পুত্রবধূকে নিয়ে দেখা স্বপ্ন ও তার বাস্তবতা

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২০

বেশিরভাগ মেয়ে চায় তার প্রথম সন্তান ছেলে হোক । এর অবশ্যই নির্দিষ্ট আর অনির্দিষ্ট অনেকগুলো কারণ আছে ।
যাহোক, বলতেছিলাম অনেকের চাহিদা পূরণ হয় আবার অনেকের অপূর্ণই থেকে যায়। যেসব মেয়ের চাহিদা পূরণ হয়ে ছেলে সন্তান মাতৃত্বের কোল আলোকিত করে; সেই মেয়ে তার ছেলে সন্তানকে কোলে নেওয়ার পর যখন সে কান্না জুড়ে দেয়, মা তখন তার কান্না থামানোর জন্য তাকে নেড়ে নেড়ে অনেক কথায় বলে । তন্মধ্যে একটি কথা হলো এই— "কাঁদে না আমার ঝুনঝুনি, এনে দেবো একটা রঙিন টুনটুনি; মানে টুকটুকে বউ।"

ছেলে হয়তো নাড়া খেয়ে অথবা মায়ের কণ্ঠস্বর শুনে কান্না থামিয়ে দেয়। মা তখন অমনি বলা শুরু করে দেয়—
"ওগো শুনছো, দেখে যায় তোমার ছেলের কাণ্ড। সে কান্না করছে যেই আমি তাকে টুকটুকে বউয়ের কথা বললাম সেই কান্না থামিয়ে দিলো। বাব্বাহ! এখনই ছেলে যে বউ পাগল বড়ো হলে কী করবে আল্লাহই ভালো জানেন।"

দেখতে দেখতে বড়ো আদরের ছেলেটা একদিন অনেক বড়ো হয়ে গেল। বাবা-মা'র দায়িত্ব এখন সুপাত্রীতে ছেলে দান করা।তাই তারাও দেখেশুনে ছোট্টবেলায় মায়ের মুখনিঃসৃত সেই টুকটুকে রঙিন টুনটুনিকেই বিয়ে করিয়ে ঘরে নিয়ে এলো। ছেলেও যথারীতি বাবা-মায়ের প্রতি বেসম্ভব খুশি।

এইভাবে বেশ হাসিখুশিতে কেটে যেতে শ্বশুর-শাশুড়িসহ এই নবদম্পতির দাম্পত্যজীবন। কিন্তু একদিন...

একদিন হঠাৎ শাশুড়ির শরীরটা বেশ খারাপ অনুভব করল। সঙ্গে মাথা ঘোরা ভাবও। শাশুড়ি বউকে ডাক দিলো—
বউমা, একটু এদিকে আসবা। আমার-না শরীরটা কেমন যেন করছে। আমার হাত-পা একটু টিপে দিয়ে যাও।

"এখন পারব না । অনেকদিন পর বিদেশ থেকে আমার বান্ধবী কল দিয়েছে । তাঁর সঙ্গে জরুরি কথা বলতেছি । আর আমি কি আপনার কাজের বুয়া নাকি যে, আপনি বললেন আর আমি অমনি আপনার হাত-পা টিপে দেবো।"

শাশুড়ি তখন চোখের পানি ফেলে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বুকে কাতরকণ্ঠে বলে— আহ্! আমার কপাল! কতস্বপ্ন নিয়ে এই মেয়েকে আমার ছেলের বউ করে ঘরে আনলাম। আজ সে বউ আমাকে এই প্রতিদান দিলো; আমার স্বপ্নগুলো ভেঙে খানখান এভাবে করে দিলো।"

গল্পটা হয়তো মায়ের চোখের পানি দিয়েই শেষ হতে পারত কিন্তু...

কিন্তু একদিন সেই বউকেও আল্লাহ একটি পুত্রসন্তান দান করল । অতঃপর শুরু হলো নতুন আরেকটি গল্পের... এই গল্পের শুরু কেমন হবে কেউ বলতে না পারলেও সমাপ্তি যে শাশুড়ির চেয়েও আরও ভয়াবহ হবে এটা হলফ করে বলা যায়।

০ টি +০/-০