| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হায়রে পরিবেশ। হায় উন্নতি। গত তিন দশকে আমাদের বন বনানী ধ্বংস হয়েছে অগুনতি। পাহাড় ধসে পড়েছে। নদীর পর নদীর পথ জুড়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। তাতে কী! রাস্তা হচ্ছে। কিছুদিন আগে গাজীপুরের এক তরুণ কলেজ শিক্ষকের সাথে কথা হলো। তিনি বললেন “আমাদের এখানে কিছুদিন আগেও খুব জঙ্গল ছিল, পাহাড় ছিল। বেশি গরম লাগতো না। এখন জঙ্গল নেই, উন্নয়নের জোয়ারে পাহাড়ও কেটে নিয়ে গেছে ব্লাস্টিং করে। চারদিকে এখন খোলা খাদান। খুব গরম।” এখন আর পাহাড় নেই, জঙ্গলও না। পাহাড়গুলো ভেঙে ‘গিট্টি’ বানানো হয়েছে, শহরে বাড়ি বাড়ছে। শালবন হয়েছে শিল্পাঞ্চল। দু’টি বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থার সৌজন্যে গাছ আর ঝোপঝাড় মিলিয়ে কাটা পড়েছে কয়েক লক্ষ। এখন গাছ নেই, আকাশ থেকে ঝরাপাতার মতো মাঝে মাঝেই ঝরে পড়ে পাখিরা। রোদের তাপ ঝরছে আকাশ থেকে। ঘাস পুড়ছে, মাটি পুড়ছে। রাস্তার পিচ আর কংক্রিট গলে যাচ্ছে। কোনও আড়াল নেই মাঝখানে। একটু গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে বুঝা যাবে যে বাংলাদেশের প্রকৃতি ও পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। গত ২০ বছরে বাংলাদশে প্রায় ৯০ লাখ লোক নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার ২০১৮ সালের ২০ জানুয়ারি সংখ্যার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে শুঙ্ক মৌসুমের শুরুতে বাংলাদেশের প্রধান প্রধান নদীগুলোর পানির উচ্চতা আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পাওয়ায় নৌ চলাচল, সেচ ও মৎস্য উৎপাদনে কঠিন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। নদীর গভীরতা হ্রাস পাওয়ায় বর্ষাকালে বন্যার তীব্রতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশে বন উজাড়করণের হার দক্ষিণ-র্পূব এশিয়ার যে কোনো দেশের তুলনায় অনেক বেশি। এই বন উজাড়করণের ফল খুবই মারাত্মক। কেননা এর ফলে বৃষ্টিপাত কমছে। ভূমিধ্বস বাড়ে মাটির নিচের পানির স্তর নেমে যাচ্ছে, মাটির পানিধারণ ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে, উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে যানবাহন থেকে নিসৃত কালো ধােঁয়ায় বায়ুদূষণের মাত্রা আংশকাজনক পর্যায়ে পৗেঁছেছে। পলিথিন ব্যাগের ব্যবহারও ভয়াবহ হয়ে উঠছে।

©somewhere in net ltd.