![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি পেশায় একজন শিক্ষক, প্রশিক্ষক, সংবাদকর্মী, সমাজসেবক এবং প্রযুক্তিবিদ। শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি, এবং সমাজের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম নিয়ে আমি বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম লিখে থাকি।
মিলি জিজ্ঞেস করল, “ভাইয়া, আমি তো জিজ্ঞেস করতে পারি, আপনি কেমন আছেন? ওইটাও তো আপনি একটু বলতে পারেন।”
রিফাত বলল, “জ্বি, আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আপনি কেমন আছেন?”
“আপনি করে বলতেছেন কেন? এটা কোন কথা? কিসের আপনি আপনি, তুমি করে বলেন?”
“আপনি আপনিই ঠিক আছেন,” সে হাসতে হাসতে বলল।
“কেনো? এরকম ভাবে চেঞ্জ হয় না, প্লিজ।”
“আমি এমনই বহুরূপী।”
“আমি কি এরকম কিছু বলছি? শোনেন, একটা কথা বলি, আমি আপনাকে আপনি করেই বলবো, আমি আর কোনো পাগলামি করবো না। আমি আপনার থেকে ছোট, আপনি আমাকে তুমি করে বলবেন। একদিন একটু ঘুরতে নিয়ে যাবেন, এটাই আমার চাওয়া। ছেড়ে দেবো সব পাগলামি। মাঝে মাঝে একটু মেসেজ, একটু কথা বলবেন। সর্বশেষ এটাই আমার আপনার কাছে চাওয়া। এইবার দয়া করে একটু উত্তর দিয়েন।”
“হুম”।
“এত বড় লেখাটা লিখতে খুব কষ্ট হইছে, একটু উত্তরটা দিলে কষ্টটা চলে যাবে। ভাইয়া, প্লিজ একটু উত্তর দেন।”
“তোমার আবেগ আমি বুঝি এবং তোমার কথা থেকে এটা স্পষ্ট যে তুমি আমাকে সম্মান করো। আমি কৃতজ্ঞ, কিন্তু আমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমার পরিবার – আমার স্ত্রী ও সন্তানের প্রতি দায়িত্ব। তুমি নিজেও একজন বিবাহিত নারী, তোমারও স্বামী-সন্তান আছে। এই বাস্তবতাটা আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত না। কোনোদিন ঘোরার বিষয় হোক বা কথোপকথন, এসবই আমাদের পরিবারের বিশ্বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে আসে। আমি চাই না তুমি বা আমি এমন কিছু করি, যার জন্য আমাদের সন্তানরা একদিন আমাদের প্রশ্ন করে। তোমাকে আমি সম্মান করি, এবং চাই তুমি নিজের জীবনে ভালো থাকো, শান্তিতে থাকো। আমাদের উচিত নিজেদের অবস্থান বুঝে সীমাবদ্ধ থেকে একে অপরকে সম্মান জানানো। আশা করি তুমি বিষয়টি বুঝবে।”
মিলি বলল, “আপনার এই কথাটা আমার খুব ভালো লাগছে। হ্যাঁ, ভালবাসি, কিন্তু ভালবাসলে যে তাকে পেতে হবে সেটা তো না। আপনি কি জানেন, আমি শ্রদ্ধা করি, ভালোবাসি। আমারও ছেলে মেয়ে আছে, স্বামী আছে, তাদের সাথে আমি হ্যাপি। কিন্তু নিজের করে কখনো কিছু পাইনি, তো আপনাকে দেখে আমার ভালো লাগছিল। তাই একটু পাগলামি করছি। কিন্তু আমি কথা দিচ্ছি, আমার ধারা আপনার কখনো ক্ষতি হবে না। একদিন ঘুরতে গেলে কিছু হবে না, এমন মহামারি। আমরা একদিন ঘুরবো ছেলে বন্ধুর মত। ঐদিনটাই আমি আপনার কাছে চাই, আর কিছু যাবো না। ভাইয়া, প্লিজ একদিন একটু ঘুরতে নিয়ে যান আমাকে। এটা আমার স্বপ্ন, আপনার সাথে একটু ঘুরতে যাওয়া। প্লিজ, আমার স্বপ্নটা ভেঙে দেবেন না। আমি কথা দিচ্ছি, আমি কখনো আর পাগলামি করবো না। প্লিজ ভাইয়া, একদিন একটু ঘুরতে নিয়ে যাবেন, তাও আবার বন্ধুদের মত, ছেলে বন্ধুদের মত করে ঘুরবো। যদি এই ১২ দিনে আমার প্রতি একটু মায়া থাকে, তাহলে অবশ্যই আমাকে একদিন ঘুরতে নিয়ে যাবেন। আর বেশি কিছু বললাম না কারণ আমি তো লিখতে পারি না।”
“তোমার মেসেজ পড়ে বুঝতে পারছি তুমি কতটা আন্তরিক, এবং তোমার আবেগকেও আমি শ্রদ্ধা করি। কিন্তু একটা কথা সত্য – আমরা দুজনই বিবাহিত, আমাদের সন্তান ও পরিবার রয়েছে, যাদের প্রতি আমরা দায়বদ্ধ। আমাদের জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কগুলোর প্রতি বিশ্বস্ত থাকাটাই সত্যিকারের ভালোবাসা ও দায়িত্বের পরিচয়। তুমি বলেছো, একদিন ঘুরতে চাও শুধুই বন্ধু হিসেবে, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি—পরিবারের বাইরে কোনো ঘোরাঘুরি, যতই নির্দোষ হোক না কেন—তা আমাদের পরিবারের প্রতি অবিচার হবে, এবং নিজেদের বিবেকের কাছেও প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলবে। তোমার চাওয়া বুঝি, সম্মান করি, কিন্তু আমাকে ক্ষমা করো—আমি সেই দিনটা দিতে পারবো না। কারণ আমি চাই না, আমাদের কেউ একজনও একদিন আফসোস করুক, বা পরিবারে কোনো অশান্তি তৈরি হোক। তোমাকে আমি একজন ভালো ও সম্মানযোগ্য মানুষ হিসেবে দেখি। তুমি নিজের জীবনে সুখী থাকো, সন্তানদের সময় দাও—এটাই আমার জন্য সবচেয়ে বড় শান্তি।”
মিলি বলল, “শোনেন, আমি বলি আপনার ধারণাটা ভুল। একদিন একটু বের হলে কিছু হবে না। বললাম তো, ছেলে বন্ধুর মত ঘুরবো।”
“দেখো, আমি খুব স্পষ্টভাবে বলছি—আমরা দুজনেই বিবাহিত মানুষ, আমাদের পরিবার ও সন্তান রয়েছে। তোমার আবেগকে আমি ছোট করছি না, কিন্তু আমার পক্ষে এভাবে যোগাযোগ রাখা বা দেখা করা সম্ভব নয়। এটা আমার পরিবারের প্রতি দায়িত্ব এবং নিজের বিবেকের কাছে সঠিক থাকা। দয়া করে আর ফোন বা বার্তা দিও না। আমি তোমার জন্য শুভকামনা রাখছি—তুমি ভালো থেকো, শান্তিতে থেকো।”
মিলি বলল, “যাহোক, আমি আপনাকে জোর করবো না, ভালো থাকবেন। কারণ আমি আপনাকে ভালোবাসি, শ্রদ্ধা করি, সম্মান করি। আপনি আমার কাছে একজন সম্মানের ব্যক্তি, যার তুলনা কারো সাথে হয় না। আপনি যদি বিশ্বাস করেন আমি একজন ভালো মানুষ, অবশ্যই আমি। স্বপ্নটা পূরণ করেন প্লিজ ভাইয়া, রিকোয়েস্ট। আর কিছু বলবো না। বাকিটা আপনার ইচ্ছা। ঠিক আছে, ভালো থাকবেন। আর আমাকে মনে রাখবেন। একটু দে, আর আমিও আপনাকে অনেক মনে রাখবো।
এই নিচের মেসেজের উত্তরটা দিয়ে দেন, আমি আর কখনো মেসেজ করবো না।”
রিফাত বলল, “আমাদের সবার পরিবার আছে, আমাদের সন্তানরা আছে, তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব অনেক বড়। তাই আমি চাই, এখানেই আমাদের কথোপকথন শেষ হোক। দয়া করে আমাকে ক্ষমা করো। তুমি ভালো থেকো, শান্তিতে থেকো।”
মিলি বলল, “ক্ষমা চেয়ে আমাকে ছোট করবেন না। আমি ক্ষমা চাই আপনার কাছে, কারণ ভুলটা একান্তই আমার। পারলে ক্ষমা করে দিবেন। আর আমাকে ব্লক করে দেন। আমার শেষ চাওয়া আল্লাহ আপনাকে ভালো রাখুক সব সময়। আল্লাহ হাফেজ। মিলি নামে কেউ ছিলো ভুলেবে না কখনো। ব্লক করে দেন। চির বিদায় আপনার জীবন থেকে। ক্ষমা করে দেবেন।”
রিফাত বলল, “মিলি, জীবনে কেউ যদি সত্যি অনুভব করে, তা সব সময় শ্রদ্ধা পাওয়ার যোগ্য, আর তুমি সেটা করেছো। তুমি যা বলেছো, সবকিছু আমি বুঝি এবং সম্মান করি। আমি তোমার জন্য কোনো কষ্ট চাই না—তুমি যেন নিজের পরিবার, সন্তান ও জীবনে সুখী থাকো, সেটাই চাই। জীবন অনেক বড়, অনেক কিছু শেখায়। আমি কোনোদিন তোমাকে ছোট করে ভাবিনি, ভবিষ্যতেও ভাববো না। আল্লাহ তোমাকে শান্তি দিন, মাফ করবেন আমাকেও যদি কোথাও ভুল হয়ে থাকে। আল্লাহ হাফেজ।”
— ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ আজহার উদ্দিন
©somewhere in net ltd.