নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাবনাকে লালন করি স্বদেশি হাওয়ায়

মাজহার পিন্টু

একজন মানুষ

মাজহার পিন্টু › বিস্তারিত পোস্টঃ

তবে, ইতিহাস অন্য

২১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:১২

প থ না ট ক
তবে, ইতিহাস অন্য


তবে, ইতিহাস অন্য.................
বাঙালি ইতিহাস বিমুখ।
কেউ আগ্রহ নিয়ে ইতিহাস
পড়তে চায় না এবং ইতিহাস জানেও না।
এ প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা অপাঠ্য পাঠ্য বইয়ের ভারে ন্যুব্জ।
নিজের শিকড়ের সাথে যে জাতির সম্পর্ক নেই
সে জাতির ধ্বংস নিশ্চিত। তাই নিজস্ব সংস্কৃতি
ইতিহাস ঐতিহ্য ও গুণীজনদের সম্পর্কে চর্চা
করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান।




চ রি ত্র লি পি.....................

কামাল: ..............................
সগীর : ..............................
মায়া : ..............................
আকবর: ..............................

চায়ের দোকান। কয়েকজন প্যাচাল নিয়ে ব্যস্ত।
কামাল : শালার মোকসেদ চা পাতা আর পাল্টাইলো না। যেই চা পাতা দেয় তাতে হালার মুতের গন্ধ কয়। বাঙালি চা বানান শিখলো না।
এর মধ্যে সগীর চিৎকার করতে করতে আসে।
কামাল:কিরে সগীর কি হইছে?
সগীর :শালার চা বানায় না পানি বানায়। আবার কয় এইগুলিই খাইতে হইব। কেন পয়সা কি তর বাপের ঘর থিকা আনি। এমনেই দিনকাল ভালো না। তা তোমার কি খবর কামাল ভাই। দিনকাল কেমন বুজতাছো? এইবার তো দাও মারবা।
কামাল:নারে, খুব খারাপ। ধান্দা মুশকিল হইয়া যাইতাছে। দল পাল্টাইতে হইব। বড় পেরেশানিতে আছি।
এসময় মায়া আসে।
মায়া:আরে কামাল ভাই তোমাগো লিডারই তো ঠিক নাই। তারা নিজের আখের গোছাইতেই ব্যস্ত।
এসময় ব্যাগ কাঁধে আকবর এসে ওদের কথা শোনে।
কামাল:ভাইরে, রাজনীতিই তো নষ্ট হইয়া গেছে। কারে কি কইবা।
সগীর :রাজনীতি নষ্ট হয় নাই। কও মানুষ নষ্ট হইয়া গেছে।
কামাল:এইবার হাইরা গেলে আর পলিটিক্সে নাই আমি। ধান্দা নাই তো কিছু নাই। বাচুম কি হাওয়া খাইয়া।
সগীর :এই তো বাঙালির দোষ। আমাগো কোনো ধৈয্য সহ্য নাই। পাবলিক সব নগদ নগদ চায়।
কামাল:ইতিহাস বড় খারাপ।
আকবর:ঠিক বলছেন ভাই। একদম সত্য কথা। ইতিহাস। এই উপমহাদেশের ইতিহাস বড় ঘুরাইন্যা প্যাচাইন্যা। আচ্ছা বলেন তো পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ কি?
সবাই এ ওর দিকে তাকায়। কেউ মাথা চুলকায়।
আকবর:হা হা হা পলাশীর প্রান্তরে সেদিন নবাব সিরাজদ্দৌলার সৈন্য ছিলো অনেক অনেক। অন্যদিকে লর্ড ক্লাইভের অল্পসংখ্যক সৈন্য থাকা সত্ত্বেও নবাব পরাজিত হইছিলেন।
কামাল : হ্যাহ্, এই কাহিনী তো আমরা সবাই জানি। এর পিছনে কি ছিলো কে ছিলো তা তো সবাই জানে।
সগীর : হ্যাঁ, সেইদিন নবাব সিরাজদ্দৌলার কাছের মানুষ জগৎ শেঠ, মীর জাফরদের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে নবাব পরাজিত হইছিলেন।
মায়া:হ্যাঁ, সাথে ঘষেটি বেগম আর আত্মীয়স্বজনরাও ছিলো। এই ইতিহাস কে না জানে। কি যে কন না ভাই। বড় গাদ্দার তো মীর জাফর।
কামাল:আরে এই কারণেই তো কেউ গাদ্দারি করলে মানুষ তারে মীর জাফর কইয়া ডাকে। ব্যাটা মীর জাফর। হা হা হা।
আকবর:কিন্তু ভায়েরা, বাঙালির ইতিহাস বিমুখ জাতি হিসাবে খুব নাম আছে। আগের দিন কি ঘটছে পরের দিন তা ভুইলা যায়। পলাশীর এই ইতিহাস সবটাই সত্য না। সত্য ইতিহাস জানতে হবে। সেই সত্য না জানলে ইতিহাসই বৃথা।
সগীর :সত্য ইতিহাস?
কামাল:সত্য ইতিহাস?
মায়া:তাইলে ভাইজান সত্য ইতিহাসটা কী?
আকবর:এই তো আসছেন লাইনে। ইতিহাস জানতে হবে। সেই সত্য ইতিহাস আজ আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। সেইদিন লর্ড ক্লাইভ দুরবীন দিয়ে নবাবের সৈন্যদের গতিবিধি লক্ষ করছিলেন। পলাশীর আমবাগান তখন শুন্য। মীর জাফর তখন নবাবের বহর থেকে তার অনুগত সৈন্যদের নিয়ে সরে পড়েছে। ক্লাইভ তো অবাক। কোথায় গেলো নবাবের সৈন্যরা। কোথাও কেউ নেই।
কামাল : নবাবের সৈন্যরা তাইলে গেলো কই?
মায়া : নিশ্চয়ই তারা কোনো চাল চেলেছে।
আকবর : ম্যাডাম আপনার বুদ্ধি আছে। ঠিক বলেছেন তারা চাল চেলেছে। কিন্তু ক্লাইভ তখনো দুরবীন দিয়ে ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করছে।
সগীর : কিন্তু কিছুই পাইল না। কঠিন চাল ঠিক কিনা?
আকবর : ঠিক ঠিক। কিন্তু হঠাৎ ক্লাইভের নজর পড়ল আমগাছের দিকে। ব্যাটা ব্রিটিশ দুরবীন তাক কইরা তাকাইয়া রইলো।
কামাল : আচ্ছা! তারপর?
আকবর : গাছের একটা ডাল নইড়া উঠলো। তারপর আরেকটা তারপর আরেকটা। তারপর আরেকটা। একের পর এক।
মায়া : তারপর?
আকবর : ক্লাইভ এইবার বুঝলো যে, নবাবের সৈন্যরা আমগাছের ডালে ডালে পাতার আড়ালে বইসা আছে। বুঝলেন নাকি বিষয়টা।
সগীর : তারপর?
আকবর : নবাবের সৈন্যরা প্রস্তুত নিচ দিয়ে কেউ গেলেই তারা গেরিলা আক্রমণ করবে। কেউ রেহাই পাবে না। কিন্তু-
কামাল : কিন্তু?
আকবর : ব্যাটা বিটিশ ক্লাইভ বুইঝা গেলো কি করতে হবে। সে তার বাহিনী নিয়া কাছাকাছি না গিয়া দুর থিকাই কামান আর বন্দুক তাক করলো।
সগীর : একদম আখেরি নিশানা? তারপর?
আকবর : ফলন্ত গাছ থেকে আমের সাথে সাথে টুপ টুপ করে ঝরে পড়তে লাগলো নবাবের সৈন্যসামন্ত। আহা আহা হা।
আকবর : তারপর ইতিহাস বড় করুণ। নবাবের সৈন্যরা সকলেই ইংরেজদের হাতে মারা পড়লো। আহা আহা।
সবাই : আহা আহা।
আকবর : কিন্তু আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন। গাছের ডাল সেদিন নড়ে উঠলো কেন? কি ছিলো ষড়যন্ত্র? কোন আকাম সেদিন হয়েছিলো।
সগীর : তাই তো। আম গাছের ডাল নড়ে উঠলো কেন?
কামাল : কারণ কি?
মায়া : গাছের ডাল না নড়লে তো ক্লাইভের নজরে আসতো না নবাবের সৈন্যদের অবস্থান। ইতিহাস হতো অন্যরকম।
আকবর : কেন নড়ে উঠেছিলো গাছের ডাল? কে বলতে পারবেন।
সবাই চুপ।
কেউ মাথা চুলকায় কেউ পাছা চুলকায়।
মায়া : আমরা জানি না। আপনিই বরং বলে দিন।
আকবর : এই যে এতক্ষণ আপনেরা কি করলেন? কেউ মাথায় কেউ পাছায়? তার আগে কে কার পিঠে কি করছেন?
সবাই এ ওর দিওক তাকায়।
আকবর : হ্যাঁ ভাই চুলকানি। সেদিন ডাল নড়ে ওঠার কারণ ছিলো চুলকানি।
সবাই : চুলকানি?
আকবর : হ্যাঁ ভাই চুলকানি। বড় মারাত্মক এই রোগ বুঝলেন। নবাবের সৈন্যদের ছিলো চুলকানি রোগ। এই চুলকানির জন্যই সেদিন আমবাগানের আমগাছের ডাল নড়ে উঠেছিলো। ডাল না নড়লে সেদিন ক্লাইভ মীর জাফররা নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতো। এই চুলকানি রোগের জন্যই বাঙালি কিছু করতে পারে না। ভাইরে কত রকমের চুলকানি আছে তা একমাত্র এই জাতিই ভালো জানে। আমাদের দেশের মানুষের নানা ধরনের চুলকানির ব্যারাম আছে। আর শুধু এক জায়গায় নয়, বহু জায়গায়। সবকিছুতেই চুলকানি। দরকার শুধু একটা ইস্যু! ইস্যু থাকলে এদেশের মানুষ পাবলিক প্লেসেও নিজের পাছা চুলকাতে পারে, নিজের না চুলকালে সামনে যে আছে তার পাছাও চুলকে দিতে পারে। কিন্তু চুলকানি চাই, এই চুলকানি আবার যত লোকের সামনে করা যায় ততই ভালো। যেমন ধরেন ফেসবুক! গুরুতর থেকে সামান্য যে কোনো ঘটনায় কেউ যদি একটা কথাও বলে, তবে সেই কথার ওপর ভিত্তি করে কারো না কারো চুলকানি উঠবেই। সেই চুলকানি সংক্রামক রোগের মতো ছড়িয়ে পড়বে মুহূর্তে। তারপর একই বিষয় নিয়ে জেনে না জেনে, বুঝে না বুঝে ত্যানা প্যাঁচানো চলবেই। বাস্তব জীবনেও চুলকানির হাত থেকে আমাদের রেহাই নেই। কারো সুন্দরী মেয়ে দেখলে চুলকায়, কারো অনেক টাকা দেখলে চুলকায়, কারো গরিব লোকের জায়গাজমি দেখলে চুলকায়, কারো অন্যের ভালো কাজ দেখলে চুলকায়, কারো অন্য দেশের কথা শুনলে চুলকায়, কারো অন্য ধর্ম পালন করতে দেখলে চুলকায়, কারো আবার ভিন্ন মতাবলম্বী কাউকে দেখলে চুলকায়। কেউ মাথা চুলকায়, কেউ হাত চুলকায়, কেউ গাল চুলকায়, কেউ পিঠ চুলকায় আবার কেউ পশ্চাদ্দেশ চুলকায়। চুলকানি কমে না আমাদের।
সগীর : কিন্তু এই চুলকানির কারণ কি?
আকবর : শরীরের চুলকানি পরিচ্ছন্নতা, আবহাওয়া বা স্পর্শজনিত কারণে হতে বা সংক্রমিত হতে পারে। তবে মনের চুলকানি তা হয় নিজে কিছু করতে না পারার যন্ত্রণা বা অন্যে কিছু করেছে তা সইতে না-পারার যন্ত্রণা অথবা শুধু শুধুই আনমনে এই চুলকানি হতে পারে! যেমন একজন কোনো ভালো কাজ করছে, সবার প্রশংসা পাচ্ছে; কিন্তু সঙ্গে কারো মনে চুলকানির বীজ বপন করছে। একজন হয়তো একটু ফিটফাট বা পরিপাটি হয়ে চলছে তা দেখে কারো মনে চুলকানি শুরু হয়ে গেল! আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর এত যে বিরোধ, দলাদলি, ভাগাভাগি এসব আসলে চুলকানিরই ফল।
কামাল : এই চুলকানি ভালো করার ওষুধ কি?
আকবর : সাধারণত শারীরিক চুলকানি মলম বা ওষুধ ব্যবহারে দূর করা যায়। ওষুধের দোকানে বা হাটবাজারে লেকচার বিবৃতির মাধ্যমে দাউদ, খুজলি, একজিমাসহ নানান রকমের ওষুধ বা মলম পাওয়া যায়। কিন্তু মনের চুলকানি, এইটা সারাইতে পারে একমাত্র চেতনা মলম।
সবাই : চেতনা মলম?
আকবর : হ্যাঁ ভাই চেতনা মলম। চেতনায় মলম দেন, ভালো মন্দ বোঝার চেষ্টা করেন তাইলে যদি এই চুলকানি কমে। আর তাই বলি, সব হিংসা ছাড়ো, অহং করো দূর,/ চুলকানি রোগ সেরে যাবে মন হবে ভরপুর।’
সবাই : তাই বলি সব হিংসা ছাড়ো, অহং করো দূর চুলকানি রোগ সেরে যাবে মন হবে ভরপুর।


চুলকানি রোগ
'চুলকানি রোগ' কাকে বলে জানেন তা নিশ্চয়?
শুনেছি ঐ লেখক যারা তাদের এ রোগ হয়!
কিছু মানুষ পরের ভাল দেখতে নাহি পারে,
বেছে বেছে তাদেরই এই চুলকানি রোগ ধরে!
কিছু আছে আঁতেল লেখক ভান করে সব জানে,
স্বভাবদোষে চুলকে মরে তারাই সকল স্থানে।
বেশ কিছুদিন লেখার পরে,বছর কয়েক আগে
হঠাৎ দেখি সারাদেহ চুলকাতে সাধ জাগে!
আঁতিপাঁতি খুঁজতে থাকি কোথায় শুরু এর?
অনেক ভেবে তবে কারণ করতে পারি বের!
সকাল বেলায় পাশের বাড়ির যতীন্দ্র সরকার,
পেয়ে গেছে লটারিতে প্রথম পুরস্কার।
এমন খবর শুনেই হলো উত্তেজিত মন,
চুলকানি রোগ সারা দেহেই হ'লো সংক্রমণ!
সেই যে শুরু,সারেনি আর, চিকিৎসা এর নাই,
চুলকিয়ে ঘা করলে শুধু মনের আরাম পাই।
প্রতিবেশী কিনল সেদিন দামী 'সেডান' গাড়ি,
দেখেই আমার চুলকানিটার সে কি বাড়াবাড়ি!
যেচে গিয়েই বলে এলাম-“এ গাড়ি নয় ভাল,
কত রকম রঙ রয়েছে, কিনলে শেষে কালো?
আমি বাপু কিনবো 'অডি' সেটাই নাকি সেরা,
জানলাগুলো কি চকচকে রঙ্গীন কাঁচে ঘেরা।"
অমনি দেখি চুলকানিটা ক'মছে ধীরে ধীরে,
বলতে পারেন এমন ভাবে বাঁচবো কেমন ক'রে?
মামাতোভাই ঘুরতে এসে সে দিন কথার ছলে,
বলেই ফেলে আমেরিকায় চাকরি পেলো ছেলে।
শুনেই আমার শরীর জুড়ে সে কিরে চুলকানি!
বলি তাঁরে-“অবোধ ওরে, দেশ ভাল জার্মানি।
আমেরিকায় শুঁটকো সাহেব, বিশ্রী তাদের মেম,
জার্মানিতে সুন্দরী মেম দেখলে জাগে প্রেম।
আমার ছেলে বিদেশ গেলে পাঠাবো জার্মানি।”
যেই বলেছি,অমনি দেখি কমেছে চুলকানি।
অল্প চেনা লেখক সেদিন এলেন আমার বাড়ি!
জানতে পেলাম তার গৃহিণী পরমা সুন্দরী!
অমনি শুরু চিড়িং বিড়িং বিচ্ছিরি চুলকানি,
সুযোগ খুঁজি কবে যাবো দেখতে সে গৃহিণী!
দু’দিন পরেই নিজের লেখা এক কপি বই নিয়ে,
সন্ধ্যা বেলায় হাজির হলাম তাদের বাড়ি গিয়ে।
চেহারা তাঁর দেখে অবাক, বাড়লো বুকের জ্বালা,
নীরবে দিই গালি-'খাসা বউ এনেছিস শালা'!
হেসে বলি– “গিন্নী তোমার মন্দ তো নয় ভায়া,
খুঁত শুধু ঐ একটু স্থূল,আর ঐ খর্বকায়া!”
বললো লেখক-“বলবে এমন আগের থেকেই জানি,
তোমার যেমন চুলকানি রোগ,আমারও চুলকানি!
তোমার মতই আঁতেল আমি, স্বার্থে মাখাই তেল,
বিষেতে বিষ ক্ষয় হলো আজ, জমলো এবার খেল!
তোমার বাড়ি গিয়ে তুমি বই ছেপেছো শুনে,
চুলকানিটা বেশ বেড়েছে,কমলো এতক্ষণে।"
******************************
সমর কুমার সরকার/শিলিগুড়ি

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.