নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিচিরমিচির ব্লগ!

হুজাইফা আহমাদ

আমি পথের দূরত্ব জানি না,এতটুকু জানি শুধু গন্তব্যের বাড়ি, হোক না যতই দূরে দিতে হবে পাড়ি।

হুজাইফা আহমাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

চাঁদ!

৩১ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৩:৪৫

চাঁদের সৌন্দর্য্য দেখার মধ্যে অনেক ভিন্নতা রয়েছে। শৈশবে যখন চাঁদ দেখতাম তখন মনে হত ইস চাঁদটা কত্তো কাছে...! যে ঐ নারিকেল গাছটার মাথায় উঠলেই ছোঁয়া যাচ্ছে। "আয় আয় চাঁদ মামা টিপ দিয়ে যা চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যা।" ইত্যাদি ছড়া শুনতে শুনতে চাঁদটাকে একপ্রকার সত্যিকারের মামাই মনে করে নিয়েছিলাম। তখনকার সে অনুভূতি বলে বুঝানো যাবে। অবশ্য সবারই কম বেশি সেই অভিজ্ঞতা আছে তাই বুঝাতে হবে না।



মায়ের কাছে শোনা চাঁদের সেই চরকা কাটা বুড়ির রূপকথার গল্পের হাত ধরে চাঁদের গায়ে সেই বুড়িকেও কম খোজাখুজি করিনি। চাঁদের কালো দাগগুলোকে বুড়ির অস্পস্ট অবয়ব ধরে নিয়ে মনকে বুঝাতাম, ঐটাই হচ্ছে চাঁদের বুড়ি। চাঁদ নিয়ে তখন আমার কল্পকাহীনি আর বিস্ময়ের অন্ত ছিল না। "বাশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ঐ" ক্লাস ওয়ান বা টুয়ের সেই ছড়াগুলোর কথা এখনো স্মৃতিতে তরতাজা। কিংবা চাঁদের মিহি আলোতে নানা বাড়ির উঠানে "পলাপলি" নামক সেই নামকরা খেলা, কখনই ভুলে যাওয়ার মত কোন স্মৃতি নয়।



কিছুদিন আগে আমার তোলা একটি চাঁদের ছবি।



তারপর আস্তে আস্তে চাঁদের নিজস্ব কোন আলো নেই, সূর্যের ধার করা আলোর দ্বারা এর যত কারুকার্য, নীল আর্ম্রষ্টংদের ভ্রমণ ইত্যাদি বৈঞ্জানিক ব্যাখ্যা জানতে শুরু করলাম। তারপর চাঁদ সম্পর্কে আমার সেই পুরনো ধারণাগুলো ভাংতে শুরু করল। ধীরে ধীরে বাস্তবাদ আমার সেই ফিকশনগুলোর কোমল মেরুদন্ডে আঘাত করল। ভেঙে গেল সেই সব অনুভুতি।



কৈশরে এসে চাঁদের মায়াঘেরা আলোতে ভুতের উপদ্রপ খুজেতে লাগলাম। অমুক স্থানে পূর্ণিমার রাতে অমুক ঘটনার আদলে লোকমুখে শোনা বিভিন্ন কল্পকাহীনি মনের কোনে দাগ কাটত চন্দ্রালোময় রাতগুলোতে। মাঝে মাঝে ভয়ে শিড়দাড় কেপে উঠত।

নদী প্রধান এলাকায় আমার কৈশর বিধায় মাঝে মাঝে চাঁদের আলোতে নদীতে ঢেউ খেলা পানির সৌন্দর্য্য তখন এতটা বুঝতে না পারলেও এখন পারছি। এই অনুভুতিটা এখনও কাজ করে যখন নদীপথে গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হয়। রাতে লঞ্চের করিডোরে পাতা চেয়ারে বসে চাঁদের আলো আর ঢেউয়ের আলো ছায়া খেলা বড় মায়বী। টেনে ধরতে চায়।



বাবার বড় ছেলের সহজাত দুষ্টামীগুণে গুণান্বিত ছিলাম বিধায় মাঝে মধ্যে চাঁদময় কিছু রাত একাকী ছাদে কাটানোর সৌভাগ্যও হয়েছিল :P ভয় মিশ্রিত সেই রাতগুলোতে চাঁদের সৌন্দর্য্য আমাকে অন্য ভাবে দেখতে হয়েছিল। অবশ্য এমন সৌভাগ্য না হলে আমার কৈশরটা অপূর্ণই থেকে যেতে মনে হচ্ছে।



ইদানিং চাঁদ দেখার চেয়ে চাঁদের আলোতে বেশি মুগ্ধ হচ্ছি। বন্দী এ শহরের বারান্দা দিয়ে হাত বের করে চাঁদের আলোতে নিজেকে দেখার ব্যার্থ্য চেষ্টাও করি। পরক্ষণে ছেলেমানুষী হবে ভেবে হাতগুটিয়ে নেই কিন্তু মনটাকে গুটাতে পারছি কই! দরজা বন্ধ ছাদওয়ালা বাড়িতে থেকে এরচেয়ে বেশী আর কিইবা করতে পারি। মাঝে মাঝে চাঁদ দেখতে গেলে দেয়ালগুলোর জন্য ব্যার্থ্য হই। :(



চাঁদের এই আলো ছায়াটা নবদম্পতিদের জন্য খুবই উপদেয় মুহূর্ত ;) চাঁদের আলোতে দুজন দুজনার মুখ না দেখতে পারলেতো অনেকের মতে জীবনটাই বৃথা। অবশ্য আমার কাছেও তাই মনে হয় :D অবশ্য একই সাথে মাঝে মধ্যে বউয়ের হাতে অর্ধচন্দ্র খাওয়াটাও একটা বিশাল চন্দ্রঘঠিত বিষয়। (চলবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.