নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
IDENTITY CRISIS
ভেবেছিলাম "ইংরেজিতে লিখবো"। কিন্তু নির্ভুল ইংরেজি লিখতে পারিনা তাই সাহস পেলাম না। তবুও মনের মধ্যে প্রবল ইচ্ছা, আমার লেখা পৃথিবীর কোনায় ঘুপচিতে পৌঁছে যাক। আমি বলনে-লিখনে শতভাগ বাংলা চর্চায় অভ্যস্ত হলেও "ইংরেজিতে লিখে" আমার "আমিত্ব " প্রকাশ করতে চাই। আমাকে সবাই বিরাট বিদ্বান, বিরাট জ্ঞানী পণ্ডিত ভাববে...মানে নিজেকে প্রমাণ ও প্রচার করার প্রয়াস। বাংলায় যাকে বলে "অস্তিত্বের সংকট"। ইংরেজিতে Identity crisis.
খবর কাগজ, টেলিভিশন, ফেসবুক খুললেই একটা বড় অংশ জুড়ে- খুন, ধর্ষণ, অবৈধ সম্পর্কের জেড়ে আত্মহত্যা, রাজনৈতিক হানাহানি, নেতাদের একে অপরের বিরুদ্ধে কদর্য কাদা ছোঁড়াছুড়ি, শিশু পাচার, দারিদ্র্য, হতাশা, বেকারত্বের করুণ কাহিনী। সেই সব করুণ খবরের রংচঙা উত্তেজনাপূর্ণ খবরই বড় বিনোদন! মানুষ তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করে এইসব নেতিবাচক গল্প। কারণ সেই "অস্তিত্বের সংকট"- Identity Crisis.
কিভাবে?
একজন মানুষকে বিচার করা হয়, তার সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, শিক্ষা, পারিবারিক অবস্থান থেকে। আজকের অসম বন্টনের পরিবেশে উন্মাদ আর কথা বলতে না শেখা শিশু ছাড়া সবাই এই Identity crisis এর শিকার। বলা ভাল, যার আছে (have), যার নেই (have not), সবাই এই সংকটে ভুগছেন।
প্রতি দিন মেগা সিরিয়াল, বিজ্ঞাপন আমাদের বলে দিচ্ছে ভালো থাকা কি। সিরিয়াল মনের অবচেতনে প্রবিষ্ট হয়ে বলছে 'বাড়িতেও তোমার বেনারসি, জামদানী পিওর সিল্ক শাড়ি পরা উচিৎ'। বাড়িতে একটা বউ/স্বামী, বাইরে আর একজনের সাথে শারীরিক মানষিক সম্পর্ক রাখা যায় কিভাবে। কিভাবে বউ/স্বামীকে মিথ্যা কথা বলে সব ম্যানেজ করা যায়। কিভাবে একান্নবর্তী পরিবার ভেঙে টুকরো করে দিয়ে, অন্যেরও সুখের সংসারে আগুন জ্বালিয়ে দিতে হয়।
আমরা প্রাণী থেকে মানুষে রূপান্তরিত হওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি নিরন্তর। মানুষ ব্যতীত মানুষের অন্য পরিচয়গুলো জরুরি বলে আমি মনে করি না। কিন্তু আমিও এই প্রক্রিয়ার বাইরের কেউ না। ছোটবেলা থেকে অনেক পরিচয় নিয়ে বড় হয়েছি। প্রথমে ওমুকের ছেলে, ওমুকের ভাই, ভাগ্নে- এগুলো স্বাভাবিক। এই পরিচয়গুলো মানুষ প্রয়োজনের তাগিদ থেকেই তৈরি করে। কিন্তু এই পরিচয়গুলো দিয়েই শুরু হয় মানুষ পরিচয় থেকে অন্য পরিচয়ে পরিচিত হয়ে ওঠার ধারা। এরপর ধীরে ধীরে মানুষ ছাত্র, শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পুলিশ, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদসহ আরো অনেক পরিচয়ে পরিচিত হয়ে ওঠে। আর এসব পরিচয় একসময় মানুষ পরিচয়কে আড়াল করে। এই পরিচয়ের ধারণা নিজেদের ভেতর একধরনের আমিত্ব তৈরি করে, যা অন্যদের থেকে নিজেকে আলাদা, গুরুত্বপূর্ণ আর বড় ভাবতে শেখায়। যা মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এখানেই তৈরি হয় শ্রেণির। শ্রেণি সৃষ্টি হলেই সৃষ্টি হয় শ্রেণিবৈষম্যের। পৃথিবীর শ্রেণিসংগ্রামের ইতিহাস অনেক পুরোনো ক্যাচাল এবং প্যাঁচাল। পেশার ভিত্তিতে মানুষের বিভিন্ন পরিচয় তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই পরিচয় যদি মানুষ পরিচয়ের চেয়ে বড় হয়ে ওঠে তখনই তা বিপত্তি বাধায়।
আমাদের সমাজ, রাষ্ট্র, সরকারও মানুষ পরিচয়ের চেয়ে ব্যক্তির পেশাগত পরিচয়কে বড় করে দেখে। আমাদের সরকারি দল ও বিরোধী দলের রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর রয়েছে নিজস্ব পরিচয়পত্র, যা নিজেদের লোক বলে জাহির করে। আর এর মধ্য দিয়ে তারা অন্য সাধারণ নাগরিক থেকে নিজেদের আলাদা, গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক হিসেবে ভাবতে পারে। বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিতে তাদের এই পরিচয় সহায়তা করে। গাড়ির নম্বরপ্লেট থেকে শুরু করে সব জায়গায় এই পরিচয় ব্যবস্থা আছে।
একজন শিক্ষককে কানে ধরানোর প্রতিবাদের নামে কয়েকটা দুশ্চরিত্র ধান্ধাবাজ কানে ধরে ফটোসেশান করবে আর দেশের অসংখ্য সাধারণ মানুষকে পুলিশ, মন্ত্রী সাহেব কানে ধরিয়ে জনসম্মুখে ওঠবস করাবে তার বিচার কেউ চাইবেনা। একজন নারীকে দুই একটা কুলাংগার টিপ নিয়ে নোংরা মন্তব্য করবে- তার কতিপয় পুরুষ নামের জোকার লোমশ বুকের ছবি আর কপালে টিপ দিয়ে মশকারা করে- অথচ ক্ষমতাসীন দলের বাইরে একজন নারীকে, একজন ছাত্রীকে যখন টেনে হিচড়ে রাস্তায় ফেলে গণপিটুনী দেয় তখন সেই দামড়াগুলো গর্তে ঢুকে থাকে! তার মানে কী সাধারণ মানুষ মার খেতেই পারে, কানে ধরাতেই পারে! একটি ঘটনার বিচার চেয়ে অন্য হাজারো ঘটনার বিচারকে আমরা কি নাকচ করে দিচ্ছি, এই ঘটনার মধ্য দিয়েই তৈরি হয় শ্রেণি এবং শ্রেণিবৈষম্য। এখানেও Identity Crisis.
মানুষ পরিচয়টাই আমাদের প্রকৃত এবং শেষ পরিচয় হওয়া দরকার। এর চেয়ে বড় কোনো পরিচয় আমাদের থাকা বা হওয়া উচিত নয়। কবে বুঝতে পারবো আমাদের Identity crisis?
অভাবে স্বভাব নস্ট। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি। সাধ আর সাধ্যের মধ্যে বিরাট ফারাক। তাই জন্ম নিচ্ছে হতাশা। হতাশ মানুষ কখনও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। তাই চারপাশে শুধুই নেতিবাচক প্রভাব। এটাও Identity crisis.
আমাদের দেশ, ১৮ কোটি মানুষের দেশ। চালাচ্ছে কজন? দুই চার হাজার মানুষ। বেশির ভাগ সম্পত্তির মালিক তারা। চাবুক তারাই বাকি মানুষকে মারছে। হাই প্রোফাইল মেয়রদের ব্যার্থতায় মশারাও বেঁচে থাকে আর আল্লাহর ইচ্ছায় কুকুর বেড়ালের মত বাঁচছে মানুষ!
তা হলে উপায়?
স্যোশাল মিডিয়ার অনেক সেলিব্রেটি ভাই-বোনদেরদের মতো আমি ভালো লিখতে পারিনা, ওনাদের মতো আমার হাজার হাজার ফ্যান ফলোয়ার্স নাই, আমার পোস্টে লাইক কমেন্টস পরেনা- তাই বলে কি লেখালেখি বন্ধ করে দেব? এখানেও Identity Crisis.
আমাদের আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। নিজনিজ যোগ্যতা দিয়ে আমাদের Identity রক্ষা করতে হবে। কবীর সুমনের কথায় বলি-
"দিন বদলের স্বপ্ন আমার এখনও গেলো না...
হাল ছেড়ো না বন্ধু, বরং কন্ঠ ছাড়ো জোরে, দেখা হবে তোমায় আমায় অন্য গানের ভোরে।"
২৮ শে মে, ২০২২ দুপুর ১২:৫৭
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ২৮ শে মে, ২০২২ দুপুর ১:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: ক্ষোভ। প্রতিটা বাঙ্গালীর মনে এরকম ক্ষোভ জমে আছে। আপনি লিখে ক্ষোভ কিছুটা কমাতে পারেন। কিন্তু অনেকে লিখতে পড়তে পারে না। তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করতে পারে না। তাঁরা কি করবে?
২৮ শে মে, ২০২২ দুপুর ১:১৫
জুল ভার্ন বলেছেন: তাও যদি মন খুলে লিখতে পারতাম! যা কিছু লিখি- দশবার ভাবতে হয় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের গ্যাড়া কলে ফেঁসে যাচ্ছি কি না! বিদেশে থেকে যারা লিখেন- তারা অনেকটাই নিরাপদ।
৩| ২৮ শে মে, ২০২২ দুপুর ১:৩৩
নতুন বলেছেন: বইয়ের জ্ঞান কমে যাচ্ছে বাড়ছে ফেসবুকীয় জ্ঞান তাই লোক দেখানোই সেরা পথ মনে করে মানুষ।
২৯ শে মে, ২০২২ বিকাল ৫:৪৯
জুল ভার্ন বলেছেন: ফেসবুক মানুষের সৃজনশীলতা ধ্বংস করে দিয়েছে।
৪| ২৮ শে মে, ২০২২ বিকাল ৩:০৬
আশিকি ৪ বলেছেন: কতক মানুষ মাইনষের পেছনে লেগে নিজ নিজ পিতামাতাকে কলংকিত করে। লোকেরা এদিগকে জারজ বলিয়া গালাগাল দেয়। হাইরে কেমন কুলাংগার সন্তান। স্রষ্টার পরে যে পিতামাতার স্থান যাদের পায়ের নিছে তোগো বেহেসত তাগো গালি সুনাচ্চিশ? তুরা কি মানুশ!
২৯ শে মে, ২০২২ বিকাল ৫:৫২
জুল ভার্ন বলেছেন: আমাদের আত্মু মর্যাদাবোধ হারিয়ে গেছে। আমরা ইনস্পট হাততালি পেতে পছন্দ করি, তা হোক নিজের কান কেটে হলেও।
৫| ২৮ শে মে, ২০২২ বিকাল ৩:২৮
কৃষ্ণপক্ষের বোষ্টমী বলেছেন: অভাবে স্বভাব নষ্ট- এই কথাটা সবসময় খাটে না। যাদের স্বভাব নষ্ট থাকে তাদের অভাব না থাকলেও স্বভাব নষ্টই থাকে।
২৯ শে মে, ২০২২ বিকাল ৫:৫৩
জুল ভার্ন বলেছেন: একমত।
৬| ২৮ শে মে, ২০২২ বিকাল ৩:৫৮
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
আইডেন্টি ক্রাইসিসে পিএইচডি করা দরকার?
২৯ শে মে, ২০২২ বিকাল ৫:৫৪
জুল ভার্ন বলেছেন: কারোর দরকার হলে করতে পারে।
৭| ২৮ শে মে, ২০২২ বিকাল ৪:৩৪
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: রূঢ় বাস্তবতা তুলে ধরেছেন।
২৯ শে মে, ২০২২ বিকাল ৫:৫৫
জুল ভার্ন বলেছেন: জীবন থেকে নেওয়া ভাইয়া।
৮| ২৮ শে মে, ২০২২ বিকাল ৫:০৫
ভার্চুয়াল তাসনিম বলেছেন: সবকিছুতে crisis আর crisis.
তেলে,
আচরণে,
সম্মানে,
মানবতা্য় ,
নিয়মে,
নীতিতে,
আদর্শে।
২৯ শে মে, ২০২২ বিকাল ৫:৫৬
জুল ভার্ন বলেছেন: একদম ঠিক বলেছেন। ক্রাইসিস ছাড়া কিছুই নেই।
৯| ২৮ শে মে, ২০২২ রাত ৮:৪৫
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: যত দূর মনে পরে এই পোস্টে একটা মন্তব্য করেছিলাম। এখন খুঁজে পাচ্ছি না। তবে আমারও ভুল হতে পারে। ভুলে অন্য কোন পোস্টে মন্তব্য চলে গেল কি না।
২৯ শে মে, ২০২২ বিকাল ৫:৫৮
জুল ভার্ন বলেছেন: অনেক সময় এমন বিভ্রান্তি হয়। এক পোস্টের মন্তব্য অন্যত্র করে ফেলি।
১০| ২৮ শে মে, ২০২২ রাত ১১:০৮
শেরজা তপন বলেছেন: সময় করে পরে আসছি। ভাল বিষয় নিয়ে পোষ্ট
২৯ শে মে, ২০২২ বিকাল ৫:৫৮
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইজান।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে মে, ২০২২ দুপুর ১২:৫০
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: সময় এখন এভাবেই চলছে
থমকে দাঁড়িবে কি জানি না