নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাবনাকে লালন করি স্বদেশি হাওয়ায়

মাজহার পিন্টু

একজন মানুষ

মাজহার পিন্টু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বোধের কাল

০৬ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮

প থ না ট ক
কাহিনী সংক্ষেপ : ঘর পালানো এক যুবক কাশীনাথ। ঘর এখন তার পার্কের বেঞ্চ অথবা কোনো বহুতলের বারান্দা। সারাদিন ঝালমুড়ি বেচে রাতটা কাটিয়ে দেয়া কোনোমতে। সে জায়গায় একদিন আসে আরেক ছিন্নমূল কিশোর কামাল। মিঠে ঝগড়ার এক পর্যায়ে দু’জনার মধ্যে তৈরি হয় আত্মারবন্ধন। কিন্তু বন্ধনে ফাটল দেখা দেয় মাইকেল নামে একজন পারচেজড বুদ্ধিজীবীর আগমনে। যে বুদ্ধিজীবীর সবচাইতে অপছন্দ হচ্ছে একতা, শান্তি। অত:পর জমে নাটক...

চ রি ত্র লি পি........................................
মাইকেল :.................................
কাশীনাথ :.................................
কামাল :.................................
কামালের মা :.................................
পাগলা :.................................
মানিকের মা :.................................
জোতদার.........................................
চাওয়ালা :.................................
টোকাই :.................................
রাতের বেলা। বিভিন্ন হকারের আনাগোনা। একসময় হাঁকডাক বন্ধ হয়ে যায়।। দুরে পাহারাদারের বাঁশি শোনা যায়। আলো আধারী পরিবেশে পার্কের একটি চাতাল। ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক। মাঝে মাঝে দু’একটা গাড়ীর শব্দ শোনা যায়। চাতালের ওপর একটি কিশোর ছেলে গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর কাশীনাথ আনন্দিত চিত্তে গাইতে গাইতে প্রবেশ করে ছেলেটাকে দেখে অবাক হয়।
কাশীনাথ : আশ্চর্য্যি কান্ড। আজ ছয় বছর ধরে এহেনে শুয়ে আসতিছি- রাত বিরেতে ভুল করে এট্টা মশা-মাছি পর্যন্ত গায়ে বসেনি, আর সেহেনে এট্টা জায়গা রাতারাতি দহল হয়ে গেলো? দেহে তো মনে হচ্ছে এট্টা কঁচি পাঠা। ও দু’ঘা দিলি পরে সুড় সুড় করে পালানোর পথ খুঁজে পাবিনানে। ওই অ্যাই ছেলে।
কাশীনাথ চাতালের কাছে যায়। ঘুমন্ত ছেলেটাকে ধাক্কা দেয়।
কাশীনাথ : এ্যা ই-ওঠ-ওঠ।
ঘুমন্ত ছেলেটি পাশ ফিরে ঘুমায়।
কাশীনাথ: ও বাব্বা। এ যে দেখতিছি পাছাডারে ঘুরোয়ে শোয়। অ্যাই ওঠ-ওঠ-দহল ছাড়। চাতাল আমার। জাগা পেলেই শুয়ে পড়তি ইচ্ছে করে। সেব এখানে চলবে না। উঠবি নাকি-
ছেলেটি উঠে বসে হাই তোলে। কাশিনাথ ছেলেটাকে টেনে তোলে।
কাশীনাথ : ওঠ ব্যাটা যা, ওই রাস্তার ধারটায় শোগে যা-
কামাল : রাস্তার ধারডায় খুব শীত করে। দ্যাহ দ্যাহ আমার জামাটা ক্যারাম ছিড়া।
কাশীনাথ : তা আমি কি করবো? আমি তো আর রাজার পুষাক পরে নেই। যা-ওঠ।
কামাল : আচ্ছা, আমি যদি তুমারে মিয়া ভাই কইয়া ডাকি তাইলে থাকতে দিবা?
কাশীনাথ : মিয়া ভাই কেন, এহেবারে বাপ কয়ে ডাহিস-
কামাল : তা তুমি যদি কও-
কাশীনাথ : এ্যাই চুপ মারিস। ওইসব ভুজুং ছাইড়ে এহন আত্মীয়ের পথ ধইরেছিস। তা মাডারেও সাথে করে নিয়ে আসিস। এহেবারে ইসতিরি পুত্তুর মিলে থাকা যাবেনে। যত্তোসব ফালতু-
কামাল : মা! আছিল এককালে। অহন নাই-
কাশীনাথ : গেছে কনে? ভাইগে?
কামাল : জানি না-
কামাল চলে যেতে নেয়, কাশীনাথ ডাকে।
কাশীনাথ : এ্যাই কনে যাচ্ছিস?
কামাল : তা দিয়ে তুমার দরকার কি? তুমার জাগাতো ছাইড়া দিছি।
কাশীনাথ : এ্যা ই ঝাঁজ দেহায়ে কথা কবিনে কয়ে দিচ্ছি। চিনিস আমারে- এই দিকি আয়-আয়-আয় কচ্ছি-
কামাল এগিয়ে আসে।
কামাল : কি কইবা কও।
কাশীনাথ: নাম কি তোর?
কামাল : কামাল
কাশীনাথ : এহেনে থাকতি চাস?
কামাল : চাইতো।
কাশীনাথ: দু’দিন পরে আবার পকেট টকেট ফাঁকা করে সটকে পড়বিনেতো?
কামাল : ক্যান আমি কি চোর?
কাশীনাথ : মুরুব্বী বলে সম্মান টম্মান করবি তো?
কামাল: হ- করুম।
কাশীনাথ: যা, আজকের থেকে তোর থাকার জাগা এহেনে পাকা হয়ে গেলো।
কামাল: সত্যি।
কাশীনাথ : হ সত্যি।
গভীর আবেগে কামাল কাশীনাথের গা টিপে দিতে থাকে। কাশীনাথ গুন গুন করে গান গাইতে গাইতে শোয়ার আয়োজন করে।
কাশীনাথ : আচ্ছা! কামাল। তোর মা ডা কনে গেছেরে? মইরে?
কামাল যেনো কোন অতীতে হারিয়ে যায়।
কামাল : মায়ের কথা জিগাও। মা, আমার মায়ে আছিল খুব সুন্দর। আমি আর মায়ে দুইজনে বেশ ভালাই আছিলাম। মায়ে একজনের বাড়ীতে কাম করতো। আর আমি খেইলা বেড়াইতাম গেরাম জুইড়া। কিন্তু...কিন্তু একদিন দেহি মায়ের পরনের সেই ত্যানা শাড়ীখান আর নাই। তার পরনে নতুন শাড়ী, হাতে চুড়ি, ঠোটে রং, পায়ে আলতা। চলন বলনে তার অন্যরকম ভাব। মায়ের মুখের দিকে চাইয়া কোন কথা কইতে আর সাহস হয় নাই। সেইদিন রাইতে মায়ে আমারে খুব কইরা খাওয়াইলো। তারপর পাশে শোয়াইয়া কত কথা কইলো।
অতীত দর্শন............................
মা এসে কামালকে ডাকে। কামাল মায়ের কাছে যায়।
কামালের মা : কামাল। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের কথা শুনছস?
কামাল : শুনুম না কেন। পাকিস্তানিরা এই দ্যাশে হামলা চালাইছিল। আমরা যুদ্ধ কইরা দ্যাশ স্বাধীন করছি।
কামালের মা : হ- তর বাবা আছিল একজন মুক্তিযোদ্ধা। একজন ভালা মানুষ আছিল। যুদ্ধে শহীদ হইল সে। দ্যাশ স্বাধীন হইলো। তয় আমরা আর ভালো থাকলাম না। সারাটা জীবন কষ্ট কইরা গেলাম। সারাটা জীবন মানুষের বাড়ি-
মা কাঁদতে থাকে। কামালকে ধরতে গিয়ে দেখে ঘুমিয়ে গেছে। কামালকে আদর করে মা বেরিয়ে যায়।
বর্তমান.......
কাশীনাথের ডাকে চমক ভাঙ্গে কামালের।
কাশীনাথ: তারপর?
কামাল : দেশগেরামের কথা, স্বাধীনতার যুদ্ধের কথা, বাপের কথা- শুনতে শুনতে কহন যে ঘুমাইয়া পড়ছি নিজেই জানি না। মাঝরাইতে ঘুম ভাঙ্গলে দেহি মায় পাশে নাই। প্যাত্থোমটায় তেমন কোন সন্দেহ হয় নাই। পরে রাত গড়াইয়া সকাল-সকাল গড়াইয়া বিকাল- আবার রাইত- আবার সকাল... দেখতে দেখতে অনেক দিন গড়াইয়া গেল- কিন্তু আমার মায়ে আর ফিরলো না। বছর দুই পরে একদিন রহিমের কাছে হুনছি সে নাকি লাইনে খাড়ায়। আচ্ছা মিয়া ভাই এট্টা মা তার পুলারে ফালাই ক্যামনে লাইনে খাড়ায় কইতে পারো। আমি যে এর কিছুই বুঝি না, আমি যে আর কিছুই বুঝি না মিয়া ভাই।
কাশীনাথ : ও তোর কচি মগজে ঢোকবে নারে কামাল, ও তোর কচি মগজে ঢোকবে না, তালি বুঝতিস কাশীনাথ কেন জোতদারের মুন্ডুটা খসায়ে দিয়ে সটকে পড়েছিল রাতের অন্ধকারে?
ভয়ে কামাল এদিক ওদিক তাকায়।
কামাল : একখান কথা কব মিয়া ভাই?
কাশীনাথ : ক।
কামাল : তুমি মানে তুমিই কি সেই-
কাশীনাথ হঠাৎ কামালের গলা চেপে ধরে।
কাশীনাথ : শোন এই কথা কাউরে কবিনে। কেউ যেন জানতে না পারে।
কামাল : ক্যান কমু? তুমি আমারে ভাই কইয়া ডাকছো, আমারে থাকতে দিছো। এই সব কথা কেন কুমু মানষেরে?
কাশীনাথ : হ্যাঁ, কথাটা মনে থাকে যেন।
কামাল : মনে থাকবো।
নিস্তব্ধ হয়ে যায় চারদিক। একটু পর কাশীনাথ বিছানা ঠিক করে বসে। কামাল ধীরে ধীরে তার পাশে গিয়ে বসে।
কামাল : মিয়া ভাই তুমি গান জানো?
কাশীনাথ : জানি
কামাল : একটা গাও না।
কাশীনাথ গান ধরে। মাঝখানে ধীরে ধীরে কামাল বলে।
কামাল: আচ্ছা মিয়া ভাই সেই গল্পটা এট্টু কও না।
কাশীনাথ: কোন গল্প?
কামাল : ওই যে, জোতদারের! মুন্ডু খসানের গল্পটা-
কাশীনাথ : সফর আলী জোয়ারদার আমাগো গিরামের জোতদার, তা জোতদার বুঝিসতো?
কামাল : হ যার পুকুর, জাগা, জমি ভিটাবাড়ী থাকে তাকেইতো জোতদার কই। আমার বাপে আছিল ভাগাচাষী।
কাশীনাথ : আমাগো গিরামের জোতদারের সব ছিলো। তারপরও তার ছিল মাইয়া চালানো ব্যবসা। সেই সুন্দরবন থেকে শুরু করে এই ঢাহা পর্যন্ত পাতা ছিলো তার ব্যবসার জাল। আমার দিদি ওই জোতদারের গোলায় ধান ঝাড়াইয়ের কাজ করতো। একদিন মাঠ থেকে ফিরে দেহি দিদি বাড়ী ফিরেনি, খোঁজ নিলাম জোতদারের গোলায়-সেহেনেও নাই। আশ্চর্য্যি কান্ড। জলজ্যান্ত মায়েডা কি হাওয়ায় উইড়ে গেলো? বাপে শুনে কলো জোতদারের সঙ্গে নড়তি যাসনে কাশী, ওতে আমাগো ভিটেমাটি ছাড়তি হবেনে। গিরামে মানুষ শুনে কলো ও এট্টা নষ্ট চরিত্রের মেয়ে। গিরামথে গেছে ভালোই হয়েছে। কিন্তু সেসব কথায় আমার কিন্তু বুঝ মানলো না। সারা জেবন সুন্দরবনের বাঘ সিংহের সাথে নড়ে আইছি আর এট্টা মানুষের সাথে পারবো না। মনের সাথে নড়াই চললো পাক্কা পুরো সাত দিন। শেষে মনের রশি টানলাম। একদিন মাঠ থেকে তাকায় দেহি জোতদারের বাড়ী আলো জ্বলতেছে। সোজা ঢুকে গেলাম তার বাড়ী।
অতীত দৃশ্য...
কাশীনাথ : এ জোতদার, আমার দিদিরে কনে রেখেছো?
জোতদার : কাশী রে, এই হাত দিয়ে তো অনেক মেয়ে মানুষ পাচার করেছি-তোর দিদিও হয়তো কোন তালে পাচার হয়ে গেছে। তা শহর পানে খুইজে দ্যাখ পালিও পাতি পারিস।
কাশীনাথ : জোতদার এভাবে মানুষের ক্ষতি করো না। মেয়েমানুষ চালানের ব্যবসা তোমার বন্ধ করতি হবে।
জোতদার : কেন তুই কি সরকার নাকি তোর কথা শুনতি হবে?
কাশীনাথ : আমার কথা না শুনলে তোমার ভালো হবে না।
জোতদার : ওই ফকিরের পুত তুই কি করবি রে আমার? কি করবি?
কাশীনাথ : কি করবো? দেখো।
কোমরে রাখা ধানকাটার কাঁচি বার করে জোতদারকে ধাওয়া করে কাশীনাথ। জোতদার চিৎকার করে কিন্তু কেউ এগিয়ে আসে না।
চিৎকার করতে করতে বেরিয়ে যায়।
বর্তমান সময়.........
কামাল : তারপর!
কাশীনাথ : তারপর। দিলাম এক কোপ। জোতদারের মুন্ডুটা খসে পড়লো আমার পায়ের কাছে। জোতদারের রক্ত দিয়ে তার সব পাপের ঋণ আমি শোধ করে দিলাম।
কামাল : তারপর!
কাশীনাথ : তারপর... তারপর আর কি, সেই রাতে কতক হেঁটে কতক নৌকো করে কতক বাসে চেইপে সোজা এই ঢাকা শহরে। সারাদিন ঝালমুড়ি বেচি আর রাতে এহেনে ঘুমাই।
কামাল : বাপ মায়ের কোন খোঁজ করো নাই?
কাশীনাথ : করিছি।
কামাল : পাইছো?
কাশীনাথ : শুনিছি, জোতদারের নোক তাদের উৎখাত কইরেছে। আর কিচ্ছু জানি না।
কামাল : বুনডার কোন খোঁজ পাও নাই?
কাশীনাথ : পাইছিরে কামাল পাইছি।
কামাল : পাইছো?
কাশীনাথ : পাইছি। কিন্তু এরম না পালিই ভালো হতো। রাস্তার ধারে রং মাইখে সং সাইজে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়ায়ে থাকে সারা গায়ে পাপের চিহ্ন। খদ্দের আর হয় নারে কামাল, খদ্দের আর হয় না।
কামাল : আমার মাও কি এমন রং মাইখা সং সাইজা ঘন্টার পর ঘন্টা খাড়াইয়া থাকে? আমার যে আর কেউ রইলো না মিয়া ভাই।
কাশীনাথ : কেন রে কামাল। আমি তো আছি। এখন তোর জন্যি আমি আর আমার জন্যি তুই। তোর মত এট্টা ভাই পাইছি। তুই পাইছিল একটা মিয়া ভাই। ভয় কি? এখন থেকে আমরা তো দু’জনেই এক। চল রাত হয়েছে, আয় শুয়ে পড়।
কাশীনাথ কামাল শুয়ে পড়ে। ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক মাঝে মাঝে দু একটা গাড়ীর শব্দ।
ওয়ার্মআপ করতে করতে প্রবেশ করে হ্যাট কেডস পরা মাইকেল। সে মাথা থেকে টুপি নামিয়ে মাথা থেকে নীচু করে ইড়ি করে।
মাইকেল : গুড মরনিং মাই ডিয়ার অডিয়েন্স, আমার নাম মিস্টার মাইকেল মাহাব্বত। নিজেকে একজন পারচেজড ইন্টেলেকচুয়াল বলে পরিচয় দিয়ে থাকি। মানুষের শান্তিই হচ্ছে আমার অশান্তি একমাত্র কারণ। ওই যে চাতালের ওপর দু’টো ছেলে কি নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে- আমার কিন্তু সহ্য হচ্ছে না। আমি ইচ্ছে করলে এখনই ওদের মধ্যে বিবাদ বাধিয়ে দিতে পারি। তবে এত রাতে একটু অভিনয় করতে হবে আর কিছু মালকড়ি ছাড়তে হবে। তাতে খেলা জমে যাবে। আচ্ছা দেখা যাক আমি কি করতে পারি। কাকে দিয়ে শুরু করি? কাকে কাকে কাকে? প্রথমে ছোট্ট ছেলেটাকে দিয়েই শুরু করি।
মাইকেল চাতালের কাছে যায়। কামালকে ধাক্কা দেয়
মাইকেল : এ্যাই ওঠ ওঠ
কামাল : ঘুমের মানষেরে ডাকেন ক্যান। অহন যান! সকালে আসেন।
মাইকেল : ওঠ-ওঠ-এদিকে আয়।
মাইকেল একটা ইট নিয়ে বসে, পাশে বসে কামাল।
হাই তোলে, মশা মারে। মাইকেল সিগারেট ধরায়-ধোঁয়া ছাড়ে।
মাইকেল: নাম কি তোর?
কামাল: কামাল
মাইকেল: করিসকি পকেটমারী?
কামাল: না-জুতা পালিশ!
মাইকেল: বাড়ী-কোথায়?
কামাল : আছিল এককালে পদ্মার পাড়ে অহন নাই।
মাইকেল : তুই কি স্বাধীনতা যুদ্ধে লড়াই করেছিলি?
কামাল : আমি কেমনে লড়ুম, দেহেন না রোগা মানুষ- তয় বাপে লড়ছিল কিন্তু বাঁচে নাই।
মাইকেল : আরে, তুইতো একটা শহীদের ছেলে। হা হা হা তা কত শহীদের ছেলে এই ঢাকা শহরে ঘুরে বেড়ায়, কেউ খোঁজ রাখে না আমি কিন্তু রাখি! আচ্ছা ধর আমি যদি তোকে নিয়ে একটা গল্প লিখি একজন শহীদের ছেলে, নাম তার কামাল। একদিন সেই কামাল স্বপ্নের রাজপুত্তুর হয়ে গেলো। সাদা ঘোড়ায় চড়ে, তলোয়ার ঝুলিয়ে স্বপ্নের রাজকন্যা আনতে গেল-
কামাল : রাজপুত্তুর! স্বপ্নের রাজপুত্তুর! না ভাই, স্বপ্নের রাজপুত্তুর হইয়া আমার কাম নাই তাতে তো আমি তো আর আমার মারে ফিরা পাবো না। জাগাজমিও পাবো না।
মাইকেল পকেট থেকে একটা বিশ টাকার নোট বের করে কামালের নাকের সামনে ধরে।
মাইকেল : আচ্ছা, আমি যদি তোকে এখন বিশটা টাকা দিই।
কামাল : বিশ টাকা! ক্যান আপনি আমারে হুদাহুদি বিশ টাকা দিবেন?
মাইকেল : আরে ব্যাটা শুধু শুধু কি দেবো। কাজের বিনিময়ে খাদ্য। হ্যাঁ, তোকে একটা কাজ করে দিতে হবে।
কামাল : কাম....কি কাম?
মাইকেল : তেমন কিছু না। এ্যাই-এক বোতল মাল-
কামাল : মাল-মানে মদ? তো এ্যাতো রাতে.....এই ঢাকা শহরে, আমার কাছে এক গোলক ধাঁধা। এর অলিগলি আমি কিছুই চিনি না, এর চেয়ে পদ্মার পাড়ে হাঁটা কত সহজ আছিলো।
মাইকেল : তা যাও পদ্মার পাড়ে গিয়েই হাটো। আমি বরং অন্য ছেলে ধরি। রাস্তায়তো আর টোকায়ের অভাব নেই।
মাইকেল চলে যেতে নেয়, কামাল পথ আটকায়।
কামাল: শোনেন, মিয়া ভাইরে একবার জিগাবো, খুব চালু পুলা। ছয় বছর এই ঢাকা শহরে আছে। অলিগলি সব চেনে।
মাইকেল : তোর আপন ভাই বুঝি?
কামাল : জ্বে না।
মাইকেল : ও, তা দেখ, যা ঘুম, ভাঙ্গলে হয়।
কামাল : আপনি একটু দাড়ান, আমি দেহি।
কামাল ছুটে চাতালের কাছে যায়। কাশীনাথকে ডাকতে থাকে।
কামাল : মিয়া ভাই ও মিয়া ভাই ওঠ
কাশীনাথ পাশ ফিরে শোয়। কামালকে ধমকায়।
কাশীনাথ : কি হয়েছে? চুপচাপ শুয়ে ঘুমোয়ে পড়।
কামাল : মিয়া ভাই এক বোতল মদ আনতি পারলে নগদ বিশ টাকা দিবো।
কাশীনাথ : এই চুপ মারিস।..... কত বললি?
কামাল : বিশ টাকা নগদ।
কাশীনাথ : তোরে কোয়েছে?
কামাল : হ জলদি যাও,
কাশীনাথ : কিন্তু এ্যাত রাতে- ভাটিখানাগুলো সব বন্ধ হয়ে গেছে। কি করা যায়-
কামাল : ঐ যে ঐ সারের কাছে যাও সেই বইলা দিবো।
কাশীনাথ হাই তুলতে:তুলতে মাইকেলের কাছে আসে।
কাশীনাথ : স্যার আনে দিবানে। তবে টাকার পরিমানটা এট্টু বাড়াতে হবেনে।
মাইকেল : কত?
কাশীনাথ : ৫০০ টাকা করতি হবে।
মাইকেল : দুশো টাকার মাল ৫০০ টাকায়!
মাইকেল অবাক হয়ে তাকায়।
মাইকেল : করিস কি?
কাশীনাথ : ঝালমুড়ি বেছি।
মাইকেল : তা সারাদিন কত কামাস?
কাশীনাথ : ঠিক নাই কখনো ৫০০ টাকাও হয় আরা কখনো ১০০০ টাকাও হয়
মাইকেল : যা, আর ১০০ টাকা পাবি।
কাশীনাথ : না হবে না।
কাশীনাথ ওঠে চাতালের দিকে যেতে চায়।
কাশীনাথ : রাত কত হয়েছে সিটা একবার দেখবেন তো।
মাইকেল : এদিকে আয়। এই নে, ৫০ টাকাই দিলাম। রাগ করিস না লক্ষ্মী। তোকে একটু পরীক্ষা করছিলাম। হবে তোকে দিয়েই হবে, তুই পারবি। সাহসী ছেলে। গুড বয়। যা বাবা, তবে একটু তাড়াতাড়ি করিস।
কাশীনাথ : আপনি কিছু চিন্তা করবেন না। আমি যাবো আর আসবো।
কাশীনাথ টাকাটা নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যায়। কামাল চাতাল থেকে উঠে আসে।
কামাল : কইলাম না, মিয়া ভাই পারবো। খুব চালু পোলা, ছয় বছর ঢাকা শহরে আছে।
মাইকেল : তুই চুপ কর।
কামাল : আমি আবার কি কইলাম
মাইকেল : আমি আবার কি কইলাম- কেন মালটা আনলে টাকাটা তো তুই পেতি।
কামাল : ওই মিয়া ভাই পাইলে আমার হইবো। এখন থেকেই তো আমরা দুজনেই এক।
মাইকেল : দু’জনে এক! কি সোজা অংক না? কি মিল মোহাব্বত। বুঝবি, পরে বুঝতে পারবি। শোন কামাল, ওকে তুই চিনিস না, আমি ওকে চিনি, ওর ওই মুড়ির ব্যবসা ট্যাবসা সব ভুজুং। আসলে ও শালা চোরাই মালের ব্যবসা করে।
কামাল : না আপনে আমারে ভুল বুঝ করান।
মাইকেল : ভুল বুঝ করাই- না?
কামাল : আমার তো থাকার জাগা আছিল না। মিয়া ভাই মোরে ভালোবাইসা এইখানে থাকতে দিছে। মিয়া ভাই-
মাইকেল : মিয়া ভাই! হু আরে ও তোকে থাকতে দিবার কে? এটা তো সরকারী জায়গা। এখানে ওর যা অধিকার, তোরও সেই একই অধিকার। নে মাথা ঠান্ডা করে এটা রাখ। যা শুয়ে পড় যা।
কামাল টাকা নিয়ে শুয়ে পড়ে কামাল। কাশীনাথ হাসতে হাসতে প্রবেশ করে।
কাশীনাথ : স্যার আনিছি। সেই হাটতি হাটতি কনে চলে গিইলাম
কাশীনাথ বোতলটা মাইকেলের হাতে দেয় মাইকেল বোতলটা হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে থাকে।
মাইকেল : বাঃ ভাল মাল এনেছিস তো। খুব ভাল হয়েছে।
কাশীনাথ : হে: হে: স্যার দুটো টাকা ফিরেছে।
মাইকেল : ওটা তুই রেখে দে। ওটা তোর। এ্যাই হারাম জাদা, মাল খাব কি বোতল ধরে গ্লাস কোথায়?
কাশীনাথ : তা স্যার, গিলাশের কথা তো আপনি কন নাই।
মাইকেল : ও আরো, কিছু কামানোর ধান্দা। এইনে গ্লাস নিয়ে আয়-
কামাল ছুটে ছো মেরে মাইকেলের হাত থেকে টাকাট ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
কামাল : আপনি থাকেন আমি যাই-
কামাল দ্রুত বেরিয়ে যায়। কাশীনাথ ওর বেরিয়ে যাওয়া রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকে-
মাইকেল : হাঁ করে কি দেখছিস?
কাশীনাথ : দেখতিছি, ও কি পারবেনে?
মাইকেল : পারবে পারবে, তুই আসলে ওকে যতটা বাচ্চা ভাবিশ- আসলে ও ততটা না।
কাশীনাথ : কিযে কন স্যার।
মাইকেল : তুই যখন মাল আনতে গেলি ও তখন যা তা বলছিল তোর নামে।
কাশীনাথ : আমার নামে? কি কয়েছে আমার নামে?
মাইকেল : ওই বলছিল, ও জায়গাতো সরকারী, ও থাকতে দেবার কে?
কাশীনাথ : এই কথা ও কয়েছে আপনারে?
মাইকেল : আমি কি তোমায় মিথ্যে কথা বলছি?
কাশীনাথ : আচ্ছা কন দেখি স্যার ওর দুঃখির কথা শুনে আমার এট্টা মায়া হলো, কলাম, থাক এহেনে-
মাইকেল : তুই তো ঠিক করেছিস। আরে বাবা, পৃথিবী থেকে মায়া মমতা এখনো তো উঠে যায়নি। তুই ঠিক করেছিস-
কাশীনাথ : ওরে বেহুসের ছেলে, আজকে আসুক-
মাইকেল : বেশ্যার ছেলে না কি?
কাশীনাথ : তবে আর কচ্ছি কি?
কামাল গ্লাস নিয়ে প্রবেশ করে মাইকেলের হাতে দেয়
কামাল : সার আনছি। ভাল হইছে না?
মাইকেল : খুব ভালো হয়েছে খুব ভালো।
কামাল : সার ৫টা টাকা ফিরেছে।
মাইকেল : ওটা তুই রেখে দে। ওটা তোর।
কামাল চাতালের উপর ঘুমাতে যায় কাশীনাথ হুংকার দিয়ে উঠে
কাশীনাথ : চারদটা এদিকে দে। আর সকালে উঠে এহেনথে চলে যাবি।
কামাল : ঐ রাম কইরা কথা কও ক্যান?
কাশীনাথ : কেন কই সিডা নিজের কাছে প্রশ্নো করে দেখ।
কামাল : না আমি কোন অন্যায় করি নাই।
কাশীনাথ : অন্যায় করিস নি?
কামাল : না
মাইকেল : আহ চুপ কর? খালিভ্যান ভ্যান করিস।
কাশীনাথ : কাল সকালেই চলে যাবি। আমি আর তোর মুখ দেখতি চাইনে।
কামাল : অহন আমি কনে যামু। এই ঢাকা শহরে মোর কাছে এক গোলক ধাধা। এরচে পদ্দার পাড়ে হাঁটা যে কত সহজ আছিল।
কাশীনাথ : তা যাও না, ঐ পদ্মার পাড়ে হাটোগে। এহেনে মরতি আয়েছো কেন?
কাশীনাথ কামালের ঝগড়া চলে কালে মাইকেল বোতলের মদটা ফেলে দেয়।
মাইকেল : চুপ কর, চুপকর। দিলিতো দিলিতো মালটা ফেলে। এখন যেখেনে থেকে পারিস আর এক বোতল মাল এনে দে।
কামাল : সার আমারে টাকা দেন। এইবার আমি লইয়া আসি।
মাইকেল টাকা বের করে দেয়।
মাইকেল : যা- ভাল ছেলে এক বোতল মাল নিয়ে আয়।
মাইকেলের হাত থেকে কামাল টাকাটা নিলে কাশীনাথ পথ আগলে ধরে।
কাশীনাথ : টাকাটা আমারে দে। তুই পারবি না।
কামাল : চেষ্টা করতে ক্ষতি কি?
কাশীনাথ : দে, আমারে দে,
কামাল : না
কাশীনাথ : দে কচ্ছি দিবিনে
কাশীনাথ কামালের হাত থেকে টাকাটা ছিনিয়ে নিয়ে বেরিয়ে যায়। কামাল হা করে তাকিয়ে থাকে।
কামাল : দুর্বল পাইয়া খুব ত্যাল হইছে।
মাইকেল : পারলি না তো।
কামাল : ক্যামনে পারুম রুগা মানুষ
মাইকেল : এ দিকে আয় বোস এখানে।
কামাল : কি কন?
মাইকেল : তুই যখন গ্লাস আনতে গেলি তখন তোর নামে কি সব কেচ্ছা কাহিনী বলছিল।
কামাল : কেচ্ছা আমার নামে?
মাইকেল : ঠিক তোমার নামে না- ওই তোর মা না কি কার হাত ধরে ভেগে টেগে গেছে-
কামাল : এই সব কথা ও আপনেরে কইছে?
মাইকেল : তা আমি কি তোমায় বানিয়ে বানিয়ে বলছি নাকি?
কামাল : আচ্ছা কন, স্যার আপন মনে কইরা হ্যারে মোর দুঃখের কথা কইছি আর সে কি না আপনারে। এই সব কথা কেউ কাউরে কয়, কন স্যার?
মাইকেল : না কখোন ও না আমি তো শুনতেই চাইনি। ও তো জোর করে আমাকে শুনালো।
কামাল : হ্যা গোপন কথাও তো আমি ফাস কইরা দিতে পারি।
মাইকেল : কি কথা রে?
কামাল : কমু ক্যান? আমি কি হ্যার মতো অত কুবুযে না কি?
মাইকেল : আরে বল বল। সব হারার শৃংখল ছাড়া আর আছে কি? বলে ফেল।
কামাল : আপনে আবার হ্যার কাছে কইয়া দেবেন নাতো?
মাইকেল : পাগল হয়েছিস না কি? তাই কি বলি। আর যদি বলি তাতে কি হবে। হ্যাঁ কি হবে: তুই লড়াই করবি কি পারবি না?
কামাল : যে লোকটা এক কোপে একটা মানষ্যের মাথা ঘাড়থিকা নামাইতে পারে তার লঘে আমি কেমনে পারুম?
মাইকেল : একটা মানুষের মাথা? পারবি, পারবি ভুলে যাচ্ছিস কেনÑ তুই একটা শহীদের ছেলে। কি পারবি না?
কামাল : হ, পারুম
মাইকেল : সাব্বাস-এই তো চাই। এইনে ধর, ৫টা টাকা রাখ। যা একটু ঘুমিয়ে নে। যাÑ
কামাল চাতালে শুয়ে পড়ে। মাইকেল ঝঃধমব এর সামনে আসে।
মাইকেল : প্রিয় দর্শক আমি কিন্তু অনেকটা এগিয়ে গিয়েছি। আর একটু ধৈয্য ধরে অপেক্ষা করুণ এবং দেখুন শেষ পর্যন্ত কি করতে পারি।
মদের বোতল নিয়ে কাশীনাথ প্রবেশ করে।
কাশীনাথ : স্যার, আনিছি। এই নেন।
মাইকেল : বাঃ ভাল মাল এনেছিস তো।
কাশীনাথ : আপনি কন স্যার, ও কেন, ওর বাপ গেলে কি এ রহম মাল আনতে পারতো?
মাইকেল : না, না কখনো না।
কাশীনাথ : হারামজাদা মুখে শুধু বড় বড় কথা
মাইকেল : কোথায় যাচ্ছিস?
কাশীনাথ : কেন-শুতি।
মাইকেল : এদিকে আয় এদিকে আয়
কাশীনাথ : কি কবেন, কন,
মাইকেল : বোস এখেনে। তোর জায়গাটা বোধ হয় দখল হয়ে গেল।
কাশীনাথ : দখল? আমার জায়গাÑহা-হা-হা
মাইকেল : হাসছিস যে? দখল করলে কি করবি তুই ওর বাবা মুক্তিযুদ্ধ করতে গিয়ে শহীদ হয়েছিল। ও একটা শহীদের ছেলে।
কাশীনাথ : ও, আমার বাপ-ঠাকুরদা যেন আর যুদ্ধ করে নি। আর তাছাড়া ও জানে না, আমি কতটুকু কি করতে পারি?
মাইকেল : ঐ মুন্ডু কাটার ব্যাপার তো
কাশীনাথ : কে কে কিডা কয়েছে এই সব কথা আপনারে। বিশ্বাস করেন স্যার, সব মিথ্যা কথা, সব। আমি বানায়ে বানায়ে ওরে এট্টা গল্প রিছি। নিজির দাম বাড়ানো জন্যি।
মাইকেল : তার মানে তুই মিথ্যে কথা বলেছিস। আসলে তুই ওর সাথে পারবিনা। তুই একটা কাপুরুষ। ছি: ছি:
কাশীনাথ : প্রয়োজন হলি মুন্ডু আমি খসাতে পারি।
মাইকেল : পারিস?
কাশীনাথ : হ্যাঁ, পারি।
মাইকেল : সাবাস-এই তো চাই।
মাইকেল দৌড়ে চাতালের কাছে যায়। কামালকে ডেকে তোলে।
মাইকেল : এ্যাই-ওঠ-ওঠ যুদ্ধ হবে যুদ্ধ।
কামাল : যুদ্ধ কিসের যুদ্ধ?
মাইকেল : জায়গা দখলের। বিনা যুদ্ধে সুচাগ্র সেদিনী কেউ ছারেনা, তুই কেন ছাড়বি?
কামাল : হ, ছাড়ুম না
মাইকেল : তবে এসো বাবা রেডী হও।
কামাল : আমি রেডি স্যার।
কাশীনাথ : হুহ, নড়তি আয়েছে।
কামাল : ক্যান লড়ুম না? আমি ও রেডি সার।
মাইকেল : আমি যখন ১, ২, ৩ বলবো, তোমরা তখন শুরু করবে।
কামাল ও কাশীনাথ মহাযুদ্ধের ভঙ্গিমায় দাঁড়ায়।
মাইকেল : তবে তার আগে আমার একটা কথা আছে। কথা হলো এতক্ষণ তোমরা যে টাকা পয়সা কামিয়েছ তা এই চাতালের ওপর রাখো। যুদ্ধে যে জিতবে সেই পাবে টাকা পয়সা।
কামাল : এইডা কেমনে হয়। গতরে খাটা পয়সা।
কাশীনাথ : হা হা হা সার হাইরে যাবে তো তাই ভয় পাচ্ছে।
কামাল : কি, এই রাখলাম আমার টাকা পয়সা।
কাশীনাথ : আমিও রাখলাম।
মাইকেল : তা হলে তোমরা রেডি হয়ে যাও।
কামাল ও কাশীনাথ মহাযুদ্ধের ভঙ্গিমায় দাঁড়ায়।
মাইকেল : ১, ২, ৩
শুরু হয় যুদ্ধ। মাইকেল টাকা পয়সা নিয়ে চলে যায়। এদিকে দুজন মারামারি করে কাতরাতে থাকে। কাশিীনাথ এসে কামালকে ওঠায়।
কাশীনাথ : কামাল তোর খুব লাগিছে না রে।
কামাল : আমি কি তোমার লগে পারি।
কাশীনাথ : তালি লাগতি অাইসেছিলি ক্যান?
কামাল : তুমিই তো আগে আইছো।
কাশীনাথ : তালি তুই লোকটারে এই জাগার কথা বলিছিস ক্যান?
কামাল : তুমিও তো আমার মার কথা কইছো।
কাশীনাথ : লোকটা মুন্ডু কাটার কথা জানলো কেমনে?
কামাল : মুখ ফসকাইয়া বাইর হইয়া গেছে।
কাশীনাথ : এতক্ষণে বুঝতি পারিছি। ওই লোকটা আমাগের মদ্যি বিভেদের পাচিল তুলতে চাইছিলো। কই লোকটা অরে ছাড়বনানি।
দুজন লোকটাকে খোঁজে। কিন্তু কেউ কোথাও নেই। কামাল টাকা পয়সা হারিয়ে কাঁদে। কাশীনাথ সান্তনা দেয়।
কাশীনাথ : ও হারামের টাকার জন্যি কাঁদিস না কামাল। তার চাইতে আমরা বড় জিনিস হারাতে বসেছিলাম।
কামাল : কি মিয়া ভাই?
কাশীনাথ : একতা। আমাগের মদ্যি যদি একতা থাকে তালি পরে কেউ আমাদের হারাতে পারবে না।
কামাল : ঠিকই কইছো মিয়া ভাই।
কাশীনাথ : চল একটু ঘুইরে আসি।
দুজন বেরিয়ে যায়।

সমাপ্ত

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.