নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সেবার মাধ্যমে বন্ধুত্ব

ব্লগিং করে আনন্দ , সত্য সুন্দর শেয়ার করতে চাই

আহলান

ব্লগার

আহলান › বিস্তারিত পোস্টঃ

এ্যাই আলম মালাই !!! আলম মালাই !!!

০৭ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৩:০০

এখন গরমে সবাই হা পিত্যেশ করছি। ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি বের করে ঢক ঢক করে গলধঃকরণ করছি। এসি রুমে বসে আরামে কাজ করছি, আড্ডা মারছি। কিন্তু সব সময় এমন ভোগ বাদী জীবন যাপন অনেকের মতো আমারো ছিলো না। ছোট বেলায় একবার কোরবানীর ঈদে বাড়ি গেলাম। প্রচুর গরম। তারপরেও সমবয়সীদের সাথে রাত দিন চব্বিশ ঘন্টাই বলতে গেলে সারা গ্রাম দাপিয়ে বেড়াই। পুকুর পাড়ের বাঁশের মাচানে শুয়ে থাকি। মাথার উপরে আম, সুপারী নারকেল গাছের সুশীতল ছায়া। মাঝে মাঝে বাতাসের কারণে পাতার ফাক দিয়ে রোদের হাসি খেলে যায় চোখের উপর।



এমনই সময় এ্যাই মালাই ....! শব্দের হাঁক! সাথে ঝুনঝুনির টুন টুন শব্দ .... এ্যই আলম মালাই ..... !! ক্ষুদেদের দলে চাপা উত্তেজনা, গুন গুন চোখা চোখি শুরু ... গরমের মধ্যে মালাই না খেতে পারলে যে জীবনই বৃথা! লাফ দিয়ে মাচান থেকে নেমে মালাই ওয়ালার সাইকেল দাড়া করালাম। কারণ এই আলম মালাই আমার নানী বাড়ির। বড় মামা এই আলম মালাইয়ের মালিক। সুতরাং মামার ভাগ্নে হয়ে দাদা বাড়ির সামনে আলম মালাইয়ের সাথে একটু মামদোবাজি না করলে কি হয়? পয়সার কথা চিন্তাতেই আসে নাই। মালাই নিয়ে মামার থেকে পয়সা নিতে বল্লাম। মালাই ওয়ালা সে কথা মানতে নারাজ, সে তো আর আমাকে চেনে না ..! পড়লাম না ফেসাদে! দৌড়ে বাড়ির ভিতরে গেলাম। মা কে বল্লাম মা, আলম মালাই খাবো। পয়সা দাও। মা অমনি মুখ ঝামটা দিলেন। এহ! দুই আগে জ্বর থেকে উঠে এখনই মালাই? দাড়া তোর আব্বাকে বলছি ....!!

আব্বা ছিলেন পুকুরে, গোসল করছিলেন। এদিকে ক্ষুদেদের মাধ্যমে সংবাদ চাউর হয়ে গেছে আমি মালাই ওয়ালাকে দাড় করিয়েছি। পুকুর থেকে উঠেই আব্বার কানে এই খবর পৌছে গেছে ক্ষুদেদের বদৌলতে। আব্বা আমাকে ডাকতে লাগলেন। বুঝলাম আজকে ঝাড় থেকে রেহাই নেই। এদিকে মালাই ওয়ালাকে দাড়া করানো, অন্যদিকে জ্বর জারির মধ্যে মালাই খাওয়ার বায়না ... দুই অপরাধে আমার আজকে খবর আছে। আব্বার কাছে পয়সা চাওয়ার ভয়ে বাড়ির পিছন দিয়ে পাশের বাড়ির খড়ের পালার নিচে উধাও হয়ে গেলাম। কয়েকবার আমার নাম ধরে কয়েকজন ডাকাডাকি করলো ... সেই সাথে এ-ও বল্লো... আহলান ! তোমার আব্বা তোমাকে ডাকে ... আমি চুপ করে খড়ের গাদার মধ্যে শুয়ে থাকলাম। বেশ কিছু সময় পরে যখন মনে হলো পরিস্থিতি শান্ত. তখন আস্তে করে খড়ের গাদা থেকে বের হয়ে আসলাম। এসে দেখি উঠোনে ক্ষুদেদের দলের প্রত্যেকের হাতে হয় টিনের বাটি, না হয় টিনে মগ, না হয় টিনের গ্লাস .... সাবাই আরামসে জিহ্বা দিয়ে চেটেচেটে মালাই খাচ্ছে ....একফোটা মালাইও যেনো মাটিতে না পড়ে, তাই সব ঘর থেকে যে যা পেরেছে, নিয়ে এসেছে !! আমাকে দেখে কয়েকজন হাসাহসি শুরু করলো। বল্লো তুমি কই ছিলে? তোমার আব্বা তোমাকে মালাই খাওয়ানোর জন্য কত ডাকলো ... !!! অামি তখন সবার মজা করে মালাই খাওয়া দেখছিলাম। আমার আব্বাই সবাইকে মালাই কিনে দিয়েছেন, সেগুলোই তারা মহা আনন্দে চেটে পুটে খেয়ে বেড়াচ্ছে .... আর আমিই কিনা পাইলাম না .... !! চোখ দিয়ে পানি না আসলেও ছল ছল চোখে বাড়ির ভিতরে গেলাম। এইবার মনে আর ভয় নাই। কারণ শুনেছি আব্বা আমাকে মালাই কিনে দেয়ার জন্যে খুজেছিলেন। আমাকে দেখতেই আব্বা বল্লেন কই ছিলি? সাবাইকে মালাই কিনে দিলাম? মালাই ওলা তো চলে গেলো .... !!

বিকাল বেলা মায়ের সাথে গেলাম নানা বাড়ি। মা তার বড় ভাইকে বল্লেন তার ভাইগ্নার ঘটনাবলী। মামা মালাই ফ্যাক্টরীতে দুধ আর নারকেল দিয়ে ইস্পেশাল মালাই বানাতে বল্লেন। সেই মালাই খেয়ে তবে দাদা বাড়ি ফিরলাম .............

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.