![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a house wife, I love to write something
টুনটুনের প্রথম জন্ম দিন পালন করলাম। আমাদের পরিকল্পনা ছিল যে, ওকে ছোট থেকেই দইর্জলিং এ পড়াবো। তাই স্কুল দেখতে ছোট টুনটুনকে নিয়ে দার্জিলিং রওনা হলাম।
স্বপন আমার দেবর, আমার লক্ষণ তখন নর্থ বেঙ্গল ইউনিভার্সিটিতে ল পড়ছে। তাই স্বপনই আমাদের গাইড।
আমরা রাত্রে যেয়ে উত্তর দিনাজপুরে ডালখোলাতে এক আত্মীয়র বাড়ীতে থাকলাম। পরদিন ভোর ৪টায় কাঞ্চনঝঙ্ঘা ট্রেনে এন জিপি হয়ে দার্জিলিং যাবো।
রাত ৩টায় উঠে তৈরী হতে থাকলম। ডিসেম্বর মাসের ঠান্ডা। বলা যাবে না। শুদূ বুঝে নিতে হবে।স্বপন টুনটুনকে সোয়েটার উলের ফুলপ্যান্ট, জুতা মোজা পড়িয়ে উলের চাদর দিয়ে এমনভাবে জড়ালো যে, ও ছোট খাট একটা বস্তা হয়ে গেল। ছোট থেকে ও একটু মোটা।তারপর স্বপন তাকে কাঁধে নিয়ে চললো। আমরা ২জন পিছনে পিছনে হাঁটছি।
ভোর ৪টায় ডালখোলা থেকে ট্রেনে উঠলাম। ৬টায় এনজিপি তে পৌছাবে কিন্তু কুযাশার জন্য ট্রেন পৌছালো বেলা ৯টায়।একটা হোটেলে ঢুকেছি সকালের খাওয়া টা সারবো। টুনটুন শুরু করলো, “কাকু হাগু”। স্বপন ব্যাস্ত হয়ে পড়লো। আবার বস্তা ঘাড়ে করে এক পাবলিক টয়লেণটে নিয়ে গেল। অনেক অপেক্ষা করেও হাগু হলো না।
শেষ মেষ শিলিগুড়ী হতে জীপে করে দার্জিলিং যাত্রা করলাম। যেইমাত্র শুকনা পর্যন্ত সমতল ভূমি পার করে পাহাড়ের গা বেয়ে জীপ উপরের দিকে উঠছে অমনি স্বপন বলে, “ বৌদি আমার মাথা ঘুরছে”। বসেছিলাম আমি মাঝখারন আর এক পাশে রাম আর একপাশে লক্ষন। তখন স্বপনকে মাঝখানে দিয়ে আমি পাশে চলে গেলাম্।
নয়ন ভরে জীবনে প্রথম পাহাড়েড় কোলাকুলি দেখলাম। মেঘে সমগ্র পাহাড় ঢেকে আছে। যতটুকু আবছা পাহাড় দেখা যায়। মনে হয় পাহাড় আর সমুদ্র বোধ হয় মিতালী করেছে। একটু পরে ঘোর কেটে গেল, এতো জলরাশির সমুদ্র নয় এযে মেঘের সমুদ্র। কিছুটা যেতে মেঘ কেটে এক চিলতে সূর্য়ের আলো পড়তেই মনে হলো বিশাল পাহাড়ে এত তুলা পেজা করে কে ছড়িয়ে দিল।? তখন মনে হলো ঈশ্বর তুমি সত্যিই স্রষ্টা কি বিশাল তোমার সৃষ্টি!
খানিকটা যেতেই জীপের মধ্যে মেঘ ঢুকে গেল। আমরা নেকটা ভিজে গেলাম। বেলা ১টা তেও সুর্যের দেখা নেই। স্থানীয় লোকজন দোকান পাট ফেলে রেখে পথের ধারে আগুন জ্বেলে হাত পা সেকে নিচ্ছে।
বেলা ৪টার দিকে আমরা দার্জিলিং পৌছালাম। জীপ থেকে নেমে একটা কমলা কিনে মুখে দিতে মনে হলো যেন ডিপ ফ্রিজ থেকে বের করে আনলো। সবার হাতের দিকে তাকিয়ে দেখি, হাতের তালু নীল হয়ে গেছে। অশোক বলেলো, ”আর এখানে থাকা নয়। ঘুরে চলো শিলিগুড়ী।” আমরা জীপে উঠে এবাউট টার্ন করলাম।
বি:দ্র: সেই টুন টুন দার্জিলিং এ পড়া শেষ করে আজ আমেরিকাতে পড়ছে আর স্বপন ২০০৭ সালের আজকের দিনে আমাদের মাঝ থেকে চিরতরে হারিয়ে গেল।
©somewhere in net ltd.