![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হাসি, আনন্দ আর ভালবাসা গুলো ছড়িয়ে দিতে চাই নিজের ও নিজের আসেপাশের কিংবা ভালবাসার মানুষদের কাছে । আর রাগ, ঘৃণা , দুঃখ ,ক্ষোভ অথবা কষ্ট গুলো থাকনা নিজের মাঝে- বদ্ধ ঘরে । আমার ও আমাদের ক্ষুদ্রতার শৃঙ্খল আমাদের বঞ্চিত করে মিলনের আনন্দ থেকে । তাই ভেঙ্গে ফেলি চল নিজের ক্ষুদ্রতার শৃঙ্খল
মাঝে মাঝে আমার বন্ধু মিনহাজের মাথায় বিনদেশী একটা ভুত সওয়ার হয় ।
অবশ্য ভুতটা যখন সওয়ার হয় তার মাথায় একা সওয়ার হয় না । রাহুল আর শাকিলের মাথায় ও হয় । একই সাথে একই স্থানে । অনেকটা স্রোডিঞ্জারের বিড়ালের মত ।
রাহুল আর মিনহাযের রাজনৈতিক মতাদর্শ আমার সম্পূর্ণ বিপরীত । আকাশ পাতাল পার্থক্য । রোজ সন্ধ্যায় তর্কের আসর বসে । আমি একপক্ষ , মিনহায আর রাহুল একপক্ষ । এবং শেষ পর্যন্ত অসমাপ্ত থেকে যায় । কিন্তু তবুও ওদের একদিন না দেখলে যেন অপূর্ণ থেকে যাই।
মিনহাযের সেই ভুত দিনে চাপলে মোটা মুটি রক্ষা পাওয়া যায় । কিন্তু রাতে চাপলে আর রক্ষা নাই ।
গত বছর কনকনে শীত । রাত দুটা বাজে প্রায় । লেপ মুড়ি দিয়ে সিনেমা দেখছি । বলা নেই কওয়া নেই মিনহায এসে উপস্থিত । ওর চেহারা দেখে বুজতে পারলাম ওর মাথায় ভুত চাপছে ।
-চল ওঠ
-কেন ? কি হইছে ?
-আজ রাত টা শহীদ মিনারে কাটামু ।
আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল । লেপের ভিতর থেকেও কেপে উঠলাম । শীতে না- ভয়ে । আজ আর রক্ষা নেই ; তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি ।
- আরে ভাই পাগলামির একটা সীমা আছে । এই শীতের মধ্যে পাহাড়ে গিয়া আমার মরার ইচ্ছে নাই । তুই যা ভাই । আমি জামু না ।
মনে মনে আল্লাহ্রে ডাকা শুরু করলাম । আল্লাহ্ এইবার বাচাও- মসজিদে সিন্নি দিমু । ইয়া ফরওয়ারদেগার আর যাই হয় শাকিল যাতে রাজি না হয়।
আমার আবার সাইনাসের সমস্যা আর কিঞ্চিৎ শ্বাস কষ্ট ও আছে । মাবুদ আমার কথা রাখল না । তিনি রাখলেন মিনহায পাগলার কথা ।
শাকিল পাতলা কম্বল নিয়া রেডি । আমারে আর বাঁচায় কে ।আমি বুজলাম আমার আর কিছু করার নেই । আমি সারেন্ডার করলাম । দুই পাগলার কাছে হার মেনে যেতে হল শাবিপ্রবির ১ কিলো আর শহীদ মিনারের ৯৯ টা সিড়ি বেয়ে শহীদ মিনারে । পথে কবি মু,র,রাহুল আমাদের সফর সঙ্গী হয়ে আমাদের ধন্য করলেন ।
পাতলা কম্বলের কিছু অংশ বিছিয়ে আর কিছু অংশ গায়ে দিয়ে আমরা চারজন রাতের আকাশের দিকে মুখ করে শুয়ে রইলাম আর তাকিয়ে দেখছি মেঘ আর চন্দ্রিমার লুকোচুরি খেলা ।
এরকম কিছু হলে মিনহাযের মাথায় নানান কিসিমের গল্প আকিবুকি করে । আমরা যেটাকে বলি মেইড বাই নোয়াখালি'জ ।
মিনহাজ তার নিজের লেখা একটা ছোট গল্প বলল । আর যেটাতে নায়ক সে নিজে । অবশ্য এখনকার মিনহায না । এখন থেকে ১০/১৫ বছর পরের মিনহায । এর পর গল্প মোড় নিল ভৌতিক গল্পের দিকে । এবার সবার জীবনের ভোতিক অবিজ্ঞতার বর্ণনা । এরপর উচ্চস্বরে গান ।
কিছুক্ষন পর দেখলাম শাকিল কাপছে ।
- কিরে হালা ডর লাগতাছে না কি ? ডরের কিছু নাই আমরা আছি না ।
- দুর হালা ,ডরামু কেন । শীত লাগতাছে ।
- দাড়া দেখি আগুন জালাতে পারি কিনা ।
আমি আর মিনহাজ গিয়ে কিছু কাঠ , বাশের টুকরা সংগ্রহ করলাম । যার বেশি অংশ ই ছিল সিক্ত আর সিমেন্ট মাখানো । তারপরেও বহু কষ্টে আগুন জালালাম । একটু উষ্ণতার জন্য ।
কিন্তু আমদের বন্ধুত্বের উষ্ণতার কাছে হার মানল জলন্ত আগুনের উষ্ণতা । এভাবেই গল্প-হাঁসি আর গানে রাত কেটে যায় আমদের ।আমি আর আমরা মিশে একাকার হয়ে যাই প্রকৃতির সাথে আমাদের বন্ধুত্বের সাথে । কখনো সন্ধ্যায় চায়ের কাপে , সিগারেটের ধোঁয়ায় , কখনো বিকেলে -মধ্যদুপুরে , নয়ত গভীর রাতের কনকনে শীতে ।
২| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৫
মাসুম রৌদ্র বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৯
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: