নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
~ অঞ্জনা ~
"নদীর নাম সই অঞ্জনা নাচে তীরে খঞ্জনা,
পাখি সে নয় নাচে কালো আঁখি।
আমি যাব না আর অঞ্জনাতে জল নিতে সখি লো,
ঐ আঁখি কিছু রাখিবে না বাকি।।
সেদিন তুলতে গেলাম দুপুর বেলা
কলমি শাক ঢোলা ঢোলা (সই)
হ’ল না আর সখি লো শাক তোলা,
আমার মনে পড়িল সখি, ঢল ঢল তা’র চটুল আঁখি
ব্যথায় ভ’রে উঠলো বুকের তলা।
ঘরে ফেরার পথে দেখি,
নীল শালুক সুঁদি ও কি
ফু’টে আছে ঝিলের গহীন জলে।
আমার অমনি পড়িল মনে
সেই ডাগর আঁখি লো
ঝিলের জলে চোখের জলে হ’ল মাখামাখি”।।
--------------------------------------------------
"নদীর নাম সই অঞ্জনা..."- আমার খুব পছন্দের একটা নজরুল সংগীত। 'অঞ্জনা' তে আমি মুগ্ধ, বিমোহিত! আমি অঞ্জনার পিছু নিয়েছিলাম সেই স্কুল কলেজ জীবন থেকেই....
"অঞ্জনা নদীতীরে চন্দনী গাঁয়ে
পোড়ো মন্দির খানা গঞ্জের বাঁয়ে
জীর্ণ ফাটল-ধরা, এক কোণে তারি
অন্ধ নিয়েছে বাসা কুঞ্জবিহারী"- আমরা যারা বাল্যকালে বিদ্যাসাগরের 'সহজ পাঠ' বইয়ের এই কবিতা পড়েছি তাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে স্রোতস্বিনী একটি নদীর ছবি। কিন্তু বর্তমানে নদীটি আর নদী নেই, হয়ে গেছে শীর্ণকায় মরা খাল। প্রায় পাঁচশো বছর আগে জলঙ্গীর থেকে প্রবাহিত সেই নদী। জন্ম হলো অঞ্জনার, এক ইতিহাসেরও। শান্ত, ধীর গতির অঞ্জনা ভরপুর বৃষ্টিতে অশান্ত হয়ে উঠতো।
অঞ্জনা নদী অতীত ইতিহাসের সাক্ষ্য- নদীয়ারাজ মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রও নৌপথে অঞ্জনা নদী বেয়ে মুর্শিদাবাদে পৌঁছতেন। নদী এখন খালের তকমা পেলেও ইদানীং সেই অস্তিস্ত্বটুকুও মুছে যাওয়ার জোগাড়।
অঞ্জনার তীরে এ গ্রামটির নাম গাংনী। কিছুটা দূরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চন্দনী গ্রাম, লোকে চেনে চন্দনদহ নামে। ঠাকুর পরিবারের আরও একটা জমিদারি তালুক। বর্ষাকালে কবি এখানে আসতেন অঞ্জনার যৌবন দেখতে। রবি কবি এখানেই লিখেছিলেনঃ
"আমাদের এই গ্রামের নামটি খঞ্জনা
আমাদের এই নদীর নাম অঞ্জনা
আমার নাম তো জানে গাঁয়ের পাঁচ জনে
আমাদের সেই তাহার নামটি রঞ্জনা।"
এখানে এসেছিলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত, কবি নজরুল ইসলাম সহ অনেক লিজেন্ড।
নদী যেখানে দাঁড়িয়ে থাকে স্থির হয়ে, জঙ্গল হারিয়ে সেখানে ধূসর জনপদ হয়ে। দূষন ঢেকে দেয় আকাশের গাঢ নীল কে, নৌকা আটকে যায় কচুরিপানায়। ঠিক তখন স্বপ্ন আসে ময়ূরপঙ্খী চেপে।
অঞ্জনার চলন কবিতার মত। কবিতা নয় বরং ছোটো গল্প বললে বেশ হয়। শেষ হয়েও যেন হয় না শেষ। যাত্রাপথ বেশী তো নয়। এই নদীতেই ঢেউ উঠতো বর্ষার দিনে। বাকী সময় শান্ত। দুপাশে শষ্যক্ষেত।
সময় কি করে বয়ে যায় কেউ জানে না। ইতিহাসের পাতায় পড়া ঘটনা যেন কত সাবলীল আমাদের কাছে। শতশত বছরের অঞ্জনার ইতিহাসে কাব্য খুঁজে বেড়াই আমরা, অস্তিত্বহীন নদীর যন্ত্রণা খুঁজি না।
আজও কোনো এক মেঘে ঢাকা সকালে বর্ণহীন নারীর রোম্যান্টিকতা লুকিয়ে রাখে আড়ালে, একান্তে, নিজের মধ্যে। প্রকাশ করবে সেই সাহস কোথায়! অঞ্জনাও তাই। পানি শুকিয়ে গেছে বুকের ভিতর, প্রতিবাদ করবে সে সাধ্যি কোথায় তার?
এখনও মেঘ করে অঞ্জনার আকাশে। বৃষ্টি হয়। শস্যে ভরে থাকে দু-পাড়ের জমি। নৌকা বাঁধা থাকে ঘাটে, হাঁস চড়ে বেড়ায় কচুরিপানা সরিয়ে, ছিপ দিয়ে মাছ ধরে কোনো এক প্রেমিক পুরুষ, কিন্তু অঞ্জনা আর জাগে না। নদীর ধারে কাশের বনে দোলা লাগে। কিন্তু অঞ্জনার মনে উৎসবের আঁচ লাগে না, সে জানে ছোটো হতে হতে একদিন শেষ অস্তিত্বটুকুও হারিয়ে যাবে সে ভূমিদস্যুদের রাখ্যুসে পেটে।
অঞ্জনার ইতিহাস বাংলাদেশের অসংখ্য নদীর ইতিহাসের মতোই করুণ। যেসব নদীতে একদা ঢেউ খেলতো, পালতোলা নৌকা চলতো- সেখানে এখন ইট পাথরের অট্টালিকায় বাস করে মানুষ নামের কীট!
--------------------------------------------------
একদা অঞ্জনার তীরবর্তী অঞ্চলগুলি যথেষ্ট সমৃদ্ধ ছিল। যাতায়াত সুবিধা, জীবিকা, স্বাস্থ্যকর বায়ু। বাদকুল্লার মূলভাগ অঞ্জনা, জলঙ্গীর শাখানদী। কৃষ্ণনগর পৌর এলাকার বাগেন্দ্রনগর, রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়, কুইন্স স্কুল ও জেলা শাসকের বাংলোর গা ঘেষে রোমান ক্যাথোলিক চার্চের সামনে দিয়ে বেজিখালি, কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির প্রাচীর ছুয়ে রাজজামাতা দিঘি, চৌধুরি পাড়া, শক্তিনগর ও বারুহহুদার সীমানা দিয়ে দোগাছি পঞ্চায়েত এলাকায় প্রবেশ করেছে। সেই পথ বেয়ে বাদকুল্লা জনপদের মধ্যে মিশে গেছে। পাটুলি, বল্লভপুর, অঞ্জনগড়, গাংনী, পূর্ববাদকুল্লা, চন্দনদহ প্রভৃতি গ্রামগুলি বাদকুল্লা এলাকার অঞ্জনা নদীর তীরবর্তী গ্রাম। অঞ্জনা সে অন্যদেশেরই হোক, সে বড় আপন, আপন পড়শি লাগে তাকে।
কবি মাইকেল মধুসূদন দও এই নদীর শোভা দেখে বলেছিলেন - "হে অঞ্জনা, তোমাকে দেখিয়া অতিশয় প্রীত হইলাম, তোমাকে কখনই ভুলিব না এবং তোমার বর্ণনা করিতে এূটি রাখিব না"।
কাজী নজরুল ইসলাম কৃষ্ণনগরে বসবাসের সময় অঞ্জনার রূপ দেখে মোহিত হয়েছিলেন এবং প্রেমিক কবি লিখেছিলেন - "নদীর নাম সই অঞ্জনা, নাচে তীরে খঞ্জনা..."।
অঞ্জনা নদী তথ্যঃ গুগল। (পাঠক নাই, তাই পুরনো লেখা চালিয়ে দিচ্ছি)
১৯ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:৫১
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
অনেক খেটেখুটে একটা লেখা লিখে যদি ভালো পাঠকের নুন্যতম রেসপন্স না পাওয়া যায় সে লেখা পোস্ট না করাই ভালো।
২| ১৯ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১২:৫৪
রানার ব্লগ বলেছেন: পৃথিবীর সকল কবি মনে হয় দুইটা জিনিসের উপর বিমহিত হয়ে থাকে এক নদী দুই বরষা !!! নদী আর বরষা দুইটা আমাকে ভয়ানক টানে কিন্তু আমি কবি না ।
১৯ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:৫৪
জুল ভার্ন বলেছেন: বর্ষা আমারও প্রিয় তবে প্যাচপেচে বর্ষা অসহ্য! নদীও আমাকে টানে। কিন্তু বর্ষা কিম্বা নদী দ্বখেও কাব্যপ্রতিভা জাগ্রত হয়না- এ আমার ব্যর্থতা।
৩| ১৯ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১২:৫৮
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: এখন কি অঞ্জনা নদী আছে
সত্য অঞ্জনা নদীর ছবি যদি এড করতেন দাদা
১৯ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:৫৬
জুল ভার্ন বলেছেন: এই মুহূর্তে মোবাইল ফোন থেকে ব্লগে আছি। অঞ্জনা নদীর চমৎকার ছবি আছে কিন্তু মোবাইল ফোন থেকে ছবি এড করতে পারছিনা।
৪| ১৯ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১২:৫৯
আরইউ বলেছেন:
খুব প্রিয় গান। কী সুন্দর সুর আর শব্দের ব্যবহার। কত সহজ অথচ কী গভীরতা! একদম বুকের মাঝে লাগে। অঞ্জনা “মরে” গেলেও অমর হয়ে রইবে নজরুলের কর্মে।
এমন লেখার রিপোস্ট পড়তেও ভালো লাগে।
১৯ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:৫৮
জুল ভার্ন বলেছেন: এমন সুন্দর মন্তব্য পেলে অনেক ব্যস্ততার মাঝেও নতুন লেখার প্রেরণা পাই।
অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই।
৫| ১৯ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:০৭
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: কী আবেগেই না এই গানটা শুনতাম একদা
সবই বদলে যায়
১৯ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:৫৯
জুল ভার্ন বলেছেন: কিছু কিছু গান আছে যার আবেদন কখনো শেষ হয়না।
৬| ১৯ শে জুন, ২০২২ দুপুর ২:১৩
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: চমৎকার পোস্ট।
অঞ্জনা নীলাঞ্জনা উনারা বড় ভাগ্যবতী। উনাদের নিয়ে প্রচুর গান রয়েছে।
২০ শে জুন, ২০২২ সকাল ১১:১৯
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৭| ১৯ শে জুন, ২০২২ দুপুর ২:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: একজন কবি বলেছিলেন- তোমরা যারা কবি হতে চাও-
একটি সার্থক কবিতার জন্য আছে কিছু বিবেচ্য বিষয়, আছে কিছু কাব্যকৌশল। কবিত্ব অর্জন করা যায় না আসলে, কবিত্ব মানুষ আপনা আপনি পায়। লাইনের পর লাইন লিখে গেলেই, ঘুমপাড়ানি মাসীপিসীর মতো ছন্দ মিলিয়ে পঙ্ক্তি সাজালেই তা কবিতা হয় না!
২০ শে জুন, ২০২২ সকাল ১১:২১
জুল ভার্ন বলেছেন: আমি বিশ্বাস করি- কবিতা/কাব্য প্রতিভা সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত জ্ঞান, যা জন্ম থেকেই হয়। পরিশ্রম করে সাহিত্যিক হওয়া যায় কিন্তু কবি হওয়া যায়না।
৮| ১৯ শে জুন, ২০২২ রাত ৮:২৪
লেখার খাতা বলেছেন: লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ।
অনেক খেটেখুটে একটা লেখা লিখে যদি ভালো পাঠকের নুন্যতম রেসপন্স না পাওয়া যায় সে লেখা পোস্ট না করাই ভালো।
ঠিক বলেচেন।
২০ শে জুন, ২০২২ সকাল ১১:২২
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১২:৫০
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: লেখাটি চমৎকার।
পাঠক নাই, পোস্টও নাই।
দিন পেরিয়ে যায় তবুও প্রথম পাতা থেকে পোস্ট সরে না।