নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মামুন তালুকদার

মামুন তালুকদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

"আমাদের পিয় নবী(সঃ) এর মুজিজা সমূহ"

২১ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:১৭

সর্বকালের সকল
মানবতার জন্য শ্রেষ্ঠ
পয়গম্বর। তাঁর ওপর যে
ধর্ম আল ইসলাম দান
করা হয়েছে তা কেয়ামত পর্যন্ত অনুকরণীয়,
অনুসরণীয় হিসেবে টিকে থাকবে। কেয়ামত
অবধি যত মানুষ পৃথিবীতে আসবেন সবাই
রাসুল সা. এর আদর্শ মোতাবেক জীবন যাপন
করবেন। এটাই নির্ধারিত। আল্লাহ
সুবহানাহু ওয়াতা’আলা মুহাম্মদকে সা. দান
করেছেন বিশ্বের বিস্ময়কর মুজিজা। যা
দেখে ততকালিন মানুষেরা বিস্ময়ে বিমূঢ়
না হয়ে পারেনি। হিজরতের সফরে রাসুল
সা. যখন মদিনা অভিমুখে রওয়ানা
দিচ্ছিলেন। সেই সময় রাসুলকে সা. প্রতিহত
করার মানসে ৭০ জন দুর্ধর্ষ রক্ষীবাহিনী
নিয়ে যাত্রা পথের সম্মুখভাগে অবস্থান
করছিলো বারিদা। তারা ভাবছিলো
মুহাম্মদ সা. এখানে আগমন করলেই আমরা
তাকে তরবারী দিয়ে টুকরা করে ফেলবো।
ঠিকই রাসুল সা. তাদের সুম্মুখে পড়ে
গেলেন। সেই সময় তাঁর কণ্ঠে ছিল পবিত্র
কুরআনুল কারিমের তেলাওয়াত। তাঁর মত
এতো সুন্দর করে পবিত্র কুরআন আর কেউ
পড়তে পারতেন না। যা শুনে কাফের
মুশরেকরা বিগলিত হয়ে যেতেন। মানুষেরা
আল্লাহ, রাসুল সা., ইসলাম ও আল কুরআনের
প্রতি আকৃষ্ট হয়ে যেতেন। রাসুল সা. এই সময়
সুললিত কণ্ঠে পবিত্র কুরআনুল কারিমের
তেলাওয়াতের মাধ্যমে মরুভূমির আকাশ
বাতাস প্রকম্পিত করে যাচ্ছিলেন।
বারিদা ও তার ৭০ জন সহযোগীদের
কর্ণকুহরে যখন কুরআন স্পর্শ করলো। তারা
আর স্থীর থাকতে পারলো না। অবশেষে
রাসুলের হাতে হাত রেখে সকলেই
ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয়
নিলেন। আর বারিদা তার মাথার পাগড়ি
বর্শায় বেঁধে ইসলামের পতাকা বানিয়ে
রাসুলের হিজরতের কাফেলার সঙ্গে
মদিনায় যাচ্ছিলেন আর ঘোষণা দিচ্ছিলেন
শান্তির দূত আসছেন। সত্যের বার্তাবাহক
আসছেন। উত্তম চরিত্রের সুমহান দৃষ্টান্ত
স্থাপনকারী আসছেন। হে মদিনাবাসী
তোমরা খুশি হও। উদ্বেলিত হও। আনন্দে
উল্লাসিত উদ্ভাসিত হও। এর পর রাসুল সা.
যখন মদিনায় গেলেন। তখন তাঁর উটের রশি
ধরে তাঁর মাতুলালয়ের স্বজনেরা
মেহমানদারী করানোর জন্য জোরজবরদস্তি
করতে থাকে। সেই সময় রাসুল সা. বলেন,
তোমরা উটকে ছেড়ে দাও। উট আল্লাহর পক্ষ
থেকে আদেশ প্রাপ্ত। যখন উটকে ছেড়ে
দেয়া হয় তখন সে ঘুরতে ঘুরতে ঠিক সেই
জায়গায় গিয়েই থেমে যায়। যেখানে
মসজিদে নববী নির্মিত হয়েছে। যেখানে
রাসুল সা. বোরাক থেকে নেমে দুরাকাত
নামাজ পড়েছিলেন। তখন রাসুল সা. এর
মামা আবু আইউব আনসারি রা. বলেন, হে
মুহাম্মদ সা.! এখন দেখুন সবচেয়ে নিকটে
আমার ঘর। ঐ দেখুন, আমার ঘর দেখা যায়। ঐ
দেখুন আমার ঘরের দরজা। রাসুল সা. এবং
সাহাবিরা যখন মদিনায় আসেন। ঐ সময়
মদিনায় প্রচুর জ্বরের প্রকোপ ছিল। রাসুল
সা. এর দো’য়ার বরকতে কেয়ামত পর্যন্ত
মদিনা জ্বর মুক্ত হয়ে যায়। রাসুল সা. বলেন,
হে আল্লাহ, মদিনার রোগ-শোক-জ্বরগুলি
‘জাহফায়’ স্থানান্তর করে দাও। সাথে
সাথে তাই করেছিলেন আল্লাহ সুবহানাহু
ওয়াতা’আলা। মসজিদে নববীতে একদিন
রাসুল সা. নাজিলকৃত কুরআনের আয়াতের
তাফসির করছিলেন, তখন রইসুল মুহাদ্দেসিন
হযরত আবু হুরায়রা রা. ক্ষুধার যন্ত্রণায়
বসতে না পারার কারণে উঠে গিয়ে
মসজিদের বারান্দায় উপুড় হয়ে শুয়ে
ছিলেন। রাসুল সা. এর তাফসির শেষ হলে
হুজরায় চলে আসার সময় আবু হুরায়রা রা. এই
অবস্থা দেখে বিমর্ষবদনে ডাক দিলেন, আবু
হুরায়রা, আমার সঙ্গে এসো। গেলেন। ঘরে
গিয়ে আয়শা সিদ্দিকা রা. কে জিজ্ঞাসা
করলেন, তোমার ঘরে কি এমন কোনো
খাবার আছে, যা কোনো মেহমানকে
খাওয়ানো যায়? আয়শা রা. তন্ন তন্ন করে
খুঁজে দেখলেন কিন্তু কোনো খাদ্যদ্রব্য
পেলেন না। রাসুল সা. বললেন, আবু হুরায়রা,
একটু অপেক্ষা করো, দেখা যাক কোনো
হাদিয়া তোহ্ফা আসে কি না। কিছুক্ষণের
মধ্যে একজন সাহাবি এক পেয়ালা দুধ নিয়ে
এলেন। রাসুল সা. বললেন, আবু হুরায়রা,
মসজিদে নববী হতে আহলুস সুফ্ফাদের ডেকে
নিয়ে এসো। তখন ৬০/৭০ জন আহলুস
সুফফাদেরকে ডেকে নিয়ে এলেন। এরপর
রাসুল সা. আবু হুরায়রাকে দুধ বন্টন করার
নির্দেশ দিলেন। তাই হলো। সকল সাহাবি
তৃপ্তিসহকারে পান করলেন। তারপরও
পেয়ালার দুধ পেয়ালায় রয়ে গেল। রাসুল
সা. বললেন, আবু হুরায়রা, এখন তুমি পান
করো। আবু হুরায়রা রা. বলছেন, আমি দুধ
পান করে আমার ক্ষুধা নিবৃত্ত করার পরও
অতিরিক্ত পান করলাম। তারপরও পাত্রে দুধ
পূর্বের মতই অবশিষ্ট থাকলো। রাসুল সা.-
এর অন্য আর একজন সাহাবি জাবির রা.।
খন্দকের যুদ্ধের সময় রাসুল সা. এর সাথে
মাটি কাটতে ছিলেন। সেই সময় বড় একটি
পাথর কেউ না ভাঙ্গতে পেরে রাসুল সা. এর
কাছে এসেছিলেন। তখন রাসুল সা. দু’হাত
উত্তোলন করে এমন জোরে ঐ পাথরে আঘাত
করেছিলেন যে, বড় পাথরটি ধুলার সাথে
মিশে গিয়েছিল। তখন হাত উঁচু করায়
জাবির রা. দেখেন রাসুল সা. এর পেটে ৩
খানা পাথর বাধা আছে। জাবির রা. রাসুল
সা.কে তাঁর বাড়ীতে দাওয়াত করেছিলেন।
সেখানে ওরকম রাসুল সা. অনেক সাহাবি
নিয়ে গিয়েছিলেন। তখন মুজিজা প্রদর্শিত
হয়েছিল। ঐ অল্প খাবার সকল সাহাবি
খেয়েছিলেন। কিন্তু খাবার শেষ হয়নি। শুধু
এই খাবারের বিষয় নয়। বদরের যুদ্ধের সময়
রাসুল সা. ৩১৩ জন সৈন্য নিয়ে ১০০০
সৈন্যের মোকাবিলা করেছিলেন। সেই সময়
তিনি আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা
করেছিলেন। আল্লাহতা’আলা তাঁর
ফেরেশতাদের দিয়ে এই যুদ্ধে বিজয়ী করে
দেন। আল্লাহর ফেরেশতারা সৈনিক বেশে
মুসলিম বাহিনীতে মিশে যায়। আর কাফের
সৈন্যদের পর্যুদস্ত করে ফেলে। অবশেষে
মুসলিম বাহিনী বিজয়ী হয়। কাফের
বাহিনী পরাজিত হয়। শুধু তাই নয় তাদের
সেনাপতি আরবের সরদার, ইসলামের
সবচেয়ে বড় দুশমন আবু জাহেল মুয়াজ আর
মুয়াইয়াজ নামে দু’টি নাবালক শিশুর
হাতে খতম হয়। রাসুলের সাহাবি আব্দুর
রহমান বিন আউফ বলেন, বদরের যুদ্ধে যখন
তুমুল লড়াই চলছে, সেই সময় দেখি দু’টি
বালক তরবারী দুলাতে দুলাতে সম্মুখে
অগ্রসর হচ্ছে। আমি ভাবলাম যুদ্ধের
ময়দানে এই নাবালকেরা কি জন্য এলো?
ওমনি তারা আমাকে জিজ্ঞাসা করলো
চাচাজান, আমরা মদিনার দু’টি আনসার
শিশু, দু’ভাই মুয়াজ আর মুয়াইয়াজ। আমরা
শুনেছি, মক্কায় আল্লাহর রাসুল মুহাম্মদ
সা.কে নাকি সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিয়েছে
আবু জাহেল। আপনি মেহেরবানী করে আবু
জাহেলকে একটু দেখিয়ে দেন। আমি
ভাবলাম বড় বড় বীরেরা যাকে দেখে ভয়
পায়। এই দু’টি নাবালক ছেলে তাকে
খোজে? হঠাত্ আবু জাহেলকে আসতে দেখে
ওদের বললাম ঐ দেখ, লম্বা ঘাড়ওয়ালা
লোকটি আসছে; উনিই আবু জাহেল। এই কথা
বলামাত্রই বালক দু’টি বিদ্যুত্গতিতে
ঝাপিয়ে পড়লো আবু জাহেলের ওপর। তাকে
ধরাশায়ী করলো আর দুনিয়া থেকে বিদায়
করলো। মরার সময় আবু জাহেল বলেছিল, এ
কেমন মৃত্যু আমার হলো? আমি যদি কোনো
বড় বীরের হাতে মরতাম তাহলে মরেও
শান্তি পেতাম, অথচ দু’টা নাবালক ছেলের
হাতে আমার জীবন প্রদীপ লিভে যাচ্ছে।
বদরের যুদ্ধের শেষে মুসলিম বাহিনীর
হাতে বন্দি অমুসলিম সৈনিকেরা একটি
কথা স্বীকার করেছিলেন। যুদ্ধের ময়দানে
সাদা পোশাক পরিহীত এক ধরনের সৈন্য
আমরা দেখেছি যাদের তীব্র আক্রমণে
আমরা মুহূর্তের মধ্যে ছত্রভঙ্গ হয়ে যাই। ঐ
সৈন্যগুলি কোথায়? তখন রাসুল সা.
বলেছিলেন, তোমরা যেসব সৈন্যের বিবরণ
দিচ্ছো, নিঃসন্দেহে তাঁরা আল্লাহর
ফেরেশ্তা ছাড়া আর কিছু হতে পারে না।
এমনিভাবে প্রায় সকল যুদ্ধে এবং জীবন
চলার বাঁকে বাঁকে আল্লাহ রাব্বুল
আলামীন তাকে অগণিত মু’জিজা দিয়ে
মর্যাদান্বিত করেছেন। রাসুল সা.-এর ওপর
সবচেয়ে বড় মুজিজা হলো আল কুরআন। যা
কেয়ামত পর্যন্ত সংরক্ষিত থাকবে।
পৃথিবীর কোনো শক্তি নেই, যা কুরআনকে
নিশ্চিহ্ন করতে পারে। আল্লাহ সুবহানাহু
ওয়াতা’আলা বলেন-
‘নিশ্চয় আল কুরআন নাজিল করেছি আমি
আল্লাহ, আর এটা হেফাজতের সবটুকু দায়িত্ব
আমি নিজ হাতে গ্রহণ করেছি। তাছাড়া
পৃথিবীবাসীর সৌভাগ্যের ব্যাপার হলো
আমরা এমন একজন নবীর জামানায় বাস
করছি যার উম্মত হতে পারলে বেহেশ্ত
লাভে ধন্য হওয়া অবশ্যম্ভাবী হয়ে যায়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.