![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ওদের জীবনের কত গল্প ছিল, প্রেম ছিলো, ভালোবাসা ছিলো, ছিলো হাসি, খুশি, প্রাণবন্ত সময়। সুন্দর সময়টুকু কাটাতে গিয়েছিলো তারা রেস্টুরেন্টে। আধুনিক মানুষের জীবনের অপরিহার্য এক অনুষঙ্গ রেস্টুরেন্ট। অন্তত বন্দীশালার মতো এই শহরে। আগুনের লেলিহান শিখায় এতগুলো মানুষের পরিচয় মুহূর্তের মধ্যে পাল্টে গেলো। তাদের নতুন পরিচয় হলো ‘লাশ’। নিমতলী, রানা প্লাজা, চুড়িহাট্টা, বেইলি রোড। আমাদের দুঃসহ বেদনার দিনকাল। বৃহস্পতিবার রাতে বেইলি রোডে আগুনের খবর পেলাম। প্রথমে খুব বড় কিছু মনে হয়নি। টুকটাক আগুনের খবরতো এই নগরীতে হরহামেশাই আমরা পাই। কিন্তু রাত যত বাড়তে থাকে। তত বাড়তে থাকে শঙ্কা। দিনের পর দিন, বছরের পর বছর, ট্র্যাজেডির পর ট্র্যাজেডি। অনুশোচনায়, ক্ষোভের যন্ত্রণায় আমরা লিখে যাই। মৃতদের কাছে কখনও এ লেখা পৌঁছাবে না জেনেও। কিন্তু পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয় না। জোরদার হয় না অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। বিল্ডিং কোড মানার জন্য বাধ্য করা হয় না ক্ষমতাবানদের। এত এত উন্নতির পারদ গিললেও। ফায়ার সার্ভিসকে সর্বোচ্চ সক্ষম করতে পারি না আমরা। প্রতিটি দুর্ঘটনার পর কয়েকদিন আলাপ-আলোচনা চলে। ফেসবুকে চলে উজির-নাজির মারা। কত লোক মারা গেলো ক্যালকুলেটরে চলে হিসাব-নিকাশ। আদতে কিছ্ইু বদলায় না। মাঝেমধ্যে পরিদর্শন আর নোটিশেই সীমাবদ্ধ যেন দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ। খেয়াল করলে দেখা যায়, প্রতিটি ঘটনার পর কয়েকদিন খুব আলোচনা হবে। কর্তাব্যক্তিরা কথার বারুদ ফাটাবে। অনেক আইন হবে। কানুন হবে। পোড়া মাংসের গন্ধ হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে, আমরাও সব ভুলে যাবো। কিন্তু কোনো একটি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি দিনের পর দিন কঠোরভাবে এই সব অনিয়ম আর লোভের বিরুদ্ধে লেগে থাকবে না। আবার নতুন কোনো ঘটনা ঘটার আগ পর্যন্ত আমরা সব ভুলে থাকবো। এবারের ট্র্যাজেডির পরও যথারীতি কৌতুকজনক খবরটি পাওয়া গেলো। রাজউক জানিয়েছে, বেইলি রোডের ভবনটিতে রেস্তোরাঁ করার অনুমোদন ছিলো না। লোভ, অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম। বলি হলো এতোগুলো মানুষ। লাশ গোনাই যেন আমাদের কাজ। দায় কার? আমরাই তো গড়ে তুলেছি এই নগর।
©somewhere in net ltd.