![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘটনাটা অনেক অনেক দিন আগের...
একটি ছবি। পাসপোর্ট সাইজ ছবি। ছবিটি একটি মানিব্যাগে রাখা ছিল। মানিব্যাগটি ছিল অরূপের। আর ছবিটি ছিল আদৃতির। আদৃতি ছিল অরূপের প্রাক্তন প্রেমিকা। একজন প্রেমিকা সবসময় প্রেমিকা হিসেবেই থাকার কথা। কিন্তু বিয়ের পর বউ এসে নিজের বরের কোন প্রেমিকার অস্তিত্ব স্বীকার করতে চায় না বলেই তখন প্রেমিকা আর প্রেমিকা থাকে না। তারা হয়ে যায় অস্পৃশ্য, অযাচিত, অপরিচিত কেউ। তারা হয়ে যায় অন্য কেউ। তারা অনেক দূরে চলে যায়। দূরে চলে যেতে হয় তাদের। দূরে ঠেলে দেয়া হয় তাদের। ঠিক যেমন করে প্রেমিকরা প্রেমিকার বিয়ের পর, পর হয়ে যায়, অচেনা হয়ে যায়। সেই হিসেবে আদৃতা নামের প্রেমিকাটিকে অরূপের প্রাক্তন বলে চালিয়ে দেয়া যায় সহজেই। তো, আদৃতার ছবিটি হঠাৎ একদিন সুমিত্রার হাতে পড়ে যায়। পড়ার কথা ছিল না। তবু অরূপের পোড়া কপাল বলে কথা। ছবিটি মানিব্যাগ থেকে মেঝেতে পড়ে যায়।
ছবিটা যখন উল্টো হয়ে মানিব্যাগ থেকে মেঝেতে পড়ে গেল, সুুমিত্রা ভাবল ছবিটা হাতে নিলেই উল্টো পিঠের উল্টো দিকে তার নিজের চেহারা দেখবে। এটা ভাবাটা দোষের কিছু ছিল না। বরং অরূপের বউ হিসেবে সুমিত্রার এমন ভাবাটাই সমাজসঙ্গত ও ন্যায়সঙ্গত। কিন্তু ছবিটা যে আর কারো! অচেনা কারো! এ মেয়েকেতো সুমিত্রা কখনো কোথাও দেখে নি। সে ছবির মেয়েটিকে ভাল করে দেখা এবং তার নিজের স্মৃতিশক্তিকে পরখ করে দেখার জন্য ছবিটি হাতে নিয়ে তার ঘরের মাঝখানে যে বিছানাটা আছে তাতে উঠে আসন পেতে বসল। হাতে ছবি। ছবিতে চোখ। চোখ যতো ছবিটি দেখছে, মস্তিষ্ক ততো সতর্ক হচ্ছে। চোখ দুটির কাছে মেয়েটিকে যতোই অচেনা লাগছে, মস্তিষ্ক ততোই সংকেত দিচ্ছে- কিছুতো গড়বড় আছে! ছবির এই রূপবতী মেয়েটি নিশ্চয়ই বিশেষ কেউ। নয়তো এর স্থান অরূপের মানিব্যাগে হতো না। হতো অন্য কারো মানিব্যাগে। অরূপের মানিব্যাগে জায়গা করে নিতো সুমিত্রার ছবি।
সন্ধ্যেবেলা অরূপ বাড়ি ফিরল। অরূপ কিন্তু বরাবরই সন্ধ্যেবেলাই বাড়ি ফিরে। সুমিত্রা তখন বাড়ির দরজা খোলে দেয়। অরূপের নিয়মিত বাড়ি ফেরার ব্যাত্যয় না ঘটলেও সুমিত্রার দরজা খুলে দেয়ার ঘটনাটার ব্যতিক্রম ঘটল। দরজা খুলে দিল বাড়ির কাজের ছেলে, বাবু।
ঘটনা কী? কী হতে পারে ঘটনা? অরূপ চিন্তিত। ভেবে ভেবে হয়রান। সুমিত্রা তো কথাও বলে না! কী এমন হলো। আজ কি কোন বিশেষ দিন? অরূপ কী কোন ভুল করে ফেলল? হ্যা, অরূপ তো ভুলই করেছে! ভুল করে ফেলে রেখে গেছে জরুরী ও গোপনীয় মানিব্যাগখানা। এটা অরূপ বুঝল তখন, যখন তাদের দুজনের নিশ্চুপ খাওয়া-দাওয়া শেষে ছবি খানা সুমিত্রার হাত থেকে তীব্র বেগে উড়ে এসে পড়ল অরূপের সামনে মেলে ধরা পত্রিকার পাতার উপর!
তারপর? তারপর কী একখানা ঝড় যে বয়ে গেল অরূপের উপর দিয়ে। প্রকৃতি যে ঝড় সৃষ্টি করে, সে ঝড় সামলে নেয়া যায় সহজেই। কিন্তু মনুষ্য সৃষ্ট যে ঝড় তা কী আর অতো সহজে সামলানো যায়! অরূপ অবশ্য শেষমেষ সামলাতে পেরেছিল। সে গল্প না হয় আরেকদিন।
আজ শুধু এটুকুই বলা- আলোচ্য গল্পের নায়ক অরূপের আসলে আমাদের এই সময়ে জন্ম নেয়া উচিত ছিল। তাহলে এভাবে কোন মানিব্যাগে তার প্রাক্তন প্রেমিকার ছবি রাখতে হতো না। ফেসবুক আছে না! তাতে অরূপের একটা আইডি থাকলেই হতো। আদৃতারও থাকতো নিশ্চিত। আর যেভাবে সকলে ফেসবুকে নিজের ছবি পোস্ট করে, আদৃতাও নিশ্চয়ই করতো। আমাদের নায়ক অরূপ সেই নিত্য নতুন ছবিগুলো যখন খুশি আদৃতার ফেসবুক পাতায় গিয়ে দেখতে পারতো নয়ন ভরে! আদৃতার ছবি তখন কোন মানিব্যাগে রাখতে হতো না। তাছাড়া, সুমিত্রাও অরূপের মনের ভেতর বিয়ের এতোদির পরেও আদৃতার উপস্থিতির কথা কখনোই জানতে পারতো না!
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৫৭
কয়েস সামী বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২৩
মৌমুমু বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।
২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:০২
কয়েস সামী বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৪৮
রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
উমম! অরূপ ব্যাপারটা সরাসরি সুমিত্রাকে বুঝিয়ে বলতে পারতো।
মেয়েরা চট করে রেগে যায় ঠিকই, রাগের রেশও রয়ে যায় অনেকদিন - কিন্তু বুঝিয়ে বললে বুঝার চেষ্টাও করে। আর, বিয়ে হয়ে গেলে তো জোর করে হলেও বুঝতে হয়।
যাই হোক - নট ব্যাড!
২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:০৪
কয়েস সামী বলেছেন: হু পারতো। কিন্তু সবকিছু তো আর সবসময় হয়ে উঠে না। ভেবে নিন না, অরূপ ব্যাপারটা পারে নি ঠিকমতো।
বিশ্লেষণমূলক মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
৪| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৪৬
জনৈক অচম ভুত বলেছেন: অরূপের দুর্ভাগ্য, সে আমাদের সময়ে জন্মায়নি।
মোটামুটি ভাল লেগেছে।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:১৪
কয়েস সামী বলেছেন: একটা মোটামোটি রকমের ধন্যবাদ দেয়া গেল।
৫| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৩
আধাঁরি অপ্সরা বলেছেন: বিয়ের পর পর স্ত্রীর কথা চিন্তা করাটা মানতে পারলাম না।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:১৯
ছদ্দবেশি লৌকিক বলেছেন: বেশ ভাল লাগলো।