![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সূচনা
পার্বত্য চট্টগ্রাম
বাংলাদেশের
দক্ষিন-
পূর্বে অবস্থিত
দেশের এক-দশমাংশ
এলাকা যার
জনসংখ্যা ৭ লক্ষ
বাঙ্গালীসহ চাকমা,
মারমা, ত্রিপুরা,
মুরং, পাংখু, বোম,
ইত্যাদি ১৩টি উপজাতি মিলে সর্বমোট
১২ লক্ষ মাত্র। ১৯৭৫
সাল থেকে এ
অঞ্চলে ভারতের
প্রত্যক্ষ
সহযোগিতায়
চাকমা নেতৃত্বে বাংলাদেশ
বিরোধী সশস্ত্র
সন্ত্রাস চলছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)
এর সশস্ত্র
শাখা তথাকথিত
শান্তিবাহিনীর
আক্রমনে এযাবত
প্রায় ৩৫০০০ মানুষ
মারা যায়।
মূলতঃ পার্বত্য
চট্টগ্রামে বিচ্চিন্নতাবাদ
এবং পার্বত্য
বাংগালীদের
বিরুদ্ধে জাতিগত
নির্মূল অভিযান
পরিচালনার
লক্ষ্যেই স্বাধীন
বাংলাদেশে এ
মানবতা বিরোধী গনহত্যা পরিচালনা করা হয়।
মানবতার
বিরুদ্ধে অপরাধ-
মাকে কুপিয়ে এবং শিশুকে পুড়িয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসী শান্তিবাহিনী
১৯৯৭ সালের
২রা ডিসেম্বর
তৎকালীন
আওয়ামী লীগ সরকার
জেএসএস-এর
সাথে ‘পার্বত্য
শান্তি চুক্তি’
নামে এক
দেশবিরোধী চুক্তি স্বাক্ষর
করে যার
মাধ্যমে পার্বত্য
চট্টগ্রামকে ‘উপজাতীয়
এলাকা’
হিসেবে ঘোষনা করে সেখানে উপজাতীয়
শাসন
ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়।
চুক্তি অনুযায়ী জেএসএস
কিছু
সেকালে অস্ত্রসহ
আত্মসমর্পনের নাটক
মঞ্চায়ন করলেও
চুক্তির পর এযাবত
৭০০-এরও
বেশী মানুষকে হত্যা এবং ১৩০০-
এরও
বেশী মানুষকে অস্ত্রের
মুখে অপহরন করা হয়।
জেএসএস প্রধান সন্তু
লারমা কর্তৃক
পার্বত্য চট্টগ্রাম
থেকে ৭ লক্ষ
বাংগালী এবং সকল
নিরাপত্তা ক্যাম্প
প্রত্যাহারের
দাবী উত্থাপন
নইলে পূনরায় সশস্ত্র
সংগ্রাম শুরুর
হুমকি এবং আন্তর্জাতিক
সিএইচটি কমিশন সহ
বিভিন্ন দেশী-
বিদেশী গোষ্ঠী কর্তৃক
সন্তু লারমার দাবীর
সমর্থনে জোর
প্রচারণা ও লবিং-
এর
প্রেক্ষিতে পার্বত্য
চট্টগ্রাম সংশ্লিষ্ট
নিম্নোক্ত কিছু
বিষয়ের উপর
সংক্ষেপে আলোকপাত
করবোঃ
(ক) পার্বত্য
চট্টগ্রামের
কৌশলগত গুরুত্ব, (খ)
ভারতে সন্ত্রাসী শান্তিবাহিনীর
প্রশিক্ষন ও আশ্রয়
শিবির, (গ) জেএসএস-
এর সশস্ত্র
আন্দোলনের কারন ও
উদ্দেশ্য, (ঘ) জেএসএস
কর্তৃক সংঘটিত
সন্ত্রাসের ধরন, (ঙ)
শান্তিবাহিনী কর্তৃক
সংঘটিত কতিপয়
গণহত্যা, (চ)
শান্তিবাহিনীর
সশস্ত্র তৎপরতার
ফলাফল, (ছ)
শান্তি আলোচনা, (জ)
১৯৮৯ সালে পার্বত্য
স্থানীয় সরকার
পরিষদ গঠন, (ঝ)
পার্বত্য
শান্তিচুক্তি যে কারনে রাষ্ট্রের
নিরাপত্তা ও
সার্বভৌম বিরোধী,
(ঞ) পার্বত্য
চট্টগ্রামে উপজাতীয়
শাসন ও
বাঙ্গালীদের
প্রতিনিধিত্বহীন
তা, (ট) সন্তু
লারমা পার্বত্যবাসীর
বৈধ
জনপ্রতিনিধি নয়, (ঠ)
শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের
অর্থ কি ?, (ড)
হাইকোর্টের রায় –
পার্বত্যচুক্তি অসাংবিধানিক
ও দেশবিরোধী, (ঢ)
রেসিস্ট সন্তু
লারমার
বাঙ্গালীবিদ্বেষ
ী প্রপাগান্ডা, (ণ)
চুক্তি পরবর্তী পার্বত্য
পরিস্থিতি, (ত)
আন্তর্জাতিক
সিএইচটি কমিশনের
বাংলাদেশ
বিরোধী তৎপরতা, (থ)
পার্বত্য
চুক্তি স্বাক্ষরের
ফলাফল এবং (দ)
পার্বত্য
চট্টগ্রামে টেকসই
নিরাপত্তা ও
শান্তি স্থাপনে করনীয়।
পার্বত্য
চট্টগ্রামের
কৌশলগত গুরুত্ব
উত্তরে খাগড়াছড়ি,
মাঝখানে রাঙ্গামাটি এবং দক্ষিনে বান্দরবান-
এই ৩টি জেলার
সমন্বয়ে পার্বত্য
চট্টগ্রাম। এর
পশ্চিমে ভারতের
ত্রিপুরা, উত্তর ও
পুর্বে মিজোরাম
এবং দক্ষিনে মায়ানমারের
আরাকান প্রদেশ।
পার্বত্য
চট্টগ্রামে জনবসতি অত্যন্ত
কম
(১৩টি উপজাতি মিলে ৫
লক্ষ
এবং বাংগালী ৭
লক্ষ; সর্বমোট প্রায়
১২ লক্ষ) হওয়ায়
এবং জঙ্গলাকীর্ন
বিস্তীর্ন পাহাড়
থাকায় এ
অঞ্চলে সশস্ত্র
ক্যাম্প স্থাপন
করে প্রশিক্ষন
পরিচালনা এবং সশস্ত্র
তৎপরতা পরিচালনা করা খুবই
সহজ।
অন্যদিকে সীমান্ত
লাগোয়া হওয়ায়
যে কোন অপারেশন
পরিচালনা করে পার্শ্ববর্তী দেশে সটকে পড়া সুবিধাজনক।
জংগলাকীর্ণ
পাহাড়ী অঞ্চল
এবং এঁকে-
বেঁকে চলা পাহাড়ী ঝর্ণার
কারনে এ
অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর
গতিবিধি অনেকটা সীমিত,
গেরিলা পদ্ধতিতে নিরাপত্তা বাহিনীর
উপর অতর্কিত
হামলা (রেইড
বা এ্যাম্বুশ)
পরিচালনা করে পালিয়ে যাওয়া সহজ।
অন্যদিকে পাহাড়ী পাড়া এবং বাংগালীদের
গুচ্ছগ্রামসমূহে
নিয়ন্ত্রণ
প্রতিষ্ঠা বা সন্ত্রাসী হামলা পরিচালনা করা সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর
পক্ষে অত্যন্ত
সুবিধাজনক।
পার্বত্য
চট্টগ্রামে উৎপাদিত
বনজ, কৃষি ও মৎস্য
সম্পদের উপর
এবং ব্যবসায়ীদেরকে অপহরণ
করে মোটা অংকের
চাঁদা আদায়
করাটা সশস্ত্র
গ্রুপগুলোর জন্য
বিরাট আয়ের
ব্যবস্থা। যেহেতু
পার্বত্য
চট্টগ্রামে সশস্ত্র
গ্রুপগুলো শুধুমাত্র
উপজাতীয় সদস্যদের
দ্বারাই গঠিত,
সে কারণে বিচ্ছিন্নতাবাদী
রেসিস্ট
প্রপাগান্ডা চালিয়ে এবং অস্ত্রের
হুমকীর
মুখে স্বগোত্রীয়
উপজাতিদের কাছ
থেকে সমর্থন ও
আনুগত্য আদায়
করা সহজ।
পার্বত্য
চট্টগ্রামের
নিকটবর্তী ঢাকা-
চট্টগ্রাম মহাসড়ক-
যা বাংলাদেশের
আমদানী-রফতানীর
লাইফ লাইন। তাই,
পার্বত্য
চট্টগ্রামে প্রভাব
বিস্তারের সুযোগ
পেলে চট্টগ্রাম
বানিজ্য-বন্দরকে
নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব
এবং পার্বত্য
চট্টগ্রামকে আলাদা করতে পারলে বাংলাদেশের
অস্তিত্ব রক্ষার
চেষ্টাই অকার্যকর
হয়ে পড়তে বাধ্য।
উপরোক্ত কৌশলগত
অবস্থার
বিবেচনাতেই ভারত
পার্বত্য
চট্টগ্রামে সশস্ত্র
বিচ্ছিন্নতাবাদী
তৎপরতা পরিচালনার
উদ্দেশ্যে ‘সশস্ত্র
শান্তিবাহিনী’
গঠন
করে বাংলাদেশের
বিরুদ্ধে এক অঘোষিত
প্রক্সি যুদ্ধ শুরু করে।
ভারতে সন্ত্রাসী শান্তিবাহিনীর
প্রশিক্ষন ও আশ্রয়
শিবির
ভারতের সশস্ত্র
বাহিনীর প্রশিক্ষন
কেন্দ্রে শান্তিবাহিনীকে প্রশিক্ষন
দিয়ে তাদেরকে অস্ত্রসহ
ছোট ছোট
দলে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ
করানো হয়। ভারতীয়
সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-
এর ক্যাম্প সংলগ্ন
এলাকাতেই স্থাপিত
হয় কয়েক ডজন
শান্তিবাহিনী ক্যাম্প।
ভারতীয় লেখক অশোক
রায়নার ‘ইন্সাইড
র’ বইতে এর
বিস্তারিত বিবরণ
বর্ণিত হয়েছে।
উল্লেক্ষ্য, ভারতের
ভূমিতে স্থাপিত
শান্তিবাহিনীর
সদর দপ্তরে সংঘটিত
এক অভ্যন্তরীণ
দ্বন্দে ১৯৮৩ সালের
১০ নভেম্বর
তারিখে শান্তিবাহিনীর
প্রতিষ্ঠাতা এবং জনসংহতি সমিতির
প্রধান মানবেন্দ্র
নারায়ন
লারমা বিক্ষুব্ধ
প্রীতি গ্রুপের
হাতে নিহত হয়।
তারপর দলের প্রধান
হিসেবে দায়িত্ব
নেয় - মানবেন্দ্র
লারমার ছোট ভাই
সন্তু লারমা।
মানবেন্দ্র নারায়ন
লারমা সন্তু লারমা
জেএসএস কর্তৃক
সশস্ত্র আন্দোলনের
কারণ ও
উদ্দেশ্যাবলী
যেসব
বিষয়কে সশস্ত্র
আন্দোলনের প্রধান
কারণ
হিসেবে জেএসএস
প্রচার করেছিল-
তা’ হলো- কাপ্তাই
বাঁধের
ফলে ক্ষতিগ্রস্থ
উপজাতিদের যথাযথ
পূণর্বাসন না করা,
উপজাতিদের
সংস্কৃতি রক্ষা করা,
অর্থনৈতিক উন্নয়ন
ইত্যাদি।
তবে জেএসএস-এর মূল
উদ্দেশ্য ছিলঃ
(ক) পার্বত্য
চট্টগ্রামে স্বায়ত্ব-
শাসন
প্রতিষ্ঠা করা,
(খ) পার্বত্য
চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন
করতে সক্ষম
না হলেও
সেখানে বাংলাদেশ
সরকারের সার্বভৌম
ক্ষমতা বিলোপ করা,
(গ) পার্বত্য
চট্টগ্রাম
থেকে বাংলাভাষা-
ভাষী নাগরিকদেরকে অস্ত্রের
মুখে উৎখাত
করে পার্বত্য
চট্টগ্রামকে একমাত্র
উপজাতিদের আবাস
‘উপজাতীয় এলাকা’
বা ‘জুম্মল্যান্ড’
হিসেবে পরিণত
করা।
এসব বাংলাদেশ
বিরোধী উদ্দেশ্য
বাস্তবায়নে জেএসএস
পরিচালনা করে বাংলাদেশের
ইতিহাসে বর্বরতম
জাতিগত নির্মূল
অভিযান।
জেএসএস কর্তৃক
সংঘটিত সন্ত্রাসের
ধরন
জেএসএস ভারত
থেকে প্রাপ্ত
প্রশিক্ষন, অস্ত্র,
গোলাবারূদ ও আশ্রয়
ব্যবহার
করে গোটা পার্বত্য
৩ জেলায়
বাংগালী নিধন শুরু
করে। নিরস্ত্র ও
নিরীহ
বাংগালীদের
বিভিন্ন পাড়ায়
আক্রমন করে গ্রামের
সব বাড়ি-ঘরে আগুন
ধরিয়ে দেয়,
নির্বিচারে হত্যা করে গ্রামের
আবাল-বৃদ্ধ-বনিত
াকে,
গর্ভবতী মায়েদের
পেটে বেয়োনেট
দিয়ে আঘাত
করে সন্তানসহ
মাকে হত্যা করা হয়,
ধর্ষনের শিকার হয়
অসংখ্য পার্বত্য
বাঙ্গালী নারী,
গুলি করে ও
কুপিয়ে হত্যা করে প্রায়
৩৫০০০ (পয়ত্রিশ
হাজার)-এরও
বেশি মানুষ, আহত
করে কয়েক হাজার।
অস্ত্রের মুখে শত-শত
বাংগালী কৃষক,
কাঠুরিয়া, জেলে ও
ব্যবসায়ীকে কিডন্যাপ
করে মুক্তিপণ আদায়
করে, এসব
ভিকটিমদের
অনেককেই নির্যাতন
করে ও
কুপিয়ে হত্যা করে।
পার্বত্য
চট্টগ্রামের প্রায়
সকল দোকান মালিক,
কৃষক, জেলে, অফিস-
আদালতের
কর্মচারী এবং ঠিকাদারদের
কাছ থেকে আদায়
করে চাঁদা ও
মুক্তিপণ
হিসেবে শত-সহস্র
কোটি টাকা।
সন্ত্রাস-বিরোধী
কয়েকশত
উপজাতি নাগরিকও
জেএসএস কর্তৃক
হত্যা ও নির্যাতনের
শিকার হয়। অস্ত্রের
মুখে ত্রাস
সৃষ্টি করে তারা লক্ষাধিক
পার্বত্য
বাংগালীকে ভিটা-
মাটি ছেড়ে গুচ্ছ
গ্রামে আশ্রয়
নিতে বাধ্য করে,
লক্ষাধিক
বাঙ্গালী পার্বত্য
চট্টগ্রাম
ছেড়ে সমতলে এসে আশ্রয়
নিতে বাধ্য হয়।
এছাড়া প্রায় বিশ
হাজার
উপজাতিকে বাধ্য
করে ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয়
নিতে।
নিরাপত্তা বাহিনীর
টহল দলের উপর
এ্যাম্বুশ করে কয়েক
শত
সেনা সদস্যকে হতাহত
করে, বিডিআর-পুলিশ-
আনসার ও
ভিডিপি (গ্রাম
প্রতিরক্ষা দল)
ইত্যাদি দূর্বল
লক্ষ্যবস্তুর উপর
পরিচালনা করে অতর্কিতে হামলা বা এ্যাম্বুশ
– যাতে বহু সদস্য
হতাহত হয়।
এভাবে ভারতীয়
সেনাবাহিনীর
প্রত্যক্ষ
তত্বাবধানে প্রশিক্ষিত
শান্তিবাহিনী নামধারী সন্ত্রাসীরা তাদের
প্রশিক্ষনের
পুরো দক্ষতা প্রয়োগ
করে বাংলাদেশের
হাজার হাজার
নারী-পুরুষ-শিশু ও
নিরাপত্তা বাহিনীর
সদস্যদের হত্যায়।
স্বাধীন
বাংলাদেশে সশস্ত্র
উপজাতীয়
সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশের
কয়েক হাজার
নাগরিককে নিজ
ভূমি থেকে উৎখাত
করার ঘৃন্য
উদ্দেশ্যে পাড়া ঘেড়াও
করে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে,
বেধরক
কুপিয়ে এবং খড়ের
ঘরগুলোতে আগুন
ধরিয়ে দিয়ে জলন্ত
ঘরের মধ্যে শত-শত
মা ও শিশুকে জ্যান্ত
পুড়িয়ে অংগার
করে মানবতার
বিরুদ্ধে যে অপরাধ
করেছে- তার নজির
১৯৭১ সালেও
দেখা যায়নি।
স্বাধীন
বাংলাদেশে সন্তু
লারমা পরিচালিত
জেএসএস কর্তৃক
পার্বত্য
বাঙ্গালীদের উপর
মানবতা বিরোধী অপরাধের
কিছু সচিত্র
উদাহরনঃ
সন্তু লারমার
সন্ত্রাস- পার্বত্য
বাঙ্গালীদের
লাশের স্তুপ
বামেঃ বাঙ্গালী পাড়ায়
শান্তিবাহিনীর
পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ,
এভাবেই
শান্তিবাহিনী পুড়িয়ে মারে পার্বত্য
বাংগালীদেরকে;
ডানেঃ অন্যত্র
পার্বত্য
বাঙ্গালীদের লাশ
এবং অঙ্গার
হওয়া দেহাবশেষ
শান্তিবাহিনী কর্তৃক
পরিচালিত কতিপয়
গণহত্যা
পার্বত্য
চট্টগ্রামে বাংগালী অধ্যুষিত
অসংখ্য পাড়াতেই
শান্তিবাহিনী গণহত্যা চালায়।
(ক) শান্তিবাহিনীর
এরিয়া কমান্ডার
তথাকথিত মেজর
রাজেশ এর
নেতৃত্বে পরিচালিত
হয়
ভূষনছড়া হত্যাকান্ড
যেখানে একরাতেই
৪৫০ জনের অধিক
বাংগালীকে হত্যা করা হয়েছে।
তার আসল নাম-
মনিস্বপন দেওয়ান,
যাকে আওয়ামী লীগ
চুক্তির
পরে রাংগামাটির
এমপি ও
প্রতিমন্ত্রী বানিয়ে গণহত্যা পরিচালিনার
জন্য পুরস্কৃত
করেছিল,
বর্তমানে সে গৌতম
দেওয়ানের
সভাপতিত্বে সিএইচটি নাগরিক
কমিটি গঠন করেছে।
(খ)
রাংগামাটি জেলার
লংগদু থানার
পাকুয়াখালীতে ১৯৯৬
সালের ৬ সেপ্টেম্বর
তারিখে শান্তিবাহিনী ৩৫
জন
বাংগালী কাঠুরিয়াকে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।
(গ)
রাংগামাটি জেলার
জুরাছড়ি থানার
পাহাড়ি এলাকায়
শান্তিবাহিনীর
এরিয়া কমান্ডার
তথাকথিত মেজর
পেলে (আসল নাম-
তাতিন্দ্র লাল
চাকমা)
একটি সেনা টহলের
উপর এ্যাম্বুশ
করে মেজর মহসীন
সহ ৩০ জন
সেনা সদস্যকে হত্যা করে।
সন্ত্রাসীরা দা দিয়ে কুপিয়ে নিহতদের
পা কেটে পায়ের
বুটগুলো আলাদা করে নেয়েছিল।
বর্তমানে সে জেএসএস
(এম এন লারমা)
গ্রুপের সাধারন
সম্পাদক।
অনুরূপ, কাশখালী,
কাউখালী, নানিয়ার
চর (এখানে এক
রাতেই ৩০০ জনের
অধিক পার্বত্য
বাংগালীকে হত্যা করা হয়েছে)
ইত্যাদি অগনিত
হত্যাকান্ডের
পরিচালনা করে এই
শান্তিবাহিনী-
যাদের প্রায় ৮৫০
জনকে চুক্তির পর
পুলিশ
বাহিনীতে চাকুরী দিয়ে পুরস্কৃত
করা হয়েছে- অথচ,
এদেশে দেশ
স্বাধীনকারী মুক্তিযোদ্ধারা এখনো রিক্শা চালায়।
এসব গণহত্যার কোন
খবরই
দেশবাসীকে জানানো হয়নি এবং চুক্তি সই
করে সাধারন
ক্ষমা দিয়ে দেয়া হয়েছে,
যে সাধারন
ক্ষমাকে চিরস্থায়ী সাধারন
ক্ষমা মনে করে তারা চুক্তির
পরও একইরুপ
হত্যাকান্ড ও অপহরন
চালিয়ে যাচ্ছে।
শান্তি বাহিনীর
সশস্ত্র তৎপরতার
ফলাফল
শান্তি বাহিনী নির্বিচার
হত্যাযজ্ঞ, অপহরন,
ধর্ষন, নির্যাতন,
চাঁদাবাজি,
ভীতিসঞ্চার,
অগ্নিসংযোগ,
উৎখাতকরন
ইত্যাদি সন্ত্রাসের
মাধ্যমে পার্বত্যবাসী মানুষের
মনে এক ভীতিকর
অবস্থা তৈরী করতে সক্ষম
হলেও দীর্ঘ প্রায় ২
যুগ ধরে সশস্ত্র
সন্ত্রাস
পরিচালনা তাদের
জন্য উল্লেখযোগ্য
কোন সাফল্য
বয়ে আনতে সম্পূর্ণ
ব্যর্থ হয়।
বাংলাদেশের
নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর
সম্মিলিত
প্রয়াসে কয়েকশত
শান্তিবাহিনী সদস্য
হতাহত হয় ও
ধরা পড়ে। সশস্ত্র
তৎপরতা দ্বারা শান্তিবাহিনী পার্বত্য
চট্টগ্রামের
একটি পাড়াকেও দখল
করতে সক্ষম হয়নি,
সবসময়
তারা জংগলে পালিয়ে বেড়াতে বাধ্য
হয়।
বহিঃর্দেশের
ক্রীড়ানক
হয়ে বাংলাদেশের
মানুষের
বিরুদ্ধে পরিচালিত
সশস্ত্র সন্ত্রাসের
মাধ্যমে শত বছরেও
কিছু অর্জন
করা সম্ভব নয়-
বুঝতে পেরে কয়েকশত
শান্তিবাহিনী সদস্য
অস্ত্রসহ
নিরাপত্তা বাহিনীর
কাছে আত্মসমর্পন
করে স্বাভাবিক
জীবনে ফিরে আসে।
প্রীতিগ্রুপ পুরোটাই
কয়েকশত সদস্য সহ
আত্মসমর্পন করে।
জেএসএস এর
কেন্দ্রীয় অনেক
নেতাও
নিরাপত্তা বাহিনীর
কাছে আত্মসমর্পন
করে।
পরিস্থিতি বেগতিক
দেখে ১৯৯২
সালে জেএসএস
একতরফা যুদ্ধ
বিরতি ঘোষনা দিতে বাধ্য
হয়।
তবে সেনাবাহিনীর
তরফ থেকে জেএসএস-
এর এহেন স্বঘোষিত
যুদ্ধবিরতিকে নাকচ
করে দেয়া হয়নি বিধায়
এ কৌশলগত ঘোষনার
মাধ্যমে জেএসএস
যা অর্জন করে-
তা হলোঃ
(১)
এতে নিরাপত্তা বাহিনীর
মধ্যে অপারেশন
তৎপরতায়
ভাটা পড়ে,
(২)
শান্তিবাহিনী জনবলে অত্যন্ত
নগন্য হওয়া সত্বেও
বাংলাদেশের
সেনাবাহিনীর
সাথে যুদ্ধবিরতি পালনরত
একটি সশস্ত্র
বাহিনী হিসেবে বিভিন্ন
মিডিয়াতে প্রচারনা লাভ
করে,
(৩) উপজাতীয়
পাড়াসমূহে জেএসএস
প্রচারনা কার্যক্রম
পরিচালনার সহজ
সুযোগ পায় এবং
(৪) জেএসএস
মনোবলহীন
শান্তিবাহিনীকে পূনর্গঠনের
সুযোগ লাভ করে।
(৫) সন্ত্রাসের
বিরোধিতাকারী উপজাতীয়
নাগরিকরা এবং আত্মসমর্পনকারী শান্তিবাহিনী সদস্যরা নিরাপত্তাহীন
হয়ে পড়ে।
শান্তি আলোচনা
প্রতিবেশী দেশ
কর্তৃক মন্ত্রণা,
প্রশিক্ষন, অস্ত্র-
গোলাবারুদ ও
আশ্রয়প্রাপ্ত
শান্তিবাহিনীকে সন্ত্রাসের
পথ পরিহার
করে সবাভিক
জীবনে ফিরিয়ে আনার
উদ্যোগ গ্রহন
করে বাংলাদেশ
সরকার।
বিএনপি সরকারের
আমলে (১৯৯১-১৯৯৬)
জেএসএস-এর
সাথে একাধিক
আলোচনা বৈঠক করেন
ততকালীন যোগাযোগ
মন্ত্রী কর্নেল
অলি আহমদ। কিন্তু
জেএসএস-এর পক্ষ
থেকে অগ্রহনযোগ্য
দাবী-দাওয়া পেশের
কারনে সে আলোচনার
সমাপ্তি হয়নি।
পার্বত্য স্থানীয়
সরকার পরিষদ গঠন
১৯৮৯ সালে এরশাদ
সরকার পার্বত্য
চট্টগ্রামের
৩টি জেলায় স্থানীয়
সরকার পরিষদ
গঠনের
উদ্দেশ্যে নির্বাচনের
আয়োজন করে।
পুরো জাতিকে অন্ধকারে রেখে পার্বত্য
স্থানীয় সরকার
পরিষদের জন্য এমন
মারাত্বক বিধান
আনা হয় যে-
(১) ৩টি জেলাতেই
এমন স্থানীয় সরকার
পরিষদ গঠন
করা হবে যার
চেয়ারম্যান
হবে একমাত্র
উপজাতি ব্যক্তি;
কোন বাংগালী এ
পদের জন্য
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতাই
করতে পারবেনা;
(২)
প্রতিটি জেলা পরিষদে ৩০
জন সদস্য হবে- যার
মধ্যে মাত্র ১০ জন
হবে বাংগালী সম্প্রদায়
থেকে, আর বাকী ২০
জন হবে উপজাতীয়;
(৩) উপজাতীয়
হেডম্যান, সার্কেল
চীফ ও স্থানীয়
সরকার পরিষদের
সনদ না পেলে কোন
বাংগালী পার্বত্য
চট্টগ্রামের
বাসিন্দা হতে পারবেনা,
জমি-জমা খরিদ
করতে পারবে না এবং ভোটারও
হতে পারবেনা-
অনুরূপ অনেক
অসাংবিধানিক
ধারা।
এভাবে অন্যায় ও
অগণতান্ত্রিক
বিধান অন্তর্ভুক্ত
করার ফলে পার্বত্য
বাঙ্গালীরা নিজ
দেশেই দ্বিতীয়
শ্রেনীর নাগরিক
হিসেবে পরিণত হয়
এবং উপজাতীয়
শাসনাধীনে ন্যস্ত
হয়। বস্তুতঃ পার্বত্য
স্থানীয় সরকার
পরিষদের এহেন
বিধানের উপর
ভিত্তি করেই ১৯৯৭
সালে পার্বত্য
চুক্তি স্বাক্ষরিত
হয়।
উল্লেখ্য যে,
স্থানীয় সরকার
পরিষদ
ব্যবস্থা প্রবর্তনের
ফলে জেএসএস-এর
স্বায়ত্ব শাসনের
অযৌক্তিক
দাবী স্বীকৃতি পায়
এবং এটি তাদেরকে আরো ক্ষমতা ও
সুযোগ-
সুবিধা দাবী করতে উদ্বুদ্ধ
করে ।
পার্বত্য
শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর
যে কারনে রাষ্ট্রের
নিরাপত্তা ও
সার্বভৌম বিরোধী
স্থানীয় সরকার
পরিষদের
নীতিমালার
ভিত্তিতেই ১৯৯৭
সালের
২রা ডিসেম্বর
আওয়ামীলীগ সরকার
জেএসএস–এর
সাথে পার্বত্য
শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর
করে এবং জেএসএস-
এর
ক্ষমতাকে আরো বৃদ্ধি করার
উদ্দেশ্যে গঠন
করা হয়- ৩
জেলা পরিষদের উপর
কর্তৃত্বকারী আঞ্চলিক
পরিষদ
বা রিজিয়নাল
কাউন্সিল। চুক্তির
পর থেকে সন্তু
লারমা রিজিয়নাল
কাউন্সিল
চেয়ারম্যান
হিসেবে ক্ষমতা ভোগ
করে আসছে এবং এযাবত
সরকার পার্বত্য
চট্টগ্রামে কোন
স্থানীয় নির্বাচন
অনুষ্ঠিত করেনি।
বাংলাদেশের
ক্ষমতাসীন
সরকারগুলোর উপর
বিদেশী প্রভাব,
বিরোধী দলের
দায়িত্বহীনতা এবং সুশীল
সমাজ ও জনগনের
মধ্যে এহেন জাতীয়
ইস্যুতে নিস্পৃহতার
সুযোগে জাতির
অপূরনীয়
ক্ষতি হয়ে যাবার
প্রকৃষ্ট উদাহরন
হলো - পার্বত্য
স্থানীয় সরকার
পরিষদ গঠন ও
পার্বত্য
চুক্তি স্বাক্ষর।
বাংলাদেশে স্বাধীনতা ও
সার্বভৌমত্বের
অতন্দ্র
প্রহরী বলতে বাস্তবে যে কেঊ
নেই- এটাই
প্রমানিত।
দীর্ঘ ২ যুগ
ধরে সশস্ত্র
তৎপরতা চালিয়ে জেএসএস
যা অর্জন
করতে পারেনি,
আওয়ামী সরকারের
বদৌলতে তারা চুক্তির
টেবিলে বসেই
বাংলাদেশের এক-
দশমাংশ এলাকার
পূর্নাংগ কর্তৃত্ব লাভ
করেছে।
পার্বত্য
চুক্তি স্বাক্ষর
করে দেশের এক-
দশমাংশ এলাকার
কর্তৃত্ব হস্তান্তর
করা হয়
পার্বত্য
শান্তিচুক্তির
কয়েকটি সংবিধান
বিরোধী এবং রাষ্ট্রের
নিরাপত্তা ও
অখন্ডতা বিরোধী দিক
নিম্নরুপঃ
(১) এ
চুক্তিতে বাংলাদেশের
পার্বত্য
চট্টগ্রামকে ‘উপজাতীয়
এলাকা’
হিসেবে ঘোষনা দেয়া হয়েছে;
অর্থাৎ, এর
মাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী বিদেশী এজেন্টদের
দাবীকৃত তথাকথিত
‘জুম্মল্যান্ড’
প্রতিষ্ঠাকে এগিয়ে দেয়া হয়েছে,
সাথে সাথে পার্বত্য
চট্টগ্রামে বসবাসরত
প্রায় ৫২%
বাংগালী জনসমষ্টির
অস্তিত্বকে অস্বীকার
করা হয়েছে।
(২)
৩টি জেলা পরিষদের
৩টি চেয়ারম্যান পদ
এবং আঞ্চলিক
পরিষদের
চেয়ারম্যান পদ-
এগুলো শুধুমাত্র
উপজাতিদের জন্য
সংরক্ষিত
করা হয়েছে,
বাঙ্গালীদেরকে এ
পদলোতে নির্বাচনের
অযোগ্য
ঘোষনা করে মূলতঃ পার্বত্য
চট্টগ্রামে উপজাতীয়
শাসন
প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং বাঙ্গালীদের
মর্যাদা উপজাতিদের
‘প্রজার’
পর্যায়ে নামিয়ে আনা হয়েছে।
(৩) পার্বত্য
চট্টগ্রামের
স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে স্বীকৃ্তি পাবার
জন্য
বাঙ্গালীদেরকে উপজাতীয়
হেডম্যান, সার্কেল
চীফ ও রিজিয়ন
কাউন্সিলের সনদ
প্রাপ্তির উপর
মুখাপেক্ষী করা হয়েছে।
উপজাতিদের কাছ
থেকে এসব সনদপত্র
না পেলে কোন
বাঙ্গালী পার্বত্য
চট্টগ্রামের
স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে থাকতে পারবেনা বিধায়
উচ্ছেদ হতে বাধ্য
হবে। অর্থাত,
পার্বত্য
চট্টগ্রামকে বাঙ্গালী-
শুন্য করার জন্যই
এমন ষড়যন্ত্রমূলক
বিধান করা হয়েছে।
(৪) বাংলাদেশের
কোন নাগরিক
উপজাতীয় রিজিয়ন
কাউন্সিলের
অনুমতি ব্যতিত
পার্বত্য
চট্টগ্রামে জমি কিনতে,
জমি বন্দোবস্তি নিতে বা বসতি স্থাপন
করতে পারবেনা।
অথচ বাংলাদেশের
সংবিধান
নাগরিকদেরকে দেশের
যে কোন
স্থানে ভূমি ক্রয় ও
বন্দোবস্তি নিয়ে বসবাস
করার অধিকার
দিয়েছে। এমনকি,
বাংলাদেশের
সরকারও উপজাতীয়
রিজিয়ন
কাউন্সিলের
সম্মতি ব্যতীত
পার্বত্য
চট্টগ্রামে কোন
ভূমি অধিগ্রহন
করতে পারবেনা,
অর্থাৎ, সরকারের
সার্বভৌম অধিকারও
চুক্তিতে অস্বীকার
করা হয়েছে।
©somewhere in net ltd.