নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নঞচ

লা অ্যালবাট্রস

নঞচ

লা অ্যালবাট্রস › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই সব দিনরাত্রি....!

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৯:৫৬

পৃথিবীর কঠিনতম জিনিসের একটা হলো চা বানানো। দুধ: চা: চিনি-- একটা থ্রী ডাইমেনশনাল ইকুয়েশন। সবাই সলভ করতে পারে না। সোহেল ভাই পেরেছেন।

প্রথমে একটা চপ-পুড়ির দোকান। তারপর পাশাপাশি তিনটা চায়ের দোকান। এর প্রথমটা সোহেল ভাইয়ের।

চুলায় দুটো কালো কেতলি, পানি ফুটছে। ফুটন্ত পানি চাপাতি দিয়ে কাপে ঢালা হচ্ছে। তারপর দু'চামচ চিনি-- টুংটাং টুংটাং-- চা হয়ে গেছে। চা'র সাথে আছে পাউরুটি, কলা, ফিল্টারের ঠান্ডা পানি --একদম টিপিক্যাল টীস্টল, স্কুলে থাকতে প্যারাগ্রাফে পড়তাম যেমন।

এরা শহুরে চাওয়ালা। চা'র বিল জিজ্ঞেস করলে পান খেয়ে দাগপড়া দাঁত বের করে হাসি দিয়ে বলে না, "পনের টাকা"। এরা চা বানাতে বানাতে নিস্প্রহ কণ্ঠে জবাব দেয়। তারচেয়েও নিস্প্রহ ভঙ্গীতে টাকা নেয়।

তবে সোহেল ভাই মাই ডিয়ার মানুষ, অন্তত আমাদের কাছে। আড়াই বছর ধরে আমরা তার নিয়মিত কাস্টমার। আমাদের দেখলেই একটা হাসি দেন। তারপর বেশি করে সর দিয়ে দুইটা মালাই চা করে দেন। কিছুই বলতে হয় না।

চা নিয়ে আমরা শহীদ মিনারের দেয়ালের উপর পা ঝুলিয়ে বসি। বসে বসে পা দোলাই, আর চায়ে চুমুক দেই। দৃষ্টি থাকে রাস্তার দিকে। অসংখ্য মানুষ, অসংখ্য চেহারা। ঝোলা সাইডব্যাগ কাঁধে ক্লান্ত অফিসফেরতা। স্বামীর মুঠো শক্ত করে ধরা নব্যপরিণীতা। খিলখিলে হাসির উচ্ছল তরুণী। প্রথম ডেট শেষে ফেরা শাড়ি-পাঞ্জাবী যুগল। টিউশনি ধরতে ত্রস্তপায়ে চলা ভার্সিটিপড়ুয়া। বাজারের ব্যাগের হাতে বিরক্ত গৃহস্বামী। খুঁড়িয়ে চলা রোগা, বৃদ্ধা ভিখারীনি। গলায় বাকসো ঝুলিয়ে পান-সিগারেট বিক্রেতা। ফেলে রাখা দুটো রিকশা। একাকী ল্যাম্পপোস্টগুলো। এবং মাথার উপরে সপ্তর্ষি।

আমরা পা দুলিয়ে চা খাই। সপ্তর্ষী মাথার উপরে ঘুরে যায়। একসময় সব নিরব হয়ে আসে। আমরা ঘরে ফিরি। ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে যাই। সপ্তর্ষী ঘুরতে থাকে। তারপর একসময় সেও ডুবে যায় দিগন্তের ওপাশে। সকাল হয়। তারপর আবার রাত আসে, তারপর আবার সকাল। চলতে থাকে এইসব দিনরাত্রি........

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.