নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বর্তমানে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগে লিখি। আমার সকল লেখা আমি এই দুটি ব্লগেই সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। এই দুটি ব্লগের বাইরে অনলাইন পোর্টাল, লিটল ম্যাগাজিন এবং অন্য দু-একটি ব্লগে কিছু লেখা প্রকাশিত হলেও পরবর্তীতে কিছু কিছু লেখা আমি আবার সম্পাদনা করেছি। ফলে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগের লেখাই আমার চূড়ান্ত সম্পাদিত লেখা। এই দুটি ব্লগের বাইরে অন্যসব লেখা আমি প্রত্যাহার করছি। মিশু মিলন ঢাকা। ৯ এপ্রিল, ২০১৯।
সকালে রিমোর্ট চাপতে চাপতে বিটিভি'তে থামলাম আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩৫ তম জাতীয় কুজকাওয়াজের সরাসরি প্রচারিত অনুষ্ঠান দেখে। তখন একটি নাট্যাংশ অভিনীত হচ্ছে-একজন বাউল আর তার সঙ্গীনিকে অপমান করছে কয়েকজন ইয়ো ইয়ো যুবক। তারা মোবাইলে তাদের রুচির গান ছেড়ে নাচছে। বাউল জুটি তখন নিজেদের মান বাচাতে মঞ্চ থেকে চলে গেলেন। এরপর মঞ্চে ঢুকলেন নানা আর নাতনী। নানা দেশীয় সংস্কৃতির বেগতিক দশা দেখে চিন্তিত। তাদের সংলাপে ইয়ো ইয়ো গান এবং সংস্কৃতির প্রতি তাচ্ছিল্য সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এমনকি ডাকু সংগীত সর্দার আইয়ুব বাচ্চুকে নিয়েও উপহাস করলেন। দর্শকবেশী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তখন হাসছেন।
দুপুরে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স দেখে বরাবরের মতোই হতাশ। সকালে দেখা অনুষ্ঠানের ঐ ইয়ো ইয়োদেরই জয় জয়াকার এখানে। হাবিবের বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলের সাথে নাচছে একদল নাদুসনুদুস ইয়ো ইয়ো ছেলেমেয়ে। দুই একটা র্যাম্পের গুপ্তবেশ্যা থাকলেও থাকতে পারে। এরপর নৃত্যের কস্টিউম জড়িয়ে মঞ্চে উঠলো দু'খানা আটার বস্তা! আঁটোসাটো পোশাকের ভেতর থেকে মাংসপিন্ড বিদ্রোহ করে বেরিয়ে আসতে চাইছে। সঙ্গে জঘন্য পারফরম্যান্স। দেখে মনে হলো কোন ঘোরোয়া জন্মদিন কিংবা বিয়ের অনুষ্ঠান। কোনটাই দৃষ্টি এবং চিত্ত সুখকর নয়।
দেশের মাটিতে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও দেখেছি ডাকু সংগীতের অত্যাচার। দেশীয় সংগীত এবং নৃত্যকলা সেখানে প্রায় ব্রাত্য থেকে যায়। টি-২০ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তো সম্পূর্ণই ব্রাত্য ছিল।
আমরা অর্থনৈতিকভাবে দূর্বল বিশ্ব তা জানে। আমাদের রাজনীতির চিত্রও তাদের অজানা নয়। ক্রিকেট ব্যতিত অন্যান্য খেলাতেও আমাদের বলার মতো সাফল্য খুব বেশি নেই। কিন্তু আমাদের বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতির প্রতি পশ্চামাদের কৌতুহল আছে। অথচ বিশ্ব মঞ্চে সুযোগ পেয়েও আমরা কী করছি? দলীয় সুপারিশে কিছু অপদার্থের হাতে বাংলাদেশের পতাকা ধরিয়ে তাদেরকে তুলে দিচ্ছি বিশ্বমঞ্চে। ছিঃ বলতেও ঘেন্না হয়!
বাংলাদেশে কি গানের এতোই আকাল যে বিশ্ববাসীকে বিজ্ঞাপনের জিজ্ঞেল শোনাতে হবে! কোন ফোক শিল্পীকে কী পাঠানো যেতো না! আবার আমাদের দেশে কী নৃত্যশিল্পীদের এতোই অভাব পড়েছে, যে এমন বেঢপ দু'খানা আটার বস্তা পাঠিয়ে দেওয়া হলো। সংস্কৃতির মানুষ হিসেবে সব জগতের খোঁজ-খবরই রাখতে হয়। কিন্তু এদের দেখা তো দূরের কথা কোনদিন নামও শুনিনি। শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়, শামীম আরা নীপা, তামান্না রহমান, ওয়ার্দা রিহ্যাব আরো অনেকই আছেন। যাদের হাতে দায়িত্ব দিলে৭/৮ মিনিটের দারুণ একটি প্রডাকশান দেখতে পেতো বিশ্ববাসী। একটা আদিবাসী দলকেও পাটানো যেতো। তাতে বাংলাদেশের ভাবর্মর্তি উজ্জ্বলই হতো। সন্দেহ নেই অনুষ্ঠানের সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্স বাংলাদেশের। এমনকি পাকিস্থানের চেয়েও বাজে! মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে আমরা সংস্কৃতিবান্ধব বলেই জানি, আমনার আমলেই যদি এই হয়, অন্যদের সময় আমরা কী দেখবো!
বরাবরের মতোই উজ্জ্বল এবং দৃষ্টিনন্দন শ্রীলংকার দেশীয় ঐতিয্যে সমৃদ্ধ পারফরম্যান্স। ওরা ওদের দেশের নাম ধরে একবারও গলা ফাটায়নি, কিন্তু ওদের দেশপ্রেমের ঘাটতিও এতটুকু চোখে পড়েনি। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শ্রীলংকা যে সভ্য দেশ তা ঢোল পিটিয়ে তাদের বলতে হয় না। তাদের সাংস্কৃতিক রুচি দেখলেই বোঝা যায়।
জয়তু শ্রীলংকা.......!
*ডাকুসংগীত বললাম এজন্যই যে আইয়ুব বাচ্চুরা যা গায় তাকে আমার সুস্থ সংগীত বলতে বাধে। ব্যান্ড সংগীত ভালবাসি তা যদি হয়-জলের গান, মেঘদলের মতো।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪১
মিশু মিলন বলেছেন: চমৎকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ প্রিয় বাঙালি।
একদম যথার্থ বলেছেন আপনি। স্বজনপ্রীতি, দলীয়করন আমাদেরকে শেষ করে দিল। সাংস্কৃতিক অঙ্গণে ভয়াবহ দূর্নীতি চলে। মানুষ এসব জানে না। আসলে বিশ্বমঞ্চে আমরা সুযোগ পাই খুব কম। সেখানে ভাল কিছু তুলে ধরতে পারলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়, তা আমরা বুলে যাই।
আমি যাদের নাম উল্লেখ করেছি তারা ছাড়াও আমাদের বিশ্বমানের কোরিওগ্রাফার-নৃত্যশিল্পী আছেন-প্রবাসী আকরাম খান। তাকে বললে যত ব্যস্ততাই থাক দেশের হয়ে ঠিকই মঞ্চে উঠতেন। এবং বলা বাহুল্য আকরাম খান উঠলে আজকের সেরা পারফরম্যান্স হতো বাংলাদেশেরই।
মননের দৈন্যতায় আমরা কেবল নিচের দিকেই নামছি। আর কতো নিচে নামবো কে জানে!
ভাল থাকুন প্রিয়। শুভকামনা.......
২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৫
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ঠিক ভাই| আমি ভেবেছিলাম বাঙালি কিছু দেখব কিন্তু এটা আশা করিনি| করিওগ্রাফার শংকর হলে যা হয়| মাথায় চুলের জায়গায় *** আছে| দুঃখিত ভাষা খারাপ করলাম
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪৪
মিশু মিলন বলেছেন: আপনাকে কী বলবো ভাই, আমি নিজেও দেখতে দেখতে খিস্তি মারছিলাম। ফাজলামির একটা লিমিট থাকে! এই হারামীর বাচ্চারা সংস্কৃতির বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে।
ভাল থাকুন। শুভকামনা নিরন্তর......
৩| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৪০
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৪৫
মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই।
শুভেচ্ছা.....
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৬
বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: বিদেশী কিছু হলেই আমরা হুমড়ি খেয়ে পড়ি। কোন মানও যাচাই করি না। তাই আমাদের মধ্যে স্বদেশী মনোভাবটা কম। ফলে স্বদেশকে বিশ্বের বুকে সুন্দর ভাবে উপস্থান করার ব্যাপারে আমাদের মধ্যে কোন আন্তরিকতা কাজ করে না। আমাদের মধ্যে আবেগ আছে কিন্তু কোন বিবেক নাই।
দুর্নীতি, দলীয়করণ, স্বজনপ্রীতি আমাদের দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে। এগুলোকে বিতাড়িত করতে না পারলে কোনদিনই আমরা ভালো কিছু করতে পারবো না। কারণ এগুলো যেখানে থাকে, সেখানে যোগ্যতার কোন দাম নাই। আর অযোগ্য মানুষের হাতে কোন কিছুরই সুরক্ষা নিশ্চিত হয় না।
গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়কে পোস্টের মধ্যে আরও বেশী গুরুত্বপূর্ণ করে উপস্থাপন করেছেন। আমরা ব্যাপারটা অনুধাবন করবো এটাই আশা করছি। শুভ কামনা রইলো মিশু।