![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের সম্পর্কে বলার মত তেমন কিছুই নাই ।খুব সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিরাবের সাধারণ একজন ছেলে আমি ।আমার পরিবারে বাবা ,মা , দুই বোন আছে। তেমন কোন বিশেষত্ব নাই ।তবে মোটামুটি সব কিছুই একটু একটু পারি ।তবে একটা কাজ একদম ই পারি না সেটা হচ্ছে কাউকে নিজের কাছে ধরে রাখা ।আজ পর্যন্ত এই কাজ টা কখনও করতে পারি নাই ।কেউ আমার খুব কাছে চলে আসলে সে বেশিদিন থাকে না ।একসময় কোন না কোন কারনে দুরে চলে যায় । সবাই হয়ত এটা ভাবতেছেন যে ছ্যাকা খেয়ে এসব বকছি ।না সেরকম কিছু না ।একজন কে ভালবাসি তবে সেটাই আমার প্রধান সমস্যা ।পারিবারিক কিছু কারনে ভালবাসাটা এলোমেলো হয়ে গেছে আর সাথেজীবনের অনেক কিছুই নষ্ট করে দিয়ে গেছে ।অনেকের সাথে এই কারনে সম্পর্ক খারাপ হয়ে গেছে ,যারা আমার খুব প্রিয় কিছু মানুষ ছিল ।।তাদের অনেকেই এখন আমার সাথে কথাই বলে না । বয়স বেশি হয় নি ।তবে এই ছোট জীবনেই জীবনের অনেক কিছুই দেখে ফেলছি ।সফলতা ,ব্যার্থতা ,সফলতার পর সবার অভিনন্দন ,ব্যার্থতার পর সবার ব্যাবহার এসব বিষয় গুলো খুব ভালভাবে দেখছি ।অনেক কিছু উপলব্ধিও করছি । একটা কথা জোর দিয়ে বলতে পারি সেটা হল দুনিয়াতে স্বার্থ ছাড়া কেউ এক পা এখন আর ফেলে না ।এখন সবাই স্বার্থপর ।তাই স্বার্থপর হওয়ার চেষ্টায় আছি আমার ফেসবুক আইডি লিঙ্ক : https://www.facebook.com/keishuvo
বাসে ঘুমটা সবসময় আরামদায়ক সেটা দু'মিনিট হোক আর এক ঘন্টা হোক।বাস থেমে গেলে সে ঘুম কিভাবে যেন উদাও হয়ে যায়।বাসে ক্যাচাল শুনে স্বাদের ঘুমটা যখন ভেঙ্গে গেল তাই বিরক্ত হলাম না।যাচ্ছিলাম ময়মনসিংহ,বন্ধুর নানা বাড়ী।ঢাকার বিরক্তিকর জীবন ক্রমশই সীমা ছড়িয়ে যাচ্ছিল।পকেটের করুন অবস্থার কারনে বিলাসী বাস ছেড়ে লোকাল বাসের টিকেট কেটেছিলাম। ১০০ টাকার টিকিটে জানালার আরামদায়ক বাতাসে টাকা প্রায় উশুল হয়েই যাচ্ছিল।বাসে উঠে মিনিট খানেকের মধ্যে ঘুমিয়ে যাওয়ার ভাল একটি অভ্যাস আমার আছে।কিন্তু বাস জনতার তীব্র উত্তেজনায় ঘুমটা ভেঙ্গে গেল।বাস থেমে আছে।আশেপাশে তাকালাম।বাসের মানুষগুলোকে একটু পড়ার চেষ্টা করলাম।আমার পাশের ভদ্রলোকটি আমার চোখ খোলা দেখে কিঞ্চিত উৎসাহবোধ করল “ভাইজান যাইবান কই”
-ময়মনসিংহ
-আমিও মইসিং যাইবাম।
উচ্চারনে বুঝলাম উনি ময়মনসিংহের মানুষ।আলাপটা জমতে পারে।আগে থেকে একটু পরিচয়ে পেলে ভালই হয়। আমি জিজ্ঞেস করলাম “আর কতক্ষন লাগতে পারে” লোকটি ব্যাপক উৎসাহে ময়মনসিংহের টানেই বলল “যে জাম লাগজে আজগা যাওন যা কিনা সন্দে”।ভয় পেলাম না। এসবই আমার ভয় নেই।সময়ের গুরুত্ব থাকলে জ্যাম আমার ক্ষতি করতে পারত।জ্যাম ক্ষতি করার মত কোন সময় আমার হাতে নেই।
আশেপাশের মানুষরা জ্যাম নিয়ে মহা উদ্বিগ্ন।সবাই খুব ব্যাস্ত।দেখতে দেখতে এক ঘন্টা হয়ে গেল।আমার সামনে বসা এক ভদ্রলোক ততক্ষনে বাংলাদেশ নিয়ে হতাশার চুড়ান্ত হয়ে গেছেন।তিনি প্রায় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন আর যাই হোক বাংলাদেশের কিছুই হবে না।ভদ্রলোকের কথায় তাল দিচ্ছেন সামনে বসা আরেক বয়স্ক ভদ্রলোক । বাংলাদেশের লোকাল বাসগুলো এক টুকরো বাংলাদেশ। প্রায় সব শ্রেনীর লোক আছে শুধু এক শ্রেনী বাদে।সে শ্রেনী আসলে বাংলাদেশের শ্রেনী নয়। ঈশ্বর তাদের কেবল ভুল ঠিকানায় প্রেরণ করে দিয়েছেন।
আলোচনায় মশগুল পুরো বাস।যোগাযোগমন্ত্রীর চোদ্দগুষ্টি উদ্ধার করছেন সামনে বসা এক ভদ্রলোক।গুষ্টি উদ্ধারে তিনি যথেষ্ট উদারতার সাথে অশ্লিল গালি দিচ্ছিলেন।একজন গালি দিবে আশেপাশের মানুষ তাতে অংশ নিবে না তা কি বাঙ্গালীর চরিত্রের সাথে যায়? সমবেত গালির আসরে স্বাভাবিকভাবেই বিরোধীতা করার মানুষও আসবে।বাসের মাঝ বরাবর থেকে শব্দটি পাওয়া গেল “তাদের মন্ত্রী উল্টাইলাইছে,কিছু হইলে খালি মন্ত্রীর দোষ”। বাঙালীর দোষ বলি আর গুণ বলি সকল আলোচনা কোন কোন সময় অবশ্যই রাজনীতিতে ঠেকবে।গালি উৎসব যোগাযোগ মন্ত্রীতে না থেকে সরকার,বিরোধী দলও গালির আওতায় চলে আসল।
না এদের ক্যাচাল ভাল লাগছে না।তারচে ভাল নিচে গিয়ে একবার ঘুরে আসি।যতজন সিটে বসে আছে তার তিনগুণ দাড়িয়ে আছে।ভীড় ঠেলে নিচে নেমে বুঝলাম মাঝপথে যাত্রা বিরতিটা একেবারে খারাপ না।অপরিচিত এক জায়গায় নিজেকে আবিস্কারের ব্যাপারটা অন্যরকম।বাস থেমে থাকার কারন জানার চেষ্টা করলাম। শুনলাম নাকি সামনে গাড়ী একসিডেন্ট করেছে।যাই হোক একসিডেন্ট এখন আর কোন খবর নয়। নিরাপদ জায়গা দেখে প্রকৃতির ডাকটা সেরে ফেললাম। শেষ করে বাসে উঠলাম ৫ টাকা দামের আমড়া কিনে।
আলোচনার বিষয়বস্তু বদলে গেছে।আলোচনার মধ্যমণি এক ভদ্রলোক।দেখতে অত্যন্ত ব্যাক্তিত্ববান।বাঙালীর সচেতনতা নিয়ে আলোচনা করছিলেন।বাসের সবাই আগ্রহভরে তার কথা শুনছিল।কেউ কেউ সিট থেকে দাড়িয়ে শুনছে। জ্যামের কারনে অনেকেই বাস থেকে নিচে নেমে ঘুরছে। ফলে কথা শুনতে অসুবিধা হচ্ছে না।উনার কথার মূল ব্যাপার হল বর্তমানে বাঙ্গালীদের মধ্যে সচেতনতা এবং দায়ীত্ববোধ নেই।আগে একজন অসুস্থ হলে আশেপাশের মানুষ এগিয়ে আসত,এখন ভাই মরে গেলেও ভাই এগিয়ে আসে না।
লোকটার কথা শুনতে ভালই লাগছিল। আমিও জমে গেলাম।খুব সুন্দর করে বর্ণনা করছিলেন।আশে পাশের অন্য মানুষরাও তার কথা হ্যাঁ বোধক সম্বোধন দিচ্ছে।আলোচনার এ পর্যায়ে কেউ কেউ নিজের ঘটনা বর্ণনা করছে। আমার তেমন কোন ঘটনা নেই।বাংলাদেশের সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়ে গেল।কদিন আগে তেলের দাম বেড়ে যাবার কারনে বাসের ভাড়াও বেড়েছে।সেটার বর্ণনা দিলেন অনেকেই।কেউ আবার ৪-৫ বছরের পরিসংখ্যান তুলে দিলেন।বয়স্ক একজন আবার দাবি করলেন উনি একসময় ৫ টাকা দিয়ে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ যেতেন।মধ্যমণি লোকটি সব কথা শুনে নিজে থেকে খুব ভালভাবে বিশ্লেষন করলেন। ভদ্রলোকে ব্যাক্তিত্ব আছে বটে।এমন মানুষ শ্রদ্ধ্যাভাজন।এমন লোক যদি শাষনভার পেত তবে হয়ত দেশটার চেহারা পাল্টে যেত।ভাবনার এই পর্যায়ে আস্তে আস্তে করে বাস চলতে থাকল।নিজের মনে একটা প্রশান্তি পেলাম।আমার বন্ধু এর মধ্যে চার পাঁচবার ফোন করে ফেলেছে।ক্ষিদাও লেগেছে।
আস্তে আস্তে বাসের গতি বাড়ল।রাস্তার পাশে একটি বাস পড়ে থাকতে দেখলাম।হয়ত এক্সসিডেন্ট করেছে। জ্যামের কারনও বোধহয় এটা।যা হোক বাসের সবার মত আমিও প্রশান্তির একটা নিঃশ্বাস ফেললাম। হঠাৎ করে বাসে অনেক কোলাহল শুরু হল।দাড়িয়ে গেলাম।বাসের গ্লাসের ভিতর দিয়ে সামনের রাস্তায় দেখলাম অনেক মানুষ জড়ো হয়ে আছে। কান্নাকাটির শব্দ শোনা যাচ্ছে।লোকজন আমাদের বাসের সামনে দাড়িয়ে সাহায্য চাচ্ছে। আমাদের বাস ড্রাইভার গাড়ীর গতি একেবারেই কমিয়ে দিল।কিন্তু হঠাৎ খেকিয়ে উঠল সেই ব্যাক্তিত্ববান ভদ্রলোক। ড্রাইভারের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বলল “ওই চুতমারানীর ভাই বাস খাড়া করাস ক্যান? এতগুলা মানুষের টাইমের দাম নাই? এত দরদ থাকলে বাস না চালাইয়্যা প্রাইভেট কার চালা।বাস টান দে”
বাসের বেশীরভাগ যাত্রী সে ভদ্রলোকের সাথে কন্ঠ মিলিয়ে বাস ড্রাইভারকে অজস্র ভাষায় গালি দেতে লাগল। আমার পাশে বসা ভদ্রলোকটিও সুযোগ বুঝে কন্ঠ চালালো “হারামির বাচ্চা টানস না ক্যারে? হুদাই দুই ঘন্টা জামে খাইছস।বাস টান হারামি” বাসে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এতগুলো মানুষের আদেশ অমান্য করার সাহস ড্রাইভারের নেই।দুর্ঘটনা এবং আহত অথবা নিহত মানুষগুলো পাশ কাটিয়ে আমাদের বাস চলতে থাকল।আমাদের সময়ের অনেক দাম আছে।গন্তব্যে পৌছতে হবে।মানুষের জীবনকে ফাঁকি দেয়া সহজ বিষয় না।আমরা দিতে পেরেছি।কয়টি লাশ পিছনে ফেলে আসলাম তা আগামিকালের পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় লাল কালি মারফত জানতে পারবো।ততক্ষন পর্যন্ত আমার চিন্তা গন্তব্য বন্ধুর নানা বাড়ি
২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০০
মোমেরমানুষ৭১ বলেছেন: পড়লাম, কিছুটা হতাশও হলাম কথিত সেই ভদ্রলোকের আচরনে। আসলে এ ধরনের মুখোশ পরা ভদ্রলোক আমাদের সমাজে অনেক বেশি.......
৩| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৫৬
ইয়ার শরীফ বলেছেন: কষ্ট লাগলো
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩০
শূন্য পথিক বলেছেন: