... এটাও জীবন থেকে নেও শিক্ষা।
২০১৩ তে প্রথম সন্তানকে হারাই ৬ দিন বয়সে.... এতো বড় কস্ট সেই পযন্ত জীবনে পায়নি..... জীবন থেমে থাকেনি...তারপরে যখন ২০১৫ ডানা আমাদের জীবনে এলো তখন অনেক কস্ট ভুলিয়ে দিলো। এখন ৭ বছর বয়স ডানার আমাদের জীবনের পুরোটা জুড়েই ডানা আছে। প্রথম সন্তানের জন্য দেওয়া কবরস্থানের রসিদটা এখনো মানিব্যাগেই আছে...
বাবা, মা, শশুর, নানী সব আরো কয়েকজন আত্নীয় হারিয়েছি কয়েক বছরে.... আর অল্প কয়েকজন মুরুব্বি জীবিত আছে... তারপরেই আমরাই মুরুব্বি তার অর্থ আমাদেরও সময় চলে এসেছে ( যদিও যে কোন সময়ই মৃত্যু হতে পারে, গ্যারান্টি নাই )
তাই জীবনের প্রতিটা মুহুর্তকে সুখি হিসেবে মনে রাখতে চাই। নেগেটিভ ভাবনা যতটা সম্ভব কম জমা করি।
যাতে মৃত্যুর সময় জীবনের রিভিউ করে মনে হয় যে Life was beautiful
১৯ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:৪৩
জুল ভার্ন বলেছেন: মৃত্যু অনিবার্য তবুও খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে বেশ কয়েকজন নিকট আত্মীয় এবং পরিচিত জনের মৃত্যু আমাকে গভীর ভাবে হতাশায় নিমজ্জিত করেছে। সব হারানোর শোকেও যেন সামান্য প্রাপ্তিতেই যেন লাইফ ইজ বিউটিফুল হয়ে থাকে।
শুভ কামনা নিরন্তর।
৩| ১৯ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:৪১
প্রতিদিন বাংলা বলেছেন: বাস্তবতার ফিলোসফি ,ভালো পোস্ট
১৯ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:৪৪
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪| ১৯ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১:১৫
কালো যাদুকর বলেছেন: যাদের সন্তান আছে - তাঁরা মৃত্যুর আগে আফসোস করেন এই ভেবে যে- হয়ত সন্তানদের জন্য তেমন কিছু করে যেতে পারেননি।
পজিটিভ ভাবে দেখুন - যে কোন মানুষ ফে কোন বয়সেই চলে যেতে পারেন - কাজেই যতদিন বেচে আছি জীবনটা র উদ্দেশ্য বের করার চেষ্টা করি ৷ আমার মনে হয়- সবার জীবনের ই একটি সুন্দর ও আলাদা উদেশ্য সৃষ্টিকর্তা দিয়েছেন।
১৯ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:৪৬
জুল ভার্ন বলেছেন: খুব সুন্দর করে বলেছেন এবং এটাই হওয়া উচিৎ। তবুও মানুষের আবেগ অনুভূতি আপ্লূত করে- সেটাও মানবিক ধর্ম, যা অস্বীকার করা যায়না।
৫| ১৯ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের বংশে সবার লম্বা হায়াত। আমার দাদা ৮৫ বছর বেঁচে ছিলেন। আমার দাদীও ৮৬ বছর বেঁচে ছিলেন। অথচ আমার আব্বা ৬২ বছর বয়সে করোনায় মারা গেলেন।
আব্বার মৃত্যু আমাকে ভীষন কষ্ট দিয়েছে। এই কিছু দিন আগেও আব্বাকে ফোন দিলাম। হঠাত মনে পড়লো, আব্বা তো নেই। মারা গেছে। এরকম ভুল যেন আর নাকি করি- তাই আব্বার নাম্বারটি ডিলিট করে দিলাম।
১৯ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:৫১
জুল ভার্ন বলেছেন: মায়ের কোনো স্মৃতি আমার নেই, কিন্তু বাবার মুখটা সর্বক্ষণ আমাকে স্মৃতি কাতর করে রাখে... আমাদের বৃহত্তর পরিবারে বয়জেষ্ঠদের জন্ম মৃত্যুর বয়স হিসাব করে মনে হয়েছে আমাদের জীবনের গড় আয়ু ৬৫ বছর। কিম্বা আরও কম....
৬| ১৯ শে মার্চ, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৯
প্রত্যাবর্তন@ বলেছেন: আপ্নার লেখা পড়ে একটা বিষন্নতা গ্রাস করল। লেখাটির ফিলোসফি হৃদয় ছুয়ে যায়।
২০ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:৫১
জুল ভার্ন বলেছেন: প্রকৃতপক্ষে জন্ম-মৃত্যু তথা জীবন হচ্ছে দর্শন। ধন্যবাদ।
৭| ১৯ শে মার্চ, ২০২২ রাত ৯:৩৫
সোবুজ বলেছেন: অপরিণত থেকে লাভ কি।মৃত্যুই যদি পরিণত হবার উপায় তাহলে মৃ্ত্যু বরন করাই ভালো।
২০ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:৫২
জুল ভার্ন বলেছেন: আমরা চাই কিম্বা না চাই- মৃত্যু অনিবার্য।
৮| ১৯ শে মার্চ, ২০২২ রাত ৯:৪১
সোবুজ বলেছেন: ভুল মন্তব্য,এই জন্য দুঃখিত।
২০ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:৫৩
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৯| ১৯ শে মার্চ, ২০২২ রাত ৯:৫৪
সোবুজ বলেছেন: পরিণত বয়সে স্বাভাবিক মৃত্যু বেশিদিন মনে না রাখাই ভাল।এতে জীবনের চলার পথে বিগ্ন হয়। মৃত মানুষকে যত বেশি মনে করবেন তত বেশি মন বিষন্ন তবে।তাতে ক্ষতি ছাড়া লাভ কিছুই হয় না।
২০ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:৫৪
জুল ভার্ন বলেছেন: আমরা অনেক কিছুই এড়িয়ে চলতে চাইলেও তা এড়াতে পারিনা। এখানেই মানুষের সীমাবদ্ধতা।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:০০
শেরজা তপন বলেছেন: অভিভূত হলাম!
পৃথিবীর কোন প্রয়োজনই প্রয়োজন নেই- কোন কাজই কাজ নয়।
সবার উপরে বেঁচে থাকা- বেঁচে থাকা আর বেঁচে থাকা।
স্পর্শও কাতর মানুষদের মৃত্যু বড় বেশী ভাবায়।