![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘুম থেকে উঠেই দেখি বাংলাদেশটি কাঁদছে। তাঁর সোনার প্রত্যঙ্গগুলোয় হাহাকারের দগদগে দাগ; তাঁর ঊরু, ঊরুসন্ধি, নাভি, নাভিসন্ধি, ও হৃদপিন্ড, সমস্তে চাক চাক চোপ চোপ রক্ত, লালা, ঘন সাদা তরল। তাঁকে দেখেই আমার মনে পড়ে গেছে শায়ারার কথা। শায়ারার দীর্ঘ নগ্ন সোনালী লাশটি, পাটক্ষেতে এভাবেই পড়েছিলো পাঁচদিন; অবিকল বাংলাদেশের মতো। শায়ারা, বস্ত্রহীন প্রাণহীন নারী ও নক্ষত্রহীন, শায়ারা, যার ছিলো গোলাপকুঁড়ির মতো স্বর্গদ্বার, শায়ারা, যে ঝলমল করতো স্বচ্ছ কুশিয়ারার মতো, একরাতে কবলে পড়লো হাঙ্গর ও নেকড়ের, সাপ ও কুমিরের; আর ফেরে নি, তাঁর ছেঁড়া ফাঁড়া রক্তাক্ত তরলাক্ত গলিত দলিত লাশ প্রতিবিম্ব হয়ে উঠলো আরও একটি লাশের, বাংলাদেশের। বাংলাদেশ, লাশটির দিকে তাকাতে পারি না; শায়ারা ম’রে গিয়ে বেঁচে উঠেছিলো, কিন্তু বাংলাদেশ, তাঁর ভাগ্য শায়ারার চেয়েও খারাপ, সে মরেছে, প্রতিদিন মরছে; সে পচেছে, প্রতিদিন পচছে, কিন্তু তাঁর রেহাই নেই, সে লক্ষবার ম’রেও বেঁচে উঠছে না একবার, তাঁর লাশ চুবানো হয়েছে ঘন ফরমালিনে, তাঁর রক্তে ভেসে বেড়াচ্ছে সমস্ত নদী, তাঁর সবুজ হয়ে উঠেছে লাল, তাঁর লাল হয়ে উঠেছে কালো। আমরা কি তাই চেয়েছিলাম?
গরুর গর্ভে সবসময় গরুই জন্মায়, যেরকম বাঘের গর্ভে বাঘ, হরিণের গর্ভে হরিণ, সাপের গর্ভে সাপ, ঘোড়ার গর্ভে ঘোড়া; কিন্তু মানুষই একমাত্র প্রাণী যার গর্ভে সবসময় মানুষ নাও জন্মাতে পারে, তার গর্ভে বেড়ে উঠতে পারে জঙ্গলের বিষাক্ততম গোখরোর চেয়েও অধিক বিষাক্ত গোখরো, আফ্রিকার হিংস্রতম বাঘের চেয়েও অধিক হিংস্র বাঘ, উগান্ডার কুৎসিততম নেকড়ের চেয়েও আরও কুৎসিত নেকড়ে, শুয়োর, কেঁচো, ও কৃমি। এই সাপ বাঘ নেকড়ে শুয়োর কেঁচো ও কৃমিরা, ঢোকে পড়েছে বাংলাদেশের সমস্ত রন্ধ্র ও গলিতে; ওদের লালা ও দাঁত, নখ ও জিভ, বাংলাদেশকে ক’রে তুলেছে শায়ারার আয়নাচ্ছবি।
মানুষের সমস্ত অধিকার আজ ভূলুন্ঠিত, মানুষের সমস্ত পরিচয় অস্বীকৃত; মানুষের গলা, টুঁটি, চোখ ও স্বপ্ন, মনুষ্যত্বের সমগ্র চিহ্নমূল, আজ চলে গেছে শুয়োরদের হাতে, মানুষ হয়ে পড়েছে কতিপয় বাঘ ও নেকড়ের পকেটের চাবি, সেই চাবি দিয়ে তারা তালা খোলে, বাংলাদেশকে বলাৎকার করার স্বর্গীয় সুরঙ্গটির।
এটা চলতে পারে না, এটা চলতে দেয়া যায় না; বাংলাদেশের সমস্ত হরিণেরা, ফুল ও মানুষেরা, আপনারা এক হোন, দাঁড়িয়ে পড়ুন, যে যেখানে আছেন; এক হাজার বাঘ, এক হাজার শুয়োর, এক লক্ষ নেকড়ে, দু’টি দানব, নিশ্চয়ই ষোলো কোটি হরিণের চেয়ে, ষোলো কোটি ফুল ও মানুষের চেয়ে, অধিকতর শক্তিশালী নয়।
২| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২০
হুতুম বলেছেন: খুব ভাল বলেছেন ... আল্লাহ্ সব্বাইকে বোঝার টাঊফীক দান করুণ।-আমীন
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৪১
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: শায়ারা ম’রে গিয়ে বেঁচে উঠেছিলো, কিন্তু বাংলাদেশ, তাঁর ভাগ্য শায়ারার চেয়েও খারাপ, সে মরেছে, প্রতিদিন মরছে; সে পচেছে, প্রতিদিন পচছে, কিন্তু তাঁর রেহাই নেই, সে লক্ষবার ম’রেও বেঁচে উঠছে না একবার, তাঁর লাশ চুবানো হয়েছে ঘন ফরমালিনে, তাঁর রক্তে ভেসে বেড়াচ্ছে সমস্ত নদী, তাঁর সবুজ হয়ে উঠেছে লাল, তাঁর লাল হয়ে উঠেছে কালো। আমরা কি তাই চেয়েছিলাম????
মানুষের সমস্ত অধিকার আজ ভূলুন্ঠিত, মানুষের সমস্ত পরিচয় অস্বীকৃত; মানুষের গলা, টুঁটি, চোখ ও স্বপ্ন, মনুষ্যত্বের সমগ্র চিহ্নমূল, আজ চলে গেছে শুয়োরদের হাতে, মানুষ হয়ে পড়েছে কতিপয় বাঘ ও নেকড়ের পকেটের চাবি, সেই চাবি দিয়ে তারা তালা খোলে, বাংলাদেশকে বলাৎকার করার স্বর্গীয় সুরঙ্গটির।
এটা চলতে পারে না, এটা চলতে দেয়া যায় না; বাংলাদেশের সমস্ত হরিণেরা, ফুল ও মানুষেরা, আপনারা এক হোন, দাঁড়িয়ে পড়ুন, যে যেখানে আছেন; এক হাজার বাঘ, এক হাজার শুয়োর, এক লক্ষ নেকড়ে, দু’টি দানব, নিশ্চয়ই ষোলো কোটি হরিণের চেয়ে, ষোলো কোটি ফুল ও মানুষের চেয়ে, অধিকতর শক্তিশালী নয়।
++++++++++++