![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কাকন রেজা :
হুজুগ কাকে বলে, বুঝবেন ফেসবুকের দিকে তাকালে। ফটোল্যাব বলে একটা অ্যাপসের কারগরিতে ফটোতে কিছু পরিবর্তন আনা যায়, একজন তার ছবিতে পরিবর্তন এনে দিলেন আপলোড করে। এই যে শুরু হলো আর থামাথামি নেই। চলছে তো চলছেই। প্রিজমা নামে এক রাশিয়ান অ্যাপ নিয়েও এর আগে একটা হুজুগ এসেছিলো। মূলত হুজুগে মাতাটাই আমাদের স্বভাব। না, আমাদের বললে ভুল হবে, সব দেশেই কমবেশি রয়েছে, তবে ‘সব গাছ ছাড়িয়ে একপায়ে দাঁড়ানো তালগাছ আমরা।’ তালগাছ বিষয়টি আমার আরেকটি লিখার শিরোনাম হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। এখানেও ব্যবহার করতে হলো বাধ্য হয়েই। অকাজের কোনো বিষয়ে আমরা পেছনে পড়ে থাকতে রাজী নই।
যেমন পেছনে পরে থাকতে রাজী নন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ। তিনি করোনার মেয়াদকাল দুই থেকে তিন বছর বাড়িয়ে দিয়েছেন। সারা বিশ্ব যখন করোনার মেয়াদকাল কমাতে ব্যস্ত। আমেরিকান সরকারের সংক্রামক ব্যাধি বিষয়ক শীর্ষ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচিও বলেছেন, ‘লকডাউনের আর প্রয়োজন হবে না, আমরা সম্ভবত করোনার ভ্যাকসিন পেতে চলেছি’, এমন কথা। এরমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলে বসলেন উল্টো কথা। উনি বোধহয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হুজুগে চলছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কথায় আসি। অবশ্য এর আগেও এ সংস্থাটি নিয়ে লিখেছিলাম। সংশয় প্রকাশ করেছিলাম এ সংস্থাটির কর্মকান্ড নিয়ে। এখন পর্যন্ত আশা জাগানিয়া কোনো কথা সংস্থাটি বলতে পারেনি। বরং অন্যসব আশার কথায় উল্টো সংশয়-সন্দেহ পোষণ করেছে। ভ্যাকসিন বিষয়ে যখন অন্যরা আশার কথা বলেছে তখন সংস্থাটি সে আশাকে ফুৎকারে নিভিয়ে দিয়ে নিরাশা তত্ত্ব প্রচার করেছে। মানুষ করোনাকালে যে প্যানিক আক্রান্ত হয়েছে এর অন্যতম কারণ এই সংস্থাটি। আর আমাদের দেশে এই প্যানিকটিতে জল-হাওয়া জোগালেন আমাদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
করোনাকালের শুরুতে এই মানুষটিই করোনা বাংলাদেশে যে জুৎ করতে পারবে না এমন তত্ত্ব প্র্রচার করেছিলেন। আর এখন জুৎসই হবার তত্ত্ব প্রচার করছেন। এমন কথায় সারাদেশে একটা হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষের মধ্যে ভাবনা কাজ করছে তবে কী করোনার হাত থেকে মুক্তি সুদূর পরাহত। তবে কি সেই বিশ লাখ মানুষের মৃত্যু বিষয়ক তথ্যই ঠিক। সরকারি মৃত্যুর হিসাব আর উপসর্গে মৃত্যুর পরিসংখ্যান মিলিয়ে অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে তাতে এমন অবস্থা দুই থেকে তিন বছর থাকলে গ্রাফটা সেদিকেই ঘুরে যায়।
যাক গে, ফটোল্যাবের হুজুগ দিয়ে শুরু করেছিলাম। সেই হুজুগে আক্রান্ত হতে দেখেছি খ্যাত মানুষদেরও। তারাও ‘হুজুগে বাঙাল’ এই প্রবাদটাকে মিথ্যা হতে দিতে রাজী নন। কী আর করার। আপাতত আমাদের বসবাস হুজুগের রাজত্বেই।
পুনশ্চ : স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ তার বক্তব্য সংশোধন করেছেন। বলেছেন, করোনাকালের মেয়াদ বিষয়টি স্ক্রিপ্টের ভুল জনিত। একজন মহাপরিচালক শুধুমাত্র অধিনস্তের করা স্ক্রিপ্ট পড়ে যাবেন, এটা কী বিশ্বাসযোগ্য? যাক গে, অবিশ্বাস্য অনেক কিছুইতো আমাদের শুনতে হয়, গিলতে এবং হজম করতে হয়।
©somewhere in net ltd.