![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেকে শুধু এই নয় যে , আল্লাহর ওলীদের
কাছে হাজত প্রার্থনা করে ; বরং তাদের
নামে নযর-মান্নতও করে। যেমন অমুক কাজ
হয়ে গেলে অমুক বুযুর্গের কবরে গেলাফ
চড়াবে বা শিন্নি-মিঠাই পাঠাবে বা ঐ
মাযারে এত টাকা দিবে।
এ বিষয়ে কয়েকটি মাসআলা জেনে নেওয়া দরকার :
এক. মান্নত মানা , নযর-নিয়ায দেওয়া একটি
ইবাদত। আর আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো
ইবাদত জায়েয নয়।
আমাদের হানাফী
মাযহাবের মশহুর কিতাব ‘আদ্দুররুল মুখতার’ -
এ আছে-
অর্থ : জানা থাকা উচিত যে , অনেক আম
লোক মৃতদের নামে যেসকল নযর-মান্নত
মানে এবং ওলী-বুযুর্গের কবরে তাদের
সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যে টাকা-পয়সা , তেল-
বাতি ইত্যাদি পাঠায় তা বিল-ইজমা
বাতিল ও হারাম।... অথচ লোকেরা এতে
লিপ্ত হয়ে পড়েছে বিশেষত এ যুগে।
আল্লামা কাসিম (ইবনে কুতলূবুগা) রাহ.
‘দুরারুল বিহার’ - এর ভাষ্যগ্রন্থে এ মাসআলা
বিস্তারিত লিখেছেন।”
আল্লামা শামী রাহ. বলেন, এ জাতীয়
মান্নত বাতিল ও হারাম হওয়ার কারণ
একাধিক। এক. এ মাখলুকের নামে মান্নত।
আর মান্নত হচ্ছে ইবাদত। অথচ মাখলুকের
ইবাদত হয় না।
দুই. যার নামে মান্নত মানা হয়েছে তিনি
মৃত। আর মৃত ব্যক্তি কোনো কিছুর মালিক
হয় না।
তিন. মান্নতকারীর যদি এই বিশ্বাস থাকে
যে , আল্লাহ ছাড়া ঐ মৃত ব্যক্তিও জগৎ-
সংসারের নানা বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে
পারে তাহলে তার এ বিশ্বাস কুফরী। - রদ্দুল
মুহতার পৃ. ১৩৯
কাযী ছানাউল্লাহ পানিপথী রাহ. বলেন-তরজমা
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া আর কারো ইবাদত
জায়েয নয়। কারো কাছে সাহায্য
প্রার্থনাও না-জায়েয। সুতরাং ওলীদের
নামে মান্নত-নযর না-জায়েয। কারণ
মান্নত একটি ইবাদত। - ইরশাদুত তালিবীন
পৃ. ১৮
মোটকথা , এ মাসআলা আমাদের সব বড় বড়
কিতাবে আছে যে , নযর-মান্নত ইবাদত আর
গায়রুল্লাহর ইবাদত জায়েয নয়। এ কারণে
আল্লাহর ওলীদের মাযারে মান্নত মানা ও
নিয়ায চড়ানো বিল-ইজমা হারাম ও
বাতিল।
২. কেউ এমন মান্নত করে ফেললে
কেউ যদি এমন মান্নত করে ফেলে তা পুরা
করা জায়েয নয়। পুরা করলে গোনাহগার
হবে। ফাতাওয়া আলমগীরী, আল বাহরুর
রাইক ও অন্যান্য ফতোয়ার কিতাবে স্পষ্ট
বলা আছে যে , কোনো গুনাহের কাজের
মান্নত করলে তা শুদ্ধ হয় না , তা পালন
করাও জরুরি নয় ; (ফতোয়া আলমগীরী ১/২০৮)
বরং তাওবা করা জরুরি।
কাযী
ছানাউল্লাহ পানিপথী রাহ. বলেন-তরজমা)
কেউ যদি এ ধরনের নযর করে তাহলে তা পূর্ণ
করবে না। কারণ যথাসম্ভব গোনাহ থেকে
বিরত থাকা ওয়াজিব। - ইরশাদুত
ত্বালিবীন পৃ. ১৮
অর্থাৎ , এমন মান্নত মানাই তো গোনাহ।
এখন তা পুরা করলে আরেক গোনাহ করা
হবে। সুতরাং প্রথম গোনাহ থেকে তওবা
করবে আর দ্বিতীয় গোনাহ থেকে বিরত
থাকবে।
৩. কেউ যদি পুরাও করে ফেলে
কেউ যদি এমন কোনো মান্নত করে এরপর তা
পুরাও করে তাহলে ঐ বস্তু গায়রুল্লাহর
নামে চিহ্নিত হয়ে হারাম হয়ে যাবে।
কারো জন্য তা ব্যবহার করা জায়েয হবে
না। তবে যে তা পাঠিয়েছে বস্তুটি আপন
অবস্থায় থাকা পর্যন্ত সে মান্নত থেকে
তওবা করে তা ফিরিয়ে নিতে পারবে। ঐ
প্রাণীর হুকুমও এ-ই যা গায়রুল্লাহর নামে
চরানো হয়েছে। অর্থাৎ ঐ প্রাণীর জীবিত
থাকা পর্যন্ত মান্নতকারী মান্নত থেকে
তওবা করে তা ফেরৎ নিতে পারবে। কিন্তু
যদি গাইরুল্লাহর নামে চরানো অবস্থায়
যবেহ করে ফেলা হয় তাহলে যবেহর সময়
বিসমিল্লাহ পড়লেও তা খাওয়া বৈধ হবে
না।
মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রাহ. ‘ মাকত
‚ বাতে ’ (দফতর সুওম , মাকত ‚ব ৪১) লেখেন -তরজমা
পীর-মাশায়েখের নামে যে গরু-ছাগল
দেওয়া হয় এবং তাদের কবরের কাছে গিয়ে
তা যবেহ করা হয় ফিকহী বর্ণনাসমূহে একেও
শিরকের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং এ সকল
কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার খুব তাকীদ
করা হয়েছে। এই যবীহাকে ঐসব যবীহার
শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে যা জিন্নাতের
নামে যবেহ করা হয়, যা শরীয়তের বিধানে
নিষিদ্ধ ও শিরকের অন্তুর্ভুক্ত।
৪. মান্নত আল্লাহর নামে আর বুযুর্গের জন্য
ইসালে ছওয়াব
যদি মান্নত আল্লাহর জন্য মানে আর ঐ
বুযুর্গের জন্য শুধু ইসালে ছওয়াব উদ্দেশ্যে হয়
বা ঐ জায়গার ফকীর-মিসকীনের
সহযোগিতা উদ্দেশ্য হয় তাহলে যদিও একে
হারাম ও শিরক বলা হবে না কিন্তু সাধারণ
মানুষ এই ছুরত ও আগের ছ ‚রতগুলোর মাঝে
পার্থক্য করে না। এ কারণে এ থেকেও বিরত
থাকা কর্তব্য।
মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রাহ. -এর যে
বক্তব্য উপরে উদ্ধৃত হয়েছে তাতে আরো
আছে -তরজমা
এ কাজ থেকেও পরহেয করা চাই। কারণ এতে
শিরকের ‘গন্ধ’ আছে। আল্লাহ তাআলার
নামে মান্নতের বিভিন্ন ছুরত হতে পারে।
তাহলে কী কারণে প্রাণী যবেহ করারই
মান্নত করতে হবে আর জিন্নাতের নামে
যবেহকৃত পশুর সাথে ও জিনের উপাসকদের
সাথে সাদৃশ্য সৃষ্টি করতে হবে ? (মাকত ‚ব
৪১ ; দফতরে সুওম)
৫. নির্ধারিত জায়গার, নির্দিষ্ট ফকীর-
মিসকীনকে দেওয়া জরুরি নয়
কেউ যদি এ মান্নত করে যে , আমার অমুক
কাজ হয়ে গেলে আল্লাহর নামে এত টাকার
মিঠাই বা কাপড়-চোপড় বা খাদ্যশষ্য
খাজা বাহাউল হক যাকারিয়া মুলতানীর
খানকাহের ফকীরদের মাঝে বিতরণ করব
এবং এর ছওয়াব হযরত খাজা সাহেবের জন্য
পাঠাব তাহলে তার এ মান্নত অশুদ্ধ নয়।
তবে উল্লেখিত কাজ হয়ে গেলে ঐ
ফকীরদের মাঝেই জিনিসগুলো বিতরণ করা
জরুরি নয় যাদের কথা মান্নতের সময় বলা
হয়েছিল ; বরং এ পরিমাণ মিঠাই, কাপড় ,
টাকা-পয়সা যে কোনো ফকীরকে দিয়ে
দিলেই মান্নত আদায় হবে এবং এর ছওয়াব
খাজা ছাহেবের আমলনামায় পৌঁছুবে।
এ ক্ষেত্রে অন্য কোনো ফকীরকে দিতে যদি
মন না মানে ; বরং খাজা ছাহেবের
খানকাহের ফকীরদেরকে দেওয়াই জরুরি
মনে করে এবং এ ধারণা করে যে , এছাড়া
তার মান্নত পুরা হবে না তাহলে প্রমাণ
হবে , এ লোক আসলে আল্লাহর জন্য মান্নত
করেনি ; বরং খাজা ছাহেবকেই ঐসব বস্তু
নিবেদন করতে চায়। মান্নত যদি শুধু
আল্লাহর নামে হত আর হযরত খাজা
ছাহেবের জন্য শুধু ইসালে ছওয়াব উদ্দেশ্য
হত, এই মান্নতের দ্বারা খাজা সাহেবের
নৈকট্য অর্জন উদ্দেশ্য না হত তাহলে এ
মান্নত পুরা হওয়ার যে উপায় দ্বীনের
ইমামগণ শিখিয়েছেন তাতেই মন রাজি
খুশি হয়ে যেত। সুতরাং ঐ লোকের মৌখিক
দাবি যে , আমি শুধু আল্লাহর জন্য মান্নত
করেছি ; তার কর্মের দ্বারা ভুল প্রমাণিত
হচ্ছে।
সারকথা , আল্লাহর ওলীদের মাযারে
যেসকল মান্নত মানা হয় এবং নিয়ায
চড়ানো হয় যদি এর দ্বারা বুযুর্গদের নৈকট্য
অর্জন উদ্দেশ্য হয় এবং এই ধারণা থাকে যে ,
এ মান্নত গ্রহণ করে তারা আমাদের কর্ম
সমাধা করবেন ; আর তাদের নামে মান্নত
না দিলে তারা আমাদের প্রতি রুষ্ট হবেন
আর এ কারণে আমাদের কারবার , জান-মাল ,
বিবি-বাচ্চার ক্ষতি হবে তাহলে - যেমনটা
ইতিপূর্বে দুররে মুখতারের বরাতে উল্লেখ
করা হয়েছে- এটা বিল-ইজমা হারাম ও
বাতিল এবং নিঃসন্দেহে র্শিক।
পক্ষান্তরে যদি ঐ বুযুর্গদের উদ্দেশ্যে
মান্নত না মানা হয়; বরং মান্নত শুধু
আল্লাহরই মানা হয় এবং ঐ বুযুর্গদের রাযি
না-রাযির এ মান্নতের সাথে কোনো
সম্পর্ক না থাকে ; বরং তার আমলনামায় শুধু
ছওয়াব পৌঁছানো উদ্দেশ্য হয়ে থাকে
তাহলে এ মান্নত নিঃসন্দেহে সহীহ। কিন্তু
বাস্তব অভিজ্ঞতা বলে, যারা বুযুর্গদের
মাযারে মান্নত মানে ও নযর-নিয়ায চড়ায়
তাদের এ নিয়ত কখনো থাকে না; বরং
তারা খোদার নামে মান্নত আর বুযুর্গদের
জন্য ঈসালে ছওয়াবের দাবির মাধ্যমে
আসলে নিজের সাথে প্রতারণা করে
থাকে।
ইমামে রাব্বানী মুজাদ্দিদে আলফে ছানী
(‘মাকত ‚ব ৪১ , দফতর সুয়াম’ - এ) সামনে
লেখেন ‘এই নযর
লিগাইরিল্লাহ’ (গাইরুল্লাহর জন্য মান্নত)-
এর এক প্রকার হচ্ছে , নারীদের ঐ সকল
রোযা, যা তারা বিভিন্ন পীর ও বিবিদের
নিয়তে রেখে থাকে। ঐ সকল পীর-বিবিদের
আকসার তারা নিজেরাই উদ্ভাবন করে ,
এরপর তাদের নামে রোযার নিয়ত করে।
প্রত্যেক বিশেষ রোযার জন্য ইফতারের
বিশেষ নিয়ম পালন করে। ঐসব রোযার জন্য
দিন-তারিখও নির্ধারণ করে। নিজেদের
হাজত-মকসূদ এইসব রোযার সাথে যুক্ত করে
এবং এসব রোযার অসীলায় ঐ পীর ও
বিবিদের কাছে হাজত-মকসূদ প্রার্থনা
করে আর তাদের তরফ থেকেই মকসূদ পুরা
হওয়ার আকীদা রাখে- এটা ইবাদতের
ক্ষেত্রে শিরক এবং গাইরুল্লাহর ইবাদতের
মাধ্যমে গাইরুল্লাহর কাছে মাকসূদ
প্রার্থনা। এই কর্মের জঘন্যতা খুব
ভালোভাবে উপলব্ধি করা উচিত...
‘এই কর্মের ভয়াবহতা যখন বর্ণনা করে
বোঝানো হয় তখন কোনো কোনো নারী
বলে যে , আমরা এই রোযা আল্লাহর জন্য
রাখি আর এর ছওয়াব পীরদের পৌঁছাই। এ
নিতান্তই বাহানামাত্র। তারা যদি এ
কথায় সত্যবাদী হয়ে থাকেন তাহলে এসকল
রোযার জন্য বিশেষ দিন-তারিখ নির্ধারণ
কেন ? এবং ইফতারের জন্য বিশেষ ধরনের
খাবারের আয়োজন ও বিশেষ নীতি-পন্থার
উদ্ভাবন কেন ?’
৬. মান্নতে তাকদীর টলে না
মান্নতের বিষয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা যা
এক্ষেত্রে ফয়সালাকুন এবং যে সম্পর্কে শুধু
আম লোকেরাই নয় অনেক লেখা-পড়া জানা
মানুষও গাফেল তা এই যে , বাস্তবে কোনো
কাজ হওয়া না-হওয়ায় নযর-মান্নতের
কোনো প্রভাব নেই এবং এর দ্বারা
তাকদীরের লেখাও পরিবর্তন হয় না। সহীহ
বুখারী ও সহীহ মুসলিমে নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের মশহুর হাদীস
বর্ণিত হয়েছে -
মান্নত করো না। কারণ তাকদীরের লিখনে
মান্নত কোনো কাজেই আসে না। এর দ্বারা
তো শুধু বখীলের কাছ থেকে (সম্পদ) বের
করা হয়। - মিশকাতুল মাসাবীহ পৃ. ১৯৭
শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী রাহ. এ
হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেছেন , ‘মান্নত
মানার নিষিদ্ধতা এই বিশ্বাসের কারণে
যে , তা তাকদীরের কোনো লিখন খণ্ডন
করে। কারণ মানুষের রীতি ছিল , তারা
তাদের হাজত পূরণ ও বিপদমুক্তির জন্য
মান্নত করত। আর এ হচ্ছে কৃপণ লোকদের
স্বভাব। এ কারণে এতে বাধা দেওয়া
হয়েছে। দানশীল মানুষ তো সরাসরি সদকা
করে থাকে। সুতরাং উদ্দেশ্যে হচ্ছে মান্নত
মানা যেতে পারে তবে ঐভাবে নয় ,
ইখলাসের সাথে। (হাশিয়া মিশকাত)
হাদীসে আছে , সদাকার দ্বারা বিপদ দূর
হয়, কিন্তু মান্নতে আছে এক ধরনের
‘বাণিজ্য।’ কাজ হলে সদকা দিব, না হলে
দিব না। এ মানসিকতা গ্রহণযোগ্য নয়।
যাইহোক, মূলকথা এই যে , আল্লাহর জন্য যে
মান্নত মানা হয় তার দ্বারাও তাকদীরের
ফয়সালা পরিবর্তন হয় না। এ থেকেই বুঝুন,
যেসকল মান্নত বুযুর্গদের নামে মানা হয়
তার দ্বারা তাকদীরের ফায়সালা
কীভাবে বদলাতে পারে ? কিন্তু বাস্তবে
এই হয় যে , মান্নত মানার পর যদি কাজ না
হয় তাহলে লোকেরা তাকদীরের সামনে
আত্মসমর্পণ করে বলে , ‘ কী আর করা ,
তাকদীরে এ-ই ছিল।’ আর যদি কাজ হয়ে
যায় তাহলে একে তাকদীরের ফয়সালা মনে
করে না। বুযুর্গদের তসররুফ-কর্ম মনে করে
আর বলে, দেখ , অমুক পীরের নামে মান্নত
করেছিলাম। উনি আমাদের (নাউযুবিল্লাহ)
এ জিনিস দান করেছেন! এ-ই হচ্ছে ঐ শিকড় ,
যা থেকে বের হয় ভ্রান্ত বিশ্বাসের অঙ্কুর
এবং যার দ্বারা শয়তান মানুষকে খোদা
তাআলা থেকে দূরে সরিয়ে শয়তানের
পুজারী বানায়। নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপরের হাদীসে এই
মূলেরই উৎপাটন করেছেন যে , খোদার নামে
মান্নত মানলেও তাকদীর টলে না। তাহলে
তাঁর অক্ষম বান্দাদের নামে যে মান্নত
মানা হয় তার কথা তো বলাই বাহুল্য।
(‘ ইখতিলাফে উম্মত আওর সিরাতে
মুসতাকীম’ থেকে।
©somewhere in net ltd.