নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আধুনিক, রাগপ্রধান, গজল, ঠুমরী প্রভৃতি গানে পারদর্শী, খ্যাতনামা সঙ্গীত শিল্পী, সুদক্ষ সুরকার ও প্রশিক্ষক সুধীরলাল চক্রবর্তী। মধুর আমার মায়ের হাসি চাঁদের বুকে ঝরে, মাকে মনে পড়ে আমার, মাকে মনে পড়ে’ গানটিকে অমরত্ব দান করেছিলেন সুধীরলাল সরকার। বড়ই পরিতাপ ও মর্মবেদনার বিষয় গানটির সুরকার ও দরদী শিল্পী, সুধীরলাল চক্রবর্তী আজ যেন বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে গেছেন। কবি নজরুলের বন্ধু, অসংখ্য কালজয়ী গানের সুরকার ও শিল্পী, সেরা সঙ্গীত শিক্ষক এবং গীতা দত্ত, সতীনাথ মুখোপাধ্যায়, উৎপলা সেন, শ্যামল মিত্রের মত সেরা শিল্পী গড়ার কারিগর, সুধীরলাল চক্রবর্তীর কোনও জীবনী বা পরিচিতি এখন আর খুঁজে পাওয়া যায়না। ভারতের প্রতিবাদী ধারার গণসংগীত শিল্পী কবীর সুমনের মতে "সূক্ষ্ম অলংকারসমৃদ্ধ আধুনিক সুররচনায় কাজী নজরুল ইসলাম ও হিমাংশু দত্তর পর তিনিই শেষ সম্রাট।" তাঁর গাওয়া ও সুরারোপিত বহু গ্রামোফোন রেকর্ড বের হয়েছে। ১৯৪৩-৪৫ সাল পর্যন্ত ঢাকা বেতারকেন্দ্রের সংগীত পরিচালক ছিলেন তিনি। সুধীরলাল মারা যান পঞ্চাশের দশকেই। অকালে মারা যান। রেখে যান উৎপলা সেন, শ্যামল মিত্র, নীতা সেনের মতো ছাত্রছাত্রীদের। আরও অনেক প্রতিশ্রুতিসম্পন্ন তরুণ-তরুণী সুধীরলালের কাছে গান শিখতেন। প্রখ্যাত এই সঙ্গীতজ্ঞ ১৯৪৯ সালের আজকের দিনে মৃত্যুৃবরণ করেন। আজ তার ৬৫তম মৃত্যুৃবার্ষিকী। সঙ্গীত শিল্পী, সুরকার ও প্রশিক্ষক সুধীরলাল চক্রবর্তীর মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
সুধীরলাল চক্রবর্তী ১৯১৬ সালে ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। সুপণ্ডিত ও সংগীতরসিক পিতার পৃষ্ঠপোষকতায় বাড়িতে উচ্চাঙ্গ সংগীতের আসর বসতো। ফলে ছোটবেলা থেকে সংগীত শিক্ষার অনুপ্রেরণা লাভ করেন সুধীরলাল। পরে সঙ্গীতাচার্য গিরিজাশঙ্কর চক্রবর্তীর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। সুধীরলালের গলা ছিল চিকন। তারসপ্তকে স্বভাবক্ষিপ্র হরিণের মতো বিচরণ করতে পারতেন তিনি নিটোল ধ্বনিমাধুর্য নিয়ে। তাঁর গায়কির এই গুণটি আয়ত্ত করেছিলেন তাঁর ছাত্র শ্যামল মিত্র। তাঁর গুরুর মতো তাঁর কণ্ঠও ছিল চিকন ও তারসপ্তক-ঘেঁষা। যত চড়া তত মিষ্ট। কণ্ঠে গাম্ভীর্য না থাকলেও সুধীরলাল চক্রবর্তী তাঁর গায়কি দিয়ে, স্বরপ্রক্ষেপের ধরন দিয়ে ভাবগাম্ভীর্য ফুটিয়ে তুলতে পারতেন। মধুর আমার মায়ের হাসি, চাঁদের মুখে ঝরে/ মাকে মনে পড়ে আমার, মাকে মনে পড়ে’ গানটির সুরকার ও শিল্পী ছিলেন সুধীরলাল চক্রবর্তী। এছাড়াও ১। ও তোর জীবন বীণা আপনি বাজে, ২। খেলাঘর মোর ভেসে গেছে হায়, নয়নের যমুনায়, ৩। কেন ডাকো পিয়া পিয়া, ০৪। রজনী গো যেওনা চলে, এখনো যায়নি লগন, ৫। গান গেয়ে মোর দিন কেটে যায় বিরহের বালুচরে, ৬। প্রথম দিনের প্রথম সে পরিচয়, ৭। এ জীবনে মোর যতকিছু ব্যাথা, যতকিছু পরাজয়, ৮। তুমি ছিলে তাই, ছিল গো বকুল, চাঁদ জেগেছিল নীল গগনে, ৯। এ দুটি নয়ন পলকে হারায় যারে, ১০। ভালবেসেছিনু আলেয়ারে (চেয়েছিনু জোছনা কৃষ্ণারাতে), ১১। আঁখি যদি ভোলে তবু মন কেন ভোলে না প্রভৃতি গানে তিনি সুরারোপ করেছিলেন এবং গেয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি পবিত্র মিত্র, প্রণব রায়, তারক ঘোষ, দেবেশ বাগচীর লেখা গানে গেয়েছিলেন।
আধুনিক বাংলা গানের খ্যাতিমান শিল্পী ও সুরকার সুধীরলাল ১৯৪৯ সালের ২০ এপ্রিল মৃত্যুৃবরণ করেন। ‘যেদিন রব না আমি’ এবং ‘তব কাঁকনের ছন্দে আমার ব্যাকুল বাঁশরি বাজে’ এই দুটি গান সুধীরলাল স্মরণ অনুষ্ঠানে প্রায় প্রতি বছরই পরিবেশিত হতো সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে। নিয়তির নিষ্ঠুর পরিহাসে তাঁর জীবনী হারিয়ে গেলেও তাঁর কালজয়ী মর্মভেদী অমর সঙ্গীত রয়ে গেছে, কারন এই সঙ্গীত ভুলবার নয়, হারাবার নয়। আজ সুধীরলাল চক্রবর্তীর ৬৫তম মৃত্যুৃবার্ষিকী। সঙ্গীত শিল্পী, সুরকার ও প্রশিক্ষক সুধীরলাল চক্রবর্তীর মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:৩৪
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: খ্যাতনামা সঙ্গীত শিল্পী, সুরকার ও প্রশিক্ষক সুধীরলাল চক্রবর্তীর ৬৫তম মৃত্যুৃবার্ষিকীতে শ্রদ্বাঞ্জলি!!