নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মামুন তালুকদার

মামুন তালুকদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

আদর্শ রাষ্ট্র প্রধান মুহাম্মদ (সা.)

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৫


আদর্শ রাষ্ট্র প্রধান মুহাম্মদ (সা.)
*******************************
পৃথিবীর অসংখ্য মহাপুরুষের মধ্যে মুহাম্মদ (সা.) একমাত্র ব্যক্তিত্ব; যিনি সম্পূর্ণ একটি জীবনাদর্শের স্থপতি ছিলেন।
শুধু তাই নয়, তাঁর সে আদর্শ তখনকার ও অনাগত
সব মানুষের জন্য সর্বোন্নত, বৈজ্ঞানিক
এবং যুগোপযোগী ছিল।

পৃথিবীর উদার
চিন্তাশীল মহল একবাক্যে সেটি শিকার
করে। যুক্তিসঙ্গত কারণেই মার্কিন লেখক
মাইকেল এইচ হার্ট মুহাম্মদ (সা.) কে
ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানবের স্থান
দিয়েছেন। বস্তুত, চিন্তাকর্ম ও অবদানের
বিচারে তিনি তা দিতে বাধ্য হয়েছেন।
যদিও তার এ দেয়া বা না দেয়া মহানবী
(সা.) এর সাফল্যের মানদ- বা মাপকাঠি
নয়। কেননা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব
মুহাম্মদ (সা.) এর অভাবনীয় সাফল্য মহান
আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক স্বীকৃত ও চরম
প্রশংসিত।

জীবন ও জগতের খুঁটিনাটি হতে বৃহৎ-
সবক্ষেত্রে রাসুল (সা.) ছিলেন সর্বোত্তম
আদর্শ। তেমনি একটি ভৌগোলিক
সীমারেখার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব
'রাষ্ট্রপ্রধান' হিসেবেও তিনি তার
জ্বলন্ত আদর্শের অবিনাশী দীপ
জ্বেলেছেন ইতিহাসের তাকিয়ায়।
বর্তমান বিশ্বের কোথাও সেই রাষ্ট্রপতি
মুহাম্মদ (সা.) এর আদর্শ নেই বলেই বিশ্ব
আজ শত অশান্তি ও নানা নৈরাজ্যের
শিকার। এজন্যই হয়তো পাশ্চাত্যের কিছু
দূরদর্শী গবেষক-চিন্তাবিদ অশান্ত এ
বিশ্বে মুহাম্মদ (সা.) এর একক
'ডিক্টেটরশিপ' বা একনায়কত্ব কামনা
করেছেন।

মুহাম্মদ (সা.) মদিনার ইসলামী
প্রজাতন্ত্রের সর্বপ্রথম রাষ্ট্রপতি
ছিলেন। মদিনাকে তিনি এমন এক
কল্যাণমুখর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন যে,
রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আসনে যেমন আসীন
ছিলেন তেমনি জনসাধারণের হৃদয়ের
মণিকোঠায়ও অবস্থান ছিল তাঁর।
মহানবী (সা.) এর ঐতিহাসিক একটি
সাফল্য হলো, তিনি পৃথিবীর ইতিহাসে
একটি লিখিত শাসনতন্ত্র মানবতাকে
উপহার দিয়েছিলেন। 'মদিনা সনদ' নামে
৪৭টি ধারা সংবলিত এ ধরনের মানবিক
সমঝোতামূলক শাসনতন্ত্র
প্রায়োগিকভাবে কেউ উপহার দিতে
পারেননি। নীতি ও আদর্শভিত্তিক
রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন করেন তিনি।
আল্লাহর কোরআন হলো সে আদর্শের মূল
ভিত্তি। সে হিসেবে মানুষ আল্লাহর
প্রতিনিধি- এটিই তাঁর আদর্শ রাষ্ট্রের
প্রধান বৈশিষ্ট্য।
মানবিক মূলনীতির ভিত্তিতে মহানবী
(সা.) মদিনার আর্থসামাজিক উন্নয়নে এক
বৈপ্লবিক জোয়ার সাধিত করেছিলেন। এক
আল্লাহর সার্বভৌমত্বের ওপর প্রতিষ্ঠিত
রাষ্ট্রে তিনি আদর্শ ও ইনসাফের এক অনন্য
ফল্গুধারা বইয়ে দেন।

মক্কা বিজয়পরবর্তী
সময়ে আরব উপদ্বীপের অনেক এলাকা তাঁর
অধীনে চলে আসে। তিনি মদিনাকে
কেন্দ্রীয় রাজধানী করে প্রতিটি অঞ্চলে
শান্তি-শৃঙ্খলা, ন্যায়বিচার-নিরাপত্তা
নিশ্চিত করেন। প্রতিটি গভর্নরের
নিযুক্তি ছিল বিশেষ যোগ্যতা, সৎ-নিষ্ঠা
ও পরহেজগারির ভিত্তিতে।
নিযুক্তিকালে শপথ পাঠ করানোসহ
গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ দেয়া হতো। মুয়াজ বিন
জাবাল (রা.) কে ইয়েমেনে পাঠানোর সময়
তিনি এমনই করেছিলেন। মসজিদে নববি
ছিল রাসুল (সা.) এর কেন্দ্রীয় সচিবালয়।
রাষ্ট্রীয় সব গুরুত্বপূর্ণ কাজ এখানে সম্পন্ন
করা হতো। আলী (রা.), ওসমান (রা.),
মুয়াবিয়া (রা.) ও জায়েদ বিন ছাবিত
(রা.) ছিলেন তাঁর প্রধান ওহি লেখক।

কোষাগার, জাকাত, সদকা ইত্যাদির
দায়িত্বে ছিলেন জুবাইর ইবনুল আওয়াম ও
জুহাইম (রা.)। মহানবী (সা.) এর রাষ্ট্র
ছিল পরামর্শভিত্তিক রাষ্ট্র। তাঁর
রাষ্ট্রে নাগরিক অধিকার; বিশেষ করে
অমুসলিমদের অধিকার নিশ্চিত ছিল।
পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ে রাসুল (সা.)
সমঝোতা-শৃঙ্খলা, মৈত্রী-উদারতা ও
ক্ষমার মূর্ত প্রতীক ছিলেন। মক্কা
বিজয়ের দিন তাঁর উদার ক্ষমা ঘোষণা
বিশ্বের যে কোনো চিন্তাবিদকে
আলোড়িত না করে পারে না। তিনি
মাঠে-ময়দানে ছিলেন একজন তুখোড়
সমরবিদ ও মানব ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা
মানবতাবাদী সিপাহসালার।
প্রতিহিংসামূলক হত্যা, যুদ্ধে বৃদ্ধ নারী-
পুরুষ ও শিশু হত্যা তিনি নিষিদ্ধ করেছেন।
সম্পদ অর্জন ও বহনের ব্যাপারে শরিয়তের
নীতিমালাই ছিল তাঁর সর্বোত্তম আদর্শ।
প্রকৃতপক্ষে তিনি কোরআনভিত্তিক রাষ্ট্র
ব্যবস্থার প্রথম পুরুষ। জগতের অতুলনীয়
প্রভাবশালী রাষ্ট্রপ্রধান হয়েও তিনি
অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতেন। দিনে
শাসনকার্য পরিচালনা করতেন এবং রাতে
অঝোর ধারায় প্রভুর দরবারে বিসর্জন
দিতেন। ইন্তেকালের সময় মহান
রাষ্ট্রপ্রধান মহানবী (সা.) রেখে
গিয়েছিলেন কিছু গৃহস্থালি ও যুদ্ধাস্ত্র।
রেখে গিয়েছিলেন একটি পূর্ণাঙ্গ নিখুঁত কালজয়ী আদর্শ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.