নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাবনাকে লালন করি স্বদেশি হাওয়ায়

মাজহার পিন্টু

একজন মানুষ

মাজহার পিন্টু › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বাধীনতার পঞ্চাশে বাংলাদেশের গ্রুপ থিয়েটার : দ্বিকালদর্শীর মূল্যায়ণ

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫৬

লিখতে বসেছি। অনেক চেষ্টার পর। আমি কোনো লেখক নই, তারপরও লিখতে চেষ্টা করছি। প্রিয় নাট্যবন্ধু অভিজিৎদা (অভিজিৎ সেনগুপ্ত) কি মনে করে আমাকে লিখতে বললেন, জানি না। আমিও জেনে শুনে বিষ করেছি পান। আমি যেহেতু কোনো নিয়মিত লেখক নই তাই কোনো প্রবন্ধ বা নিবন্ধ আলোচনা বা সমালোচনার জটিল ব্যাখা বিশ্লেষণ দিতে পারব না। তবে হ্যাঁ, আমার শৈশবকাল থেকেই আমি যেহেতু থিয়েটারের দর্শক সে হিসেবে আমি কিছু স্মৃতিচারণ করতে পারি। স্মৃতির পাতা থেকে আজ অব্দি যা দেখেছি যা জেনেছি যা শুনেছি এবং যা দেখাচ্ছি যা জানাচ্ছি এবং যা শোনাচ্ছি তার কিছু বিবরণ পাঠকের সামনে তুলে ধরব। স্বাধীনতার পরবর্তী বছর ১৯৭২ সাল। এসময় থেকে বাংলা একাডেমিতে মহান ভাষা শহীদদের স্মরণে তিনদিনের একটি অনুষ্ঠান হতো। বইমেলা বলতে তেমন কিছু ছিল না। বাংলা একডেমির গেটের কাছে টেবিল সাজিয়ে বই বিক্রি করতো মুক্তধারা নামের একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। তবে একুশের এ আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রতিদিন বিকাল ৩টায় আলোচনা সভা দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হতো। সন্ধ্যায় শুরু হতো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখার জন্য তখন দর্শক শ্রোতাদের ভেতর চেয়ার দখলের একটা বিষয় ছিলো। কারণ যেহেতু অসংখ্য দর্শক তাই আগে বসলে অনুষ্ঠানটা ভালোভাবে উপভোগ করা যাবে। এছাড়া উপায় ছিল না। বসা নিয়ে মাঝে মাঝে ঝগড়াঝাটিও হতো। যখন গুরুগম্ভীর আলোচনা সভা চলছে তখন থেকেই শুরু হতো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখার জন্য চেয়ার দখল। আলোচনা শুনতে কষ্ট হলেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখার আগ্রহে সে নিরস কথামালা শোনার কষ্ট হজম করতো দর্শক। হবে নাই বা কেনো? তখনকার সব বিখ্যাত শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করতে আসতেন বাংলা একাডেমির একুশের অনুষ্ঠানে। আবদুল আলীম, আবদুল লতিফ, নীনা হামিদ, নিলুফার ইয়াসমীন, আবদুল জব্বার, রথীন্দ্রনাথ রায়, শেখ লুৎফুর রহমান, হরলাল রায় কে নেই সে তালিকায়। তালিকাটা অনেক দীর্ঘ। সংগীতানুষ্ঠানের পর মঞ্চস্থ হতো কোনোদিন যাত্রাপালা, কোনোদিন নাটক বা গীতিনৃত্য নাট্য। দেশবিখ্যাত যাত্রাদল ও যাত্রা শিল্পীরা এখানে যাত্রা পরিবেশন করেছেন। গীতিনৃত্য নাট্য পরিবেশন করতো বাফা, জাগো আর্ট সেন্টার। চিত্রাঙ্গদা, শ্যামা, হাজার তারের বীণা, বেদের মেয়ে ইত্যাদি। আহা! মধুর সেসব স্মৃতি। বাংলা একাডেমির পেছনের দেয়ালের ওপারেই ছিলো আমাদের বাসা। তৎকালীন ইউওটিসি অর্থ্যাৎ ইউনিভার্সিটি অফিসার্স ট্রেনিং কোর্স। বর্তমানে যাকে বলা হয় বিএনসিসি মানে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর্স। আমার মাতৃতুল্য বড় বোন নূর জাহান বেগম। শিল্প সাহিত্যে যার ছিলো অগাধ অনুরাগ। সেসময় তার ঐকান্তিক উৎসাহে আমি গান শিখতে গিয়েছিলাম বাফায়। শিক্ষক ছিলেন ওস্তাদ শাহজামাল ইমনী, ওস্তাদ মোহাম্মদ ফজলুল হক প্রমুখ। আপা নিজেও গান শিখতেন কলেজে। ওস্তাদ সুধীন দাশগুপ্তের কাছে। বদরুন্নেছা কলেজে তখন তার সহপাঠী ছিলেন শেখ রেহানা, আবদুল কুদ্দুস মাখনের মেয়ে, নুরে আলম সিদ্দিকীর ভাতিজী, ঢাকার তৎকালীন এসপির মেয়ে প্রমুখ। যাইহোক তারই উৎসাহে আমরা গোটা পরিবার সেসময় বাংলা একাডেমিতে যেতাম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে। ফেব্রুয়ারির ওই কয়দিন আমাদের কাছে ছিল উৎসবের মত। একুশে ফেব্রুয়ারি ভোরে আমরা যেতাম শহীদ মিনারে প্রভাতফেরীতে। লোকে লোকারণ্য থাকতো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। একটা ব্যাপার খুব ভালো লাগতো আমার। তরুনরা রাস্তায় একুশের ব্যাজ, একুশ ও স্বাধীনতা বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের সংকলন নিজস্ব উদ্যোগে তৈরী করে বিক্রি করতো নামমাত্র মূল্যে। বিশেষ করে শহীদ মিনার ও বাংলা একাডেমির আশেপাশে তাদের বিচরণ ছিলো। একুশের সকাল থেকেই বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠান শুরু হতো। প্রথমে ছিল কবিদের স্বকন্ঠে কবিতা পাঠ। এরপর শিশু কিশোরদের আবৃতি প্রতিযোগিতা। বিকেলে আলোচনা সভা, সংগীতানুষ্ঠান। অংশ নিত দেশবরেণ্য সংগীত শিল্পীরা এবং সবশেষে সেদিনের বিশেষ আকর্ষণ মঞ্চনাটক। সম্ভবত সালটা ছিলো ১৯৭৪। বাংলা একাডেমির মঞ্চে প্রথম নাটক দেখলাম আমরা আরণ্যকের ওরা কদম আলী। যদিও বয়স অনেক কম ছিলো বলে নাটকের সবটাই বুঝিনি। এভাবেই পরবর্তী বছরগুলোতে দেখলাম পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়, মুনতাসির ফ্যান্টাসি ইত্যাদি। পশ্চিমবঙ্গ থেকে সেসময় এই আয়োজনে এসেছিলো বিখ্যাত নাট্যদল থিয়েটার ওয়ার্কশপ। তাদের চাক ভাঙা মধু নিয়ে। দেখেছি তৃপ্তি মিত্রের একক অভিনয়। সেই শুরু আমার মঞ্চনাটক দেখার। অবশ্য তারও আগে সম্ভবত ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃহল নাট্য প্রতিযোগিতা দেখেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে। সেখানে একটি নাটকে শেখ কামালের অভিনয় দেখেছি। উনিই আমাদের দুই ভাই অর্থাৎ আমি এবং আমার বড় ভাই মন্টুকে প্রতিদিন নাটক দেখতে নিয়ে যেতেন। উনি ইউওটিসিতে আসলেই আমাদের খুঁজতেন। আমাদের সাথে নানারকম দুস্টামি করতেন। আসলে তিনি ছিলেন একজন প্রাণখোলা মানুষ। কখনো কখনো নাটকের মহড়ায় নিয়ে যেতেন। পরিচয় কিভাবে? আমার বাবা ছিলেন ইউওটিসির ইনচার্য। সেখানে দুটো অস্ত্রাগার ছিলো যা ইউওটিসির ক্যাডেটদের ট্রেনিংয়ের জন্য কাজে লাগতো। প্রতিদিনই অস্ত্রগুলো পরিষ্কার করে রাখা হতো। তার ভেতর আসল এবং ডামি দু ধরণেরই নানারকম অস্ত্রশস্ত্র ছিলো। স্বাধীনতার পর বিভিন্ন নাটক সিনেমায় তখন এখান থেকে নির্মাতারা অস্ত্র নিয়ে কাজ করতো। সে সময়ের বিনোদন জগতের অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিরা আসতেন এ ব্যাপারে কথা বলতে। সেই সূত্র ধরেই আমরা শেখ কামালের আদর এবং স্নেহ পেয়েছি। একটি নাটকে শেখ কামাল পাকিস্তানি মেজরের ভুমিকায় অনবদ্য অভিনয় করেছিলেন। নাটকে শুধু তাঁর স্মৃতিটুকুই মনে আছে। তাঁকে দেখেছি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিজন ভট্টাচার্যের ‘নবান্ন’ নাটকে অভিনয় করতে। একদিন বিকেলবেলা ইউওটিসির সামনের রাস্তায়ও নাটকটির একটি প্রদর্শনী হয়েছিল। উৎসবমুখর ছিলো সেসময়ের দিনগুলো। ১৯৭৫, ৭৬, ৭৭ সালে আর নাটকের তেমন কিছু চোখে পড়েনি। মুজিব হত্যার পর সংস্কৃতিরও দৃশ্যপট যেন পাল্টে যায়। যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, খেলাধুলা, নাট্য প্রতিযোগিতা হতো। হঠাৎ করেই যেন সব বন্ধ হয়ে যায়। চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে তখন সর্বত্র। মানুষের ভেতরেও যেন সে অস্থিরতা কাজ করছিলো। নাটকের কথা তখন মনেও ছিল না। ১৯৭৮ সাল। আমি তখন নীলক্ষেত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। একদিন দুপুরে স্কুল থেকে ফেরার পথে কলাভবনের আমতলায় জটলা দেখে এগিয়ে গেলাম। দেখি নাটকের প্রদর্শনী হচ্ছে। প্রাণবন্ত সবার অভিনয়। ব্যানারে লেখা ‘ক্ষ্যাপা পাগলার প্যাচাল’। পরিবেশনায় পদাতিক। দর্শকরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্রছাত্রী। পরে জেনেছি নিজের লেখা ওই নাটকে পাগলের চরিত্রটি করেছিলেন শ্রদ্ধেয় নাট্যজন এস এম সোলায়মান। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রথম নাটক দেখা। একই বছর আরেকদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে টিএসসির সড়কদ্বীপে লোকজনের ভীড় দেখে এগিয়ে গেলাম। নাটক চলছে। পেছনে ব্যানারে বড় করে লেখা ‘চর কাঁকড়ার ডকুমেন্টারি’ পরিবেশন করছে ঢাকা থিয়েটার। তখন এই নাটকগুলি পথনাটক না মুক্ত নাটক এসব বিষয় জানা নেই। এই নাটকের দর্শক ছিল নানান শ্রেণীর। সবাই বেশ উপভোগ করছিলো নাটক। এখানে বেশ কয়েকজন মুখচেনা অভিনেতাকে দেখেছি যারা শেখ কামালের সাথে অভিনয় করেছিল। ১৯৭৯ সালে পরিবারের সবাই মিলে আমরা মঞ্চনাটক দেখতে যাই বেইলি রোডের মহিলা সমিতি মঞ্চে। সেই প্রথম টিকিট কেটে মঞ্চে নাটক দেখা। নাটকের নাম ছিলো ‘সেনাপতি’। রচনা, পরিচালনা ও প্রধান ভূমিকায় ছিলেন আবদুল্লাহ আল মামুন। ভালো লেগেছিল নাটকটি। এরপর নাটক দেখেছি নাগরিকের বাকী ইতিহাস। পারিবারিক নানা উত্থান পতনের কারণে ৮০ থেকে ৮৩ সাল পর্যন্ত নাটক দেখা থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলাম। ততদিনে বেশ কিছু নতুন নাটকের দলও তৈরি হয়ে গেছে। সবাই বলে গ্রুপ থিয়েটার আমি তখনও শুধু নাটক বুঝি। নাটক করে সবাই টাকা পায় এটাই আমরা জানি। কিন্তু আমি তখনো বুঝি না গ্রুপ থিয়েটার বিষয়টা কি? নাটক করতে গেলে একটা গ্রুপ তো লাগবেই। এটা বুঝতে আমাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত। ১৯৮৩ সালে আমার শ্রদ্ধেয় বড় ভাই সাংবাদিক আনোয়ার ফরিদী এবং তার বন্ধুরা একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের আদর্শের ছায়ায় একটি সংগঠন করলো ‘গণছায়া’ নামে। এই দলের প্রথম প্রযোজনা আমরা দেখতে গেলাম গাইড হাউস মিলনায়তনে। সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ রচিত ‘তরঙ্গভঙ্গ’ নাটকের। নির্দেশনায় ছিলেন আবদুল গণি খোকন। যিনি পরবর্তীতে ছিলেন আমার নাট্যগুরু। ১৯৮১ সনে আমার ১১ বছর বয়সে বাবা এবং মা দু’জনেই প্রয়াত হয়েছেন। সংসারের হাল তখন বড় বোনের হাতে। আমরা তখর রাজপ্রাসাদ থেকে কুঁড়েঘরে। কঠিন জীবন সংগ্রামের ভেতর দিয়ে চলেও নাটকের মায়া আমরা ছাড়তে পারিনি। তবে কখনো ভাবিনি নাটকের সাথে যুক্ত হবো। পড়াশোনা করি কাজ করি। এই হলো আমার জীবনযাত্রা। ১৯৮৪ সালে গণছায়ার একটি শাখা গঠিত হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিববাড়ি এলাকায়। স্টাফদের ছেলেমেয়েরা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রছাত্রী যুক্ত ছিলো এর সাথে। আহবায়ক ছিলেন আমার মেজ ভাই সাংবাদিক মনজুরুল হক। প্রতিদিন সন্ধ্যায় স্টাফ কোয়ার্টারের ছাদে মহড়া হতো। আমি কাজ শেষে প্রতিদিন মহড়া দেখতে যেতাম। তারা তখন গোলাম আম্বিয়া নূরীর ‘কুমার খালির চর’ নাটকের মহড়া করছে। মঞ্চনাটক তবে প্রথম কয়েকটি প্রদর্শনী হয়েছিলো পথনাটক হিসেবে। বামপন্থী রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে গঠিত সংগঠন দেশপ্রেমিক স্মৃতি সংসদের আহবানে। ‘ কুমার খালির চর’ নাটকটিতে অনেকগুলো চরিত্র ছিলো। প্রদর্শনীর দুদিন আগে মহড়ার শেষ পর্যায়ে একটি চরিত্রে লোক সংকট দেখা দিলো। নির্দেশক আবদুল গণি খোকন ভাই হঠাৎ আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, আপনি করেন চরিত্রটি। বিব্রতকর একটি মূহুর্ত আমার জন্য। খোকন ভাইয়ের তাকানো দেখলে এমনিতেই বুক কেঁপে উঠতো এমন তীব্র তার চাহনী। সেই লোক বলছে আমাকে অভিনয় করতে। যে আমি কিনা নাটকের, অভিনয়ের কিছুই জানি না। ওখানে আমিই ছিলাম সর্বকনিষ্ঠ। সবাই বলল পিন্টু তুমি করো। ভয় নেই আমরা আছি। জমি মাপার আমিনের চরিত্র। একটি মাত্র সংলাপটি হলো- ‘যা করার চেয়ারম্যান সাব করবো। আমি তো উসিলা খালি।’ জীবনের প্রথম অভিনয় জিপিওর সামনে দেশপ্রেমিক স্মৃতি সংসদের জনসভায়। হাজার হাজার দর্শক, সকল বাম নেতারা সেখানে উপস্থিত। নাটক শেষে হাজার মানুষের করতালি বলে দেয় একটি সফল প্রদর্শনী। ব্যস, সেই যুক্ত হলাম গ্রুপ থিয়েটারের সাথে। অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজো চলেছে নাট্যযাত্রা। গণছায়া ছিলো একটি রাজনৈতিক আদর্শভিত্তিক সংগঠন। মেহনতী মানুষের মুক্তির সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যাবার প্রত্যয়ে সচেষ্ট একটি বামঘেঁষা সাংস্কৃতিক সংগঠন। এ সংগঠনের প্রতিটি নাটকই ছিলো শ্রমজীবী মানুষের জীবন সংগ্রামকে উপজীব্য করে। আবদুল গণি খোকন। আমাদের প্রিয় নাট্যগুরু একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক, একজন দক্ষ নাট্য নির্দেশক। বিশ্ব নাটকের ইতিহাসে তার ছিলো অগাধ জ্ঞান। তার প্রতিটি নির্দেশনা ছিলো নিরীক্ষাধর্মী ও ব্যতিক্রমী। তিনি প্রথম জীবনে জাসদের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন পরবর্তীতে রাজনীতি ছেড়ে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে যুক্ত হন। সময় ও মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। দল নয় নাটককে ভালোবেসেই খোকন ভাইয়ের সাথে সহকারি হিসেবে কাজ করেছি সুবচন. মহাকাল, মহানগরী ’৭৭সহ বেশ কিছু নাট্যদলে। আমার এই শ্রদ্ধেয় গুরুর কাছ থেকেই জেনেছি গ্রুপ থিয়েটার আন্দোলনের ইতিহাস, বাংলাদেশে এর সূচনা, বিকাশ। রুশ সাহিত্যিক গোগোল জীবনঘনিষ্ঠ নাট্যচর্চার ক্ষেত্রে প্রথম গ্রুপ থিয়েটারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন, আর এর সফল বাস্তবায়ন ঘটে স্তানিস্লাভস্কির মাধ্যমে। বিশ শতকের প্রথম দিকে তাঁর প্রচেষ্টায় গঠিত ‘আর্ট থিয়েটার’ গোষ্ঠী নাট্য আন্দোলনে বিরাট পরিবর্তন আনে। একসময় ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও এর প্রভাব বিস্তৃত হয়। বিশ থেকে চল্লিশের দশকে যুক্তরাষ্ট্রে এলিয়া কাজানের ‘দি গ্রুপ থিয়েটার’, লন্ডনের ‘ইউনিটি থিয়েটার’ এবং ফ্রান্সের ‘ক্যাম্পেন ডি কুইজঁ’ নাট্যজগতে নবজাগরণের সৃষ্টি করে। গ্রুপ থিয়েটার আন্দোলনের মূল বৈশিষ্ট্য ছিল নাটক রচনা, প্রযোজনা, নির্দেশনা, অভিনয়, মঞ্চসজ্জা, রূপসজ্জা ও সংগঠন তৎপরতায় প্রতিটি সদস্যের অংশগ্রহণের সার্থক বাস্তবায়ন। বাংলাদেশের গ্রুপ থিয়েটার ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে ওঠা একটি সংঘবদ্ধ নাট্যআন্দোলন। তৎকালীন শিক্ষিত ও সচেতন সংস্কৃতিকর্মী এবং কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের উদ্যোগে এটি গড়ে ওঠে। তাঁরা নাটকের বিষয়বস্তু, বক্তব্য, উপস্থাপনা ও অভিনয়রীতি এবং আঙ্গিকগত পরিবর্তন ঘটিয়ে নাটককে করে তোলেন সমাজ ও জীবনঘনিষ্ঠ। গ্রুপ থিয়েটার দেশের নাটকের ইতিহাসে এক নতুন মাত্রা যোগ করে এবং লাভ করে সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি। ফলে নাটক হয়ে ওঠে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও জাগরণের মাধ্যম। এ ধারার সম্প্রসারণ ঘটে স্বাধীনতাত্তোর পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক কয়েকটি নাট্যগোষ্ঠীর কর্মকান্ডে। এই উপমহাদেশে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে আদর্শভিত্তিক নাট্য সংগঠনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রয়েছে। যার প্রথম উপস্থাপন ১৯৪৩ সালে অবিভক্ত ভারতবর্ষে ভারতীয় গণনাট্য সংঘের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। ভারতীয় উপমহাদেশে গ্রুপ থিয়েটার ধারণার জন্ম হয় চল্লিশের দশকে ‘ভারতীয় গণনাট্য সংঘ’-এর (আইপিটিএ) মাধ্যমে। এ সময় কলকাতায় নবধারায় রচিত ও মঞ্চস্থ নবান্ন, ছেঁড়া তার, উলুখাগড়া নাটক দর্শকচিত্তে আলোড়ন সৃষ্টি করে। চল্লিশের দশকের শুরুতে এক টালমাটাল পরিস্থিতিতে ভারতীয় গণনাট্য সংঘের জন্ম। ‘জবানবন্দী’, ‘হোমিওপ্যাথি’, ‘ল্যাবরেটরী’, বা ‘আগুন’ ইত্যাদি একাংক নাটক অভিনয়ের মধ্য দিয়ে যার সূচনা, নানা গান ও নাচের আয়োজনের পাশাপাশি সংঘের নাট্যদলের ‘নবান্ন’ নাটক প্রযোজনার মধ্য দিয়ে স্থাপিত হলো ইতিহাস। ১৯৪৪ সালের ২৪ অক্টোবর ভারতীয় গণনাট্য সংঘের প্রযোজনায় শ্রীরঙ্গম (বর্তমানে বিশ্বরূপা) রঙ্গমঞ্চে বিজন ভট্টাচার্যের লেখা ‘নবান্ন’ নাটক প্রদর্শনীর মধ্যে দিয়েই এই আন্দোলনের ভিত রচিত। নাটকের এই সাফল্য থেকেই গণনাট্য আন্দোলন বিশেষভাবে বিকশিত হয়ে উঠতে থাকে। বাংলা নাটকের ইতিহাসে গণণাট্য বা নবনাট্য আন্দোলন একদিনে গড়ে ওঠেনি। বাংলার সামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসের নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যুগান্তকারী নানা ঘটনা-সংঘাতের ধারাবাহিকতাকে তিল তিল করে সঞ্চিত করে তবেই এই আন্দোলনের উৎপত্তি হয়েছে। ভারতীয় গণনাট্য সংঘের নানাবিধ উদ্দেশ্যের মধ্যে নাটক ও মঞ্চের লক্ষ্য হিসেবে বলা হয়েছিলো যে, তৎকালীন বিশ্বপরিস্থিতির পটভূমিকায় নাট্যের মাধ্যমে মানুষের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি, শোষণের বিরুদ্ধে শৈল্পিক প্রতিবাদ। এ কারণেই গণনাট্য আন্দোলন ‘শিল্পের জন্য শিল্প’ এই নীতি দ্বারা পরিচালিত নয়; ‘জীবনের জন্য শিল্প’ এই নীতিতেই পুরোপুরি বিশ্বাসী ছিলেন গণনাট্য আন্দোলনকারীরা। উপযোগবাদী এই নাট্যকারগণ সর্বতভাবে চেষ্টা করেছিলেন, এই জীবনকে কীভাবে হতাশা-বঞ্চনা, দুঃখ-দুর্দশা ও পরাজয়ের পথ থেকে মুক্ত করে একটি সুস্থ সমাজবাদী অর্থনৈতিক অবস্থায় উত্তীর্ণ হওয়া যায়। ‘গণনাট্য-আন্দোলন’ শব্দটি একটি বিশেষ সময়ের সন্ধিক্ষণের দলিল। যখন বাংলা নাট্যমঞ্চের পরিবেশের গতানুগতিকতা বিস্তৃত হয়ে পড়েছিলো সেই মুমূর্ষু নাট্যাঙ্গনে একরাশ তাজা বাতাসের সুগন্ধ নিয়ে এসেছিলো এই আন্দোলন। পঞ্চাশের দশকে ঢাকাতেও গ্রুপ থিয়েটার চর্চার সূচনা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক শিক্ষিত তরুণরা ১৯৫৬ সালে গঠন করেন ড্রামা সার্কল। কিন্তু নানা প্রতিকুলতায় কারণে সে দল বেশিদুর আগায়নি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি পেল সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত প্রেক্ষাপট, মুক্ত সংস্কৃতি চর্চার একটি অনুকুল পরিবেশ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে স্বাধীন বাংলাদেশের নাট্যকর্মীরা এগিয়ে এলো সর্বাগ্রে। মৌসুমী নাট্যচর্চার আবর্তন ছেড়ে নাট্যকর্মীরা এবার নিয়মিত নাট্যচর্চায় এগিয়ে এলেন। নাট্যচর্চার এই আন্দোলনে যুক্ত হতে লাগল সচেতন তরুণ ছাত্রসমাজ। মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা অর্জনের অভিজ্ঞতায় নাট্যরচনা এবং মঞ্চায়ন সুস্পষ্ট বক্তব্যের দিকে মোড় নিলো। তরুণরা স্বপ্ন দেখলো জীবন বদলের, সমাজ বদলের। নাটক হয়ে উঠলো সমাজের প্রতিচ্ছবি, তরুণ নাট্যকর্মীরাও নাটকের প্রতি অনেক বেশি দায়বদ্ধ হয়ে উঠলো। নতুন দেশের, নতুন কালের এই নাট্য জোয়ারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করলো - নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়, আরণ্যক নাট্যদল, থিয়েটার, নাট্যচক্র, ঢাকা থিয়েটার, বহুবচনসহ বেশ কিছু নাট্যদল। নব্বই এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সূচনা হয় ১৯৮২ সালের ২৪শে মার্চ যখন তৎকালীন সেনাপ্রধান লেঃ জেঃ হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অবৈধভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেই সামরিক আইন জারি করেন । সেই সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ করে ছাত্ররা এবং সাংস্কৃতিক কর্মীরা। বিশেষ করে নাট্যদলগুলো সরব ছিলো এই আন্দোলনে। সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য এর আন্দোলনের সাথে দেশের জনগণ সম্পৃক্ত হলে তা গণ আন্দোলন থেকে গণ অভ্যুত্থানে রুপ নেয় । সেই গণ অভ্যুত্থানে জেনারেল এরশাদ ৪ ডিসেম্বর পদত্যাগের ঘোষণা দেন এবং ৬ই ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন । দীর্ঘ ৯ বৎসর পরিচালিত আন্দোলন ১৯৯০ এ এসে গণ আন্দোলনের রূপ নেয়। সেই গণ আন্দোলনে এরশাদ পদত্যাগ করেছিল । ইতিহাসে তা ৯০'র আন্দোলন হিসেবে পরিচিত। ১৯৯০ এর আন্দোলনের সফল সমাপ্তি ঘটেছিল মূলত ছাত্রনেতাদের দৃঢ়তায়। ‘৮৩ থেকে ’৯০ সারাদেশে স্বৈরাচার বিরোধী পথনাটক করে গেছে নাট্যদলগুলো। অসংখ্য পথনাটক হয়েছে সেসময়। ১৯৭২ থেকে ৯০ বেগবান ছিলো গ্রুপ থিয়েটার আন্দোলন। আদর্শগত ভাবনা, বিভিন্ন দলের কর্মীদের আন্তরিক সম্পর্ক থিয়েটারকে এগিয়ে নিয়ে গেছে বহুদুর। ৯০ পরবর্তী সময়ে থিয়েটার আন্দোলনে ভাটা পড়ে। আন্দোলন পরিণত হয় চর্চায়। থিয়েটার তার পথ হারিয়ে অন্ধগলিতে ঢুকে পড়ে। রুটি রোজগারের ধান্দায় ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো কর্মীরা ব্যস্ত হয়ে পড়ে অন্যান্য পেশায়। কিন্তু থিয়েটারের আর পেশাদারিত্বে উন্নয়ন ঘটে না। ঘুরপাক খেতে থাকে একই গতিতে। থিটোরের সামগ্রিক উন্নয়ন ভাবনার পরিকল্পনা নিয়ে কেউ আর এগিয়ে আসে না। ছায়া সংগঠন গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের কাজ হয়ে দাঁড়ায় হল বরাদ্দ আর বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক অনুষ্ঠান আয়োজন। দিকভ্রান্ত থিয়েটার এখনো ঘুরপাক খাচ্ছে একই বলয়ে আর আমরা হাততালি দিচ্ছি নাটক অনেকদুর এগিয়েছে বলে। বস্তুত স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে মঞ্চনাটকের আসলেই কি কোনো উন্নয়ন হয়েছে? এখন নাট্যজনদের আত্মবিশ্লেষণ খুবই জরুরী। বলতেই পারেন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বিকাশ মঞ্চনাটককে অনেকখানিই পিছিয়ে দিয়েছে। সবাই ছুটছে সেদিকে। আসলে আমাদের দেশের কোনো বিনোদন মাধ্যমই পেশাদারিত্বে উন্নীত হতে পারেনি। পেশাদার হবার বিচ্ছিন্ন উদ্যোগ আছে কিন্ত সমন্বয় করার কেউ নেই। কোনো মাধ্যমে কাজ করার মত দক্ষ জনগোষ্ঠী নেই। সবাই সৌখিন। এখনও সখের বশে সময় কাটে। নেই কোনো সঠিক নেতৃত্ব। আদর্শের বুলি আউড়ে নাট্য অগ্রজরা এমন সব মানুষের হাতে নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন যাদের আখের গোছানোর বুদ্ধি থাকলেও দিন বদলের ডাক দেবার মত মেধা নেই। কিছু বিক্ষিপ্ত কথা। কিছু প্রশ্ন- # নাট্যদলের সংখ্যা বেড়েছে কিন্তু সেই সঙ্গে প্রযোজনার মান কি বেড়েছে? # পেশাদার নাট্যদল বা শিল্পী কেন তৈরি হয় না? # গ্রুপ থিয়েটারের ভবিষ্যৎ কি? # পেশাদার নাট্যমঞ্চ কি তৈরি করা সম্ভব নয়? # নাট্যকর্মীরা সরকারি অনুদান পেতে যত আগ্রহী কিন্তু পেশাদার হতে তত আগ্রহী নয় কেন? # পেশাদার হবার সংগ্রামে নাট্যকর্মীরা নেই কেন? আমাদের এখানে যারা গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের নেতা তারাই আবার পথনাটক পরিষদ, টেলিভিশন, সিনেমা শিল্পী সমিতি, নাট্যকার, পরিচালক সমিতির নেতা। এতে নেতৃত্ব কতটা সফলতা আনতে পারে। আপনি যখন একজন সন্তানকেই ঠিক মত খাওয়াতে পারেন না আবার এতগুলি সন্তানকে কিভাবে লালনপালন করবেন। পদ-পদবী ও আত্মপ্রচারে অনেকেই মূল কাজটি থেকে বিচ্যুত হন। আবার এমন নাট্যকর্মীও দেখা যায় যে, সে না পারে নাচতে, না পারে গাইতে, না পারে বাজাতে, না পারে লিখতে, তবুও সে নেতা, সে নির্দেশক, সে সংগঠক, সবকিছু আবার কঠোর অনুশীলনে আজকাল যুবসমাজের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। স্বল্প সময়, সহজে, কম পরিশ্রমে সবকিছু। পেতে চায় সবাই। এর প্রভাব পড়েছে শিল্প-সংস্কৃতিতে। নাটক যেহেতু একটি যৌগিক শিল্প, এখানে একজন অভিনেতার বা কলাকুশলীর সার্বিক প্রস্তুতির প্রয়োজন, নিয়মিত অনুশীলন প্রয়োজন, পড়াশুনা করে বিচিত্র জ্ঞান আহরণ প্রয়োজন। এত সময় এখনকার ছেলে-মেয়েদের হাতে নেই। তাই যারা বিভিন্ন দলে ভিড়ছে, তাদের একটি বড় অংশ কিছুদিন পর এ পথ কঠিন দেখে ফিরে যাচ্ছে। হায় সেলুকাস! কি বিচিত্র এই দেশ! বছরকুড়ি আগে আমি একটি পাক্ষিক ম্যাগাজিনের কভারস্টোরি করার জন্য ১৭ জন নাট্যজনের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। তার কিছু কিছু পরবর্তীতে মানবজমিন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এদের ভেতর একজন ছিলেন নাট্যজন আতাউর রহমান। সবার কাছে করা প্রশ্নটি তাকেও করলাম। আমাদের নাট্য জগতে এমন একজন মানুষের নাম বলুন যিনি অনুসরণীয়। ওপার বাংলায় যেমন আছেন বিজন ভট্টাচার্য, উৎপল দত্ত, শম্ভু মিত্র, তুপ্তি মিত্র, অজিতেশ বন্দোপাধ্যায় প্রমুখ। তিনি কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর বললেনÑ নেই, আমাদের এখানে অনুসরণীয় কেউ নেই। আপনারা তাহলে কি? আমরা হলাম পার্টটাইম থিয়েটার করা মানুষ। বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকি জীবনজীবিকার সংগ্রামে। তাঁর এই অকপট স্বীকারোক্তি ভালো লেগেছিল। আজ তারা অনেকেই পদ এবং পদবীধারী। আর নাবিকহারা থিয়েটার এগিয়ে চলেছে তার নিজস্ব গতিতে। কোথায় গিয়ে ঠেকবে তরী কে জানে। দর্শনীর বিনিময়ে নাটক, ১৯৭২ সালের এই শ্লোগান এই পঞ্চাশ বছরে কতটা সফলতা পেয়েছে সেটা ভাববার বিষয়। আর এখন করোনা এসে তো আরো সব এলোমেলো করে দিয়ে গেছে। ভবিষ্যত অনিশ্চিত।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.