নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উঠন্ত মুলো পত্তনে চেনা যায়।

ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না।

রাকিব জাভেদ মিন্টু

জ্ঞান অর্জন করাই আমার জীবনের মূল লক্ষ্য।

রাকিব জাভেদ মিন্টু › বিস্তারিত পোস্টঃ

“সমৃদ্ধ দেশ আলোকিত মন, হয়ে উঠি সচেতন একজন”

১৫ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৫



দুর্নীতি মানব সভ্যতার জন্য চরম অভিশাপ। সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নের জন্য সর্বোচ্চ প্রতিবন্ধক। মানব সভ্যতার সূচনা থেকে বিভিন্ন সময়ে এ জঘন্য ব্যাধির প্রকোপ ও প্রসার দেখা গেছে। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে দুর্নীতির প্রকৃতি, বৈশিষ্ট্য ও বিস্তার নিরূপণ করতে গেলে দেখা যায় যে এ ব্যাধির সর্বাধিক প্রবৃদ্ধি ও প্রসার ঘটে উপনিবেশিক শাসনামলে। রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে প্রশাসনের সকল স্তরে, ধনিক-বণিক শ্রেণীসহ সমাজের সুবিধাভোগী উচ্চস্তরে এর প্রসার ঘটে থাকে এবং প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। বিভিন্ন যুগে ও সময়ে যে হারে বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রসার হয়েছে; সে হারে এর সমীক্ষা ও গবেষণা হয় নি এ কারণে এ জন্য ব্যাধির প্রকৃতি, বৈশিষ্ট্য ও বিস্তারের কারণ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে তথ্য নির্ভর প্রমাণাদি পাওয়া অতীব দুরূহ ও কষ্টকর।



দুর্নীতি কী?



চেম্বার্সের টুয়েন্টিথ সেঞ্চুরী ডিকশনারী অনুসারে করাপ্ট শব্দটির অর্থ হচ্ছে টু মেইক পিউট্রিড অর্থাৎ টু টেইন্ট, টু ডিবেইজ, টু স্পয়েল, টু ডেসট্রয় দি পিউরিটি অব । আবার করাপশন শব্দটির অর্থ করা হয়েছে পচা, ঘুষ, ভেজাল, কৃত্রিম ও নকল হিসাবে। হাল আমলের উইকিপিডিয়া যার অন্য নাম ফ্রি এনসাইক্লোপেডিয়া অনুসারে দর্শন, ধর্মশাস্ত্র অথবা নৈতিকতার আলোকে দুর্নীতি হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও নৈতিক অবক্ষয় অথবা অর্থনৈতিক আদর্শ থেকে বিচ্যুতি। সে প্রেক্ষিতে দুর্নীতিকে অনার্জিত আয় বলা যাবে যা প্রাপ্তিতে আইন ও বিধি স্বীকৃত রোজগারের পন্থা অনুসৃত হয় নি। দুর্নীতিকে অনেকেই ঘুষ, কিকব্যাক অথবা বকশিশের আরেক নাম বলে অভিহিত করে থাকেন। সরকারী কর্মকান্ডের পরিসরে দুর্নীতি সংঘটিত হয় যা যখন এর একটি অঙ্গ অথবা এজেন্ট এমন ধরণের সিদ্ধান্ত নেন যেটি অন্যায়ভাবে আর্থিক সুবিধা আদায় অথবা স্বজনপ্রীতি অথবা রাজনৈতিক প্রচারাভিযানে চাঁদা প্রদানকারীর স্বার্থ আদায়ের পথ খুলে দেয়। বলা বাহুল্য এ ধরণের দুর্নীতিগ্রস্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াতে ন্যায়নীতি, বিবেক ও সুবিচারের কোন বালাই থাকে না। রাজনৈতিক দুর্নীতি বলতে সাধারণতঃ সরকারী (পাবলিক) ক্ষমতাবলে প্রাপ্ত সম্পদের অপব্যাবহারকে বোঝায় যার পিছনে অবৈধ ব্যক্তিগত লাভক্ষতির বিবেচনা কাজ করে। এ ধরণের দুর্নীতিতে সরকারী কর্মকর্তাগণ জনস্বার্থ উপেক্ষা করে এবং আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, ঘুষ ও ভোট কেনাবেচার মাধ্যমে বিশেষ করে স্বার্থান্বেষী মহলের অনুকূলে সরকারী সিদ্ধান্ত করে দেন। এ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাকে একটি লাভের বিনিময়ে পণ্যসেবা হিসাবে বিক্রী করা হয়।



তবে সিস্টেমিক করাপশন অর্থাৎ সর্বগ্রাসী কাঠামোবিস্তৃত দুর্নীতিটাই সবচেয়ে মারাত্মক। প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক দুর্বলতা, পদ্ধতিগত ত্রুটির ফলে সর্ষের মাঝে ভুত অবস্থান এবং নড়বড়ে নেতৃত্বের কারণেই অসৎ কর্মকর্তা কর্মচারীগণ সিস্টেমেটিক দুর্নীতিতে আখের গোছাতে তৎপর থাকেন। গোষ্ঠিস্বার্থের সংঘাত, বেশী বেশী নিয়মবহির্ভূত অনানুষ্ঠানিক ক্ষমতা প্রয়োগ, জবাবদিহিতার অভাব, অস্বচ্ছতার বিস্তার, সরকারী চাকুরীর বেতনভাতার দৈন্য এবং ”বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদার” ন্যাক্কারজনক সংস্কৃতি যেথানে প্রবল সেখানে দুর্নীতি বাসা বাধবেই। ছড়িয়ে পড়বে ঘুষ, চাঁদাবাজী ও তহবিল তসরুফের ঘটনার পর ঘটনা। দুর্নীতি পরিণত হবে নিয়মে, সুশাসন হবে বিতাড়িত।



দুর্নীতি প্রতিরোধ ও দমন:

দুর্নীতি প্রতিরোধ ও দুর্নীতি দমনের অভিযানকে সফল করতে হলে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগ ও উদ্যমকে একযোগে কাজে লাগাতে হবে। তবে এ কঠিন লক্ষ্যে সফলতা অর্জনের একটি পূর্বশর্ত হচ্ছে দুর্নীতি সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা। সাধারণভাবে সরকারী প্রচার মাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা তেমন বেশী নয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের জনসংযোগ ও প্রচারিভযানের কার্যকারিতাও আংশিকভাবে সফল হবে। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে যদি সংঘবদ্ধ ও সমন্বিতভাবে দুর্নীতির কদর্য চেহারাকে পরিচিত করে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে এবং জনস্বার্থে এর কুফল সম্পর্কে তথা ও যু্ক্তিপূর্ণ ও সুচিন্তিত লেখালেখি করা হয় তা হলে দুর্নীতি প্রতিরোধ অভিযানে দুরন্ত শক্তি যুক্ত হবে। সেই সাথে আইন ও শালিস কেন্দ্র, বেলা, ব্রতী, ডেমোক্র্যাসী ওয়াচ, সুজন, পরিবেশ আন্দোলন ও অন্যান্য অনুরূপ সুশীল সমাজীয় প্রতিষ্ঠান দুনীতি অনাচার ও কুশাসনের বিরুদ্ধে উচ্চকন্ঠ সমন্বিত আওয়াজ উঠাতে পারলে এই পচনব্যাধিকে ন্যূনতম পর্যায়ে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.