![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কারক নাট্য সম্প্রদায়ের সাথে আমার পরিচয় ১৯৮৪ সাল থেকে। সেসময় ঢাকা শহরে ছিলো পথনাটকের জোয়ার। আমি ছিলাম গণছায়ার কর্মী। তখন প্রায় প্রতি সপ্তাহেই বিভিন্ন জায়গায় স্বৈারচার বিরোধী পথনাটকের প্রদর্শনী হতো। আমরা এবং কারক প্রায় প্রতিটি আয়োজনেই অংশ নিতাম। সেই সূত্রেই কারকের সবার সাথে পরিচয় পরবর্তীতে অনেকের সাথে প্রগাঢ় বন্ধুত্ব। সাঁইত্রিশ বছর আগে কারকই প্রথম এই বর্ণমালা লিখন ও হাতেখড়ি অনুষ্ঠান শুরু করে। পরবর্তীতে আরো অনেক প্রতিষ্ঠানই এ অনুষ্ঠান করে থাকে। কারকের একটি মহোত্তম উদ্যোগ ‘এসো রক্তেজেতা বর্ণমালা সুন্দর করে লিখি’। মহান একুশে উপলক্ষে একুশের পরের শুক্রবার ২৩ ফেব্রুয়ারি সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘এসো রক্তেজেতা বর্ণমালা সুন্দর করে লিখি’ শীর্ষক শিশু-কিশোরদের বর্ণলিখন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে গত সাঁইত্রিশ বছর ধরে। এতে প্রতি বছরই রাজধানীর ৩৫ থেকে ৪০টি স্কুলের কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। কারক নাট্য সম্প্রদায় এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাষাসৈনিকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ। নতুন প্রজন্মের উদ্দেশে তাঁরা বলেন, ‘রক্তের বিনিময়ে বাংলা ভাষা অর্জিত হয়েছে। তার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে। বহু ভাষার আগ্রাসনে বাংলার মর্যাদা হারাতে বসেছে। তরুণ প্রজন্মকেই বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে। ‘অবহেলা না করে বাংলা ভাষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। দেশে অনেক ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল হয়েছে। এটি শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু বাংলাকে বাদ দেওয়া যাবে না।’ ‘শিশুদের ভাষা শিক্ষার অনুষ্ঠান খুবই মহৎ উদ্দেশ্যে। এ ধরনের আয়োজন বাংলা ভাষার চর্চাকে বাড়িয়ে তুলবে।’ ‘ভাষা যেন বিপন্ন না হয়, সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।’ কারক নাট্য সম্প্রদায়ের প্রধান ব্যক্তি নাট্যজন শংকর সাঁওজাল বলেন, ‘একটি দেশে নতুন অনেক কিছুই সৃষ্টি হতে পারে কিন্তু নিজস্ব সংস্কৃতি ছাড়া কোনো কিছুই সম্ভব না। কাজেই নতুন প্রজন্মের মাঝে বাংলা ভাষা শিক্ষা ও ভালোবাসা জাগ্রত করতে বর্ণলিখন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।’বর্ণলিখন, রং ও রেখায় ভাষাশহীদদের নাম, হাতেখড়ি বর্ণমালা ও হাতেখড়ি আল্পনা চারটি পর্বে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ‘ক’ বিভাগে অংশ নেয় প্রথম শ্রেণির নিচে অধ্যয়নরত শিশুরা। ‘খ’ বিভাগে অংশ নেয় প্রথম শ্রেণি ও ‘গ’ বিভাগে অংশ নেয় দ্বিতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিশুরা। রং ও রেখায় ভাষাশহীদের নাম লিখন পর্বে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। হাতেখড়ি পর্বে অংশ নেয় এখনো স্কুলে ভর্তি হয়নি এমন শিশুরা। ভাষাসৈনিকরা নতুন স্লেট ও সাদা চক দিয়ে তাদের বাংলা বর্ণমালা লিখে দেন। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় পুতুল নাচ।
©somewhere in net ltd.