| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভাইয়া তুমি ফিরে এসো
মনটা কয়েকদিন বড়ই খারাপ যাচ্ছে। ঘুমাতে গিয়েও ভালভাবে ঘুমাতে পারিনা। পারবই বা কেমন করে! কয়েকদিন দরে বড় ভাইয়ার যেই অবস্থা দেখে আসছি তা কল্পনা করলে আর দুচোখ কিছুতেই একসাথ হয় না। দুচোখ বেয়ে অজর দরায় বর্ষন হয়। মা-বাবা, বোন, ভাবির আত্মনাদ আর একমাত্র ছোট ভাতিজা রোহানের মুখের দিকে তাকালে যে কোন কোমল হৃদয় ব্যক্তির চোখেই অশ্রু ঝরবে। বিশেষ করে পূর্বের কাল রাত গুলোর কথা মনে পড়লে আর কিছুতেই চোখে ঘুম আসে না। গত কয়েকদিন যাবত বড় ভাইয়া ভয়ংকর অসুস্থ। সারা দিন তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভাল অনুভব হলেও অন্ধকার রাতটা তার সকল কষ্ট, বেদনা, অভিমান আমার এই ভাইটার উপর নিষ্ঠুরভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে তাকে বেশ কষ্ট দিয়ে দূর থেকে অনেক আনন্দ পায়।
ভাইয়া অসুস্থ হওয়ার বুঝতে পারলাম আসলে একজন মানুষের প্রতি অন্যজনের কত ভালবাসা! সারাদিন তার খবর নেওয়ার জন্য দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যে ফোন আসে তা অকল্পনীয়। ভাইয়া পেশায় একজন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও একজন গ্রাম্য ডাক্তার হলেও তার গ্রামে তার যে বিশাল পরিচিতি তা আমি এ কয়েকদিনে বেশ ভাল করেই বুঝতে পারলাম।
তার অসুস্থতার কথা শুনে দেশ বিদেশ থেকে যার যার অবস্থান অনুসারে যে যেভাবে পেরেছে আমার বা ভাইয়ার নাম্বারটা সংগ্রহ করেই ফোন আর ফোন। সবারই একই প্রশ্ন সে এখন কেমন আছে?
ভাইয়া মানষিক দিক থেকে অনেক অনেক যন্ত্রনায় ভুগছে। কিছুক্ষন পর পর আমাকে, ভাবিকে উদ্দেশ্য করেই কেঁদে উঠে বলে, আমার রোহানকে তোমরা আপন মনে করে মানুষ করো। কখনো তাকে পিতৃহীন বুঝার সুযোগ দিওনা। আর আমার মা বাবাকে আমার এই অবস্থার কথা বলো না। না হলে আমি যে তাদের হারিয়ে ফেলবো। (ভাইয়া নিজে শত কষ্ট করে ও কাউকে বুঝতে দিত না নিজের কষ্টের কথা। নিজে শত অসুস্থ থাকলে ও নিজের অসুখ চেপে রাখত। কাউকে বুঝার সুযোগ দিত না। অথচ পরিবারের কারো সামান্য একটু অসুখ হলে ডাক্তার ওষধ নিয়ে কত ব্যস্ততা। ভাইয়া এই ছিলে তুমি! )
এ কথা শুনে মনের মাঝে বেঝে উঠে, ভাইয়া তোমাকে কিভাবে বোঝাবো আমরা যে তোমাকে হারাতে বসেছি।
কিছুক্ষন পর পর অসহায়ের মত আমার মুখের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আমাকে বলে উঠে, “ কিরে কিছু খাইছছ”। তার এই বলার মাঝে কত কষ্ট জড়িয়ে আছে তা শুধু সৃষ্টি কর্তাই জানেন। যদিও ভাইয়াকে শান্ত্বনা দেওয়ার জন্য বলি খাইছি; কিন্তু আসলে যে ভাইয়ার, বাবা মার, ভাবির, ছোট এই ভাতিজাটার এই করুন অবস্থা দেখে নিজের মুখে খাওয়া কিছুতেই প্রবেশ করে না।
সারাদিন ভাইয়ার পাশে থেকেও রাত ভাইয়াকে হাসপাতালে একা রেখে বাসায় আসতে মোটেও ইচ্ছে হয় না। তারপর ও ছোট ভাই আর ভাবিকে ভাইয়ার পাশে রেখে চলে আসি।
গভীর রাতে কেন জানি ভাইয়ার পুরনো স্মীতিগুলো আমার বেশ মনে পড়ে যায়। এইতো কয়েকদিন আগে ভার্সিটির এক বন্ধুকে নিয়ে বাড়ি বেড়াতে যাই। তখন ভাইয়া আমাদের জন্য কত কি আপ্রায়ন। সকালে আমাদের ঘুম থেকে উঠা পর্যন্ত নাস্তা নিয়ে টেবিলে বসে থাকত। কিন্তু আমাদের ঘুমের ডিষ্টার্ব হবে ভেবে আমাদের ঘুম থেকে তুলতো না। আমরা উঠা পর্যন্ত নাস্তা নিয়ে টেবিলে বসে থাকত। পরে আমরা উঠলে একসাথে নাস্তা করতাম। অন্যান্য খাবারগুলোও ঠিক একইভাবে করতাম।
ভাইয়া সারাদিন পরিশ্রম করেও রাত খাওয়া শেষে আমাদের সাথে বেশ আড্ডা দিত। ভাইয়ার সেই স্মিতিগুলো মনে পড়লে দুচোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে যায়। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারি না।
ভাইয়াকে হারালে আমি তো আমার এক বন্ধুকে হারাবো, হারাবো শরীরের এক অঙ্গ। পরিবার হারাবে তাদের একমাত্র আয়ের উতসকে। ধবংস হয়ে যাবে আমাদের সাজানো ছোট এই সোনার সংসারটি।
ভাই প্রিয় কোটি দর্শকের কাছে আমার আকুল আবেদন তারা যেন মন থেকে আমার ভাইয়ার জন্য বিধাতার কাছে পরিয়াদ করে। বিধাতার কাছে ও করুন প্রার্থনা, তিনি যেন আমার ভাইয়াকে পূর্বের মত সুস্থ করে তার ছোট এই শিশুটির খালি বুক পূর্ন করে। আর আমরা এবং তার ভক্তরা যেন তাকে আমাদের সবার মাঝে পূর্বের মত ফিরে পাই। (আমিন)
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ৮:২৭
মাহাবুব আলম মুরাদ বলেছেন: আপনার দোয়া যেন কবুল হয়।
২|
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ৮:১৯
ইমরান সিলেটি লন্ডনি বলেছেন: আমিন
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ৮:২৭
মাহাবুব আলম মুরাদ বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩|
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ৯:২৫
ঈষাম বলেছেন: আমিন ।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ৮:২৭
মাহাবুব আলম মুরাদ বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ৮:১৫
ফয়সাল এম,এফ,কে বলেছেন: আপনার ভাইয়া যেন সুস্থ হয়ে উঠেন: আমীন