| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
বিএনপির ছাড়, কমিশনের কুটিল চাল- এই ‘ঐক্যমত' আসলে কাদের জন্য?
জাতীয় ঐক্যমত /ঐকমত্য কমিশনের চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রকাশের পর রাজনৈতিক অঙ্গন এখন উত্তপ্ত। অনেকেই বিস্মিত- আলোচনায় যেসব বিষয় কখনো ছিল না, হঠাৎ করে তাই চূড়ান্ত রিপোর্টের মূল ভিত্তি হয়ে গেল কেমন করে! আসলে বিস্ময়ের কিছু নেই। সবকিছুই বহু আগেই সাজানো ছিল, এক দলের স্বার্থে, একদলীয় ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য। আর এর ছায়া নেতৃত্বে ছিলেন ড. ইউনুস- যিনি সব জানতেন, সব বুঝতেন এবং শেষ পর্যন্ত সবকিছু ‘বৈজ্ঞানিকভাবে নীরবতা’ দিয়ে অনুমোদনও করে দিলেন।
বলা হচ্ছে- এই কমিশন ছিল “জাতীয় ঐকমত্যের” প্রতীক। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ঐকমত্য কার সাথে? বিএনপি বারবার সভায় অংশ নিয়েছে, অসংখ্য প্রস্তাব দিয়েছে, জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ত্যাগ স্বীকার করেছে। কিন্তু কমিশনের চূড়ান্ত নথিতে বিএনপির একটি প্রস্তাবেরও প্রতিফলন হয়নি। এমনকি কমিশন নিজেই বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ সাহেবের Notes of Dissent এর প্রশংসা করেছে, তার আইনী বিশ্লেষণকে বলেছে “অসাধারণ অবদান”- তবুও তার একটি প্রস্তাবও বিবেচনায় নেয়নি!
এই ঘটনাই প্রমাণ করে, কমিশন কেবল আনুষ্ঠানিকতা পালন করেছে, কিন্তু সিদ্ধান্ত ছিল আগেই লিখিত। বিএনপি ছিল শুধু শোভামণ্ডিত অতিথি- যার উপস্থিতি দেখিয়ে জনগণ ও আন্তর্জাতিক মহলকে বোঝানো হয়েছে যে, “দেখুন, আমরা সবাইকে সাথে নিয়ে কাজ করছি।” বাস্তবে যা ঘটেছে তা হলো একদলীয় ষড়যন্ত্রের বুদ্ধিদীপ্ত প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ।
বহুদিন যাবত প্রশ্ন করেছি- জাতীয় ঐক্যমত কমিশনে ওরা কারা? প্রশ্ন করেছি- ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস সাহেবের উপদেষ্টারা কারা? এখন প্রশ্ন- বিএনপির করণীয় কী?
প্রথমত, নির্বাচনের খ্যাতা পুটি! বিএনপি যেন আর নীরব দর্শক না থাকে। “জাতীয় স্বার্থে ছাড়” দিতে দিতে দল এখন প্রতারণার শিকার। এই মুহূর্তে প্রয়োজন সাহসী রাজনৈতিক অবস্থান- কমিশনের এই রিপোর্টকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা এবং জনগণকে জানানো যে, এটি কোনো ঐকমত্য নয়, বরং একদলীয় স্বার্থরক্ষার দলিল।
দ্বিতীয়ত, বিএনপি যেন জনআন্দোলনের ভাষায় ব্যাখ্যা করে- কেন এই কমিশন গণতন্ত্রের পথে নতুন বাধা। সালাউদ্দিন আহমেদ সাহেবের নোটস অব ডিসেন্ট প্রকাশ্যে এনে জনগণকে দেখানো দরকার, কিভাবে যুক্তি ও আইনের জায়গায় চাতুরী ও পক্ষপাতকে বসানো হয়েছে।
তৃতীয়ত, বিএনপির উচিত এই সুযোগে নিজের রাজনৈতিক মেরুদণ্ড আরও দৃঢ় করা। কারণ, যদি ঐকমত্যের নামে এমন প্রতারণা চুপচাপ মেনে নেয়, তবে তা কেবল কমিশন নয়- পুরো রাজনীতিকেই অপমান করা হবে।
শেষ কথা-
পৃথিবীর তীব্র আনন্দ যেমন আকস্মিকভাবে আসে তেমনি কষ্টগুলো আসে প্রচন্ড বিস্ময় সাথে নিয়ে! পিঠে ছুরির আঘাত যেটুকু ব্যাথা পাওয়ায় তা ব্যাথাই না! ব্যাথা মানুষ তখনই পায় যখন সে ঘুরে তাকিয়ে দেখে ছুরিটা কার হাতে! হ্যা ছুরিটা ছিলো ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস বাহিনীর হাতে। তার নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যমত কমিশন বিএনপির বুকে, কোটি কোটি বিএনপি নেতা কর্মী সমর্থকদের বুকে ছুরি বসিয়ে দিয়েছে।
ঐকমত্য যদি প্রতারণার মুখোশ হয়, তাহলে ভদ্রতা নয়- প্রতিরোধই একমাত্র ভাষা। বিএনপি আজ যদি চুপ থাকে, কাল ইতিহাসও চুপ থাকবে না। এই দেশ ঐকমত্যের নামে প্রহসন অনেক দেখেছে। এবার সময় এসেছে সত্যিকারের ঐকমত্যের- যেখানে সিদ্ধান্ত হয় জনগণের টেবিলে, কমিশনের আঁতুড়ঘরে নয়।
©somewhere in net ltd.