| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
গুম খুনের মতো মানবতা বিরোধী অপরাধীদের জন্য ভি আই পি প্রিজন ভ্যান.....
টানা ১১ দিন চোখ বেঁধে, দুই হাত পেছনে হ্যান্ডকাফ লাগানো অবস্থায় নারকীয় শারীরিক নির্যাতন করে ৬ নভেম্বর রাত দশটায় গ্রেফতার নাটকের পর র্যাব-১০ ধলপুর ক্যাম্প থেকে পরের দিন ফজরের সময় মিরপুর থানায় হস্তান্তর করার ঘটনা আগেও লিখেছি।
সকাল দশটায় থানা হাজত থেকে দড়ি বেঁধে প্রায় ৭০/৮০ জন আসামি বের করে- থানায় দরজায় প্রিজন ভ্যানের পেছনে লাইন করে দাঁড় করিয়েছে। আমাদের নিয়ে যাবে কোর্টে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন জানাতে। আমার সারা শরীরে রক্তাক্ত জখম.....হাটার শক্তি নাই। জাহিদের কাঁধে ভর দিয়ে হেটে চলছি...জাহিদের পায়ে অবস্থাও ভালো না। খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটে। গুম অবস্থায় র্যাব ওকে পেরেকঠোকা কাঠের খড়ম পড়িয়ে ইলেক্ট্রনিক শক দিয়েছে। কষ্টের ছাপ স্পষ্ট সবার চোখমুখে। দুইজন করে আসামির ডান-বাম হাতে আবার সেই হ্যান্ডকাফ এমন টাইট করে লাগিয়ে দেয়- সামান্য নড়াচড়া করলেই হাত কেটে যায়। দূরে দাঁড়িয়ে দেখছে সব আসামিদের স্বজনরা। দুজনের জন্য ১০০/- পুলিশকে দিয়ে হ্যাণ্ডকাফ লুজ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদেরকে অনেকটা ধাক্কা দিয়ে ঠেলে ঠেলে প্রিজন ভ্যানে ঢুকিয়ে দিয়েছে। একটা গাড়িতে দুই পাসে দুটি ষ্টীলের ভাংগা বেঞ্চি। যারা আগে ঢোকে তারা বসে, বাকীদের বাসের উপরে দুটি পাইপ ধরে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। সবাই দাঁড়িয়ে গেলেও ২৫ জনের সংকুলান হবে। সেখানে আমরা একটা ভ্যানে ৪২ জন!
থানা হাজতে পানির অভাবে আসামিরা কেউই বাথরুম, হাতমুখ পরিস্কার, দাঁতব্রাশ করার সুযোগ পায়নি। সবাই ঘামে জবজবে.... প্রচন্ড দুর্গন্ধ! আলো বাতাস চলাচল বন্ধ বাসের ভিতরে চলে গাঁজাখোরদের মচ্ছব। দম বন্ধ হয়ে যায়.....কেউ কেউ বমি করে দেয় কারোর গায়ের উপর!
প্রিজন ভ্যানে কোনো ফ্যান নেই। ওপরের দিকে এক ফুট প্রস্থের লম্বালম্বি লোহার জাল রয়েছে। ভ্যানের ভেতরে আলো-বাতাস চলাচলের এটাই একমাত্র পথ। তবে ওই পথ অনেকটা রুদ্ধ হয়ে যায় ভারসাম্য রক্ষার জন্য জাল ধরে আসামিদের দাঁড়ানোর কারণে। ওই জালের ফাঁক দিয়ে তাঁরা বাইরের মুক্ত পৃথিবীও দেখেন। ফলে ভ্যানে গরম থাকে বাইরের চেয়ে বেশি। গরমে পানির পিপাসা পেলেও মেটানোর ব্যবস্থা নেই। আমাদের দেশে মানবদেহের সহনশীল তাপমাত্রা প্রায় ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাইরে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকলেও প্রিজন ভ্যানের ভেতর তা ৪০/৪২ ডিগ্রীর কম না। ছয় মাসের জেল জীবনে ৮/১০ বার এইসব প্রিজন ভ্যানে প্রতিবার ২/৩ ঘন্টার জার্নি করতে হয়েছে।
আজ দেখলাম-
ভিআইপি আসামীদের বহন করার জন্য এসি প্রিজন ভ্যান।
প্রথমেই চেনা যাক ভি আই পি আসামি কারা....
ভি আই পি আসামি তারাই, যারা আমাদের মতো দেশপ্রেমিক নাগরিকদের গুম খুনের সাথে জড়িত। সোজা কথায়- খুনী এবং রাষ্ট্রীয় ভাণ্ডার লুণ্ঠনকারী।
রাষ্ট্রকে যারা ধ্বংস করেছে সেইসব খুনী লুটেরা ভি আই পি আসামিদের বহন করার জন্য ভি আই পি প্রিজন ভ্যান। ৫২ সীট সংকুলান সম্মত একটা বাসে ১৬ জন ভি আই পি খুনী, মানবতা বিরোধী আসামির জন্যশীতাতপনিয়ন্ত্রিত সুপরিসর বাসে রয়েছে আরামদায়ক সিট ও উন্নত পরিবেশ। একসময় রাস্ট্রের উচ্চপর্যায়ে দায়িত্ব পালনকারী অপরাধী ও পয়সাওয়ালা আসামীদের বহন করার জন্য জাপানি ইসুজু চেসিসের উপর প্রিজন ভ্যানগুলো নির্মান করা হয়েছে।
অপরাধী বা অভিযুক্ত যে-ই হোক, তাঁদের ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধার নিশ্চয়তা দিতে হয়। একজন অপরাধীরও মানবাধিকার রয়েছে। তাই তাঁর মর্যাদা যেন ক্ষুণ্ন না হয়, সেদিকে নজর রাখা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। গরমের সময় আসামিদের প্রিজন ভ্যানে বহনের জন্য ন্যূনতম সুবিধা থাকা প্রয়োজন। তবে তা ভি আই পি খুনী মানবতা বিরোধী আসামিদের জন্য নয়।
২২ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৯
জুল ভার্ন বলেছেন: তাই বলে মানবতা বিরোধী অপরাধীদের ভি আই পি আসামি নাম দিয়ে সেইসব আসামিদের জন্য আলাদা করা উচিৎ না।
২|
২২ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৪:৪০
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
আপনার সাথে যা হয়েছে, আমার সাথেও হয়েছিলো।
সামরিক বাহিনীর ছত্রছায়ায় ফখরুদ্দিন সাহাবের যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার হয়েছিলো তার বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ র্যালি থেকে ধরে নেওয়া হয়েছিলো। আমার উপরেও অত্যাচার হয়।
অন্যায়ের এই চক্র কি চলবেই?
২২ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৪:৪২
জুল ভার্ন বলেছেন: আমাদের গর্ব সেনাবাহিনী তাদের সেই সম্মান মর্যাদা ফিরে পাক।
৩|
২২ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৪:৪২
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
লেখক বলেছেন: তাই বলে মানবতা বিরোধী অপরাধীদের ভি আই পি আসামি নাম দিয়ে সেইসব আসামিদের জন্য আলাদা করা উচিৎ না।
=========
একটা উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে। ইনাদেরকে দিয়েই পরিবর্তনের সূচনা হোক।
এখন প্রিজন ভ্যান খারাপ হলে, প্রতিবাদ করা স্কোপ থাকবে।
২২ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৪:৪৪
জুল ভার্ন বলেছেন: ভাই, এখনো আমরা যারা ভুক্তভোগী তারা সবাই ট্রমাটিক প্রব্লেম ফেস করছি.... খুনীদের ফুটানি সহ্য করতে পারিনা।
৪|
২২ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
আমি শুধু এইটা বলতে চাই যে, মানবাধিকার যেন সকলের জন্যে সমান হয়।
'পরিবর্তন' কোথাও থেকে শুরু করতে হবে।
২৪ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:৪৯
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৫|
২২ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:১৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: জুল ভার্ন ,
বুঝিনা, রাষ্ট্রের সুযোগ আর আইন যদি সবার জন্যে সমান হয় (সংবিধান বর্ণিত) তবে সকল অপরাধীদের তো একই রকম কারাগারে রাখা উচিৎ, তা হলে দরিদ্র সাধারণ অপরাধী আর ধনাঢ্য অপরাধীদের কেন আলাদা আলাদা সুবিধা সম্বলিত কারাগারের ব্যবস্থা করা হয়!!!!!
এই অসামঞ্জস্যতা জনগণের প্রতি রাষ্ট্রের সরাসরি বৈসাম্যমূলক অপরাধ যা সংবিধানের লঙ্ঘন। সংবিধান যখন রাষ্ট্রের সকল নাগরিককে সমান মর্যাদা দেয় তখন রাষ্ট্র নিজেই যদি তা লঙ্ঘন করে তবে এই অপরাধের শাস্তি রাষ্ট্রকে কে দেবে ? জনগণ ??
২৪ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:৫২
জুল ভার্ন বলেছেন: এইসব অনিয়মের জন্য বিপ্লব হয়, আন্দোলন হয়- সাধারণ মানুষ জীবন দেয়, কিন্তু অনিয়ম থেকেই যায়!
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৬
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
অপরাধীদের প্রিজন ভ্যান আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন।
নাহলে, এই চক্র চলবেই।