নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কোথায় সে কর্মহীন একান্তে আপনে লীন ...

দূরে থাকা মেঘ

দূরে থাকা মেঘ তুই দূরে দূরে থাক, যতটুকু পারা যায় সামলিয়ে রাখ।মন, মন, মন, সেতো কত কথা বলে; তার কথা শুনে কেউ ঝাঁপ দেয় জলে...

দূরে থাকা মেঘ › বিস্তারিত পোস্টঃ

যেখানে মানবতার দাম নেই ....

১০ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:৫০

কদিন ধরে মনটা খুব খারাপ,না,আমি ফেসবুকে এটা লিখতে যাচ্ছিনা। একটা যাও বান্ধবী ছিলো,সেও ঠিক ভরসা করতে না পেরে দূরে দূরে থাকছে। নিজেকে সামলে নেওয়ার প্রস্তুতি মনে হয়। কিন্তু সেটার দিকে যে ভ্রুক্ষেপের সময় হচ্ছেনা,যদিও ভাবছি আজই কথা বলবো। পেরে উঠছিনা।

আমি আর বাবা রোজ রাতের খবরটা মায়ের সিরিয়াল শেষ হলেই দেখার সুযোগ পাই, আজকাল কিছু চ্যানেল সারাদিনই খবর দেয়,আর স্ক্রলবারের সুবাদে একেবার মিস করলে ঝামেলা থাকেনা। খবর তো খবরই। কিছু খবর কেবল ভ্যাবলার মতোন দেখি, কিছু খবর দেখে শিউরে উঠি,কিছু খবর স্তব্ধ করে দেয়, কিছু খবর ভাবায়। আমাদের ছোট্ট একটা দেশ,তাতে বেশিরভাগ মানুষগুলোর অতো বড়ো কোন স্বপ্ন দেখেনা,আর দেখলেও একটা সময় দেখা বন্ধ করে দেয়,কাউকে বন্ধ করতে বলা হয়,আর কেউ কেউ স্বপ্ন দেখাটা বন্ধ করে আসে। একবার হাত কাঁপেনা? একবার ভাবেনা,মানুষটা আমার ভাইও হতে পারতো...হতে পারতো বোনের স্বামী যে প্রতি ঈদে সালাম করে সালামি নিতে লজ্জা পায়?

রাজীব হায়দার, অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর রহমান, অনন্ত বিজয় দাশ আর এখন নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়... আরো হয়তো আছে, কিন্তু কে?

গত রাতে চ্যাটে ভাই বলছে, আমার মনটা খুব খারাপ রে,এরকম এতো অবলীলায় কিভাবে মানুষটাকে মেরে ফেললো?
শান্তনা কী দিবো? আমার নিজেরও শান্তনা দরকার,যদিও জানি এটা সবসময় মিথ্যে হয়। কি যে বলেছিলাম সেটা মনে নেই। তবে ও আর ঘাটায়নি,কী বুঝেছিলো কে জানে!

বাবার কন্ঠে উৎকণ্ঠা, 'তুই ব্লগে লিখিস না? কি লিখিস?'
আমি অবাক হয়ে,'কেন বাবা?'
বাবা বললেন, 'কি নিয়ে লিখিস?'
আমি সত্যিটাই বললাম,'প্রেম ভালোবাসা, নিজের ভেতরের কথা গুলো, গোপন,কিন্তু গোপন রাখা যাবেনা যা,তাই লিখি।'
বাবা সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখে বললেন, ' ধর্মীয় ব্যপার নিয়ে লিখিস না তো? তুই তো ওটাকেও একটা ইভোলিউশন মনে করিস।'
আমি টাশকি খাই, 'বাবা,আমি ভালো করে জানিনা,তাই ওটা নিয়ে লিখিনা,জানলে দেখা যাবে। '
-না না, লিখিসনা।দেখ না, কতোজন কে মেরে ফেলছে।
আমি চুপ করে রইলাম। লিখিনা অনেকদিন। আজ মনটা উদাস হয়ে গেল।

বাবা একটু পর বললো, 'পড় তো নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় ব্লগে কী লিখেছিলো '
আমি ল্যাপটপ টা খুলে বসলাম,পড়লাম কয়েকটা ব্লগ। বাবা বলছে, 'ও তো কোন ধর্মকেও ছেড়ে কথা বলেনি দেখছি! তবে কেন .....' বাবা ইতঃস্তত করেন... আমি বুঝতে পারি,কিন্তু সব তো বলা যাবেনা, সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, আমাদের দেশে মনের কথাগুলো মুখে আনার মতো পরিস্থিতি নেই।
আমিও চুপ রইলাম,বাবাও চুপ রইলেন। মুখোমুখি বসে রইলাম,নৈঋত কোনে মেঘ জমছে, বৃষ্টি হবে।

বাবাই নীরবতা ভাঙলেন, ফেসবুকে লাইক-টাইক দিসনা। ভয় লাগে রে। ছেলেগুলোকে মেরেই ফেললো,অভিজিতের বাবার সেই অসহায় মুখ, লোকটা যেন ছেলের মৃত্যুতে ছোটো হয়ে গেছেন। এটাও ঠিক, সবাইকে বলতে দিতে হবে,এভাবে মেরে ফেললে তো বলবেনা কেউ,যুক্তির দিকগুলো খুঁজে পাবেনা, সমালোচনাও করার কেউ থাকবেনা.....ইস ছেলেটাকে মেরে ফেললো,কতোগুলো মানুষকে মারলো ওরা....কেন যে এমন করে...

বাবার কথাগুলো আবছা আবছা কানে ঢুকছে,একটু পর বললাম, বাবা,উনি তো আধুনিক, সেই অর্থে সবসময় বর্তমান। শ্বাস নিলেও,না নিলেও। দুঃখের বিষয় বর্তমানটা চুপ হয়ে গেলো।

বাবা ঠান্ডা চায়ে চুমুক দিয়ে বলছেন, হুম, একসময় এই চুপ হয়ে যাওয়া বর্তমান আবারও জেগে উঠবে,তখনও সেটা বর্তমানই রয়ে যাবে।
বাবার চোখে স্বপ্ন কি না সেটা বুঝতে পারিনা, তবে ভেতরে ভেতরে দুঃখবোধের পাশাপাশি একটা আশা জাগে,হয়তো আমার ছেলে এভাবে লিখবে। হতে পারে তথাকথিত ব্লগার নামের মৃত মানুষগুলোর মতোন কেউ।

আরো একটা দীর্ঘশ্বাস বুকের মাঝে আটকে রাখছি...

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.