![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পরিচয় দেবার মতো তেমন কিছু নাই। পড়ালেখা - এল এল বি শেষ পর্ব। লেখালেখি করছি গল্প এবং কবিতা।
এলাকার সবচেয়ে নম্র, ভদ্র ও মেধাবী ছাত্র হিসেবে সবার কাছে যে ছেলেটি পরিচিত তার নাম শাফি। মধ্যবিত্ত পরিবারে শাফির জন্ম। বাবা প্রাইমারি স্কুলের হেডটিচার, মা গৃহিনী আর ছোট ভাই রাফি অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। শাফি পঞ্চম, অষ্টম, দশম ও এবার এইচএসি তে গোল্ডেন এ-প্লাস পেয়েছে। তার স্বপ্ন ডাক্তার হওয়া। বাবা-মা ও এলাকার সবাই তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে। সবার আশা সে বড় ডাক্তার হবে। সবার স্বপ্ন পূরণের জন্য শাফি আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এলাকার এক প্রভাবশালী ব্যাক্তির ছেলে পিয়াল তার সাথে পড়ে। পিয়াল পড়ালেখায় মধ্যম প্রকৃতির। এলাকায় দুষ্টা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু শাফির সাথে মোটামুটি সম্পর্ক ভালো। কারন পরিক্ষার সময় শাফির সহযোগীতা নিতে হয়।
পিয়ালের বাবা কলেজ কমিটির সভাপতি। শিক্ষকদের বলে দিয়েছেন পরিক্ষায় যেন ভালো ছাত্রের সাথে পিয়াল কে বসান। তাই এসএসসি ও এইচএসি পরিক্ষায় তার স্থান হয় শাফির পাশে। শাফি অনেক অনুরুদ করেছিল প্রিন্সিপাল কে পিয়াল কে যেন অন্য যায়গায় বসান। স্যার বলেন- দেখো শাফি তার বাবা কলেজের সভাপতি তুমি কলেজের কল্যানের জন্য একটু কষ্ট করে নাও। শাফি স্যারের কথার উপর আর কথা বলে নি। পিয়াল এইচএসি পরিক্ষা শাফির সম্পূর্ণ দেখে পরিক্ষা দেয়।
রিজাল্টের সময় সবাই অবাক এবারও শাফির সাথে পিয়ালের ভাগ্যে এ-প্লাসের সাক্ষাত।
তারপর শাফি মেডিকেলের জন্য কোচিং এ চলে যায়। শাফি দিনরাত পরিশ্রম করে। যদি মেডিকেল না হয় তাহলে বাবা-মাকে কি জবাব দিবে আর এলাকার সবার সাথে কিভাবে মিশবে।
মেডিকেল ভর্তি পরিক্ষা যতা সময় হলো। পরিক্ষার প্রশ্ন অনেকটা কঠিন হয়েছে তারপরও শাফির ভালো হয়েছে। পরিক্ষার হল থেকে বের হয়ে শাফি পিয়াল কে দেখতে পেলো । শাফি ডাক দিয়ে এই পিয়াল তুই এখানে? পিয়াল হেসে হেসে বললো মেডিকেলের পরিক্ষা দিলাম। শাফি তো অবাক কি বলিস! এটা কি এসএসি বা এইচএসি পরিক্ষা যে তুই দেখে পরিক্ষা দিবি আর তোর মেডেকেলে ভর্তি হয়ে যাবে। পিয়াল বললো আরে দুস্ত রিজাল্ট হলে দেখতে পারবি। আসিরে তারা আছে বলে পিয়াল চলে গেলো। শাফি কিছু সময় ভাবনায় পড়ে গেলো কি বলে পিয়াল। যাক বাবা রিজাল্ট হলে দেখা যাবেবলে বাসায় চলে আসলো। রাতে খবর দেখার জন্য টিভি অন করলো। টিভির নিচের শিরোনাম দেখে হতবাক হয়ে গেছে শাফি। মেডিকেল পরিক্ষার দুই দিন
পূর্বে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। কিছু অসাধু প্রভাবশালী ব্যাক্তি এর সাথে জড়িত। শাফির চোখে অশ্রুতে ভরে গেলো তাহলে কি তার মেডিকেলে পড়া হবে না। পিয়ালের কথা মনে পড়লো তাহলে কি পিয়াল প্রশ্ন পেয়েই পরিক্ষা দিয়েছে। পরের দিন সকাল হতেই পত্রিকা সংগ্রহ করলো শাফি। প্রথম পাতাতেই প্রশ্ন ফাঁসের খবর অল্প টাকায় বিভিন্ন যায়গায় মেডিকেলে ভর্তি প্রশ্ন পাওয়া যায়। পরিক্ষা বাতিলের জন্য মানব বন্ধন, মিছিল করে অভিবাবক ও ছাত্ররা। তাতে কিছুই হলো না। যতা সময় পরিক্ষার রিজাল্ট বের হলো। শাফি খুব চিন্তিত কি হয়। এমন সময় পিয়াল কল দিলো অনিচ্ছা সত্যেও কল ধরলো শাফি। পিয়াল চিৎকার দিয়ে এই তোর কি খবর আমার মেডিকেলে চান্স হয়েছে। শাফি তো হতবাক কি বলে। আমি এখনো রিজালট দেখিনি পরে কথা হবে বলে রেখে দিলো শাফি। রিজাল্টের ওয়েবসাইটে ডুকলো অনেক্ষণ খুজলো তার নাম তালিকায় পেলো না। অবিরত চোখ থেকে পানি ঝরছে শাফির। বাবা-মাকে কি বলবে। এলাকার মানুষের সামনে কিভাবে মুখ দেখাবে। যে ছেলেটি তার দেখে সারাজীবন পরিক্ষা দিলো আজ সে মেডিকেলে চান্স পেয়ে গেলো। শাফি ভাবলো এই জীবন দিয়ে কি হবে।
অনেক গুলো ঘুমের ঔষধ খেয়ে চিরতরে ঘুমিয়ে পড়লো।
প্রশ্ন ফাঁসে হারিয়ে গেলো শাফির স্বপ্ন।
©somewhere in net ltd.