![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হযরত আদম (আ.) পৃথিবীর সর্বপ্রথম মানব। আদম (আ.) সর্বপ্রথম নবীও ছিলেন। পৃথিবীর সকল ধর্ম গ্রন্থ গুলোতে হযরত আদমকেই (আ.) পৃথিবীর সর্বপ্রথম মানব হিসাবে দেখানো হয়েছে। লাখ লাখ বছর আগে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আদম (আ.) কে বেহেশত হতে আরবের জেদ্দায় প্রেরণ করেন। হযরত আদম (আ.) কাবা গৃহ আল্লাহর হুকুমে নির্মাণ করেন। তিনিই সর্বপ্রথম মানব ও নবী যিনি প্রথম হজ্জ্ব পালন করেন। হযরত আদম (আ.) দিনে পাঁচবার ও রাতে সাতবার কাবা গৃহ তাওয়াফ করতেন বলে ‘‘কাবা শরীফের ইতিহাস’’ গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে।
শৈফাউল গরাম কিতাব হতে জানা যায় ‘‘ হযরত আদম (আ.) কে আল্লাহ সর্বপ্রথম মানব ও জাতির পিতা এবং কাবা ঘরকে সর্বপ্রথম গৃহ উল্লেখ করে ঘোষণা দেন’’। সূরা আল ইমরানের ৯৬ আয়াতে বলা হয়েছে। ‘‘নিশ্চয় মানব জাতির ইবাদতের জন্য সর্বপ্রথম যে গৃহ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা মক্কাতেই। উহা সৌভাগ্য যুক্ত ও জগত্বাসীর পথপ্রদর্শক। ‘‘মহান আল্লাহ মানুষ সৃষ্টির খেয়াল করলেন এবং হযরত আদম (আ.) কে মাটি দিয়ে সৃষ্টি করে তাতে নূর প্রবেশ করালেন।
মহান আল্লাহ অতি পছন্দের সৃষ্টি হলো মানব সৃষ্টি। ফেরেশতাদের অনেক অনুরোধ উপেক্ষা করে আল্লাহ মানুষ জাতিকে সৃষ্টি করলেন শুধুমাত্র তার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করছি (সূরা জারিয়া আয়াত ৫৬)’’। আল্লাহ তাঁর ইবাদতের জন্য মানুষকে সেভাবেই সৃষ্টি করেছেন। আর পৃথিবীর সর্বপ্রথম মানব হলেন হযরত আদম (আ.)। সূরা বাকারার ৩০তম আয়াতে বলা হয়েছে, যখন আল্লাহ ফেরেশতাদের বললেন ‘‘আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি বানাতে যাচ্ছি। তখন ফেরেশতারা খলিফা বা মানব সৃষ্টির ব্যাপারে বলল তারা দাঙ্গা কলহ করবে। অথচ আমরাইতো আপনার ইবাদত করছি। মহান আল্লাহ বললেন, আমি যা জানি তোমরা তা জান না’’।
বাকারার ৩১তম আয়াতে রয়েছে, আল্লাহ তা’আলা আদমকে সমস্ত বস্তুসামগ্রীর নাম শেখালেন। অতঃপর বিভিন্ন ধরনের বস্তুসামগ্রী ফেরেশতাদের সামনে উপস্থিত করে যেগুলোর নাম জানতে চাইলে ফেরেশতারা অপারগতা প্রকাশ করে। একমাত্র আল্লাহই সবকিছু জানার অধিকারী। আল্লাহর হুকুমে আদম (আ.) সকল কিছুর নাম বলে দিতে পারলেন। এ থেকে বুঝা যায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফেরেশতাদের চেয়েও মানুষকে আল্লাহ বেশী জ্ঞানী করে সৃষ্টি করেছেন।
ফেরেশতাদের লক্ষ্য করে আল্লাহ বলেন ‘‘আসমান ও জমিনের যাবতীয় গোপন বিষয় আমিই ভাল অবগত রয়েছি (বাকারা ৩৩)’’ হযরত আদম (আ.) ও হযরত হাওয়া (আ.) বেহেশতেই ছিলেন। পরবর্তীতে আল্লাহ তাদের জান্নাত হতে পৃথিবীতে অবতরণ করার নির্দেশ দেন। পৃথিবীতে এসে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকে। হযরত আদম (আ.) সৃষ্টি ও বেহেস্ত হতে পৃথিবীতে প্রেরণ-এর অর্থ হলো আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধির কার্যাদি সম্পাদন মাত্র।
আদি পিতা হযরত আদম (আ.) এর আকৃতির ওপর বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালাচ্ছেন দীর্ঘদিন যাবত্। বিশেষ করে ইউরোপ ও আমেরিকার বিজ্ঞানীরা এক্ষেত্রে এগিয়ে। তারা কেউ কারো মত মেনে নিতে রাজি নন। কোন কোন বিজ্ঞানীদের ধারণা হযরত আদম (আ.) এর দৈর্ঘ্য ৭৫ হাত। আর মা হাওয়া (আ.) এর দৈর্ঘ্য ৭০ হাত। এ ধারণা বিশ্বের কোন মুসলমান গ্রহণ করেনি। মুসলমান জাতি সর্বপ্রথম কুরআন হাদিসের আলোকে যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
সহিহ হাদিস গ্রন্থ সমূহে বাবা আদম (আ.) এর দৈর্ঘ্য বর্ণনা আছে কিন্তু মা হাওয়া (আ.) এরটি উল্লেখ নেই। বুখারী শরীফ মুসলিম শরীফ ও মুসনাদে আহমদের হাদিসে হযরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণনা আছে রাসুল (স.) বলেছেন আল্লাহ তাআলা হজরত আদম (আ.) কে তার স্বরূপে সৃষ্টি করেছেন। তাঁর দেহের দৈর্ঘ্য ৬০ হাত ছিল’’। ইমাম আহমদ হতে আরো একটি বর্ণনা আছে যে হজরত আদম (আ.) এর দৈর্ঘ্য ৭০ হাত প্রস্থ ৭ হাত। ইবনে বতুতা তার ভ্রমণ কাহিনীতে বর্ণনা করেছেন যে, ‘‘হযরত আদম (আ.) এর পায়ের তালুর দৈর্ঘ্য যাহা সিংহলের পাহাড়ে পাথরের ওপর চিহ্নিত আকারে রক্ষিত আছে, ১১ বিঘত’’। এই উক্তিটি কাবা শরীফের ইতিহাস গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে’’।
©somewhere in net ltd.