| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ফেসুবক মাঝেমধ্যে ঝামেলা করে। আর এই ঝামেলাটা ইদানিং বেশি শুরু হয়েছে। নিষিদ্ধকরণ প্রক্রিয়ার প্রতি এতটা আকর্ষণ ফেসবুকের আগে ছিলো না। এখন হয়েছে। চর্বি জমে যাওয়া শরীরে কিটো ডায়েটের মতন অস্বাস্থ্যকর একটা ব্যবস্থা বেছে নিয়েছে ফেসবুক। হঠাৎ করেই বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে আইডি। কিংবা নিদেনপক্ষে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। না, অস্বীকার করার নেই, ফেসবুকে কিছু মানুষের অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর কিছু কায়কারবারে অস্বস্তির কারণ ঘটে। ঘটাটাই স্বাভাবিক। রোগ সারানোর জন্য ঔষধ রয়েছে। সেই প্রতিটি ঔষধেরই রয়েছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। আপনি ঔষধ স্বীকার করলে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াকে স্বীকার করতেই হবে। আর সে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে বাঁচার বিকল্প ঔষধ বাদ দেয়া নয়। যে সব ঝামেলায় ফেসবুক প্রায়শই খড়গহস্ত হয় সেগুলো খুব কঠিন কিছু নয়। নিয়ন্ত্রণও কঠিন নয়। অপ্রোয়জন বা ক্ষতিকর মনে হলে সেগুলো মুছে দিলেই হলো। এর বেশি করা অনুচিত এবং অধিকারের বাইরে।
প্রতিটি অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে পরিচিতি নিশ্চিত করা হলে এসব সমস্যা অনেকটাই কমে যেতো। সামাজিকমাধ্যম হিসাবে ফেসবুককে অস্বীকার করার যেমন উপায় নেই, তেমনি ফেসবুকের তার সাথে যুক্তদের প্রয়োজনকে উপেক্ষা করার কোনো সঙ্গত কারণ নেই। মানুষ ফেসবুকে আসে তাদের প্রয়োজনেই। আর ফেসবুক তারসাথে যুক্তদের মাধ্যমেই টাকা কামায়। যা জুকারবার্গকে মালকড়ির জায়ান্ট করে তুলেছে। সুতরাং যাদের টাকায় ফেসবুকের টাকশাল তাদের প্রয়োজনকে প্রাধান্য দেয়া অবশ্যই উচিত।
সঙ্গত কারণ ছাড়াই নিষিদ্ধকরণ প্রক্রিয়া যারপনাই অসঙ্গত ও অন্যায়। কিটো ডায়েটের কথা বলি। কিছু মানুষ খেতে খেতে যখন চর্বির আধিক্যে নিজেকেই খেয়ে ফেলার অবস্থা দাঁড়ায়, তখন উপায় না দেখে সব খাওয়া বন্ধ করে দেয়। যে কার্বোহাইড্রেট ছাড়া মানুষ বাঁচে না, মস্তিষ্ক সচল থাকে না, তা একেবারে বন্ধ করে দিয়ে শরীর সাইজে আনার চিন্তা করে। এই ডায়েট প্রকৃতি বিরুদ্ধ। তেমনি চর্বি জমে যাওয়া ফেসবুকের এই যে নিষিদ্ধকরণ প্রক্রিয়া সেটা তার প্রকৃতি বিরুদ্ধ। এভাবে চলতে থাকলে প্রয়োজনই আরেকটি সামাজিকমাধ্যমকে দাঁড় করিয়ে দেবে। তখন হোদল কুতকুত ফেসবুকের অবস্থা দাঁড়াবে হাড্ডিসার গলির ঘেয়ো কুকুরটির মতন। যে একটুকরো রুটির অভাবে সারাদিন বুভুক্ষ থাকে।
হ্যাঁ, এটা কোনো অতিকল্পনা নয়। মানুষের সামাজিক যোগাযোগের চিন্তা থেকেই ফেসবুক এসেছে। তেমনি ফেসবুকের বিকল্প চিন্তা মানুষ ভাববে এবং ভাবতে শুরু করেছে। বিকল্প হিসেবে টুইটার যদিও এত প্রবল নয়। তবে হঠাৎ করেই হয়তো কোনো প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী সমুখে দাঁড়াবে এবং তা সময়ের প্রয়োজনেই। এক্ষেত্রে ফেসবুক, মেদ সর্বস্ব শরীর আর অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মধ্যে একটি মিল রয়েছে। তিন ক্ষেত্রেই পরিস্থিতি যখন হোদল কুতকুত অবস্থায় দাঁড়ায় তখন হঠাৎ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। ফেসবুক, মেদ সর্বস্বতা আর রাষ্ট্র তিনটিই যায় নিষিদ্ধকরণের পথে। ফেসবুক আইডিকে নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রিত করে। মেদ নিয়ন্ত্রণে হঠাৎ করেই কিটো ডায়েট অবলম্বিত হয়। আর গণতন্ত্রহীন রাষ্ট্রও ফেসবুকের মতন মতকে নিষিদ্ধ, মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।
হঠাৎ নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রণের এই প্রক্রিয়ার মুশকিল হলো, ইউজার, শরীর এবং জনগণ তখন বিকল্প খোঁজে। উপায়হীনের বিকল্প খোঁজাটা স্বভাব এবং বাধ্যগত। আর উপায়হীনের সেই বিকল্প এবং তার উত্থান হয় অকল্পনীয়, অবিশ্বাস্য। 
©somewhere in net ltd.