নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছু লিখার নাই।

মুনতাসীর মারুফ

মুনতাসীর মারুফ

মুনতাসীর মারুফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দ্বিমুখী আবেগের রোগ বাইপোলার ডিজঅর্ডার

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:২১

বাইপোলার ডিজঅর্ডার আবেগজনিত একটি মানসিক রোগ। নারী-পুরুষ উভয়ই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। যাদের নিকটাত্মীয়ের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস আছে, তাদের ক্ষেত্রে এ রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশী।



বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের গবেষকদলের জরীপ অনুয়ায়ী, বাংলাদেশে ১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের শতকরা ০.৪ ভাগ অর্থাৎ প্রতি হাজারে ৪ জন এ ধরণের রোগে আক্রান্ত।

এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আবেগের দুটি পর্যায় থাকে। একটি পর্যায় হচ্ছে ম্যানিয়া বা হাইপোম্যানিয়া। ম্যানিয়া পর্যায়ে ব্যক্তিরা অস্বাভাবিক আনন্দ-ফূর্তি অথবা বিরক্ত বোধ করেন, নিজেকে অতি বিত্তশালী বা ক্ষমতাবান মনে করেন, কথা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী বলেন। তাদের মধ্যে অতি উত্তেজনা বা অতিরিক্ত কাজের স্পৃহা দেখা দেয়। কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে বা কথায় স্থির থাকতে পারেন না। বেশী খরচ করেন অথবা দান করেন। ঘুম কমে যায়। অনেকের যৌন আগ্রহ অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। কিন্তু আক্রান্তরা নিজেদেরকে স্বাভাবিক মনে করেন। তাদের আচরণের অস্বাভাবিকতা অন্যদের চোখে ধরা পড়ে। এসব উপসর্গ টানা সাতদিনের বেশী থাকলে একে ম্যানিয়া পর্যায় বলা হয়। উপসর্গের তীব্রতা ও স্থায়ীত্ব কম হলে একে হাইপোম্যানিয়া বলা হয়। বাইপোলার ডিজঅর্ডারে আবেগের অন্য পর্যায়টি বিষণœতা বা ডিপ্রেশন। অনেকের ক্ষেত্রে শুধু ম্যানিয়া পর্যায়টিই দৃশ্যমান হয়, বিষণœতার পর্যায়টি বোঝা না-ও যেতে পারে। কারো ক্ষেত্রে সারা জীবনে হয়তো দু-এক বার ম্যানিয়া পর্যায়টি দেখা দিতে পারে, কারো ক্ষেত্রে কয়েক বছর পর পর বা বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এটি হতে পারে। তবে, এর বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা রয়েছে। মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে আবেগের অবস্থাটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব।

অজ্ঞতা ও কুসংস্কারের কারণে অনেকেই এই সমস্যাটিকে মানসিক রোগ বলে মানতে চান না। চিকিৎসাবিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কহীন মানুষ তো বটেই, অনেক চিকিৎসক, এমনকি মানসিক রোগ ছাড়া অন্য বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাঝেও এ রোগ নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। তবে, সর্বপ্রকার রোগ বিষয়ক আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রেণীবিভাগ ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্লাসিফিকেশন অব ডিজিজ (আইসিডি)’ অনুযায়ী বাইপোলার ডিজঅর্ডার একটি মানসিক রোগ।

অনেকে বলেন, মেডিসিন এবং ¯œায়ুরোগ বিশেষজ্ঞরাই এ রোগের চিকিৎসা করতে পারেন, এজন্য মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। কথা হচ্ছে, এমবিবিএস ডিগ্রিধারী যে কোন চিকিৎসক কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন না করলেও যদি তিনি কোন রোগ সঠিকভাবে নির্ণয় ও এর সঠিক চিকিৎসা করতে পারেন, সেক্ষেত্রে কারো কোন আপত্তি থাকার কথা নয়। তবে, বাইপোলার ডিজঅর্ডার যে একটি মানসিক রোগ - এই সত্যটিকে অস্বীকার করা কেবল কুসংস্কার এবং অপচিকিৎসাকেই উৎসাহিত করে।

অনেকে মনে করেন, এ ধরণের সমস্যায় ওষুধের কোন প্রয়োজন নেই, ঝাঁড়ফুঁকই এর চিকিৎসা। এক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত গবেষণালব্ধ প্রমাণ এবং এনআইসিই (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ এন্ড কেয়ার এক্সিলেন্স), ইংল্যান্ড-এর গাইডলাইন অনুযায়ী ওষুধই এ রোগের প্রধান চিকিৎসা পদ্ধতি। রোগ তীব্র হলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি রেখেও চিকিৎসা করাতে হতে পারে। তবে রোগের বিশেষ পর্যায়ে কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু ধরণের সাইকোথেরাপী প্রয়োজন হতে পারে।

কারো কারো ধারণা, বাইপোলার ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত রোগীরা অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ত ও মেধাবী হয়ে থাকেন। এ ধারণার সপক্ষে গবেষণালব্ধ কোন প্রমাণ নেই। যে কোন শ্রেণী-পেশা-বুদ্ধিমত্তার মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। বিখ্যাত কয়েক ব্যক্তি এ রোগে আক্রান্ত হওয়ায় এ ব্যাপারে ভুল ধারণা সৃষ্টি হতে পারে। রোগীদের রোগের কারণে বহির্মুখী, দানশীল, আত্মবিশ্বাসী ও অতিরিক্ত সক্রিয় ভূমিকাও এ ধারণা তৈরী করতে পারে। আবার, এ রোগে আক্রান্ত হওয়া মানেই রোগী স্বাভাবিক কাজের অনুপযুক্ত - এ ধারণাও ঠিক নয়। সঠিক চিকিৎসায় এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে রোগী তার বুদ্ধিমত্তা ও প্রতিভা অনুযায়ী সফলতা পেতে পারেন। তবে, রোগীর অবস্থা অনুযায়ী তার জন্য বাস্তবভিত্তিক ভবিষ্যত লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।

তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগেও, নিমিষেই সকল তথ্য হাতে পাওয়ার অপার সুযোগের এই সময়েও মানসিক রোগ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণার চলমান ধারা খুবই দুঃখজনক। সকলের মাঝে মানসিক রোগ সম্পর্কে সচেতনতা জাগ্রত হোক, সকল নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, কুসংস্কার, জড়তা কাটিয়ে মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা সুচিকিৎসা লাভে সচেষ্ট হোন - প্রত্যাশা এটাই।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৩৫

শায়মা বলেছেন: বাইপোলার ডিজঅর্ডার বা দ্বিমুখি সত্ত্বা বা মালটিপল ডিজঅর্ডার.....:(

নিজে কি সেটা তখন আর বুঝতে পারেনা..... নিজেকে অনেকে নবী রসুল বলেও দাবী করে ।:( :( :(

২| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৪০

প্রান্তিক জন বলেছেন: নিজের মধ্যে লক্ষণ খোজে পেলাম। এখন উপায়???

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৪৬

মুনতাসীর মারুফ বলেছেন: অনেকে যখন কোন রোগের বর্ণনা পড়েন, সেই রোগের কিছু না কিছু নিজের মধ্যে খুঁজে পান। আপনার সেই রোগ না-ও থাকতে পারে। যদি আসলেই মনে হয়, তবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ধারে-কাছের কোন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করুন ।

৩| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৪০

শায়মা বলেছেন: ভাইয়া বুঝেছি তোমার প্রবলেম কোথায় সব এই দ্বিমুখি আবেগ নিয়ে লেখার কু ফল তোমাকে এখন দ্বিমুখি ভুত ধরেছে। সাবধান পানি পড়া লাগবে। :P

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৪৭

মুনতাসীর মারুফ বলেছেন: দুই চোখ বেঁধে ঝাড়ু পেটাও করা যেতে পারে।

৪| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৪৩

শায়মা বলেছেন: ভাইয়া এই ডিজঅর্ডারটা নিয়ে আমি একটা গল্প লিখেছিলাম

http://www.somewhereinblog.net/blog/saimahq

৫| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৪৪

শায়মা বলেছেন: ধ্যাৎ আমারই তো ডিজঅর্ডার হয়ে গেলো :(


ভুল হয়েছে , এইটা লিন্ক

Click This Link

৬| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:১৭

সায়েদা সোহেলী বলেছেন: আমাদের সমাজে মানসিক রোগ মানেই পাগল বলে ধরে নেওয়া হয় যে কোন মানসিক সমস্যা য় আক্রান্ত মানুষ বা তার অভিবাবকেরা এই বিষয় কথা বলতে বা সমস্যা আছে মানতেই নারাজ যতক্ষণ না তা বেরে অসহনীয় পর্যায়ে চলে যায় । কিন্তুততদিন এ দেখা অনেক নতুন নতুন সমস্যার সুত্রপাত হয়ে গেছে যার সমাধান হয়তো কোন মানসিক বিশেষজ্ঞর পক্ষেই আর দেওয়া সম্ভব হয়ে অঠে না ।

আর সবচাইতে বড় কথা এই ধরনের পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার এর পেশেন্ট।ের থেকে তারআশেপাশের মানুষ জন ই বেশি সাফার করে , সেখুব আনন্দ নিয়ে নিত্যনতুন আইডিয়া আদর্শ যুক্তির ঝাকা মাথায় নিয়ে ঘুরে বেরায়! !!

এনি অয়ে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এই বিষয় নিয়ে লেখার জন্য । অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম এই বিষয় কিছু লিখবো অন্তত দুএকজন কেও যদি সচেতন করতে পারি । কিন্তু আমি কোন চিকিৎসক ও নই লেখক ও নই , আর এই যথেষ্ট পরিমাণ তথ্য প্রমানাদি ছাড়া লিখলে কেউ সিরিয়াসলি নেবে না । তেমন যথেষ্ট সময় সুযোগ হয়ে উঠছিলো না ।

@ শায়মা ,
তুমি আসলেই অলস্কয়ার !! এই কথাটা আমি মেনশন করতেই যাচ্ছিলাম , তার আগেই দেখি তুমি করে দিলে । তারা নিজেদের কোন দুর্বলতা নিজে বুঝেত নাই উল্টো সেগুলোকেই স্মার্টনেসের সাথে প্লাস পয়েন্ট বানিয়ে ফেলে । নবী রাসুল গনের সাথে তুলনায় যেতেও দিধ্বাহীন !!

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৫১

মুনতাসীর মারুফ বলেছেন: ধন্যবাদ।

৭| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:২১

প্রান্তিক জন বলেছেন: আবার বলছি, আমার মধ্যে বোধ হয় এ রকম কিছু সমস্যা আছে। কিছু পরামর্শ দেন প্লিজ!!!

৮| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ২:১৮

রসায়ন বলেছেন: বেশী করে পানি খান :D

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৫১

মুনতাসীর মারুফ বলেছেন: পরে না আবার ওয়াটার ইনটক্সিকেশন হয়ে যায়!!

৯| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ২:৫৩

আকরাম বলেছেন:
মানসিক রোগের ব্যপারে আমার ব্লগটি দেখার আমন্ত্রন রইলো সাইকোথেরাপী অনলাইন

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৫০

মুনতাসীর মারুফ বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.