![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দর্শনের খিচুড়ি = বিসর্জন!
জনাব আদম যেদিন পৃথিবীতে নামলেন বা রূপান্তরিত হয়ে নতুন মানুষের রূপ পেলেন সেদিন পৃথিবী সাজানোই ছিল, নয় কি? গাছ-পালা ছিল, নদী-নালা ছিল, পাহাড় ছিল, প্রাণিকুল ছিল আশেপাশে। আদিম সেই যুগ থেকে এসবের সাথে সহ-অবস্থানের ভিতর দিয়ে এগুতে শুরু করলো মানব সভ্যতা। মানব সভ্যতা এজন্যেই বলছি কারণ মানুষ ব্যাতিত সকলেই প্রাকৃতিক'ই রয়ে গেছে, শুধু মানুষ হয়েছে সভ্য, তথাকথিত সভ্য।
আদম ফিরে গেলেন, সভ্যতার যাত্রা অব্যাহত রইলো। কালের নিরুপনে সভ্যতার এক ধারা পৌছুলো বাবা ইব্রাহিমের যুগে, আজ থেকে প্রায় ৪০০০ বছর আগের সে কথা। সভ্যতার মানদন্ডে স্থান করে নিলো 'সম্পদ'। আর সম্পদ পরিমানের মাপ-কাঠি হলো শস্য আর পশুসম্পদ। পশু সম্পদ ছিল বিত্তশালীর অবস্থান ইঙ্গিতের নির্দেশক। আজকের মতো সেদিন'ও সাদা সম্পদের সাথে কালো দাগ লেগে যেত কিছু কিছু। আজকের মতো সেদিন'ও সেই কালো দাগ বিবেকের কড়া নাড়তো; আজকের মতো শুধু সেদিন মানুষের সেই দরজা বন্ধ করে রাখতো না। সেদিনের মনীষী বাবা ইব্রাহিম সেই দরজার মৃদু কড়া নাড়ার সাড়া দিয়েছিলেন, দেখলেন স্বয়ং ঈশ্বর, বিবেকের রূপ ধরে দরজায় দাঁড়িয়ে। সুবিধা বঞ্চিতের জন্যে ধনী ইব্রাহিমের ত্যাগ চাইলেন। বুঝলেন না ইব্রাহিম, সৃষ্টিকর্তার ভয়ে সব বাবাদের মতো অচেতন মনে খেলে গেলো ছেলেকে খোয়ানোর দুঃ:স্বপ্ন। বিনিময়ে উজাড় করে দিতে চাইলেন সাত রাজার ধন। পাপ বোধ বা উদ্বৃত্ত সম্পদের মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে বাবা ইব্রাহিম প্রস্তুত হলেন শত পশু সম্পদ বিসর্জন করতে। অনুভূতি যখন আরও প্রকট হলো তিনি প্রস্তুত হলেন সন্তান বলিদানের। বাকি কাহিনী সবার জানা; ঈশ্বর বলিদান চায়নি সেদিন, চেয়েছে দান।চেয়েছেন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এই যে সৃষ্টির মধ্যে ঈশ্বরের বাস, ওরা শান্তিতে থাকুক, ভালোবাসুক। পৃথিবীর সব কিছু ভাগাভাগি করতে শিখুক।যে প্রাণীকুলের সৃষ্টি ঈশ্বরের হাতে, যে প্রাণ তারই দান সে প্রাণের বিসর্জন চাইবেন অমানুষ এই মানবের হাতে? আমার মনে প্রশ্ন জাগে।
উদ্বৃত্ব সম্পদ ত্যাগ আর বিসর্জনের তর্জমা দিয়ে তৈরী হয়েছে দর্শনের এক খিচুড়ি। কারণ, ঈশ্বর কথা বলেন না, ঈশ্বরের কোনো ভাষা নেই। ভাষা শুধু মানবের মিথ্যা বলার জন্যে।
ভিন্ন ভিন্ন ধর্মে ভিন্ন ভিন্ন মহা-মনীষীর হাত ধরে যে বিসর্জনের খেলা উঠে এসেছে সভ্য সমাজে তা আসলে এক খেলাই বটে। উন্মাদনা, কঠোরতা, নির্মমতা আর ভোগ; এখানে বিসর্জনের আনন্দ কোথায়?
বাজারে প্রকাশ্যে বসে খাচ্ছিলাম। পশ্চিম ইউরোপের দেশে জন্মানো আমার সন্তান কোনোদিন ভিখারি দেখেনি, সকলের অংশগ্রহণে গড়ে ওঠা এই সমাজ ব্যবস্থায় দরিদ্র বলে কিছু নেই। ইদানিং পূর্ব ইউরোপের কিছু মানুষ এসে ভিক্ষা বৃত্তি করে, বাচ্চাদের শিখিয়ে দেয়। একটা বাচ্চা এসে তাকিয়ে রইলো আমার ছেলের খাবারের দিকে। নির্দ্বিধায় আমার ৩ বছরের ছেলে একটি খাবারের থলে তাকে দিয়ে দিলো, একটি রাখলো নিজের জন্য। একেই বলে ভাগ করে নেয়া, একেই বলে বিসর্জন বা কুরবানী বা ত্যাগ বা ভালোবাসা।
বড় হও আমার দেহজ, শেখাবো তোমাকে ভিন্ন কিছু, শিখবো তোমার কাছে।
-২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
'
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩১
কাঠের ঘোড়া বলেছেন: শুভকামনা রইল শুভচিন্তার কামনায় ৷ল