নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোর আকাশেই উড়ি, তোর আকশেই থাকি তোর আকাশেই এলোমেলো ,আমার সমস্ত পথচলা _

কবীর অন্তর

অভাবের মতোই তুমি সত্য আমার সমস্ত ভুবন জুড়ে...

কবীর অন্তর › বিস্তারিত পোস্টঃ

শব্দ শ্রমিক কবি ‘রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র কিছু কবিতা

১৯ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৪:২৯





ইচ্ছের দরোজায়

____রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ



সব কথা হয়ে গেলে শেষ

শব্দের প্লাবনে একা জেগে রবো নির্জন ঢেউ,

ভেসে ভেসে জড়াবো নিজেকে।

শরীরের সকল নগ্নতায় আমি খেলা কোরে যাবো,

তীর ভেবে ভেঙ্গে পড়বো আমার যৌবন।



কথা কি শেষ হয়ে যায়__সব কথা?

নাকি বুকের ভেতরে সব অসমাপ্ত ইচ্ছের মতো

দ্বিধাগ্রস্ত জেগে থাকে বুকে নিয়ে বিনিদ্র রাত,

জেগে জেগে নিজেকে দ্যাখে ভীষন উৎসাহে?



সব কথা শেষ হলে দরোজায় করাঘাত রেখে যাবো,

উৎকন্ঠার ধ্বনিরা বিলীন হবে ইথারের স্বাস্থ্যে__দ্যাখা হবে না।



শিথানের জানালা খুলে রেখে যাবো একটি চোখ,

শিশির চুমু খাবে চোখের উত্তাপে__চুমু খাবে।

জানালায় রেখে যাবো একটি বিনিদ্র চোখ,

যে-চোখে আকাশ দ্যাখে, মানুষের স্বভাব দ্যাখে,

যে-চোখ স্বাতির মগ্নতা দেখে প্রেমার্দ্র বুকে

অনুভব জ্বেলে রাখে অশেষ বাসনা।



সব কথা শেষ হলে ফিরে যাবো,

একটি চোখ রেখে যাবো শিথানের জানালায়।

সব কথা শেষ হলে করাঘাত জাগাবে তোমায়,

তুমি এসে খুলবে দুয়োর__দ্যাখা হবে না।।



(রচনাকাল: ১৭.০৩.৭৫; লালবাগ, ঢাকা

-----------------------------------------------



সেই সব নিজস্ব রাত্রিগুলি

----রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ



যে রাত ‘পাশাপশি বসিবার বনলতা সেন’

সে রাত আমার নয়, সে রাত অন্য কারো।



প্রনয়ীর প্রথম পরশ ছুঁয়ে দ্বিধাগ্রস্ত

চুপিচুপি চোখের উপকূলে জোয়ারের মতো

স্বপ্নালু হেঁটে আসা যে রাত আচ্ছন্ন আকাশের নিচে

সে রাত আমার নয়, সে রাত অন্য কারো।



আকাশের মাঠে নক্ষত্র পাখিদের কোলাহলে

যে রাত নেমে আসে হেমন্তের শিশিরের

প্রথম অভিসারের মতো নিরব নরোম

সে রাত আমার নয়, সে রাত অন্য কারো।



যে রাতে ক্ষুধার আগুন জ্বেলে গাঢ় অন্ধকারে

প্রহরীর মতো জেগে থাকে ক্লন্ত জঠর,

যে রাতে গনিকারা নীল সুখে মেলে দ্যায়

যৌবনের আরাধ্য দরোজা অভাবের নিচে,



যে রাতে বেকার যুবক আগ্নেয়াস্ত্র তুলে নেয় হাতে,

যে রাতে মায়ের উৎসাহে আত্মজা খুঁজে আনে তার

উনিশ বছর ধ’রে লালন করা মাতৃত্বের ঘাতক,

যে রাতে একদল সশস্ত্র যুবক হৃদয়ে আগুন জ্বেলে

বোসে থাকে শত্রুর নির্ধারিত আগমন পথে

সেই সব রাতগুলি একান্ত আমার, আমার রাত্রি-



যে রাত ‘পাশাপশি বসিবার বনলতা সেন’

সে রাত আমার নয়, সে রাত অন্য কারো।



১৩.০১.৭৫ (রাত্রি) লালবাগ ঢাকা

------------------------------------------



ভেঙে যদি দ্বিখন্ডিত

--রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ



দ্বিখন্ডিত হয়ে যাই ।

আজ এতো সত্য হলো দুইখানা পথ !

আজ এতো সত্য হলো দুইখানি হিয়া !

আমি তবে কার কাছে রাখবো আমার এই বেদনার ভার ?



দুখানি সমান তৃষ্ণা, দুই জোড়া কাঁপা কাঁপা ঠোঁট-- কাকে ছোঁবো ?

দুইখানি সমান আগুন আমি কাকে ছোঁবো ?



নদী তো পেতেছে তার দুই কূলে সমান সংসার

আমি তো পারি না,

আমি তো পারি না-- ভেঙে যাই ।



দুইখানি প্রতিশ্রুত প্রান দুই দিকে

দুইখানি সত্যবদ্ধ হাত দুই দিকে

দুইখানি তৃষ্ণামাখা তনু দুই দিকে

আমি কোন দিকে যাবো ?



দিখন্ডিত হয়ে যাই--

কিছুতেই মেলাতে পারি না এই দ্বিমুখি জীবন

চাঁদ আর পূর্নিমাকে কোনোদিকে মেলাতে পারি না ।।



২৫ জোষ্টি ১৩৮৬ মিঠেখালি মোংলা

........................................................................



যুগল দোলনা

--রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ



দোলাও তোমার দুই পৃথিবী দোলাও

ভোলাও যতো ক্ষুর্ধাত চোখ ভোলাও

দোলাও তোমার দালানকোঠা দোলাও



নগর তোমায় নাচাচ্ছে নাচ নাচো

সম্মিলিত বসন্ত উৎসবে,

ভাঙো তোমার পায়ের শিকল ভাঙো

সোনায় মোড়া খাঁচার কারাগার।



দোলাও তোমার ত্রিুসেনথিমাম দোলাও



কষ্টগুলো উল্টে পাল্টে দ্যাখো,

দ্যাখো তোমার নিভৃত কিংখাব।

আলোয় ভাষা পড়তে যদি পারো

বাজাও তবে গাঢ় অন্ধকার।



দোলাও তোমার স্বপ্নম্মৃতি দোলাও



ফুটতে যদি পারো পংক জলে,

মৃগনাভির গন্ধ নিয়ে ফোটো।

উড়িয়ে আবহমান ঠুলি

তনুর তীরে তৃষ্ণা-তরী বাঁধো।



দোলাও তোমার আরশি মহল দোলাও।।



২৬.০৮.১৩৯৫ রাজাবাজার ঢাকা ।

...............................................................................

অন্তর্গত অশুভ জটিলতা

---রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ



মাঝে মাঝে ভুল হয়ে যায়। আগে হতো না

ভুল বশত অনেক ভুল হয় ইদানিং আমার।a



মাঝে মাঝে ভুল হয়, নিজেকে বড়ো অচেনা লাগে

জিজ্ঞেস করি কে তুমি যুবক অমন দর্পে

সময়ের সিঁড়ি ভেঙ্গে যাচ্ছো খুব দূরত্বে?

মাঝে মাঝে ভুল হয় ভুল কোরে ফেলি।



একবার ভুল করে বাবাকে বন্ধু ভেবে

বলেছি চলো আজ রাত ব্রোথেলে কাটাবো।

ফুলকে প্রেমিকা ভেবে একটি মারাত্মক আগুন

এ যাবৎ আমি বুকে রেখেছিলাম-

মাঝে মাঝে ভুল হয়, ভুল হয়ে যায়-



নিজেকে গনিকা ভেবে সম্ভোগ করি,

শত্রু ভেবে আমূল প্রোথিত করি সুবর্ন চাকু

শূণ্যতায় ভ’রে থাকা বুকে আমারি।

কেন জানি বার বার ভুল হয়ে যায়-



ভুল করি নিজেকে অচেনা ভেবে

ঘর থেকে বার কোরে দিই। আপন

দরোজা ভেবে কখনো অপরের

দরোজায় নিশ্চিন্তে করাঘাত করি

কেন জানি ভুল কোরে ফেলি!

মাঝে মাঝে এরকম ভুল হয়

সবকিছু ভুল হয়ে যায়- ভুল হয়ে যায়-



১৫.১২.৭৪ (রাত্রি) লালবাগ ঢাকা।



জলের উপত্যকায়

--রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ



বড়ো অসময় এসে তুমি স্মৃতিচিহ্ন রেখে যাও

বড়ো অসময় এসে বোসে থাকো অচেতন ভুবনে।

তোমাকে বোঝার আগেই তুমি বোধের উৎসে

নতজানু প্রার্থনার মতো ধুপে ও লোবানে জড়াও

কোমল বিন্যাস



তোমাকে ছোঁবার আগেই তুমি অস্পর্শতায় ফিরে যাও!



তুমি নিশব্দ গমনে এসে দেখে যাও আমার পৃথিবী

সৌরসাগরে ভাসে মৌগুমি দীঘল জাহাজ,

কোন আলোকবর্ষে তোমায় দ্বিতীয় প্রেমের মতো

বুকে নেবো অনিদ্র বেদনার কোমল আঘাতে?



তোমাকে ডাকার আগেই তুমি প্রতিধ্বনিতে বেজে ওঠো

দূরের পাহাড়ে তোমার শরীরের শূন্যতা ঘিরে

ভাসমান ধ্বনির নৌকো ফিরে যায় বিষাদ নীলিমা।



অসময় করাঘাতে ভেঙে যায় কবাটের ঘুম,

জলের উপত্যকায় নতজানু বাতাসের মতো

উম্নোচন বুকে এলে কি প্রবোধে ফেরাবে আমায়?



অসময়ে এসেছো বোলে অসময় হয়েছে সময়

বেদনায় এসেছো বোলে বেদনাই তীর্থ আমার।।



২৫.০৯.৭৫ লালবাগ ঢাকা।

-------------------------------------------------



পুড়িয়ে দেবো নীল কারুকাজ

....রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ



বুকের ভিতর লুকিয়ে আছে তীব্র আগুন

পুড়িয়ে দেবো, পুড়িয়ে দেবো, সতর্ক হও।



রুপেল পালক গুটাও এখন

কৃত্রিমতার নীল কারুকাজ

জঠর জ্বালায় পুড়িয়ে দেবো, সতর্ক হও।



স্বপ্ন-বিলাস ছড়িয়ে আছো চতুর্দিকে,

ফসল ক্ষেতে খেলছে তোমার সোনার মৃগ,

অবক্ষয়ের ধুসর পোশাক অঙ্গে আমার

অন্ধকারের বিরাট পাখায় আড়াল-করা গেরস্হালি,

উঠোন জুড়ে উজান হাওয়ার দীর্ঘনিশাস।



সাপের ফনায় হাত রেখেছো

হাত রেখেছো বাঘের গায়ে-

ঘরে তোমার লালিত সুখ, আজম্ম সাধ

পুড়িয়ে দিবো, পুড়িয়ে দিবো, সতর্ক হও।



মাটির প্রতি অনুর্বরা আঙুল রেখে

মেঘের অর্থ অনাবৃষ্টি বুঝালে হায়।

শীতার্ত বুক, শীতল শোনিত,

রোদ্দুরকে বল্লে তোমরা জটিল আঁধার।



মাটিতে এক মাতাল যুবক আগুন হাতে

ভীষন খেলায় মত্ত এখন খামখেয়ালি

উল্টো হাতে ঘোরাচ্ছে তার তীব্র লাটিম-



সুখের বাগান,যুক্তিবিহীন খেলনা পুতুল

রেশমি আদোল, মেদাবৃত নিতম্বদ্বয়

হলুদ রাতে ন্যাংটা উরুর খেমটাপনা

পুড়িয়ে দেবো, পুড়িয়ে দেবো, সতর্ক হও।



বুক পকেটে আতপ চালের সোঁদা গন্ধ

কোথায় যাবে- নহরি ধান টানছে তোমায়।

কাকের পালক, গঙ্গা ফড়িং, বাউল বাতাস

হরগাজাবন গেরস্হালি,

চোখের ভেতর লোনা সাগর, খয়রি শালিক

মাছরাঙা বিচিত্র রঙ-কোথায় যাবে?

আঙ্গিনাতে লাউয়ের জাংলা টানছে তোমায়।



রুপেল পালক গুটাও এখন

গুটাও কৃত্রিমতার ফানুস, নীল কারুকাজ

পুড়িয়ে দেবো, পুড়িয়ে দেবো, সতর্ক হও।।



০৯.বৈশাখ ১৩৮২ লালবাগ ঢাকা।

ইচ্ছের দরোজায়

____রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ



সব কথা হয়ে গেলে শেষ

শব্দের প্লাবনে একা জেগে রবো নির্জন ঢেউ,

ভেসে ভেসে জড়াবো নিজেকে।

শরীরের সকল নগ্নতায় আমি খেলা কোরে যাবো,

তীর ভেবে ভেঙ্গে পড়বো আমার যৌবন।



কথা কি শেষ হয়ে যায়__সব কথা?

নাকি বুকের ভেতরে সব অসমাপ্ত ইচ্ছের মতো

দ্বিধাগ্রস্ত জেগে থাকে বুকে নিয়ে বিনিদ্র রাত,

জেগে জেগে নিজেকে দ্যাখে ভীষন উৎসাহে?



সব কথা শেষ হলে দরোজায় করাঘাত রেখে যাবো,

উৎকন্ঠার ধ্বনিরা বিলীন হবে ইথারের স্বাস্থ্যে__দ্যাখা হবে না।



শিথানের জানালা খুলে রেখে যাবো একটি চোখ,

শিশির চুমু খাবে চোখের উত্তাপে__চুমু খাবে।

জানালায় রেখে যাবো একটি বিনিদ্র চোখ,

যে-চোখে আকাশ দ্যাখে, মানুষের স্বভাব দ্যাখে,

যে-চোখ স্বাতির মগ্নতা দেখে প্রেমার্দ্র বুকে

অনুভব জ্বেলে রাখে অশেষ বাসনা।



সব কথা শেষ হলে ফিরে যাবো,

একটি চোখ রেখে যাবো শিথানের জানালায়।

সব কথা শেষ হলে করাঘাত জাগাবে তোমায়,

তুমি এসে খুলবে দুয়োর__দ্যাখা হবে না।।



(রচনাকাল: ১৭.০৩.৭৫; লালবাগ, ঢাকা

-----------------------------------------------



সেই সব নিজস্ব রাত্রিগুলি

----রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ



যে রাত ‘পাশাপশি বসিবার বনলতা সেন’

সে রাত আমার নয়, সে রাত অন্য কারো।



প্রনয়ীর প্রথম পরশ ছুঁয়ে দ্বিধাগ্রস্ত

চুপিচুপি চোখের উপকূলে জোয়ারের মতো

স্বপ্নালু হেঁটে আসা যে রাত আচ্ছন্ন আকাশের নিচে

সে রাত আমার নয়, সে রাত অন্য কারো।



আকাশের মাঠে নক্ষত্র পাখিদের কোলাহলে

যে রাত নেমে আসে হেমন্তের শিশিরের

প্রথম অভিসারের মতো নিরব নরোম

সে রাত আমার নয়, সে রাত অন্য কারো।



যে রাতে ক্ষুধার আগুন জ্বেলে গাঢ় অন্ধকারে

প্রহরীর মতো জেগে থাকে ক্লন্ত জঠর,

যে রাতে গনিকারা নীল সুখে মেলে দ্যায়

যৌবনের আরাধ্য দরোজা অভাবের নিচে,



যে রাতে বেকার যুবক আগ্নেয়াস্ত্র তুলে নেয় হাতে,

যে রাতে মায়ের উৎসাহে আত্মজা খুঁজে আনে তার

উনিশ বছর ধ’রে লালন করা মাতৃত্বের ঘাতক,

যে রাতে একদল সশস্ত্র যুবক হৃদয়ে আগুন জ্বেলে

বোসে থাকে শত্রুর নির্ধারিত আগমন পথে

সেই সব রাতগুলি একান্ত আমার, আমার রাত্রি-



যে রাত ‘পাশাপশি বসিবার বনলতা সেন’

সে রাত আমার নয়, সে রাত অন্য কারো।



১৩.০১.৭৫ (রাত্রি) লালবাগ ঢাকা

------------------------------------------



ভেঙে যদি দ্বিখন্ডিত

--রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ



দ্বিখন্ডিত হয়ে যাই ।

আজ এতো সত্য হলো দুইখানা পথ !

আজ এতো সত্য হলো দুইখানি হিয়া !

আমি তবে কার কাছে রাখবো আমার এই বেদনার ভার ?



দুখানি সমান তৃষ্ণা, দুই জোড়া কাঁপা কাঁপা ঠোঁট-- কাকে ছোঁবো ?

দুইখানি সমান আগুন আমি কাকে ছোঁবো ?



নদী তো পেতেছে তার দুই কূলে সমান সংসার

আমি তো পারি না,

আমি তো পারি না-- ভেঙে যাই ।



দুইখানি প্রতিশ্রুত প্রান দুই দিকে

দুইখানি সত্যবদ্ধ হাত দুই দিকে

দুইখানি তৃষ্ণামাখা তনু দুই দিকে

আমি কোন দিকে যাবো ?



দিখন্ডিত হয়ে যাই--

কিছুতেই মেলাতে পারি না এই দ্বিমুখি জীবন

চাঁদ আর পূর্নিমাকে কোনোদিকে মেলাতে পারি না ।।



২৫ জোষ্টি ১৩৮৬ মিঠেখালি মোংলা

........................................................................



যুগল দোলনা

--রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ



দোলাও তোমার দুই পৃথিবী দোলাও

ভোলাও যতো ক্ষুর্ধাত চোখ ভোলাও

দোলাও তোমার দালানকোঠা দোলাও



নগর তোমায় নাচাচ্ছে নাচ নাচো

সম্মিলিত বসন্ত উৎসবে,

ভাঙো তোমার পায়ের শিকল ভাঙো

সোনায় মোড়া খাঁচার কারাগার।



দোলাও তোমার ত্রিুসেনথিমাম দোলাও



কষ্টগুলো উল্টে পাল্টে দ্যাখো,

দ্যাখো তোমার নিভৃত কিংখাব।

আলোয় ভাষা পড়তে যদি পারো

বাজাও তবে গাঢ় অন্ধকার।



দোলাও তোমার স্বপ্নম্মৃতি দোলাও



ফুটতে যদি পারো পংক জলে,

মৃগনাভির গন্ধ নিয়ে ফোটো।

উড়িয়ে আবহমান ঠুলি

তনুর তীরে তৃষ্ণা-তরী বাঁধো।



দোলাও তোমার আরশি মহল দোলাও।।



২৬.০৮.১৩৯৫ রাজাবাজার ঢাকা ।

...............................................................................

অন্তর্গত অশুভ জটিলতা

---রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ



মাঝে মাঝে ভুল হয়ে যায়। আগে হতো না

ভুল বশত অনেক ভুল হয় ইদানিং আমার।



মাঝে মাঝে ভুল হয়, নিজেকে বড়ো অচেনা লাগে

জিজ্ঞেস করি কে তুমি যুবক অমন দর্পে

সময়ের সিঁড়ি ভেঙ্গে যাচ্ছো খুব দূরত্বে?

মাঝে মাঝে ভুল হয় ভুল কোরে ফেলি।



একবার ভুল করে বাবাকে বন্ধু ভেবে

বলেছি চলো আজ রাত ব্রোথেলে কাটাবো।

ফুলকে প্রেমিকা ভেবে একটি মারাত্মক আগুন

এ যাবৎ আমি বুকে রেখেছিলাম-

মাঝে মাঝে ভুল হয়, ভুল হয়ে যায়-



নিজেকে গনিকা ভেবে সম্ভোগ করি,

শত্রু ভেবে আমূল প্রোথিত করি সুবর্ন চাকু

শূণ্যতায় ভ’রে থাকা বুকে আমারি।

কেন জানি বার বার ভুল হয়ে যায়-



ভুল করি নিজেকে অচেনা ভেবে

ঘর থেকে বার কোরে দিই। আপন

দরোজা ভেবে কখনো অপরের

দরোজায় নিশ্চিন্তে করাঘাত করি

কেন জানি ভুল কোরে ফেলি!

মাঝে মাঝে এরকম ভুল হয়

সবকিছু ভুল হয়ে যায়- ভুল হয়ে যায়-



১৫.১২.৭৪ (রাত্রি) লালবাগ ঢাকা।



জলের উপত্যকায়

--রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ



বড়ো অসময় এসে তুমি স্মৃতিচিহ্ন রেখে যাও

বড়ো অসময় এসে বোসে থাকো অচেতন ভুবনে।

তোমাকে বোঝার আগেই তুমি বোধের উৎসে

নতজানু প্রার্থনার মতো ধুপে ও লোবানে জড়াও

কোমল বিন্যাস



তোমাকে ছোঁবার আগেই তুমি অস্পর্শতায় ফিরে যাও!



তুমি নিশব্দ গমনে এসে দেখে যাও আমার পৃথিবী

সৌরসাগরে ভাসে মৌগুমি দীঘল জাহাজ,

কোন আলোকবর্ষে তোমায় দ্বিতীয় প্রেমের মতো

বুকে নেবো অনিদ্র বেদনার কোমল আঘাতে?



তোমাকে ডাকার আগেই তুমি প্রতিধ্বনিতে বেজে ওঠো

দূরের পাহাড়ে তোমার শরীরের শূন্যতা ঘিরে

ভাসমান ধ্বনির নৌকো ফিরে যায় বিষাদ নীলিমা।



অসময় করাঘাতে ভেঙে যায় কবাটের ঘুম,

জলের উপত্যকায় নতজানু বাতাসের মতো

উম্নোচন বুকে এলে কি প্রবোধে ফেরাবে আমায়?



অসময়ে এসেছো বোলে অসময় হয়েছে সময়

বেদনায় এসেছো বোলে বেদনাই তীর্থ আমার।।



২৫.০৯.৭৫ লালবাগ ঢাকা।

-------------------------------------------------



পুড়িয়ে দেবো নীল কারুকাজ

....রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ



বুকের ভিতর লুকিয়ে আছে তীব্র আগুন

পুড়িয়ে দেবো, পুড়িয়ে দেবো, সতর্ক হও।



রুপেল পালক গুটাও এখন

কৃত্রিমতার নীল কারুকাজ

জঠর জ্বালায় পুড়িয়ে দেবো, সতর্ক হও।



স্বপ্ন-বিলাস ছড়িয়ে আছো চতুর্দিকে,

ফসল ক্ষেতে খেলছে তোমার সোনার মৃগ,

অবক্ষয়ের ধুসর পোশাক অঙ্গে আমার

অন্ধকারের বিরাট পাখায় আড়াল-করা গেরস্হালি,

উঠোন জুড়ে উজান হাওয়ার দীর্ঘনিশাস।



সাপের ফনায় হাত রেখেছো

হাত রেখেছো বাঘের গায়ে-

ঘরে তোমার লালিত সুখ, আজম্ম সাধ

পুড়িয়ে দিবো, পুড়িয়ে দিবো, সতর্ক হও।



মাটির প্রতি অনুর্বরা আঙুল রেখে

মেঘের অর্থ অনাবৃষ্টি বুঝালে হায়।

শীতার্ত বুক, শীতল শোনিত,

রোদ্দুরকে বল্লে তোমরা জটিল আঁধার।



মাটিতে এক মাতাল যুবক আগুন হাতে

ভীষন খেলায় মত্ত এখন খামখেয়ালি

উল্টো হাতে ঘোরাচ্ছে তার তীব্র লাটিম-



সুখের বাগান,যুক্তিবিহীন খেলনা পুতুল

রেশমি আদোল, মেদাবৃত নিতম্বদ্বয়

হলুদ রাতে ন্যাংটা উরুর খেমটাপনা

পুড়িয়ে দেবো, পুড়িয়ে দেবো, সতর্ক হও।



বুক পকেটে আতপ চালের সোঁদা গন্ধ

কোথায় যাবে- নহরি ধান টানছে তোমায়।

কাকের পালক, গঙ্গা ফড়িং, বাউল বাতাস

হরগাজাবন গেরস্হালি,

চোখের ভেতর লোনা সাগর, খয়রি শালিক

মাছরাঙা বিচিত্র রঙ-কোথায় যাবে?

আঙ্গিনাতে লাউয়ের জাংলা টানছে তোমায়।



রুপেল পালক গুটাও এখন

গুটাও কৃত্রিমতার ফানুস, নীল কারুকাজ

পুড়িয়ে দেবো, পুড়িয়ে দেবো, সতর্ক হও।।



০৯.বৈশাখ ১৩৮২ লালবাগ ঢাকা।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৫:২২

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

২| ১৯ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৩

হামিদ আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ ......................

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.