নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাবনাকে লালন করি স্বদেশি হাওয়ায়

মাজহার পিন্টু

একজন মানুষ

মাজহার পিন্টু › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরিবেশ আজ সবচেয়ে বড় হুমকিতে

১৪ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:১৯


শিল্পবিপ্লবের দুইশত বছর পরে আর্কটিক যখন গলছে, মাটির উর্বরতা কমছে, মিঠা পানির উৎসগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, বাতাসে মাইক্রোপ্লাস্টিক বাড়ছে, সমুদ্রের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে আর মৌমাছিদের কলোনিগুলো ভেঙে পড়ছে; তখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ‘পলিউট ফার্স্ট, ক্লিন লেটার’ যে গত শতকের একটি বাতিল চিন্তা, এ কথা কে বোঝাবে এ দেশের নীতিনির্ধারকদের।
মৌমাছি মরলে আমাদের কী? সমুদ্র গরম হলে অর্থনীতির কী? বাতাসে মাইক্রোপ্লাস্টিক, সমস্যা কী? সমস্যা কতটা গভীর, বিপর্যয় কতটুকু কাছে, এই নিয়ে সারা পৃথিবীর নীতিনির্ধারণী মহলে তোলপাড় হয়ে গেলেও ‘রোল মডেল’ বাংলাদেশের নির্লিপ্ততা চোখে পড়ার মতো। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর কার্বন নিঃসরণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্বল্পোন্নত বা মাঝারি উন্নত দেশগুলো। এসব দেশের ভৌগোলিক অবস্থান, জনসংখ্যার ঘনত্ব, জমির বিরূপ ব্যবহার, বাধা ও পরিকল্পনাহীন নগরায়ন, দ্রুত মরুকরণ প্রক্রিয়া, অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে বনাঞ্চল ধ্বংস, জলাধার ভরাট, কয়লা, কাঠ, জীবাশ্ম জ্বালানি এই বিপর্যয়কে আরো দ্রুততা দান করেছে। অস্বাস্থ্যকর ইটভাটা এবং মান নিয়ন্ত্রণবিহীন সিমেন্টের উৎপাদন ও ব্যবহার পরিবেশ-বিপর্যয়কে ক্রমে চরম পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে সবার অগোচরে। বাংলাদেশে এখন ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন, অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি, তাপমাত্রা বৃদ্ধির ও ফসলহানির যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে তা বিপর্যস্ত বেপথু পরিবেশের কারণে। বৈশ্বিক তাপমাত্রার ক্রমবৃদ্ধির কারণে পরিবেশবিজ্ঞানীরা সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছেন। ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে সীমিত রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশ্ব ২০২৪ সালে শতাব্দীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রার মুখোমুখি হবে, এর আভাস দিয়েছেন। শিল্পোদ্যোক্তা ও পরিবেশবিদ সমন্বয়ে টাস্কফোর্স তৈরি করে বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ প্রাথমিকভাবে সীমিত ও পরবর্তীতে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার কার্যক্রম গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি কম কার্বন নিঃসরণ শক্তির ব্যবহার বিশেষ করে কমপ্যাক্ট ফ্লুরোসেন্ট ল্যাম্প ব্যবহারে জনগণকে উৎসাহিত করা; যা এককভাবে ৯০ হাজার টন গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমাবে প্রতি বছর। কলকারখানা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং বাড়ি-ঘরের বর্জ্য পানি পরিশোধন করে পুনর্ব্যবহারের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। প্রয়োজন কলকারখানার রাসায়নিক বর্জ্যরে পরিবেশসম্মত ব্যবস্থাপনা। প্লাস্টিকের ব্যবহার, অস্বাস্থ্যকর ইটভাটা, কৃষি ক্ষেত্রে, গবাদিপশু পালনে, মাছচাষে অপরিকল্পিত ও যথেচ্ছ রাসায়নিকের ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করা দরকার। একই সাথে কালো ধোঁয়া উদ্গিরণকারী সমস্ত যানবাহনকে রাস্তায় চলাচলে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা দরকার। বৈরী এই প্রকৃতিই কেড়ে নিয়েছে জীব আর প্রাণীরাজ্যের শত শত প্রজাতি। হারিয়ে গেছে বনফুলের অপার সৌন্দর্য। উধাও হয়ে গেছে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে বেড়ানো নানা রঙের প্রজাপতি কিংবা ভ্রমরের গুঞ্জন। হারিয়ে গেছে জোনাকজ্বলা স্বর্গীয় সন্ধ্যাগুলো। আধুনিক সভ্যতায় উন্নয়ন আগ্রাসন, দূষণের মহামারি আর যুদ্ধবাজ রাষ্ট্রনায়কদের জন্য পরিবেশ-প্রতিবেশ আজ সবচেয়ে বড় হুমকিতে। বিলুপ্তির পথে ধাবিত হচ্ছে মানবসভ্যতা। আলোক দূষণে হারিয়ে গেছে রাতের আকাশের অপার সৌন্দর্য। আধুনিক মানুষ আর আকাশের দিকে তাকিয়ে তারার খোঁজ করে না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.