![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটা জোক আছিল, ইংরেজি পিলারে একটা ‘এল’ দিলেই চলে, তয় দুইটা দিলে পিলারটা শক্ত হয়। অবস্থা অখন এমুনি। খবরের শিরোনাম হয়, ব্রুটাল মার্ডার। কনতো দেহি, আরামের লগে, শান্তিতে খুন কোনডা হয়। খুন মানেই তো ব্রুটাল ব্যাপার। তয় সাথে আবার ব্রুটাল যোগ করনের দরকার কী! ওই যে, স্টাইল কইরা যেমুন কেউ কন, ‘সাপোজ ধরেন’, হেই রকম আর কী।
আমাগো ‘সাপোজ ধরেন’ টাইপ কথা কওনের পাবলিকের অভাব নাই। আলাপটা গপ্পের ঢংয়ে কই। নিজের বিয়ার কার্ড দিতে গিয়া খরগোশ কার্ডের উপরে লেখলো, ‘ফক্স স্মিথ ফুকান্টুস’। বুঝলেন তো শিয়ালের জইন্যে কার্ডটা। নামের নিচে পরিচিতির জায়গা লেখলো, ‘পণ্ডিত’। কার্ডটা দেইখা গেলো শিয়াল খ্যাইপা। নামের সাথে পণ্ডিত জুইড়া দেওয়া হয় নাই কেন, এই নিয়া মহা তুলকালাম। পণ্ডিত যদি নামের সাথেই থাকে তয় পরিচিতির কি দরকার! এইখানে পিলারের গপ্পটা খাইটা যায়। মাঝেমইধ্যে মনে হয়, এমুন পণ্ডিতগো কই আকিকা দিয়া নতুন কইরা নাম রাখতে।
উদাহরণ সরাসরি দিতে পারতাম, তয় ডরে দেই নাই। ওই যে, রুদ্রনীল ঘোষ বাবুর কবিতায় আছে না, ‘ফেসবুকে কেস খাবো বেশি কিছু লিখলে, ফুলছাড়া কোনো ফটো দিই না’। ওই কারণেই উদাহরণটা সরাসরি দিলাম না। অখন কেইস খাওনর আলাপে আসি। ফেসবুকে লেখা নিয়া এত মাথা ঘামানি কেন, এমুন কথার উত্তরটা খোঁজন দরকার। খুঁজতে গিয়া দেখবেন, যে কথাগুলান গণমাধ্যমের কওনের কথা, হ্যাইগুলান প্রায় গণমাধ্যমই হজমি খাইয়া হজম কইরা ফেলছে। পাবলিক তো আর হজমি খাইতে পারে না। তাগো হজমি মাইনে ‘ইয়ে’ দেয় না কেউ। আমপাবলিকরে গুনে কে। মনের দুঃখে তাই কুনো কুনো পাবলিক হজম না হওনের গ্যাসটা ফেসবুকে ঝাইড়া দেন। তখনি লাগে গিট্টুটা। ‘ফেসবুকে কেস’ খায়া যায়। অবশ্য এইগুলান সব অনুভূতির খেলা। কখন কার কুন অনুভূতির দরজা-জানলা খুইলা যায় কওন তো যায় না। হ্যাই খোলা দরজা-জানলা দিয়া কখন আবার গ্যাসের গন্ধ ঢুইকা যায়।
এমপি পাপুলরে নিয়া লেখা হইতাছে। তিনি কইছেন তিনি ‘নিষ্পাপ’। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হইছে কেবল, তিনি তো দোষী প্রমান হন নাই। তাই তিনারে নিয়া যে সকল কথাবার্তা মাধ্যমগুলান লেখছে, হ্যাইডা যদি তার অনুভূতিতে লাগে তয়? তয় তো ভেজাল। তিনি তো কেস ঠুইকা দিতেই পারেন। কইতে পারেন আমি দোষী প্রমান হই নাই, তয় আমারে কেন বদনাম করা হইল। এমুন ধারায় ‘মুন্নি বদনাম হুয়ি’ গানের লাইগাও সব ‘মুন্নি’রা নামের অনুভূতির আঘাত বিষয়ে মামলা করবার পারে। কন, করবার পারে কিনা?
এক কার্ডে আমার নামের উপরে চন্দ্রবিন্দু লাগাইছে। আমি তো হালায় ‘কাকন’ লেখি চন্দ্রবিন্দু ছাড়া, সুতরাং আমার নামের উপরে চন্দ্রের বিন্দু লাগায়া আমারে চান্দে পাঠানোর ষড়যন্ত্র হইতাছে; এমুন চিন্তায় তো একখান মামলা ঠুইকা দেওনই যায়। নাকি যায় না? অন্তত নাম বিকৃতি করা হইছে এমুন অভিযোগ তো আনন যায়। আমার অনুভূতি তো আঘাতপ্রাপ্ত হইতে পারেই, অনুভূতি বইলা কথা।
ফারুকী’র ‘ডুব’ লইয়া দেখলেন না কী হইল। কত কথা, হুমায়ূন আহমেদরে টাইনা তার ব্যক্তি জীবন লইয়া রমরমা আলোচনা হইল। তার দোষ-গুন বাইর হইল, সাথে আরো কতকিছু। মাঝখান থাইকা অবশ্য ফারুকী’র লাভ হইছে। ‘ডুব’ হিট হইয়া গেছে। নেগেটিভ প্রচারটাও যে কত কামের তা প্রমান হইছে এই ঘটনায়। সুতরাং ‘বি পজিটিভ’। আমাগো কর্তারা দেখেন না কথায় কথায় কন, পজিটিভ হওনের কথা। সুতরাং ‘ফেসবুকে কেস’ খাইলে ক্ষতি নাই। বরং যারা কেস খাইছেন তারা ‘ডুব’ এর মতন বিখ্যাত হইয়া উঠবেন। সাংবাদিক কাজলের কথাই কন, কেস খাওনের আগে তারে চিনতো কেডায়, অখন সে বিখ্যাত। সবাই চিনে। তারে লইয়া লেখা হয়, মানববন্ধন হয়। লোকজন সুন্দর সুন্দর কথা কয়। এইগুলান কি আমরা জানতাম, যদি সে ‘ফেসুবকে কেস’ না খাইতো। অতএব ‘বি পজিটিভ’। মুশকিল হইলো আমারে লইয়া। আমি হালায় ‘বি নেগেটিভ’, মাইনে আমার ব্লাড গুরুপ, বুঝলেন কিনা।
শেষে একখান গপ্প দিয়া শেষ করি। গ্রামের এক পাবলিক। বারবার মেম্বার ইলেকশন করে আর ফেইল মারে। এমুন করতে করতে সে হইয়া গেছে নামের মেম্বার। তারে সবাই মেম্বার কইয়া ডাকে। একদিন একজন তারে জিগাইলো, মেম্বার সাব আপনে যে বারবার ফেইল মারেন, তাও নির্বাচনটা করেন কেন? উত্তরে ফেল্টুস মেম্বার কইলো, ওই যে তুই আমারে মেম্বার ডাকলি, এই ডাক শুননের লাইগাই করি। আমাগো কেউ কেউ ফেল্টুস বইলাই নামের সাথে পদবি মিলায়া আত্মতৃপ্তি পাইতে চান। কেউ কেউ পদ পাইয়া কামে ফেল্টুস মারলেও পদ ছাড়তে চান না পদবির মোহে।
পদবি বড় মোহময়। এই যে করোনাকালেও দেখেন, কত জনরে পাবলিক গাইলাইতাছে, তাও তারা ‘ত্যাগ’ করতে চান না। অবস্থা হইলো গিয়া, মেরেছে কলসীর কানা তাই বলে কী প্রেম দেব না’র মতন। আপনারা তাগো প্রেমরে যতই বিষবৎ জ্ঞান করেন, হ্যারা সেই ‘প্রেম’ বিলায়াই যাবে। সাথে আপনেগো মিজাজটারে ‘বিলা’ কইরা দিয়া যাবে। অবশ্য হ্যাগো কর্মকান্ড দেইখা মনে হয় ‘বিলা’ করনডাই হ্যাগো মূল কাম। আর আমাগো কাম হইলো, ঘরে বইসা মিজাজ ‘বিলা’ করা। মিজাজ ছাড়া অন্যকিছু ‘বিলা’ করণের ক্ষেমতা তো আমাগো নাই। তাই নিজের মিজাজটাই ভরসা। করোনাকালে ঘর-বাইর কইরা হ্যাইডারেই ‘বিলা’ করি। হ্যারা বারবার ‘আকিকা’ কইরা নামের সাথে পদবিটারে যুক্ত করুক। আর আমরা আম-পাবলিকরা জিডিপি স্টাইলে ‘আকিকা’র হাওয়াই মিঠাই খাই।
©somewhere in net ltd.