অপ্রস্তুত

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:২৭

হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত-শ্রান্ত, পরিশ্রন্ত ,ঘর্মাক্ত অবস্থায় ধানমন্ড়ি ২৭ এর একটা আভিজাত্য পূর্ণ চাইনিজ রেষ্টুরেন্টে গিয়ে হাজির হলাম ,ঠিক পড়ন্ত বিকালের একটু আগে । গায়ে রং চটা একটা গেন্জি, পরনে ময়লা প্যন্ট,আর পায়ে ছেড়া-ফাটা এক জোড়া স্যান্ডেল , চুল উস্ক-খুস্ক । আর সবাই জমকালো পোশাক পরে যারযার মত একে অপরের সাথে খোস গল্পে ব্যাস্ত । আমন্ত্রিত অতিথী দের অনেককেই চিনি না । দেশের গন্য মান্য অনেকেই এসেছেন । আমাকে ঢুকতে দেখে কেউ কেউ একটু আড় চোখে তাকাল । তাকানোর ভাবটা ঠিক বুঝতে পারলাম না । কিছুটা পরিচিত একজন কর্কষ ভাভে বল্ল কি খবর ? আমিও কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম । এখানে আমি বয়সে সবার চেয়ে ছোট , তারপর আবার পোশাকে বেমানান । শিক্ষ-দিক্ষায়ও সবার থেকে নিচ । পরিস্থিতিটা একেবারে প্রতীকূলে । চুপ-চাপ গিয়ে কোণার টেবিলটার এক মাথায় বসে পড়লাম । যথা সময়ে কম্পানির (এ.জি.এম.) মিটিং শুরু হল। বাৎসরিক আয়-ব্যায় , সমস্যা, সম্ভাবনা, প্রশ্ন-উত্তর, পরামর্শ পেশ করা হল । কয়েকজন কথা বল্ল , আমিও তার মধ্য একজন । প্রথমে একটু ভয়ই পেলাম , বিভিন্ন মিটিং এ বক্তৃতা দেয়ার অব্ভাস থাকলেও এত বড় মাপের মানুষ দের সামনে বুক ফুলিয় ইতিপূর্বে কখনও কথা বলিনি । দাঁড়ানোর সাথে সাথে আমন্ত্রিত, অপরিচিত কিছু মেহমান আমার দিকে বিশ্বয় ভরা দৃষ্টিতে তাকাল । আমি যখন আমার প্রস্তাবনা পেশ করলাম , তখন গুণিজনেরা নিরবে মনোজোগ দিয়ে শুনল , তখন কিছুটা আশ্বস্ত হলাম । মনে হল আমি সর্বকনিষ্ঠ হলেও আমার কথা সকলের ভাল লেগেছে । আসলে প্রকৃত গুণি যে , সে কাওকেই ছোট মনে করে না । নিজের পোশাকের দিকে তাকিয়ে আর একজন পন্ডিতের কথা মনে হল “গেস্তের চেয়ে ঝুলির দাম যেন বেশি না হয়” । আবার ডিনার পর্বে মনে পড়ল সেই ব্যাক্তির কথা , যিনি খাবার না খেয়ে পোশাকের মধে ঢুকিয়েছিলেন । আসলে আমি অতি সাধারণ ভাবে থাকতে চাই । আমি অনুভব করতে চাই ক্ষুদার্থ মানুষের অনুভূতি । আমি দেখতে চাই কিভাবে একজন মানুষ নিশ্য অবস্থা থেকে তিল তিল করে বড় হয় ।

০ টি +০/-০