নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জন্মসূত্রে মানব গোত্রভূক্ত; এজন্য প্রতিনিয়ত \'মানুষ\' হওয়ার প্রচেষ্টা। \'কাকতাড়ুয়ার ভাস্কর্য\', \'বায়স্কোপ\', \'পুতুলনাচ\' এবং অনুবাদ গল্পের \'নেকলেস\' বইয়ের কারিগর।

কাওসার চৌধুরী

প্রবন্ধ ও ফিচার লেখতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। পাশাপাশি গল্প, অনুবাদ, কবিতা ও রম্য লেখি। আমি আশাবাদী মানুষ।

কাওসার চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বাধীন মত প্রকাশ ও দায়বদ্ধতা

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৪২


মানুষ। বলা হয় বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে প্রভাবশালী জীব। আর যেখানে প্রভাব প্রতিপত্তি, লোভ-ভোগ, হিংসা-ভালোবাসা, ঘৃণা-অহংকার থাকে সেখানে শৃঙ্খলিত হওয়া কিংবা সামাজিক কিছু নিয়মকে ভিত্তিমূল করে চলতে হয়। স্বাধীনতার সাথে দায়বদ্ধতা কিংবা সামাজিক দায়িত্বশীলতা এক সূত্রে গাঁথা। একটি আরেকটির পরিপূরক। মানুষ ছাড়া পৃথিবীর কোন প্রাণীর মত প্রকাশের স্বাধীনতা কিংবা দায়বদ্ধতার দরকার পড়েনি। তার অন্যতম কারণ হলো, মানুষ প্রতিনিয়ত নিজেকে পরিবর্তন করতে চায়, আরো উপরে উঠতে চায়, আরো ভোগ করতে চায়, আরো ক্ষমতাবান হতে চায়।

মানুষের আছে পেটের চেয়ে সহস্রাধিক বড় খাবারের খিদে, যোগ্যতার চেয়ে লক্ষাধিক বেশি অর্জনের বাসনা। আছে জীবনকে জয় করে চিরজীবী হওয়ার নেশা। পেটের খিদের চেয়ে মন আর মস্তিস্কের খিদে যখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠে তখন মানুষকে বলে দিতে হয় তুমি থামতে হবে।

প্রায় ১০,০০০ বছর আগে পর্যন্ত মানুষ শিকারি-জড়ক হিসাবে বসবাস করতো । তারা ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর আধিপত্য লাভ করতে শুরু করেছিল । সাধারণত তারা গুহাগুলির মধ্যে প্রায়ই ব্যান্ড সোসাইটি নামে পরিচিত ছোট ভ্রম্যমাণ দলগুলিতে বসবাস করত। কৃষি উদ্ভাবনের ফলে নব্যপ্রস্তর যুগীয় বিপ্লব ঘটেছিল, খাদ্যের উদ্বৃত্ততা বেড়ে যাবার ফলে মানুষের স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল, তাছাড়া পশুপালন এবং ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ধাতু সরঞ্জাম ব্যবহার করা শুরু হয়েছিল। কৃষিকাজ বাণিজ্য ও সহযোগিতাকে উৎসাহিত করেছিল যা জটিল সমাজের দিকে নিয়ে গিয়েছিল ।

প্রাথমিক সভ্যতাগুলি যেমন - মেসোপটেমিয়া, মিশর, ভারত, চীন, মায়া, গ্রিস এবং রোমান সভ্যতা যাদের মাধ্যমে মানব সভ্যতার যাত্রা শুরু হয়েছিল। মধ্যযুগের শেষের দিকে এবং প্রারম্ভিক আধুনিক যুগের মধ্যে বিপ্লবী চিন্তাভাবনা ও প্রযুক্তির উত্থান দেখা দেয়। পরবর্তী ৫০০ বছর ধরে অনুসন্ধান এবং ইউরোপীয় ঔপনিবেশিকতা বিশ্বের অধিকাংশ অংশ ইউরোপীয় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছিল যা পরে স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামের দিকে জনগণকে বাধ্য করেছিল। আধুনিক বিশ্ব এবং প্রাচীন জগতের মধ্যে সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে যে দ্রুত পরিবর্তন হয়েছিল এই ধারণাটি মূলত ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে অগ্রগতির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। মানুষের কার্যকলাপের সমস্ত অঞ্চলে অগ্রগতির ফলে বিবর্তন এবং মনোবিশ্লেষণের মত নতুন তত্ত্বের উদ্ভব ঘটেছে, যা পরিবর্তিত মানবতার দৃষ্টিভঙ্গি নামে পরিচিত। উনিশ শতাব্দী পর্যন্ত বৈজ্ঞানিক বিপ্লব, প্রযুক্তি বিপ্লব, শিল্প বিপ্লব এবং নতুনতর প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলে স্বাধীন আবিষ্কারের, যেমন বিমান এবং অটোমোবাইল এর উদ্ভাবন হয়েছে। তাছাড়া শক্তি উন্নয়ন, যেমন কয়লা এবং বিদ্যুৎ এর ব্যবহার বেড়েছে। ইহা জনসংখ্যা বৃদ্ধি (বিশেষত আমেরিকাতে) এবং উচ্চতর জীবন প্রত্যাশার সাথে সম্পর্কযুক্ত, বিশ্ব জনসংখ্যা দ্রুত উনিশ এবং বিংশ শতাব্দীতে অনেক বৃদ্ধি পায় যা ছিল গত শতাব্দীর ১০% বেশি।

বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে তথ্য যুগের আবির্ভাবের সাথে সাথে আধুনিক মানুষ এমন এক জগতে বাস করে যারা ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক ও পরস্পরের সাথে সংযুক্ত। ২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী প্রায় ২ বিলিয়ন মানুষ ইন্টারনেটের মাধ্যমে এবং ৩.৩ বিলিয়ন মোবাইল ফোনের সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছে। যদিও মানুষের মধ্যে আন্তঃসংযোগ বিজ্ঞান, শিল্প, আলোচনা এবং প্রযুক্তি ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য উৎসাহিত করেছে সাথে সাথে এটি সাংস্কৃতিক সংঘর্ষ এবং ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র উৎপাদন ও ব্যবহারকেও পরিচালিত করেছে। মানব সভ্যতা পরিবেশগত ধ্বংস এবং দূষণ উল্লেখযোগ্যভাবে অন্যান্য প্রকারের প্রাণীর চলমান বিলুপ্তিকে ত্বরান্বিত করছে, যা ভবিষ্যতে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিকে আর দ্রুততর করবে।

বাকস্বাধীনতা হচ্ছে স্বতন্ত্র্য ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের; নির্ভয়ে, বিনা প্রহরতায় বা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা, অনুমোদন গ্রহণের বাধ্যতা ব্যতিরেকে নিজেদের মতামত স্বাধীনভাবে প্রকাশ করার সমর্থিত মুলনীতি। "মত প্রকাশের স্বাধীনতা" (freedom of expression) শব্দপুঞ্জটিকে কখনও কখনও বাকস্বাধীনতার স্থলে ব্যবহার করা হয়, তবে এক্ষেত্রে বাকস্বাধীনতার সাথে মাধ্যম নির্বিশেষে তথ্য বা ধারণার অন্বেষণ, গ্রহণ এবং প্রদান সম্পর্কিত যেকোন কার্যের অধিকারকেও বুঝিয়ে থাকে।

স্বাধীন অভিব্যক্তি ও বাক স্বাধীনতার একটি দীর্ঘ পুরাতন ইতিহাস আছে; সে ইতিহাসের পালাবদলে সৃষ্টি হয়েছে আধুনিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিল। এটি অনুমান করা হয় যে ৬ষ্ঠ খৃষ্টপূূর্বের শেষে বা ৫ম খৃষ্টপূূর্বের প্রথমার্ধে প্রাচীন এথেন্সে গণতান্ত্রিক মতবাদে বাক স্বাধীনতার প্রতিফলন ঘটেছিল। প্রজাতন্ত্রী রোমানের মূল্যবোধে বাক স্বাধীনতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।

ইংল্যান্ডের সংসদে ১৬৮৯ বিলে সাংবিধানিকভাবে বাকস্বাধীনতাকে অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়; যার প্রভাব সমাজে এখনো বিদ্যমান। ১৭৮৯ তে ফরাসি বিপ্লবের সময় নাগরিকের অধিকার মুলক আইন বলবৎ করা হয়; যেখানে বাক স্বাধীনতাকে অনিবার্য অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। সেই ঘোষণায় ১১ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়-

"নিজের চিন্তাভাবনা ও মতামতকে মুক্তভাবে বিনিময় করা নাগরিকের মুল্যবান অধিকার। প্রত্যেক নাগরিক স্বাধীনতা অনুযায়ী বলতে, লিখতে এবং তথ্য প্রকাশ করতে পারে কিন্তু সেই স্বাধীনতার অপব্যবহার করলে তার জন্য সে দায়ী থাকবে, আর এই অপব্যবহার আইন দ্বারা সংজ্ঞায়িত থাকবে।"

১৯৪৮ সালে মানবাধিকার সনদে ১৯ নং অনুচ্ছেদ সংযোজিত হয়। যেখানে বলা হয়েছে-

"প্রত্যেকের অধিকার আছে নিজের মতামত এবং অভিব্যক্তি প্রকাশ করার। এই অধিকারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে নিজের স্বাধীনচেতায় কোনো বাধা ব্যতীত অটল থাকা; পুরো বিশ্বের যে কোনো মাধ্যম থেকে যে কোনো তথ্য অর্জন করা বা অন্য কোথাও সে তথ্য বা চিন্তা জ্ঞাপন করার অধিকার।"

বর্তমানে বাকস্বাধীনতা ও মতের স্বাধীন প্রকাশকে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পর্যায়ে মানবাধিকার বলে অভিহিত করা হয়।আন্তর্জাতিক বেসামরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্মেলনের ১৯ নং অনুছেদ, ইউরোপীয় মানবাধিকার সম্মেলনের ১০ নং অনুচ্ছেদ, মার্কিন মানবাধিকার সম্মেলনের ১৩ নং অনুচ্ছেদ এবং আফ্রিকান জন ও মানবাধিকারের ৯ নং অনুচ্ছেদে এই অধিকারকে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। জন মিল্টনের যুক্তির উপর ভিত্তি করে বলা যায়; এটা একটি বহুমুখী অধিকার। যেখানে শুধুমাত্র চিন্তাভাবনা ছড়িয়ে দেওয়াটাই মুখ্য নয়। তথাপি এ সংক্রান্ত তিনটি স্বতন্ত্র্য বিষয় আছে, যা নিম্নরূপ-

-- তথ্য এবং ধারণা অন্বেষণ করার অধিকার।
-- তথ্য এবং ধারণা পাওয়ার অধিকার।
-- তথ্য এবং ধারণাকে ছড়িয়ে দেওয়ার অধিকার।
আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক এবং জাতীয় মানদন্ডে এই বাকস্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। যেকোনো মাধ্যম, মৌখিক, লিখিত, প্রকাশনা, ইন্টারনেট দ্বারা অথবা চিত্রকলার মাধ্যমে এই অভিব্যক্তির স্বাধীন প্রকাশ করা যেতে পারে।

গণতন্ত্রে মুক্তবাক একটি মৌলিক নীতি। অভিব্যক্তির স্বাধীনতার মূলনীতি এতটাই গভীর যে, এমনকি ইমার্জেন্সি সময় ও বিতর্ক পুরোপুরি বন্ধ করা উচিত নয়। মুক্তবাক এবং গণতন্ত্রের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী অন্যতম প্রবক্তা হচ্ছেন আলেক্সাণ্ডার মেইকলেজন। তিনি বলেছেন গণতন্ত্রের যে ধারণা তা হলোঃ জনগণের দ্বারা স্ব নিয়ন্ত্রিত সরকার থাকবে। প্রজ্ঞার কাজটি হলোঃ মুক্ত তথ্য এবং ধারণার বিস্তারে কোনো ধরনের বাধ্যবাধকতা থাকতে পারে না।

আইনগত ব্যবস্থাগুলো কখনও কখনও বাকস্বাধীনতার নির্দিষ্ট কিছু সীমাবদ্ধতাকে স্বীকার করে, বিশেষ করে যখন বাকস্বাধীনতা অন্যান্য স্বাধীনতাগুলোর সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে, যেমন মর্যাদাহানি, কুৎসা রটানো, পর্নোগ্রাফি, অশ্লীলতা, আক্রমণাত্মক শব্দ এবং মেধাসম্পদের বেলায় বাকস্বাধীনতার সাথে অন্যান্য স্বাধীনতার দ্বন্দ্ব দেখা যায়। "অপকার নীতি" বা "অবমাননা নীতির" সাহায্যে বাকস্বাধীনতার সীমাবদ্ধতার ন্যায্যতা প্রতিপাদন করা হয়। বাকস্বাধীনতার সীমাবদ্ধতা আইনগত অনুমোদন বা সামাজিক নিষেধাজ্ঞা বা উভয়ের সাহায্যে হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট কিছু সরকারী প্রতিষ্ঠান বাকস্বাধীনতাকে সীমাবদ্ধ করার জন্য নীতিমালা কার্যকর করতে পারে, যেমন স্টেট স্কুলের স্পিচ কোড।

জন স্টুয়ার্ট মিল তার অন লিবার্টি (১৮৫৯) গ্রন্থে লেখেন, "নৈতিক নিয়মের বিষয় হিসেবে কোন কিছু স্বীকার করতে বা আলোচনা করতে পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা থাকা আবশ্যক, তাকে যতই কোন মতবাদ অনুসারে অনৈতিক হিসেবে বিবেচিত হোক না কেন।" মিল যুক্তি দেন, প্রকাশের পূর্ণ অধিকার দরকার বক্তব্যকে তাদের সামাজিক বিব্রতকর অবস্থা নয়, বরং যৌক্তিকতার সীমায় নিয়ে আসার জন্য। যাইহোক, মিল অপকার নীতি (Harm principle) সম্পর্কেও আমাদেরকে পরিচয় করিয়ে দেন, যা স্বাধীন মত প্রকাশের ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা নিয়ে আসে। তিনি বলেন, "একটি সভ্য সমাজে কোন ব্যক্তির ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে তার উপর তখনই ক্ষমতার সঠিক ব্যবহার করা যায়, যখন তা অন্য কোন ব্যক্তির উপর সংঘটিত অপকারকে বাঁধা দেয়ার জন্য করা হয়।"

১৯৮৫ সালে জোয়েল ফাইনবার্গ আরেকটি শব্দের সাথে আমাদেরকে পরিচয় করিয়ে দেন, যার নাম হল "অবমাননা নীতি" (offense principle)। তিনি যুক্তি দেন, মিলের অপকার নীতি অন্য ব্যক্তির অনিষ্টকর কার্য থেকে মানুষকে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে পারে না। ফাইনবার্গ লেখেন, "কোন প্রস্তাবিত অপরাধের শাস্তিকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে এটা সবসময়ই একটি উত্তম কারণ যে, সেই শাস্তির ফলে কার্যনির্বাহী অপরাধী তার নিজেকে ছাড়া ভিন্ন কোন ব্যক্তির কোন গুরুতর অনিষ্ট (offense) (কেবল আহত করা বা অপকার করা নয়) করতে পারবে না।" ফাইনবার্গ বলেন, কিছু ধরনের মত প্রকাশ আইনের দ্বারা নিষিদ্ধ হয় যেগুলো খুবই অবমাননাকর হয়, কিন্তু কোন ব্যক্তিকে অবমাননা করা, কারও অপকার করার চেয়ে কম গুরুতর বলে অপকার করার শাস্তি বেশি হওয়া উচিৎ। অন্যদিকে মিল অপকার নীতির ভিত্তিতে না হওয়া আইনগত শাস্তিকে সমর্থন করেন না। যেহেতু অবুমাননার মাত্রা ব্যক্তিভেদে বিভিন্ন হয়, বা কোন ব্যক্তি তার অন্যায্য কুসংস্কারের কারণে কোন মত প্রকাশকে অবমাননা বলে মনে করতে পারেন, তাই ফাইনবার্গ অবমাননা নীতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় বিবেচনার প্রয়োজন বোধ করেন, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে বক্তব্যের পরিমাণ, সময়কাল এবং সামাজিক মূল্য, কতটা সহজে বক্তব্যটিকে এড়িয়ে চলা যায়, বক্তব্যপ্রদানকারীর উদ্দেশ্য, অবমানিত ব্যক্তির সংখ্যা, অবমাননার মাত্রা এবং বৃহৎ পরিসরে সমাজের সাধারণ স্বার্থ।

জ্যাসপার ডুমেন বলেন, অপকারকে প্রতিটি ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে সংজ্ঞায়িত করা উচিৎ, একে কেবলমাত্র শারীরিক অপকারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা উচিৎ নয়, যেহেতু অ-শারীরিক অপকারও জড়িত থাকতে পারে। এক্ষেত্রে তিনি ফাইনবার্গের দেয়া অপকার ও অবমাননার পার্থক্যকে সমালোচনা করেন।

১৯৯৯ সালে বার্নার্ড হারকোর্ট লেখেন, "আজ অপকার সম্পর্কিত বিতর্ককে কোনরকম সমাধানের উদ্দেশ্য ছাড়া একরকম উদ্দেশ্যহীন হট্টগোল বলেই মনে হচ্ছে। এই বিতর্কের গঠনে অপকার সম্পর্কিত পরষ্পর প্রতিযোগিতাপূর্ণ দাবীগুলোর মাঝে কোন যুক্তি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আসল অপকার নীতিতে কখনই অপকারগুলোর তুলনামূলক গুরুত্ব বর্ণনা করা হয় নি।"

বাকস্বাধীনতার সীমাবদ্ধতায় অপকার নীতি ও অবমাননা নীতির ব্যাখ্যা সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিকভাবে বিভিন্ন হয়ে এসেছে। যেমন রাশিয়ায় অপকার ও অবমাননা নীতিকে এলজিবিটি সম্পর্কিত মত প্রকাশ ও আন্দোলনগুলোকে বন্ধ করার জন্য রাশ্যান এলজিবিটি প্রোপাগান্ডা আইন এর ন্যায্যতা প্রতিবাদনের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। কয়েকটি ইউরোপীয় রাষ্ট্রে যেখানে সেই সব রাষ্ট্রে বাকস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার জন্য গর্ব করা হয়, সেখানেও হলোকাস্ট ডিনায়াল জাতীয় মত প্রকাশ করা (যেখানে বলা হয় ইহুদিহত্যা নাজি জার্মানির উদ্দেশ্য ছিলনা ইত্যাদি) নিষিদ্ধ। এইসব দেশের মধ্যে অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, চেক রিপাবলিক, ফ্রান্স, জার্মানি, হাঙ্গেরি, ইজরায়েল, লিকটেনস্টাইন, লিথুনিয়া, নেদারল্যান্ড, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, স্লোভাকিয়া এবং সুইজারল্যান্ড।

ড্যানিশ কার্টুনিস্ট কার্ট ওয়েস্টারগার্ড ইসলামের নবী মুহম্মদকে নিয়ে একটি বিতর্কিত কার্টুন তৈরি করেছিলেন যেখানে নবীর পাগড়িতে একটি বোম্ব রাখা ছিল। এটি সারা দুনিয়ায় প্রচণ্ড প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।

রাজনৈতিক বিজ্ঞানের প্রফেসর এবং লেখক নরমান ফিংকেনস্টাইন তার নিজের মতামত ব্যক্ত করে বলেন, মুহম্মদকে নিয়ে শার্লে হেবদোর মর্যাদাহানিকর কার্টুনগুলো বাকস্বাধীনতার সীমাকে অতিক্রম করেছে, আর তিনি সেই কার্টুনগুলোকে জুলিয়াস স্ট্রেইচারের কার্টুনগুলোর সাথে তুলনা করেন, যাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তার লেখা ও আঁকা প্রকাশের জন্য ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। ২০০৬ সালে ফরাসী রাষ্ট্রপতি জ্যাক শিরাক শার্লে হেবদোর সেই প্রকাশনাটির দ্বারা এভাবে প্রকাশ্য উত্তেজনা সৃষ্টির নিন্দা করেন। তিনি বলেন, "যাকিছু কোন ব্যক্তির বিশ্বাস, বিশেষ করে ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করবে সেগুলোকে পরিহার করা উচিৎ"।

যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধানের প্রথম সংশোধনী বিষয়ক মামলা ব্রান্ডেনবার্গ বনাম ওহায়ো (১৯৬৯)-তে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত প্রকাশ্যে হিংস্র কার্য কিংবা বিপ্লবের কথা বলার অধিকার বিষয়ক রায় দেন-
[Our] decisions have fashioned the principle that the constitutional guarantees of free speech and free press do not allow a State to forbid or proscribe advocacy of the use of force or law violation except where such advocacy is directed to inciting or producing imminent lawless action and is likely to incite or cause such action.

ব্রান্ডেনবার্গের এই রায়ে বাকস্বাধীনতার অধিকার চূড়ান্ত হয়। প্রথম সংশোধনীর দ্বারা হেট স্পিচ বা কটূক্তিও রক্ষিত হয় যা R.A.V. বনাম সিটি অফ সেইন্ট পল (১৯৯২) মামলায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদালত রুল জারি করে যে, কটূক্তি অনুমোদিত হবে, যদি না তা আসন্ন সহিংসতা সৃষ্টি করে।

ইন্টারনেট হচ্ছে এমন একটি মাধ্যম যা ধীরে ধীরে সংবাদপত্র, ভিলেজ গ্রিন অথবা মেইল থেকেও বিস্তৃত হচ্ছে। এই সিডিস প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য যে কণ্ঠস্বর তা রোধ করছে। এটা সাংবিধানিক ভাবে অসহনীয় পরিস্থিতি। ইন্টারনেটে কিছু আলোচনার সীমা কতটুকু হতে পারে, তা নিশ্চিত ভাবে পরীক্ষা করা উচিত। ইন্টারনেটে থাকা বিষয় গুলো অপরিশোধিত, অমার্জিত এবং অপ্রচলিত হতে পারে, যা অনুভুতিকে আঘাত করতে পারে, যৌনতার বিষয়কে উষ্কে দিতে পারে, হতে পারে অভব্য বিষয় দ্বারা পরিপুর্ণ- এককথায় অশোভন। কিন্তু আমরা এটা আশা করতেই পারি, সমাজের প্রতিটা শ্রেণির মানুষের কথা বলার জন্য মাধ্যম থাকতে হবে। মানুষের এই স্বায়ত্তশাসনকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। আমি আমার বিশ্লেষণ থেকে এটা বলছি না, সরকারকে শিশুদের বিপজ্জনক ইন্টারনেট সংযোগ থেকে বিরত থাকতে হবে। সরকার শিশুদের পর্নোগ্রাফি থেকে দুরে রাখতে আইনগত সকল ব্যবস্থা নিতে পারে। শিক্ষা ব্যবস্থায় এই নব মাধ্যমের প্রয়োজনীয়তা এবং অপ্রয়োজনীয়তা নিয়ে বিশদ বিবরণ থাকা উচিত। যা সরকার নিজেই দায়িত্ব নিতে পারে।

ওয়ার্লড সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটি (WSIS) ২০০৩ সালের ঘোষণায় "ইনফরমেশন সোসাইটির" অভিব্যক্তির গুরুত্বের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়-

আমরা ইনফরমেশন সোসাইটির প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পুনঃনিশ্চিত করছি, ১৯ নং অনুচ্ছেদের অংশ হিসেবে প্রত্যেকের অধিকার আছে স্বাধীনভাবে নিজের বক্তব্য প্রকাশ করার এবং তথ্য অন্যত্র ছড়িয়ে দেওয়ার ও পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে তা গ্রহণ করার। যোগাযোগ হচ্ছে যেকোনো সামাজিক প্রক্রিয়া মুলনীতি, মানুষের মৌলিক অধিকার এবং সকল সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার মুলভিত্তি। এটিই ইনফরমেশন সোসাইটির মুলভিত্তি প্রত্যেকেরই সেখানে অংশগ্রহণ করার এবং উপকার পাওয়ার অধিকার আছে। কাওকে এখান থেকে বঞ্চিত করা উচিত নয়।

তথ্যের স্বাধীনতা হচ্ছে বাকস্বাধীনতারই একটি সংযোজিত রুপ। যেখানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে স্বাধীনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। তথ্যের স্বাধীনতাকে ইন্টারনেট ও ইনফরমেশন টেকনোলজিতে নিরাপত্তার অধিকার হিসেবে সুচিত করা হয়। বাকস্বাধীনতার সাথে সাথে নিরাপত্তার অধিকারকে মানবাধিকার হিসেবে অভিহিত করা হয় এবং তথ্যের স্বাধীনতা এই অধিকারেরই বিস্তৃত রুপ। তথ্যের স্বাধীনতা ইনফরমেশন টেকনোলজি পাঠে (ওয়েব কন্টেন্টে বাধা অথবা প্রহরতা ছাড়া প্রবেশের সক্ষমতা) প্রহরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।

কানাডার অন্টারিওর ফ্রিডম অব ইনফরমেশন & প্রটেকশন অব প্রাইভেসি এক্ট দ্বারা বিশদভাবে নিয়ন্ত্রিত।

Internet censorship এবং Internet censorship by country রাষ্ট্রের ইন্টারনেটে নজরদারী, প্রহরতা সৃষ্টি, বা নিরীক্ষণের জন্য তথ্যের স্বাধীনতার ধারণাটির প্রবর্তন ঘটেছে। ইন্টারনেট প্রহরতা বলতে বুঝানো হয়, ইন্টারনেটে কোনো তথ্য প্রকাশ বা সাইটে প্রবেশ করাকে নিয়ন্ত্রণ করা। গ্লোবাল ইন্টারনেট ফ্রিডম কন্সোর্টিয়াম এই ধরনের ব্লক সাইটে প্রবেশ করতে নানান ধরনের সাহায্য করে। রিপোর্টাস উইথ আউট বর্ডার্সের (RWB) মতে নিম্নোক্ত রাষ্ট্রগুলো ইন্টারনেট প্রহরতা মাত্রাতিরিক্ত হারে সৃষ্টি করে; এবং এরা ইন্টারনেটের শত্রু: চীন, কিউবা, ইরান, মায়ানমার/বার্মা, উত্তর কোরিয়া, সৌদি আরব, সিরিয়া, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, এবং ভিয়েতনাম।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের আধুনিক জীবনে এক নতুন বাস্তবতা। গ্রামের চায়ের দোকানে মানুষ তথ্যের জন্য এখন আর পত্রিকার পাতা ঘাঁটাঘাঁটি করে না। তার বদলে এসেছে স্মার্টফোন ও আইফোননির্ভরতা।

গণমাধ্যমে তথ্যের বিপণনের সাবেকি প্রথা এখন আর নেই। চারপাশে, দেশে-বিদেশে কী ঘটছে, সেগুলো ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, গুগলসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে পেয়ে যাচ্ছে সবাই। আমাদের টাইমলাইন, নিউজফিড ভরে যায় প্রয়োজনীয়, অপ্রয়োজনীয় সংবাদ, ছবি ও ঘটনায়। এ সুযোগটি করে দিচ্ছে ইন্টারনেট। সারা বিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ৭০ শতাংশ মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংযুক্ত রয়েছে। তরুণদের মধ্যে এ হার আরও বেশি, প্রায় ৯০ শতাংশ। বাংলাদেশে যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষের রয়েছে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট।

ইন্টারনেট মাধ্যমের সুযোগে সামাজিক যোগাযোগের মাত্রা অতীতের তুলনায় অনেকগুণ বেড়েছে। সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলো মানবীয় যোগাযোগের সর্বাধুনিক পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে মানুষ মানবীয় যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভৌগোলিক দূরত্বকে পুরোপুরি দূর করে দিচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে কম্পিউটার, স্মার্টফোন ও আইফোন। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে যে কোনো ব্যক্তি তথ্য, মতামত, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি আদান-প্রদান করতে পারে। এগুলো হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রাণ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অনলাইন সামাজিক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে সহায়তা করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের থাকে অনেক উৎস ও অনেক প্রাপক। প্রথাগত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমের থাকে একটি উৎস ও অনেক প্রাপক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া থেকে আলাদা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে রয়েছে- facebook, messanger, google, instagram, linkedln, pinterest, tumbler, snapchat, twitter, viber, wechat, whatsApp, youtube ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং অগ্রপথিক হচ্ছে facebook. 2004 সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মার্ক জাকারবার্গ ফেসবুক নামের নেটওয়ার্কটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। প্রতিষ্ঠাকালে এটি শুধু ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সীমিত ছিল। পরে এ ওয়েবসাইটটি অন্যান্য অঞ্চল ও বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে সমগ্র বিশ্বে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। আগস্ট ২০১৭-এর হিসাব অনুযায়ী সারা বিশ্বে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সংখ্যা প্রায় ২০৪ কোটি ৭০ লাখ। গবেষণায় দেখা গেছে, আমেরিকায় ৮৪ শতাংশ বয়ঃপ্রাপ্ত লোকের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে।

১৩-১৭ বছরের ছেলেমেয়েদের মধ্য ৬০ শতাংশের বেশি অন্তত একটি সামাজিক যোগাযোগ প্রোফাইল রয়েছে। তারা দিনে দু’ঘণ্টার বেশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যয় করে। তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে আমাদের দেশের খুব কমসংখ্যক মানুষই ফেসবুক ব্যবহার করেন। তারপরও ছাত্র-শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিশু-কিশোর, গৃহিণী, পেশাজীবী- কে নেই ফেসবুকে? ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসের জরিপ অনুযায়ী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল মিলিয়ে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সক্রিয়ভাবে ফেসবুক ব্যবহার করছে (সূত্র : দৈনিক বণিক বার্তা, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭)।

বিশ্বব্যাপী ইউটিউব ব্যবহারকারী মানুষের সংখ্যা ১৫০ কোটি, হোয়াটসঅ্যাপ ১২০ কোটি, ফেসবুক মেসেঞ্জার ১২০ কোটি ও উইচ্যাট ব্যবহারকারী ৯৩ কোটি ৮০ লাখ (আগস্ট ২০১৭, সূত্র : ইন্টারনেট)।

ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বর্তমানে মানুষের জীবনে ব্যাপক প্রভাব রেখে চলেছে। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে দিচ্ছে ফেসবুক। ফেসবুক জাদুতে দূর হয়েছে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা। ফেসবুক মাধ্যমের সদস্যরা নির্দিষ্ট কাউকে বন্ধু হিসেবে বেছে নিতে পারেন। আবার কারও বন্ধুত্বের আহ্বান ফিরিয়েও দিতে পারেন।

ফেসবুক মাধ্যমে শেয়ার করা ছবি, ভিডিও, মতামত ইত্যাদির ওপর মন্তব্য করা যায়। আবার চলে পাল্টা মন্তব্য। ব্যক্তিগত বার্তা পাঠানো যায়, যা কেবল যাকে পাঠানো হয় সে-ই পড়তে ও দেখতে পারে, অন্যরা নয়। তাছাড়া নতুন বা পরিচিত বন্ধু খোঁজার জন্য ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক রয়েছে। নিজের পছন্দ অনুযায়ী গ্রুপ করে নেয়া যায়। ফেসবুকের সবচেয়ে মজার জিনিসটি হচ্ছে আলাপচারিতা (Chatting)। কাক্সিক্ষত বন্ধুটির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর ফেসবুকে থাকা সাপেক্ষে তার সঙ্গে আলাপ করা যায়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক বছর আগে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের ওপর গবেষণা করা হয়। এ গবেষণায় দেখা গেছে, ফেসবুকের কারণে অনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পক্ষে মত দিয়েছেন সব শিক্ষক এবং তিন-চতুর্থাংশ শিক্ষার্থী। ফেসবুকে নগ্ন ছবি/ভিডিও ছেড়ে দেয়া হয়, নারীদের সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করা হয় এবং স্পর্শকাতর বিষয়ে অপপ্রচার চালানো হয়। মতাদর্শগত পৃথক গ্রুপগুলো ফেসবুকের মাধ্যমে একে অপরকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে।

এ গবেষণায় এক-চতুর্থাংশ শিক্ষার্থী ও প্রায় অর্ধেক শিক্ষকের মতে পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে ফেসবুকের প্রভাব রয়েছে। ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের মতে, দূরের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে ফেসবুকের প্রভাব রয়েছে। আবার মূল্যেবোধের অবক্ষয়, সমাজে বিভক্তি সৃষ্টি, যৌন ব্যবসায়, সামাজিকভাবে কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং ব্যক্তিগত ক্রোধের কারণে কাউকে ঝামেলায় ফেলার মতো প্রভাবও রয়েছে ফেসবুকের। জনমত গঠনে ও সচেতনতা সৃষ্টিতে ফেসবুকের প্রভাব রয়েছে। ফেসবুকের মাধ্যমে কেউ কেউ বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন বলেও গবেষণায় জানা যায়। শিক্ষাক্রমে ফেসবুকের ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় প্রভাবই রয়েছে।

ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত থাকার জন্য গবেষণায় কতগুলো সুপারিশ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- অনৈতিক কাজ বন্ধ করার জন্য অ্যাকাউন্ট সিকিউরিটি বৃদ্ধি করা, অশালীন ছবি ও তথ্য সম্পর্কে একটা শালীন নীতিমালা প্রণয়ন করা, ব্যবহারকারীদের নীতি ও নৈতিকতাবোধ জাগ্রত করা এবং ফেসবুকের নেতিবাচক দিক বর্জন করার কথা বলা। নারীদের হেয় প্রতিপন্ন করে এমন গ্রুপগুলো চিহ্নিত করে এ অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ করার উদ্যোগের সুপারিশও করা হয়েছে গবেষণায়। বিনোদন লাভের জন্য অনেক শিক্ষার্থী ফেসবুক ব্যবহার করে। বিনোদনের নামে কেউ যেন অনৈতিক কাজে জড়িয়ে না পড়ে সে ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। এক্ষেত্রে অভিভাবকদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাদের ছেলেমেয়েরা কী পরিমাণ সময় ব্যয় করছে ফেসবুকে,পর্নোসাইট ভিজিট করছে কিনা, পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়ে পড়ছে কিনা সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যত সহজলভ্য হবে তার অপব্যবহারও সেভাবে বাড়বে। এছাড়া অশিক্ষা, কুশিক্ষা, ধর্মীয় গোড়ামি, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বৈষম্য, দারিদ্র্যতা, হিংসা, লোভ আর ক্ষোভ থেকেই সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন অসত্য সংবাদ, তথ্য প্রচার করা হয়। এগুলো কিছু মানুষ যাচাই বাছাই না করে বিশ্বাস করে এবং সংবাদটি ছড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে ফেইসবুক এখন সবার হাতের নাগালে। শক্তিশালী এই সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার যে কেউ করতে পারে সহজেই। এজন্য আমাদের মতো দেশে মিথ্যা সংবাদ প্রচার ও প্রসার হচ্ছে অদক্ষ আর দায়িত্বহীন কিছু ব্যবহারকারী দ্বারা। এরা সত্য মিথ্যা যাচাই কিংবা সংবাদের উৎস নিয়ে ঘাটাঘাটি করে না, ভাইরাল কিছু পেলেই নিজেও ভাইরাল হওয়ার নেশার মত্ত হয়। তবে, মানুষের সুশিক্ষা আর সঠিক বিবেচনাবোধ থাকলে সামাজিক মাধ্যম অনেকটাই নিরাপদ হবে।



তথ্যসূত্র-
- গুডম্যান, এম.; ট্যাগল, ডি.; ফিচ, ডি.; বেইলি, ডব্লিউ.; চেলুসনিয়াক, জে.; কুপ, বি.; বেনসন, পি.; স্লাইটম, জে. (১৯৯০)। "Primate evolution at the DNA level and a classification of hominoids"। J Mol Evol। 30 (3): 260–66। doi:10.1007/BF02099995। PMID 2109087।
- "Hominidae Classification"। Animal Diversity Web @ UMich। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৯-২৫।
- Internet Usage Statistics – The Internet Big Picture"। Internet World Stats। ২০০৩। ৯ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৭।
- Gammon, Katharine। "The 10 purest places on Earth"। NBC।
- van Mill, David (১ জানুয়ারি ২০১৬)। Zalta, Edward N., সম্পাদক। The Stanford Encyclopedia of Philosophy (Fall 2016 সংস্করণ)।
- "Photography & the First Amendment"। ৫ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭।


ফটো ক্রেডিট,
গুগল।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:০০

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পোষ্ট পড়লাম।
সব সময় আপনি এরকম পোষ্টই দিয়ে থাকেন বড় করে।
আমি বলব না ধান ভানতে শিবের গীত হয়েছে।

লেখার প্রয়োজনেই নানান প্রসঙ্গ এসেছে। এর অবশ্যই দরকার ছিলো।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৫৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ, রাজীব ভাই। আমি যে বিষয় নিয়েই লিখি না কেন চেষ্টা করি বিষয়টির গভীরে যেতে। এজন্য পোস্টগুলো একটু বড় আর তথ্যবহুল হয়। এতে ধান ভানতে শিবের গীত মনে হলেও করার কিছুই নেই। ইদানিং ব্যস্থতা বেড়ে যাওয়ায় ব্লগে পোস্ট কম করি। ভালো থাকুন।

২| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৭

শাহিদা খানম তানিয়া বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম আপনার বিশ্লেষণধর্মী লেখনী থেকে।

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৪৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ। আপনি খোঁজে খোঁজে লেখাটি পড়ে নিজের সুন্দর মতামতটি দিয়েছেন এজন্য ধন্যবাদ। মূলত ব্লগ দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়টি নিয়ে আলোকপাত করতে গিয়েই পোস্টটা লিখি। এতে ব্লগারদের মধ্যে এসব বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা তৈরী হবে।

৩| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৩:২২

সোহানী বলেছেন: অনেক বড় লিখা, কয়েকটা পর্বে দিলে পড়তে সহজ ও আর্কষনীয় হতো।

অনেক দিন পর নিজস্ব স্টাইলে ফিরে আসলেন।

আসলে আপনি যা বলছেন বা বলার চেস্টা করেছেন তা শিক্ষিত বা সচেতন ব্যাক্তি মানেই কম বেশী জানে ও বুঝে। এবং যদি বলে রাস্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা কর্তা ব্যাক্তিরা, হাঁ উনারা ও বোঝে। আর বোঝে বলেইতো সমস্যা। আজ বলবেন, কাল চিৎকার দিবেন, তারপর দিন মাঠে দাঁড়াবেন, পরেরদিন আন্দেলনে নামবেন, তারপর ক্ষমতা ছাড়ার স্লোগান দিবেন............। কিভাবে আপনাদেরকে আমাদেরকে আমজনতাকে "বাক" নামক এ ভয়াবহ জিনিসের স্বাধীনতা দিবে??? ........

যাক ভালো থাকেন, ব্লগ মেলার পোস্ট চাই.............

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ, আপুনি।
বেশ কিছুদিন এ বিষয়ে একটি লেখা ব্লগে পোস্ট করবো বলে ঠিক করেছিলাম। এবারের ব্লগ দিবসের প্রতিপাদ্য এ বিষয়টি হওয়ায় পোস্ট করলাম। বিষয়টি নিয়ে সংক্ষেপ লিখতে পারতাম। কিন্তু সংক্ষেপ করতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন তথ্য বাদ পড়ে যেতে পারে এজন্য কলেবর একটি বড় করেছি। আর লেখাটি পর্ব আকারে প্রকাশ করলে হয়তো ভালো হতো। পরবর্তীতে বিষয়টি মাথায় রাখবো।

মানুষ জন্মগত স্বাধীন। কিন্তু এই স্বাধীনসত্তাকে সবচেয়ে অপব্যবহার করে মানব জাতি। এজন্য বাক স্বাধীনতার সাথে শৃঙ্খলা দরকার পড়ে। কিন্তু কোন কোন সময় অন্যায়ভাবে বাক স্বাধীনতা হরণ করা হয়, যা খুবই দুঃখজনক। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ এসব বিষয়ে সচেতন নয় বলে সরকার রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে মানুষের মুখে কুলুপ মারে। পুলুশি, র্যাব, গুন্ডার ভয়ে আমরা চুপসে যাই।

ব্লগ দিবসে যদি জানতাম আপনি আছেন তাহলে খুউব খুশি হতাম, জানি আপাতত সে আশা পূরণ হবার নয়। হয়তো কোন একদিন দেখা হবে এমন সুন্দর আয়োজনে। ব্লগ ডে'র পোস্ট লিখবো আশা করি। ভালো থাকুন, নিরাপদ থাকুন।

৪| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:২৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: আধুনিক জনজীবনের একটি প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে চমৎকার প্রবন্ধ লিখেছেন। বিষয়টি নিয়ে অধুনা সর্বত্র আলোচনা চলছে। তবে ব্লগের জন্য প্রবন্ধের কলেবরটি একটু বেশী বড় হয়ে গেছে।
আলোচনায় যথেষ্ট তথ্য এবং তথ্যসূত্র সংযোগ করেছেন, এজন্য আলোচনাটি সুখপাঠ্য হয়েছে।
বাক-স্বাধীনতা এবং স্বাধীন বাকের দায়বদ্ধতা পরস্পরের পরিপূরক, একে অপরের প্রতি সাংঘর্ষিক নয়। বাকস্বাধীনতা যত বেশী থাকবে, দায়বদ্ধতাও তত বেশী থাকা সমীচীন।
সোহানী এর মন্তব্যটা ভাল লেগেছে।
পোস্টে প্লাস + +

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:০৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ, স্যার।
এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে বাক স্বাধীনতা নিয়ে যত কথা উঠেছে তা আগে কখনো হয়নি। এর অন্যতম কারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি আর তথ্য প্রযুক্তির উৎকর্ষতা। এছাড়া অশিক্ষা, কুশিক্ষা, ধর্মীয় গোড়ামি, সামাজিক অনাচার আর বৈষম্য অনেকটা দায়ী। আপনি ঠিকই বলেছেন, "বাক-স্বাধীনতা এবং স্বাধীন বাকের দায়বদ্ধতা পরস্পরের পরিপূরক, একে অপরের প্রতি সাংঘর্ষিক নয়। বাকস্বাধীনতা যত বেশী থাকবে, দায়বদ্ধতাও তত বেশী থাকা সমীচীন।"

আশা করি, ব্লগ ডে'তে আপনার সাথে দেখা হবে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন।

৫| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০৩

নীল আকাশ বলেছেন: সবাই যে দৃষ্টিতে দেখেছে আমি বরংং একটু ভিন্ন ভাবে চিন্তা করি।
প্রতিটা মানুষ জন্মগত ভাবে স্বাধীন এবং সচেতন বিবেক দ্বারা পরিচালিত।
বাক স্বাধীনতা প্রতিটা মানুষের যেমন জন্মগত অধিকার ঠিক তেমনি নিজের পাশাপাশি
বাকি সবার জন্যও সেটা আক্রমনাত্বক না হয় সেটাও বিবেচনার বিষয়।

কিছুদিন আগেও শুধু প্রিন্টেড মিডিয়া ছিল যেখানে লেখা ছাপাবার আগে অনেকবার ভুলের জন্য রিভিশন দেয়া হতো। কিন্তু সামাজিক বা আধুনিক বির্বতনের জন্য সোসাল মিডিয়াতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহন অনেক বেশি বেড়ে গেছি। তবে সেই সাথে অনেক কমে গেছে সহনশীলতা।

আশ্চর্যের বিষয় হলো এটা শিক্ষার উপর নির্ভরশীল নয়। ফেসবুক কিংবা অন্যান্য মিডিয়াতেও মন্তব্য প্রদানের সময় এই দেশের মানুষকে অকারণেই অশালীন এবং গালী যুক্ত ভাষা ব্যবহার করতে দেখা যায়, যেন এইভাবে মত প্রকাশ করা তার ব্যক্তি এবং বাক স্বাধীনতা। সবাই ভুলে যায় যেক্যন সামাজিক মাধ্যমে লেখা বা মন্তব্য বা পোস্ট দেবার সাথে সাথেই সেই লেখার সাথে লেখকের একধরনের দায়বদ্ধতাও জড়িত থাকে যেটা আমার ধারণ দেশের শতকরা ৯০ ভাগ লোকই জানে না।
যত দিন পর্যন্ত দেশের মানুষের মাঝে এই রিয়ালাইজেশনটা না আসবে ততদিন পর্যন্ত সামাজিক মাধ্যেমের সুফল পুরোপুরি আমরা পাবো না।

অফ টপিকঃঃ লেখা বড় বা ছোট আসলে ব্যাপার না। পুরো লেখা সামঞ্জস্য পূর্ণ এবং লেখার পড়ার সময় পাঠক আগ্রহ নিয়ে পড়ছে কিনা সেটাই গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে। এবং লেখায় যথাযথ সূত্র দেয়ার অর্থ হচ্ছে লেখক এই বিষয়ে বিস্তর ঘাটাঘাটি করে লিখেছে, আন্দাজে নয়!

ধন্যবাদ এবং শুভ রাত্রী।

৬| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:১৮

আকতার আর হোসাইন বলেছেন: 'বাকস্বাধীনতা হচ্ছে স্বতন্ত্র্য ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের; নির্ভয়ে, বিনা প্রহরতায় বা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা, অনুমোদন গ্রহণের বাধ্যতা ব্যতিরেকে নিজেদের মতামত স্বাধীনভাবে প্রকাশ করার সমর্থিত মুলনীতি
অনেক ভালো একটা লেখা। বাক স্বাধীনতার নামে কিছু মূর্খ মানুষের বিশ্বাসে আঘাতে হানে, কুৎসা রটিয়ে মর্যাদাহানি করে, কিছু সুযোগসন্ধানী ইসলাম বিদ্বেষী আমাদের নবীকে কটুক্তি করে। এই জন্য বাক স্বাধীনতা যে গণতন্ত্রের একটি মৌলিক ও যৌক্তিক অধিকার তা ছড়িয়ে দেবার সাথে সম্যকভাবে ছটিয়ে দিতে হবে মুক্তবাকের সীমাবদ্ধ।

শিশুদের বিষয়ে ইন্টারনেটকেকে যথাপযুক্ত হতে হবে। এই বিষয়ে সরকারকেই গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে।

আপনার প্রবন্ধগুলো আগেও পড়িনি। এখনো পড়ি না। এইটা পড়লাম। বাকস্বাধীনতা হচ্ছে স্বতন্ত্র্য ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের; নির্ভয়ে, বিনা প্রহরতায় বা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা, অনুমোদন গ্রহণের বাধ্যতা ব্যতিরেকে নিজেদের মতামত স্বাধীনভাবে প্রকাশ করার সমর্থিত মুলনীতি। এমন পাঠক এখনো হয়নি। তাছাড়া এত বড় পোস্ট দেখলে এমনিই মাথা ঘুরায়।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.