![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মরুদ্যানের মুসাফির
ইসলামের প্রথম বাতিল দল খারেজী।রাসুল (সঃ) এর ওফাতের পর হযরত আলি (রাঃ) এর খিলফাতকালে এই দলটির উথান হয়।এই দলটি সম্পর্কে আল্লাহ তার রাসুল (সঃ) কে আগে ভাগেই জানিয়েছিলন,এবং রাসুল (সঃ) সাহাবীদের নিকট এই দলটি সম্পর্কে বিস্তারিত ভবিষ্যত বাণী করে যান যাতে উম্মাতে মুহাম্মাদি (সঃ) সচেতন হতে পারে।কয়েক দশক পরেই রাসুল (সঃ) এর ভবিষ্যৎ বাণী সত্য প্রমাণিত হয় এবং খারেজিদের আত্বপ্রকাশ ঘটে।এরপর যুগ যুগ ধরে এই খারেজীরা মুসলিমদের মধ্যে ফিতনা ফাসাদ করেই যাচ্ছে।হযরত আলি (রাঃ) এর জামানা থেকে আজও পৃথিবিতে খাওরাজ বিদ্যমান।খারেজিদের হাতেই খোলাফায়ে রাশেদা শহীদ হয়।খারেজিদের হাতেই ১৪০০ বছর ধরে চলমান খিলাফার পতন হয়,খারেজীদের কারনেই বর্তমানে খিলফার যে সূর্য পুনরায় জেগে উঠেছিল তা অস্তমিত হওয়ার পথে।
খারেজি নামকরণঃ খারেজী আরবি শব্দ যা এসেছে খারাজা থেকে,যার অর্থ বেরিয়ে পড়া মূলত যারা কোরআন ও হাদিসের পথ থেকে বেরিয়ে পড়ে তাদেরকে খারেজী বলা হয়।এজন্যও খারেজী বলা হয় করন তারা বেরিয়ে পড়েছে হত্যার উদ্দেশে সমকালীন সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ মানুষকে।এছাড়াও যারা ( লোক বা গুষ্টি বা দল ) ইসলামের পক্ষে কাজ করে বা করার জন্য চেষ্টা করে ,কিংবা ইসলামকে পূর্ণ বা আংশিক ভাবে মেনে চলে তাদেরকে যারা কাফের মনে করে তাদের তাদের কে খারেজী বলা হয়।
খারেজীর আত্মপ্রকাশঃ
জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ হতে বর্ণীত ,এক লোক রাসুল মুহাম্মদ (সঃ) এর কাছে জেরানা নামক স্থানে দেখা করেন। জেরানা নামক স্থানটি হল সেই জায়গা যেখানে রাসুল মুহাম্মদ (সঃ) হুনায়নের যুদ্ধে প্রাপ্ত গনিমতের মাল বণ্টন করছিলেন ।সাহাবী বেলাল (রঃ) এর কাপড়ের উপর রুপার টুকরা গুলো রাখা ছিল। নবীজি সেইখান থেকে মুষ্টি বদ্ধ ভাবে মানুষকে দান করছিলেন। তখন উপস্থিত ঐ লোক বললঃ- “হে মুহাম্মদ আপনি আল্লাহ্কে ভয় করুন ও ইনসাফ করুন”
রাসুল মুহাম্মদ (সঃ) বলেনঃ ধ্বংস তোমার জন্য ।আমি যদি ইনসাফ না করি তবে কে ইনসাফ করবে? আল্লাহর শপথ! তোমরা আমার পর এমন কোন ব্যক্তি পাবে না যে আমার চেয়ে অধিক ন্যায় পরায়ণ হবে।সাথে সাথে ওমর (রঃ) (মতান্তরে খালিদ বিন ওয়ালিদ ) বলেন হে রাসুল আপনি অনুমতি দিন আমি এই মুনাফিককে হত্যা করি। রাসুল মুহাম্মদ (সঃ) বলেনঃ না, আমি আল্লাহ্র কাছে আশ্রয় চাই । যদি এমন কর তবে মানুষ বলবে আমি আমার সাহাবীদের হত্যা করি ।ঐ লোক চলে যাওয়ার পর ,তিনি আরও বলেন, এই লোকটা ও তার কিছু সঙ্গী থাকবে যারা কোরআন পড়বে কিন্তু কোরআন তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা ইসলাম থেকে এমন ভাবে বের হয়ে যাবে, যেমন তীর ধনুক থেকে বের হয়ে যায়।[মুসলিম শরীফ][নাসায়ী শরীফ পৃষ্ঠা ৩০৮]
এই লোকের বংশধর ও অনুসারীরাই হচ্ছে খারেজি।এরা কেমন হবে কি করবে রাসুল (সাঃ) এ সম্পর্কে বিস্তারিত বলে যান।
মুসলিম উম্মাহকে সতর্ক করে রাসুল মুহাম্মদ (সঃ) বলেন,অদূর ভবিষ্যতে আমার উম্মতের মধ্যে মতানৈক্য ও ফিরকা সৃষ্টি হবে।এমন এক সম্প্রদায় বের হবে যারা সুন্দর ও ভাল কথা বলবে।আর কাজ করবে মন্দ।তারা কোরআন পাঠ করবে-তা তাদের কন্ঠনালী অতিক্রম করবে না।তারা দ্বীন অর্থাত্ ইসলাম থেকে এমনিভাবে বেরিয়ে যাবে,যেভাবে তীর শিকারী থেকে বেরিয়ে যায়।তারা সৃষ্টির সবচেয়ে নিকৃষ্ট।ঐ ব্যক্তির জন্য সুসংবাদ যে তাদের সাথে যুদ্ধ করবে এবং যুদ্ধে তাদের দ্বারা শাহাদাত বরণ করবে।তারা মানুষকে আল্লাহর কিতাব(কোরআন)-এর প্রতি দাওয়াত দেবে,অথচ তারা আমার কোন আর্দশের উপর প্রতিষ্ঠিত নয়।যে ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে লড়বে সে অপরাপর উম্মতের তুলনায় আল্লাহ তায়ালার অনেক নিকটতম হবে।সাহাবায়ে কেরাম বললেন,হে আল্লাহর রাসুল (দঃ)! তাদের চিহ্ন কি? হুজুর করীম (দঃ) উত্তরে বললেন,অধিক মাথা মুন্ডানো।(আবু দাউদ শরীফ,পৃষ্ঠা ৬৫৫,মিশকাত শরীফ,পৃষ্ঠা ৩০৮)
মুহাম্মদ (সঃ) আরো বলেন, ‘শেষ যামানায় একদল তরুণ বয়সী নির্বোধ লোকের আবির্ভাব ঘটবে, যারা সর্বোত্তম কথা বলবে। তারা ইসলাম থেকে এত দ্রুত গতিতে বের হয়ে যাবে, যেমন তীর ধনুক থেকে বের হয়ে যায়। তাদের ঈমান তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তোমরা তাদেরকে যেখানেই পাবে সেখানেই হত্যা করবে। কারণ যে তাদেরকে হত্যা করবে তার জন্য ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট নেকী রয়েছে’।
[বুখারী হা/৩৬১১, ৫০৫৭, ৬৯৩০; মুসলিম হা/২৫১১; আবূদাঊদ হা/৪৭৬৭; নাসাঈ হা/৪১০২; মিশকাত হা/৩৫৩৫]
অন্য বর্ণনায় আছে, রাসুল মুহাম্মদ (সঃ) বলেন, ‘তোমরা তাদের সালাতের তুলনায় তোমাদের সালাতকে তুচ্ছ মনে করবে, তাদের সিয়ামের তুলনায় তোমাদের সিয়ামকে এবং তাদের আমলের তুলনায় তোমাদের আমলকে তুচ্ছ জ্ঞান করবে...। তারা মুসলমানদেরকে হত্যা করবে এবং মূর্তিপূজকদের ছেড়ে দিবে...’। [বুখারী হা/৫০৫৮; মুসলিম হা/২৪৫৩ ও ২৪৪৮; মিশকাত হা/৫৮৯৪]
মূসা ইবনে ইসমাইল(র)...........ইউসায়ের ইবনে আমর(রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সাহল ইবনে হুনায়েফ (রা) কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি নবী(সা)কে খারিজীদের সম্পর্কে কিছু বলতে শুনেছেন কি? তিনি বললেন, আমি তাঁকে বলতে শুনেছি। আর তখন তিনি (রাসূলুল্লাহ সা.) তাঁর হাত ইরাকের দিকে বাড়িয়েছিলেন যে, সেখান থেকে এমন একটি কাওম বের হবে যারা কুরআন পড়বে সত্য, কিন্তু তা তাদের গলদেশ অতিক্রম করবেনা। তারা ইসলাম থেকে বেরিয়ে য়াবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়।
(সহিহ বুখারী, খন্ড ৮, অধ্যায় ৮৪, হাদিস ৬৮)
মুসনাদে আহমাদের অন্য বর্ণনায় এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাঃ বর্ণনা করেছেন যে, পূর্ব দিক থেকে আমার উম্মতের মধ্যে এমন একদল লোকের আবির্ভাব ঘটবে যারা কোরান তেলাওয়াত করবে কিন্তু কোরানের বানি তাদের কণ্ঠনালি অতিক্রম করবে না। যত বারই তাদের কিছু অংশের প্রাদুর্ভাব দেখা যাবে ততবারই তারা ধ্বংস (হত্যা করা) হয়ে যাবে। এভাবে রাসুল সাঃ দশ বার বলার পরে বলেন, 'যত বারই তাদের কিছু অংশের আবির্ভাব হবে ততবারই তারা ধ্বংস (হত্যা করা) হয়ে যাবে এবং যতক্ষণ পর্যন্ত না তাদেরই একটি গোষ্ঠীর মধ্যে দাজ্জালের আবির্ভাব হয়।
খারেজী সম্প্রদায় উত্থানের সূচনা:
রাসুল (সাঃ) এর অফাতের পর রাসুল (সঃ) এর সকল ভবিষ্যত বানী সত্য প্রমানিত হয় এবং শেষ পর্যন্ত খারেজীদের আত্ব প্রকাশ ঘটে।হিজরি ৩৭ সালে একটি কাহিনী খারেজীদের সম্পর্কে সকল ধারণা স্পষ্ট হয়।
হযরত আলী (রঃ) শাসনের সময় ইসলামের খলিফার নির্ধারণের মুসলমানরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে ।একটি দল হল হযরত আলী (রঃ) এবং অন্য দল হল মুয়াবিয়া (রাঃ)। ক্রমে অবস্থা রক্তক্ষয়ীতে রুপ লাভ করে (৬৫৭ সালের জুলাই মাসে আলীর সাথে মুয়াবিয়ার ‘সিফফিন’ নামক স্থানে যুদ্ধ হয়) , তখন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধের জন্য হযরত আলী (রঃ) দুই জন বিচারক নিয়োগ দিলেন ,একজন হযরত আলী (রঃ) পক্ষ থেকে অন্য জন মুয়াবিয়ার (রাঃ) পক্ষ থেকে।সিফফীন যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর শাম ও ইরাকের সকল সাহাবীদের ঐক্যমত্যে বিচারব্যবস্থা পৃথকীকরণ এবং আলী (রা এর কূফায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
তখনই খারেজী সম্প্রদায় আলী (রা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে হারূরা প্রান্তরে এসে বসতি স্থাপন করে। সেনাবাহিনীতে তাদের সংখ্যা আট হাজার ছিল।বিচ্ছিন্নতার সংবাদ পেয়ে হযরত আলী (রা
ইবনে আব্বাস (রা
-কে তাদের কাছে পাঠান। ইবনে আব্বাস (রা
বুঝিয়ে শুনিয়ে তাদের থেকে দুই হাজারকে আলী (রা
এর অনুসরণে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন। অতঃপর আলী (রা
কুফার মসজিদে দাড়িয়ে দীর্ঘ ভাষণ দিলে মসজিদের এক কোনায়- “লা হুকমা ইল্লা লিল্লাহ” (আল্লাহ্র বিধান ছাড়া কারো বিধান মানি না, মানব না) স্লোগানে তারা মসজিদ ভারী করে তুলে। আলী (রা
এর দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়- “আপনি বিচারব্যবস্থা মানুষের হাতে তুলে দিয়েছেন?! আল্লাহ্র বিধানে অবজ্ঞা প্রদর্শনের দরুন আপনি মুশরেক হয়ে গেছেন…!!”
খারেজীদের বক্তব্য , “হযরত আলী (রঃ) বিচারের দায়িত্ব মানুষের উপর নেস্ত করেছেন, কিন্তু বিচারের মালিক আল্লাহ্।আল্লাহ্ ছাড়া কারোও ফয়সালা মানা যাবে না ।“সিদ্ধান্ত তো আল্লাহ্ ছাড়া কারোর নয়” (إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ ৬:৫৭)।
এই আয়াতের হুকুম ভংগ করেছেন। তাই বিচারক নিয়োগ কুরআন পরিপন্থী । সুতরাং আপনি কুফরি করেছেন এবং আপনি কাফের হয়ে গেছেন ,আপনাকে তওবা করে পুনরাই ইসলাম গ্রহন করতে হবে। ”।অথচ সত্য হল মানুষের মধ্যে ফয়সালার জন্য মানুষকেই বিচারক হতে হবে।আর ফয়সালা হবে আল্লাহ্র আইন অনুসারে ।এই খারিজীরা নিজেদের নির্বুদ্ধিতা ধর্মীয় গোঁড়ামিতে রূপদান করে এবং মুসলমানদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সূচনা করে।
তখন আলী (রা বললেন- তোমাদের ব্যাপারে আমরা তিনটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি:
১. মসজিদে আসতে তোমাদের আমরা বারণ করব না।
২. রাষ্ট্রীয় সম্পদ থেকে তোমাদের বঞ্চিত করব না।
৩. আগে-ভাগে কিছু না করলে আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব না।
কিছুদিন পর সাধারণ মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষ করত: তারা আব্দুল্লাহ্ বিন খাব্বাব বিন আরিত (রা-কে হত্যা করে তার স্ত্রীর পেট ফেড়ে দু-টুকরা করে দেয়।আলী (রা
জিজ্ঞাস করেন, আব্দুল্লাহ্কে কে হত্যা করেছে? জবাবে তারা- আমরা সবাই মিলে হত্যা করেছি- স্লোগান দিতে থাকে। এরপর আলী (রা
তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেন। নাহরওয়ান অঞ্চলে তাদের সাথে মুসলমানদের তুমুল যুদ্ধ হয়। যুদ্ধ সমাপ্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে খারেজীরা পরাজিত হয় খারেজি সম্প্রদায়ের ফেতনাও সাময়িক ভাবে খতম হয়ে যায়।
পরজিত খারেজিদের বংশধর ও অনুসারীরা এরপরেও বিভিন্য সময় আত্বপ্রকাশ করে এবং ফিতনা ফাসাদ বাধাতে উদ্যত হয়।
খারেজিদের কিছু বৈশিষ্ট্যঃ
খারেজিদের উতপত্তি হবে পূর্ব দিক থেকে (রিয়াদ ইরাক ও তৎসংলগ্ন অঞ্চল)
তারা বয়সে হবে নবীন ও তরুণ যারা নিজেদের অনেক জ্ঞ্যানী ভাববে।
খারেজিরা মুসলমানদেরকে যেকোনো গুনাহের (বিশেষ করে গুনাহে কবিরা ) জন্য কাফের বলে সম্বোধন করে।এবং সামান্য ব্যাপারে কুফরের ফতোয়া দেয়।
তারা মুসলমানদের হত্যা করবে শুধু মাত্র ধর্মীয় মতের অমিলের (কিভাবে ইবাদত / শাসন করা হবে এই বিষয়ে ) কারনে। কিন্তু তারা কাফের , মুশরিক , কবর ও মূর্তি পূজারী দের ছেড়ে দিবে
তারা মুসলিমদের প্রতি হবে কঠোর কাফেরদের প্রতি হবে নমনীয়।
তারা কথায় কথায় মুসিলমদের তাকফীর করবে।(বিদাতি কাফের বলে সম্বোধন করবে)।
তারা হবে ইবাদতে অন্যদের চেয়ে অগ্রগামী কিন্তু নিজদের ইবাদতের জন্য হবে অহংকারী।
তারা কুরান পড়বে কিন্তু কুরান বুঝবেনা বরং উল্টোটা বুঝবে।
তারা সর্বোত্তম কথা বলবে কিন্তু সর্ব নিকৃষ্ট কাজ করবে।
কুরানের যেসব আয়াত কাফের জন্য প্রজজ্য তা তারা অজ্ঞ মুসলিমদের উপর প্রয়োগ করবে।
পৃথিবীতে সব সময়ই খারেজি আকিদার লোক থাকবে এবং সর্বশেষ এদের মধ্য থকেই দাজ্জালের আবির্ভাব হবে
খারেজি চিনার উপায়ঃ
১. হযরত আলী(রাঃ):
অতীতের খারেজী সম্প্রদায়রা ইসলামের ৪র্থ খলিফা হযরত আলী(রাঃ) মুশরিক এমনকি কাফির বলতেও দ্বীধাবোধ করত না। খারেজী সম্প্রদায়ের সাথে উনার বিশাল যুদ্ধে উনি এদের পরাজিত করেন। তাই খারেজি সম্প্রদায়রা উনার প্রশংসামূলক যে সব সহীহ হাদীস আছে সেগুলোকে জাল-যয়ীফ হিসেবে প্রচারণা চালায় এবং যারা উনার প্রশংসা করে তাদেরকে শিয়া-সূফী মনে করে। অতীতের খারেজী সম্প্রদায়রা উনার বিরোধীতা করত directly আর এখনকার খারেজিরা করে indirectly।
২.ইমাম হাসান হোসেন (রাঃ)
রাসুল (সঃ) এর দৌহিত্র জান্নাতের পুরুষদের সর্দার ইমাম হাসান হোসেন খারেজিদের চোখের কাটা।অতীতের খারেজিরা ডাইরেক্টলি ইমাম হাসান হোসেনের বিষাদগার করত। বর্তমান খারেজীরা তাদের বিষাদগার করার সাহস পাই না বটে তবে তাদের প্রশংসাকারীদের কশিয়া বলে অভিহিত করে।
৩.খারেজীরা আমীরে মুয়াবিয়া (রাঃ) কে কাফের মনে করে কিন্তু তার ছেলে ইয়াজিদকে পাক্কা মুসলিম মনে করে।কারন মুয়াবিয়ার (রাঃ) এর সাথে খারেজিদের যুদ্ধ হয়েছিল,আবার ইয়াজিদ খারেজিদের জানের দুশমন ইমাম হাসান হোসেনকে হত্যা করেছিল।খেয়াল করলে দেখবেন খারেজিরা ইয়াজিদের নামের পাশে (রাঃ)! লাগায়।
৪.ইমাম আবু হানিফা(রঃ):
উনার সাথে খারেজী-মুতাজিলা সম্প্রদায়ের অনেক বাহাস হয়েছিল। সে সবের একটি বাহাসেও খারেজীরা উনার সাথে পেরে উঠে নি। তাই খারেজীরা উনাকে পছন্দ করত না ও উনার নামে বানোয়াট কথা ছড়াত। আজকের খারেজি সম্প্রদায়ের অনেকেই উনাকে পছন্দ করে না ও উনার নামে বানোয়াট কথা ছড়ায়।
৫.ইমাম আশ’আরী (রঃ) এবং ইমাম মাতরুদী(রঃ):
ইমাম আশ'আরী(রঃ) এর সম্পূর্ণ নাম ইমাম আবু আল-হাসান আল-আশ'আরি(রঃ) এবং পরবর্তিতে তিনি ইমাম আহমদ বিন হাম্বল(রঃ) এর পাশাপাশি ৩য় শতাব্দীর মুজাদ্দিদ হিসেবে স্বীকৃত পান সমস্ত আলেমগণের নিকট।ইমাম আশারী(রঃ) এক সময় খারেজী-মুতাজিলা ছিলেন। কিন্তু পরবর্তিতে তিনি এই সম্প্রদায়ের আক্বীদা যে কতটা ভ্রান্ত তা বুঝতে পেরে এদের সংস্পর্শ তো ত্যাগ করেনই সেই সাথে এদের বিরুদ্ধে বই লিখে এদের আক্বীদা সংক্রান্ত সমস্ত ভ্রান্ত মতবাদকে খন্ডন করে অসংখ্য বই রচণা করেন। ইমাম মাতরুদী(রঃ) ও ঠিক একই কাজ করেছিলেন। যার কারণেই খারেজী-মুতাজিলারা উনাকে একদমই পছন্দ করত না।
আজকের খারেজি সম্প্রদায়ের অনেকেই উনাকে পছন্দ করে না; উল্টা ইসলামী আক্বীদাগুলোকে নিজেদের সুবিধামত কখনও ‘আশ’আরী আক্বীদা’, আবার কখনওবা ‘মাতরুদী আক্বীদা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে সাধারণ মানুষদের মনে সন্দেহের সৃষ্টি করে চলেছে।বর্তমান জামানার খারেজিরা এই দুই মহান ঈমামের নাম শুনলেই চে চে করে উঠে।
বর্তমান জামানার খারেজীঃ
উপরে উল্লেখিত খারেজিদের ইতিহাস খারেজিদের বৈশিষ্টের সাথে বর্তমান ও কিছুকাল পূর্বে যাদের হুবহ মিল আছে তারাই হল এযুগের খারেজি।লক্ষনীয় বিষয় যে খারেজিদের সাথে কারো সাধারণ বিশিষ্ট মিলে গেলেই সে খারেজি নয়,তবে এই গুণ পরিহার্য।তবে একজন মুসলিমের জন্য খারেজি হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে কুফুরি/ব্দাত করার কারনে সে পাইকারি হারে মুসলিমদের কাফের/বিদাতি বলবে।এবং কাফেরদের রেখে মুসলিমদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হবে।শাষকের ভুলের কারনে শাষকেরর বিরুধ্যে যুদ্ধ না করে মুসলিম সম্রাজ্যের বিরুধ্যে যুদ্ধ করবে।
অনেকেই জানেন বর্তমান সৌদি রাজতন্ত্রে জন্ম হয়ছে খিলফাতের বিরুদ্ধ্যে যুদ্ধ করে,মুসলিম সম্রাজ্য ভেঙ্গে খান খান করে।যারা জানেন না তারাএই নোটের শেষে দেয়া সৌদি রাজতত্রের জন্ম ইতিহাস নিয়ে আমার আগের নোটটা পরে জেনে নিয়েন।বর্তমান জামানায় খারেজী দেখতে হলে সৌদি রাজন্ত্র ও এর সমর্থক গোষ্ঠী নামধারী আলেম উলামাদের দেখলেই যথেষ্ট।এরা কথায় কথায় মুসলিমদের কাফের বিদাতি ফতোয়া দেয়।এখানে উল্লেখ্য যে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা হচ্ছে অজ্ঞতা বশত বা জেনেশুনে কেউ কবিরা গুনাহ বা বিদাত করলেই কেউ কাফের বা বিদাতি নয়।তবে তার তওবা করা আবশ্যক।
এছাড়াও সৌদি রাজারা কাফেরদের প্রতি কি পরিমান নমনীয় ও মুসলিমদের প্রতি কি পরিমান কঠোর তা সকলেরি জানাশুনা,এগুলি বলার প্রয়োজন বোধ করছি না।
মুসলিমদের জানের দুশমান আমেরিকাহচ্ছে সৌদিদের প্রভু।এরা আল্লহর পরিবর্তে আমেরিকাকে প্রভু বানিয়ে বহু আগেই ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে গেছে।
ইরাক ও সিরিয়া সাম্প্রতিককালে খারেজিদের আবির্ভাব হয়েছে যারা isis নামে পরিচিত প্রথমদিকে আমিও এদের মুজিহিদ ভেবে ভুল অরেছিলাম।
আমি নিজেও এদের অনেক প্রচারণা করেছি।কিন্তু এদের আসল রুপ প্রকাশিত হয়ছে সাম্প্রতিককালে।এরা বাসার আল আসাদকে বাদ দিয়ে সিরিয়ার অন্য গ্রুপের মুজাহিদদের হত্যা করা শুরু করেছে যার সুস্পষ্ট প্রমান আছে।সারা বিশ্বের মুজাহিদদের প্রানপিয় তানজিম আল কায়েদা ইতিমধ্যে এদের গোমরা প্রথভষ্ট খারেজি ঘোষণা করেছে।এরা আহলুল আকদের সমর্থন না নিয়ে খিলফা ডিক্লেয়ার করেছে এবং তাদের অবৈধ খিলফা যারা মানতে অস্বীকার করছে তাদের ব্রাশ ফায়ার করছে ইরাক ও সিরিয়াতে।আপনারা জানেন পাশেই ইজরায়েল ফিলিস্তিনি মুসলিম হত্যা,আসাদ সিরিয়াতে সুন্নি হত্যা করছে।সেদিকে তাদের ভ্রুক্ষেপ নেই তারা নেমেছে মুসলিম হত্যা করে বায়াহ আদায় করতে ।
খারেজিদের মুল বৈশিষ্ট্য কাফেরদের ছেড়ে দেই মুসলিমদের হত্যা করে isis এর মধ্যে সুষ্পষ্টভাবে প্রতিয়মান হয়।এই নোটের শেষে দেয়া লিংকে isis The Ultimate Khareji নোট পড়লে আপনি এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
প্রসঙ্গীক লেখাঃ ISIS The Ultimate Khareji on.fb.me/U0E20X
খিলাফতের মৃত্যু ও সৌদি রাজতন্ত্রের জন্ম হল যেভাবেঃ http://goo.gl/7dWEXu
শিয়ারা মুসলিম নাকি অমুসলিম? http://goo.gl/MM0ZzY
তালেবান সৃষ্টি হয়েছিল যেভাবে............।। bit.ly/1jMfWgU
RAND Corporation http://goo.gl/tOxOwU
ধন্যবাদঃ সোহাগ আহমদ
©somewhere in net ltd.