নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাবনাকে লালন করি স্বদেশি হাওয়ায়

মাজহার পিন্টু

একজন মানুষ

মাজহার পিন্টু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আকাশ কুসুম

০৩ রা জুন, ২০২৪ রাত ৮:১৬


আকাশ কুসুমের সম্পর্কটা বলা যায়, সেই কৈশোরকাল থেকেই। ছেলেবেলার বন্ধুত্ব যে কখন ভালোবাসায় রুপ নিয়েছে ওরা নিজেরাও তা বুঝতে পারেনি। কুসুম থাকে নানীর সঙ্গে। বাবা-মা দু’জনই গত হয়েছেন বেশ কয়েক বছর। আর আছে কুসমের চাচাতো বোন কলি। ওদের সংসার চালায় বড় চাচা সফদর আলী। স্বল্প আয়ের মানুষ। কোনোমতে চলে যায়। আকাশের সংসার শুধু মাকে নিয়ে। সংসার চলে বাবার পেনশনের টাকায়। বাবা মারা গেছে কয়েক বছর। ঘরটুকু ছাড়া আকাশের আর কোনো সম্পদও নেই বলতে গেলে। তেমন কোনো আত্মীয়স্বজনও নেই আকাশের। আকাশ পড়াশোনা শেষ করে এখন বেকার। সুবিধামত কোনো কাজ জুটছে না। টানাটানির সংসার আকাশ কুসুম দু’জনেরই। তবুও ওদের দিন কেটে যায় আনন্দেই। ল্যাংড়া হারুন মুসল্লি। পাশের গ্রামের লোক বলে পরিচিত। যদিও কেউ কোনোদিন তার বাড়ি চেনে না। বিদেশে লোক পাঠায়। সেই সূত্র ধরেই আকাশ কুসুমদের গ্রামে যাতায়াত। আকাশকে অনেকবার লোভ দেখিয়েছে বিদেশ পাঠিয়ে দেবার। আকাশ রাজী হয়নি। কুসুমকেও লোভ দেখিয়েছে সে। একথা জানতে পেরে আকাশ প্রায় মেরে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেয় ল্যাংড়াকে। কুসুম আর আকাশের প্রেম আরো জমে ওঠে। ভালোই চলছিলো সব। কিন্তু হঠাৎ করে আকাশের মা অসুস্থ হয়ে পড়ে। ডাক্তারের কাছে গেলে পরীক্ষা করে জানায় আকাশের মায়ের ক্যান্সার হয়েছে। একেবারেই প্রাথমিক। অপারেশন লাগবে জরুরী। অনেক টাকা লাগবে। কোথায় পাবে সে এতো টাকা। এমন কোনো আত্মীয়স্বজনও নেই যে ওকে সাহায্য করতে পারবে। একবার ভাবে কুসুমকে সে জানাবে। যদি কিছু হয়। পরে আবার ভুলে যায় কুসুমের কথা। অসহায় আকাশ। কি করবে সে? অবশেষে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় ল্যাংড়া হারুন। পুরো চিকিৎসার টাকাটাই হারুন আকাশকে দেয়। কৃতজ্ঞ আকাশ তখনই মাকে নিয়ে ছূটে যায় শহরে। কুসুমও যেতে চায় আকাশের সাথে। কিন্তু আকাশ নিষেধ করে। শহরের ভালো একটা হাসাপাতালে মাকে ভর্তি করে আকাশ। ডাক্তার অপারেশনের ডেট দেয়। অপেক্ষা করে আকাশ। হাত থেকে পড়ে মোবাইলটা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কুসমের সাথে যোগাযোগ করতে পারে না। কুসুমও বার বার আকাশকে মোবাইলে পাবার চেষ্টা করে পায় না। এদিকে ইমরান নামের এক ছেলে এসে কুসুমকে খবর দেয় আকাশের মায়ের অবস্থা ভালো নয় এক্ষুণি তাকে যেতে বলেছে। কুসুম দেরী না করে বেরিয়ে যায়। আকাশ বেশ কয়েকবার কুসুমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ভাবে মায়ের অপারেশনটা হয়ে গেলে একটা সারপ্রাইজ দেবে কুসুমকে। ইমরান কুসুমকে নিয়ে আসে হারুন মুসল্লির কাছে। হারুন বলে তার সাথে হাসপাতালে যেতে হবে কুসুমকে। হারুন কুসুমকে নিয়ে বেরিয়ে যায়। এদিকে অপারেশন খুব ভালোভাবে শেষ হয়। মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে আকাশ। খুশির খবরটা কুসুমকে জানাতে গিয়ে থমকে যায় আকাশ। ২/৩দিন আগে আকাশের মায়ের অবস্থা খারাপ শুনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছে কুসুম। আকাশ বুঝতে পারে এটা ল্যাংড়া হারুনের কোনো চাল। তখনি ছুটে যায় ল্যাংড়ার খোঁজে। কিন্তু লাভ হয় না তাতে। মামাত বোন ফিরোজার কাছে মাকে রেখে কুসুমের খোঁজে বেরিয়ে পড়ে আকাশ। পাগলের মত বিভিন্ন জায়গায় কুসুমকে খোঁজে আকাশ। কিন্তু কোনো লাভ হয় না। সাহেব বাজার। গঞ্জ এলাকা। নানান ধরনের মানুষের আনাগোনা এই গঞ্জ এলাকায়। জেলার নানা প্রান্ত থেকে লোক আসে এখানে। এখানকার বড় আকর্ষণ পতিতালয়। রাঙা মাসি এ পতিতালয়ের প্রধান। প্রভাবশালী একজন মহিলা হিসেবে এলাকায় তার পরিচিতি। তার কথা শুনবে না এমন কেউ নেই অত্র অঞ্চলে। সেই রাঙা মাসি ব্যর্থ হয়ে গেছে একটি মেয়েকে বাগে আনতে। পতিতালয়ের সেই বাগে না আসা মেয়েটি কুসুম। ল্যাংড়া হারুনের চক্করে পড়ে আজ সে এখানে। মিথ্যে কথা বলে তাকে বাড়ি থেকে বের করে এনেছে ল্যাংড়া। আকাশেরও নাকি এতে সম্মতি ছিলো। কারণ ল্যাংড়ার টাকা দিয়েই অপারেশন হয়েছে আকাশের মায়ের। এভাবে বিক্রী হয়ে যাবে কখনো কল্পনাও করেনি কুসুম। নিজের ভাগ্যকে সে মেনে নিতে পারেনি। প্রয়োজনে সে আত্মহত্যা করবে তবুও পতিতা হবে না সে। আর আকাশের জন্য তার মনে জমা হয়ে আছে একরাশ ঘৃনা। রিক্তা এই পল্লীতে এসেছে কয়েক বছর। কুসুমকে তার ভালো লাগে। ভালো লাগে কুসুমের জেদ। কুসুমকে সমর্থন করে সে। কিন্তু এর বেশী কিছু করার নেই তার। কুসুমেরও একমাত্র বন্ধু রিক্তা। তার সাথেই চলে কুসুমের সুখ দুঃখের আলাপ। কিন্তু কতদিন সে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে? ঘুরতে ঘুরতে অবশেষে সাহেব বাজারে এসে কুসুমের খেঁাজ পায় আকাশ। নানাভাবে সে কুসুমের সাথে দেখা করার চেষ্টা করে কিন্তু পারে না। শেষে খদ্দের সেজে রাঙা মাসির সাথে দেখা করে আকাশ। রাঙা মাসি বরং খুশি হয় কুসুমের সাথে সে রাত কাটাতে চায় বলে। এতে করে যদি কুসুমের তেজ ভাঙে তাহলে তার সুবিধা হয়। লোক দিয়ে কুসুমের ঘরে পাঠিয়ে দেয় আকাশকে। মুখোমুখি আকাশ কুসুম। আকাশ কি পারবে কুসুমকে তার ঘৃণা ভেঙে দিয়ে ফিরিয়ে নিতে? রাঙা মাসি কি ছেড়ে দেবে আকাশকে?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.