নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীকে জ্ঞান বিজ্ঞানে যাঁরা অগ্রসর করে গেছেন তাঁদের অন্যতম বেতার আবিস্কারক গুগলিয়েলমো মার্চেজ মার্কনি। বেতারের জনক মার্কনি নামেই যিনি সমাধিক পরিচিত। রেডিও আবিষ্কার করে পৃথিবীকে বদলে দিয়েছেন বিজ্ঞানী মার্কনি। বিশ্বখ্যাত এই বিজ্ঞানী ১৮৭৪ সালের ২৫শে এপ্রিল ইতালির বোলোনে জন্মগ্রহণ করেন। আজ তাঁর জন্মদিন। জন্মদিনে এই বিজ্ঞানীর প্রতি আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা।
(শিশু মার্কনি)
তিনি কোনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষাপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী ছিলেন না। তার পিতা ছিলেন ইতালির একজন ধনী ব্যবসায়ী। সাত বছর বয়সে কিছু দিনের জন্য মার্কনি স্কুলে গিয়েছিলেন এবং তার পর থেকেই পদার্থবিজ্ঞানের প্রতি তার আগ্রহ জন্মে। সেই সময় তিনি লক্ষ্য করেন, স্ফুলিঙ্গ থেকে যে শব্দতরঙ্গের সৃষ্টি হয় তা বিনা তারেই কিছু দূর যেতে পারে। শুরু হলো তার গবেষণার কাজ। তিনি চার তলায় একটি ঘরে বসে বোতাম টিপে নিচতলার একটি বেল বাজিয়ে ফেললেন যেখানে তারের কোনো যোগাযোগ ছিল না। ইতালি সরকার এ ক্ষুদে বিজ্ঞানীর আবিষ্কারের প্রতি তেমন আগ্রহ না দেখানোর ফলে মার্কনি পিতার উৎসাহে অনেকটা বাধ্য হয়েই ইংল্যান্ডে চলে যান।
গুগলিয়েলমো মার্চেজ মার্কনি বিশ বছর বয়সে মার্কিন বিজ্ঞানী হার্জের একটা প্রবন্ধ থেকে জানতে পারেন যে, সদ্যপ্রয়াত এক বৈজ্ঞানিক এমন একটা বৈদ্যুতিক যন্ত্র বের করতে পেরেছেন, যার সাহায্যে ঘরের একদিক থেকে প্রেরিত বৈদ্যুতিক তরঙ্গ বিনা তারে ঘরের অন্যদিকে আগুনের ফুলকি জ্বালিয়ে দেয়। মার্কনি হার্জের মতো বৈদ্যুতিক যন্ত্র তৈরীর চিন্তায় বিভোর হয়ে থাকলেন। মার্কনির কাজ শুরু হলো লন্ডন জেনারেল পোস্ট অফিসের একটি কক্ষ থেকে পাশের বাড়ির কাছে বার্তা প্রেরণের মধ্য দিয়ে।
একনিষ্ঠ অধ্যাবসায় ও গবেষণায় তিনি এমন একটা যন্ত্র তৈরী করলেন, যার মাধ্যমে এক মাইল দূর পর্যন্ত বিনা তারে সংকেত পাঠানো সম্ভব। কিন্তু তার স্বপ্ন ছিল আটলান্টিকের এপার থেকে ৩৩৭৮ কিলোমিটার দূরে ওপারে বার্তা প্রেরণ। অতঃপর ১৮৯৯ সালে ইংলিশ চ্যানেলের এপার থেকে ওপার পর্যন্ত বিনা তারে সংবাদ আদান-প্রদান করতে সক্ষম হন মার্কনি। সেকালের বিজ্ঞানীরা অনভিজ্ঞ মার্কনির এ স্বপ্নের সফলতা সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করেন এই ভেবে যে, ভূপৃষ্ঠের বক্রতার জন্য বহু দূরবর্তী অঞ্চলে এ ধরনের বার্তা পাঠানো সম্ভব নয়। কিন্তু তিনি এ অসম্ভবকে সম্ভব করলেন ১৯০১ সালে এবং আটলান্টিকের এপার থেকে ওপারে বেতারসঙ্কেত পাঠাতে সক্ষম হলেন। তার এ সাফল্য ছিল মানবজাতির জন্য যুগান্তকারী।
১৯০১ সালে গুগলিয়েলমো মার্কনি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মাঝে তার বিহীন সংযোগ (বেতার) স্থাপন করেন। বেতার হল তার ব্যতীত যোগাযোগের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। রেডিও (বেতার), টেলিভিশন (দূরদর্শন), মোবাইল ফোন, ইত্যাদিসহ তারবিহীন যেকোনো যোগাযোগের মূলনীতিই হল বেতার।
বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে মহাকাশ পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত হয় বেতার দূরবীক্ষণ যন্ত্র বা রেডিও টেলিস্কোপ। এতে তড়িৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ ব্যবহার করে তথ্য প্রেরণ বা গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে দ্রুতগতিতে মার্কনি আবি®কৃত বেতারযন্ত্রের ব্যবহার বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। ঊনবিংশ শতাব্দির শেষপ্রান্তে অনেক দেশের বিজ্ঞানী প্রায় একই সময়ে বেতার আবিষ্কার করলেও গুগলিয়েলমো মার্কনিকেই বেতারের আবিষ্কারক হিসাবে ধরা হয়। পূর্বে শুধু রেডিওতে ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে বেতার প্রযুক্তির ব্যবহার চলছে সর্বত্র।
১৯০৯ সালে সরকার কর্তৃক তিনি সম্মানিত হন এবং ইতালি সরকার তাকে আজীবন সিনেট সদস্য নির্বাচিত করে। ১৯০৯ সালে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে মার্কনি পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন (তিনি কার্ল ব্রাউন এর সাথে যুগ্মভাবে এ পুরস্কার পান)। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মার্কনি ইতালীয় বেতার-সার্ভিসের কমান্ডার নিযুক্ত হয়েছিলেন। ১৯২৯ সালে ইটালীর তৎকালীন রাজা তাকে ‘মারকুইস’ খেতাব দান করেন। অবশ্য মার্কনির আগেও ম্যাক্সওয়েল, হার্ৎস কেলভিন, বাঙালী স্যার জগদীশচন্দ্র বসু, আলেক্সান্দর পপোভ প্রমুখ বিজ্ঞানী এ বিষয়ে গবেষণা করে গেছেন।
(স্যার জগদীশচন্দ্র বসু)
রেডিও সম্পর্কে একটা অজানা তথ্য হলো, মার্কনি রেডিও আবিস্কার করার আগেই আমাদের দেশের বিজ্ঞানী স্যার জগদীশচন্দ্র বসু রেডিও আবিস্কার করেছিলেন কিন্তু তিনি স্বিকৃতি নিতে পারেন নাই । তবে তাদের সেই অসমাপ্ত কাজকে সাফল্যের দিকে ধাবিত করে বিজ্ঞানী মার্কনি অমর হয়ে আছেন। ১৯৩৯ সালের ১৮ই জুলাই ৬৫ বছর বয়সে গুগলিয়েলমো মার্চেজ মার্কনি মৃত্যুবরণ করেন।
আজ ২৫ এপ্রিল এই মহান বিজ্ঞানীর জন্মদিন, জন্মদিনে তাঁর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা।
২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:০১
কোবিদ বলেছেন: আমি বিশ্বখ্যাত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুণী ব্যক্তিদের জন্ম-মৃত্যুদিনে স্মরণ করি তাঁদের অবিস্মরণীয় কর্ম ও জীবন সম্পর্কে। আমি তাঁদের কর্ম কাণ্ড স্মরণ করিয়ে দেবার সাথে এইসকল
মহান ব্যাক্তিদের জন্ম দিনে যেমন শুভেচ্ছ জানাই তেমনি তাঁদের মৃত্যুদিবসে শ্রদ্ধাও নিবেদন করি। সুতরাং শুভেচ্ছা ম্যান বোধ হয় যথার্থ হবেনা। এই দিনে পৃথিবীতে কী ঘটেছিলো তা জানা কিংবা জানানো যদি অপরাধ না হয় তা হলে জানানো যেতেই পারে কি বলেন? বর্তমান বিশ্বের নানান সমস্যা, হানাহানি, ক্ষুধা, মৃত্যুর মাঝে দু'একটি ইতিবাঁচক ঘটনার স্মৃতিকথা যদি আমাদের বেঁচে থাকতে অনুপ্রেরণা যোগায় তাই বা মন্দ কী?
অনিচ্ছা সত্যেও আপনার ধন্যবাদ জানানোকে ইতিবাঁচকই গ্রহণ করলাম। মানুষকে ধন্যবাদ জানানো মানে নিজের বড় মনের পরিচয় দেওয়া। দিনে অন্ততঃ ৫ বার ধন্যবাদ জানাতে পারলে নিজেকে প্রফুল্ল রাখা যায়। ভালো থাকবেন, শুভেচ্ছা রইলো।
২| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:৪৬
চারু এবং আমি বলেছেন: শিরোনাম ঠিক করে দিন। মার্কনি ইটালিয় বিজ্ঞানী।
৩| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:১৬
সিদ্ধার্থ. বলেছেন: জগদীশ চন্দ্র বসু প্রথম বেতার আবিস্কারক হিসাবে স্বীকৃতি পেয়ে গেছেন ।
Institute of Electrical and Electronics Engineers ২০১২ সালে স্বীকৃতি দিয়ে দিয়েছে ।তারা কলকাতায় একটা মাইল ফলক স্থাপন করেছে ,জগদীশ বসুর স্বীকৃতি স্বরূপ ।প্রসঙ্গত এশিয়া তে এক টোকিও ছাড়া কলকাতাই হলো দ্বিতীয় শহর যেখানে এই মাইল ফলক স্থাপন করা হয়েছে ।
আর মার্কনির নাতি কয়েকদিন আগে কলকাতায় ঘুরতে আসেন ,তিনিও স্বীকার করে নেন ।
৪| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৯
রাতুল রেজা বলেছেন: বেতার আবিষ্কারক হিসেবে আমি স্যার জগদীশ চদ্র বসুকেই মানি। তিনি শুধু মাত্র উপমহাদেশের হওয়ায় এর তখন স্বীকৃতি পাননি।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:২৯
এস.কে.ফয়সাল আলম বলেছেন: আপনার নিকের নাম পাল্টাইয়া মি. শুভেচ্ছা ম্যান করা হউক
( মজা করলাম, কিছু মনে করিয়েন না )
আপনি সম্ভবত পুরো বছরের আজ এই দিনে কি ঘটেছিল তার লিষ্ট নিয়ে সামুতে ক্রমাগত শুভেচ্ছার কালবৈশাখী ঝড় বইয়ে দিচ্ছেন
.....................................
যাক আপনার কারণে অনেক ভুলে যাওয়া মানুষকে আবার মনে পড়ে, সেজন্য ধন্যবাদ।